আজ প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ঘর পাচ্ছে ৩৩ হাজার পরিবার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য আবাসন নিশ্চিত করার সরকারের লক্ষ্যমাত্রার অংশ হিসেবে তৃতীয় ধাপে ঈদ উপহার হিসেবে ৩২ হাজার ৯০৪টি ঘর হস্তান্তর করবেন। আজ মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সারা দেশে একযোগে তৃতীয় পর্যায়ের জমির দলিল ও ঘরের চাবি প্রদান কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, তৃতীয় ধাপে ৬৫ হাজারের বেশি ঘর ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে হস্তান্তরের পরিকল্পনা ছিল আমাদের। সে লক্ষ্যেই নির্মাণকাজ চলে। এরই মধ্যে ৩২ হাজার ৯০৪টি ঘর নির্মাণ হয়ে গেছে। এগুলো ঈদের আগে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের মাঝে হস্তান্তর করার মধ্যদিয়ে তাদের ঈদ আনন্দে নতুন মাত্রা যুক্ত হবে।
প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের তুলনায় তৃতীয় ধাপে কাঠামোতে আসছে বেশ পরিবর্তন। বাড়ানো হয়েছে ব্যয়। যে কারণে ঘরগুলো মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে জানানো হয়েছে।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের এরই মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে এক লাখ ১৭ হাজার ৩২৯টি ঘর দেওয়া হয়েছে। দুই শতাংশ জমির মালিকানাসহ সেমিপাকা ঘর করে দেওয়া হয়েছে তাদের। এর সঙ্গে রান্নাঘর ও টয়লেট ছিল। আঙিনায় হাঁস-মুরগি পালন ও শাক-সবজি চাষেরও জায়গা ছিল।
দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারদের কাছে ঘর হস্তান্তরের চিত্র তুলে ধরে জেলা সংবাদদাতারা জানান-
প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে চট্টগ্রামে তৃতীয় পর্যায়ে ১ হাজার ২১৬টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার জমিসহ ঘর পেতে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমান এ কথা জানান। এ পর্যায়ে চট্টগ্রাম জেলায় ৬৪৯টি পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হয়েছে।
খুলনা জেলায় ১৪টি রূপসায়, ৬২টি তেরখাদায়, ৩৫টি দিঘলিয়ায়, চারটি ফুলতলায়, ৬৫টি ডুমুরিয়ায়, ৩৬টি পাইকগাছায় ও দাকোপে ২০টি পরিবারের কাছে জমিসহ ঘর হস্তান্তর করা হবে। খুলনার জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার প্রেস ব্রিফিং এ তথ্য জানান। তিনি জানান, তৃতীয় পর্যায়ে খুলনার জন্য পাঁচটি ধাপে সর্বমোট ৯০৬টি গৃহের বরাদ্দ পাওয়া গেছে এবং গৃহ নির্মাণ কার্যক্রম চলমান আছে।
গোপালগঞ্জের ৬১২টি পরিবারকে একটি করে গৃহ ও দুই শতক জমি প্রদান করা হবে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা।
ঈদের আগে বগুড়ায় ৯৩০ গৃহহীন পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর ঘর উপহার। এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউল হক। তিনি বলেন, তৃতীয় ধাপে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে জেলায় ৯৩০টি ঘর হস্তান্তর করা হবে।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার হিসাবে জয়পুরহাটের ২০৬টি ভুমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পাচ্ছে তাদের স্বপ্নের নিবাস।
পিরোজপুরে উপহারের ঘর পাচ্ছে এক হাজার ১১১টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার। এর মধ্যে প্রায় পাঁচ একর জমির উপর এই ২২৮টি গৃহ নির্মাণের কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে।
পাবনা জেলার ৩৭৩ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পাচ্ছে জমিসহ স্বপ্নের ঘর। জেলা প্রশাসক জানান, তৃতীয় পর্যায়ে ঈদ উপহার হিসেবে পাবনার ৯ উপজেলা ৩৭৩ টি ঘর হস্তান্তর করা হবে। পাবনায় মোট ৬৫৪টি ঘরের বরাদ্দ পাওয়া গেছে। অবশিষ্ঠ ঘর জুনের মধ্যেই সম্পন্ন হবে। এর আগে পাবনায় দুই পর্বে এক হাজার ৪২৩ টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। এতে বিদুৎ, রাস্তা, স্যানেটারি, পানিসহ সকল সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে নওগাঁ জেলায় ৫৪০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পাচ্ছে জমিসহ তৈরি বাড়ি। জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে কর্মসূচির তৃতীয পর্যায়ে জেলায় ৬১০টি পরিবারের অনুকুলে গৃহনির্মাণের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বরাদ্দকৃত গৃহ নির্মাণের আওতায় ইতিমধ্যে ৫৪০টি গৃহ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৭০টি’র নির্মাণ কাজ চলছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর জানান, জেলার পাঁচটি উপজেলায় তৃতীয় পর্যায়ে ১ হাজার ১৮৪ টি গৃহহীন পরিবার জমিসহ পাকা বাড়ি পাচ্ছে। ৬৯৬টি পরিবারকে জমির দলিলসহ পাকা বাড়ি উপহারের দলিল হস্তান্তর করা হবে। এবারে প্রতিটি বাড়ি নির্মাণে সামান্য ডিজাইন পরিবর্তন করা হয়েছে। তাই নির্মাণ ব্যয় বাড়ি প্রতি ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা হয়েছে।
বরগুনার খাজুরতলা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২১৯ জনকে জমিসহ ঘর হস্তান্তর করা হবে। দুই শতাংশ জমিতে দুই রুমের পাকা ঘরের সাথে রান্নাঘর, বাথরুম ও একটি বারান্দা সম্বলিত আশ্রয়ন প্রকল্পের প্রত্যেক ঘরেই জ্বলবে বিদ্যুতের আলোও।
রংপুরের পীরগঞ্জে তৃতীয় পর্যায়ে ২৪০ টিকে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনের জন্য বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আজ ১২০টি পরিবারকে জমি হস্তান্তর করবেন।
চাঁদপুরের ৭৫২ পরিবারকে ভূমিসহ গৃহ হস্তান্তর করা হবে আজ। চাঁদপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ জানান, জেলায় ১২৩টি ঘর ভূমিহীনদের দেয়া হচ্ছে।
রাঙ্গামাটিতে তৃতীয় পর্যায়ে জেলায় মোট ২০৬টি ঘর উপকারভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হবে।
লক্ষ্মীপুর জেলার ভূমিহীন ও গৃহহীন ৩৫০টি পরিবার। তৃতীয় পর্যায়ে জেলার পাঁচটি উপজেলায় ২৬টি স্থানে এক হাজার ৪৪২টি ঘরের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এরমধ্যে ৩৫০টি পরিবারের মাঝে ঘর হস্তান্তর করা হবে।
ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার ১৫টি পরিবারের জন্য নির্মিত ঘরের চাবি ও জমির দলিল উপকারভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদের উপহার হিসেবে পাকা ঘর পাচ্ছে যশোরের ভূমিহীন ও গৃহহীন ৬১০টি পরিবার।
নীলফামারী জেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের নতুন পাচ্ছে এক হাজার ২০৫ গৃহহীন পরিবার। তৃতীয় পর্যায়ের এসব ঘরের প্রতিটির নির্মাণ খরচ হয়েছে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা করে।
নোয়াখালীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদের উপহার হিসেবে পাকা ঘর পাচ্ছে ৩৬৮টি ভূমিহীন পরিবার।
এসএ/