নাগেশ্বরীতে গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে খামারি
গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার প্রান্তিক খামারিরা। সব ধরণের গো-খাদ্য এক মাসের মধ্যে তিনবার বৃদ্ধি পেয়েছে। একমাস আগে ২৫ কেজির এক বস্তা দানাদার খাদ্যের পাইকরী দাম ছিলো ১ হাজার টাকা। সেটা এখন দাম বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১ হাজার ২২৫ টাকা। ৩৫ কেজির একবস্তা ভূষির দাম আগে ছিল ১ হাজার ২৫০টাকা। এখন গিয়ে ঠেকেছে ১ হাজার ৫০০টাকায়।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে সকল প্রকার গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে। একমাস আগে খুচরা পর্যায় ১ কেজি দানাদার গো- খাদ্যের দাম ছিলো ৩৮ থেকে ৪০ টাকা এখন সেই খাদ্যই কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। ভূষিতে কেজি প্রতি ৭টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৩ টাকা। ধানের কুঁড়া কেজিতে ৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা দরে, খুঁদ কেজিতে ৫ থেকে ৭ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৩৭ টাকা কেজি। এছাড়া খৈল ও নালীর দামও বৃদ্ধি পেয়েছে।
উপজেলায় ছোট- বড় দুধ উৎপাদনকারী খামার রয়েছে ৮ হাজার ৯৩২টি। এসব খামারে গাভীর সংখ্যা ৫৩ হাজার ৬০টি। ছোট-বড় মিলিয়ে গরু মোটাতাজা করণের খামার রয়েছে ৭ হাজার ৮৫৯টি। এতে গরু রয়েছে ২০ হাজার ৪৭৯টি। অপর দিকে বকনা ও বাছুর মিলে গরু রয়েছে ৫৭ হাজার ৭৩টি। উপজেলায় ছাগলের খামার রয়েছে ১ হাজার ৯৯১টি। এতে ছাগল রয়েছে ৪১ হাজার ৯৩টি। ভেড়ার খামার রয়েছে ১ হাজার ১৩৫টি। এতে ভেড়া রয়েছে ১৩ হাজার ৯৩৪টি। এসব গবাদি পশুর জন্য প্রতিদিন প্রয়োজন হচ্ছে বিপুল পরিমাণ গো-খাদ্য। খাদ্যের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছে প্রান্তিক ও ছোট খামারীরা।
উপজেলার কেদার ইউনিয়নের সাতানা গ্রামের খামারি মমিনুল ইসলাম বলেন,তার খামারে পাঁচটি দেশি এবং দুটি শংকর জাতের গাভী আছে। প্রতিদিন ৫শ থেকে ৬শ টাকার খাদ্য লাগত। এখন দাম বাড়ায় ৭শ থেকে ৮শ টাকা যাচ্ছে।
রায়গঞ্জ ইউনিয়নের সাপখাওয়া গ্রামের খামারি রেজাউল ইসলাম জানান, সব ধরণের খাদ্যের দাম বাড়ায় খামার করে আর লাভ হচ্ছে না। তার খামারে ৭টি শংকর জাতের গাভী ছিলো ৫টি বিক্রি করেছেন এখন ৩টি রয়েছে। আগে তিনটির পিছনে প্রতিদিন ৬শ টাকা খরচ হত এখন ৮শ টাকা লাগে। খাদ্যের দাম বাড়লেও দুধের দাম আগের মতই আছে, ফলে খামারে লাভ নেই।
গো-খাদ্য উৎপাদনকারী একটি প্রতিষ্ঠানের কচাকাটা এলাকার ডিলার নূর আলম সিদ্দিক জানান, সকল প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। একমাসের কোন প্রতিষ্ঠান ২ বার আবার কোন প্রতিষ্ঠান ৩ বার দাম বৃদ্ধি করেছে। প্রতিষ্ঠান ভেদে দাম বৃদ্ধির কমবেশি রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো: আশিকুজ্জামান জানান, দানাদারসহ সব ধরণের গো- খাদ্যের দাম বাড়াতে খামারিরা অনেকটা বিপাকে পড়েছে। খামারে খরচ বাড়ায় অনেক খামারী গরু, ছাগলের সংখ্যা কমিয়ে দিচ্ছেন। অনেকে খামার ধরে রাখতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। তবে খামারীরা দানাদার খাদ্যের উপর নির্ভর না করে ঘাষ চাষ করে গবাদি পশু পালন করলে বেশি লাভবান হবেন।
কেএফ/