শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

অঘ্রানের অন্ধকারে

ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব: ১১

বেলা তেতে উঠছে। রোদের দিকে তাকানো যাচ্ছে না। বাড়ির দোতলার বারান্দায় শাবিন দাঁড়িয়ে আছে। তার ভেতর ছটফটে ভাব। সে কোনো এক জায়গায় স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না।

বাসার সামনে রিকশা এসে থেমেছে। শাবিন অবাক হয়ে দেখল তুরি নামছে রিকশা থেকে। শাবিন মনে করার চেষ্টা করল কতদিন পর তুরির সঙ্গে তার দেখা হচ্ছে। মনে করতে পারল না। তার দিন, মাসের হিসেব সব উলটোপালটা হয়ে গেছে। শুধু মনে করতে পারল অনেক-অনেক দিন পর তুরির সঙ্গে তার দেখা হচ্ছে।

তুরি এসে বসেছে শাবিনের ঘরে। মায়ের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। মা তার কাছে জানতে চেয়েছেন বাড়ি কোথায়, কয় ভাইবোন, কে কী করে, বাবা কোথায় থাকেন, কী করেন? মা মারা গেছেন শুনে দুঃখ করলেন। তারপর অতি পরিচিত প্রশ্ন করেছেন, তোমার এখনো বিয়ে হয়নি কেন?
তুরি বলল, বিয়ে করিনি তাই।
বিয়ে করোনি কেন?
ইচ্ছে করেনি।
এখনো ইচ্ছে করে না?
করে।
বয়স বাড়ছে। বিয়ে করো।

মা উঠে চলে গেলেন। শাবিনের ঘর হয়ে আছে লন্ডভন্ড। সবকিছু চারদিকে ছড়ানো ছিটানো। ময়লা জামা, গেঞ্জি, আন্ডারওয়ার, মোজা ঘরের এখানে ওখানে পড়ে আছে। ঘরে ভাপসা চাপা গন্ধ। মনে হচ্ছে অনেকদিন ঘরের দরজা-জানালা খোলা হয়নি। অথচ ঘরের দরজা-জানালা খোলা।
তুরি বলল, আপনি চাকরি ছেড়েছেন কেন?
চাকরি করতে ইচ্ছে করে না।
এখন কী করছেন?
বাড়িতে থাকি। বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিই। সময় কেটে যায়।
আপনার কী হয়েছে?
কিছু হয়নি তো।
শেভ করেননি কতদিন! মুখ ভরতি খোঁচা খোঁচা দাড়ি। চোখ লাল হয়ে আছে।
রাতে ঘুম হয় না।
অসুখ করেছে। ডাক্তার দেখিয়েছেন?
আমরা সকলেই অসুস্থ। আমি, তুমি সবাই। এই যে বাবা বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি সুস্থ হলে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতেন না।

তুরি বুঝতে পারে শাবিনের অভিমান হয়েছে। হয়তো তার অভিমানের জন্য সে দায়ী। কোনো খবর না দিয়ে নিজেকে আড়াল করে নিতে চেয়েছিল। তাই বলে একজন মানুষ এভাবে নিজেকে ভেঙেচুরে এলোমেলো করে ফেলবে!
তুরি বলল, আপনি অসম্ভব ব্রিলিয়েন্ট একজন মানুষ। আপনাকে আমি শ্রদ্ধা করি। কোথাও হয়তো কোনো ভুল হয়েছে। আমি অতি সাধারণ একজন মানুষ।

তুরিকে চমকে দিয়ে শাবিন বলল, তুমি আমাকে ভালোবাসো?
বুকের অতল থেকে বাতাস টেনে এনে তুরি বলল, ভালো না বাসলে আপনার সাথে কি বিছানায় যেতাম! স্বীকার করছি সেদিন মদ খেয়ে আমি খানিকটা বেসামাল ছিলাম। প্রচুর কথা বলেছি। একান্ত ব্যক্তিগত গোপন করে রাখা কথা আপনাকে বলেছি। তবে অতটা বেসামাল নিশ্চয় ছিলাম না যে নিজেকে আটকাতে পারতাম না।
তাহলে তুমি বারবার হারাও কেন?
তুরি চোখ নামিয়ে নিজের পায়ের দিকে তাকিয়ে আছে। মাথা তুলে বলল, আপনি অত্যন্ত ভালো মানুষ। আপনার আকর্ষণ থেকে বেরুতে পারি না। আবার মনে হয় আপনাকে ঠকাচ্ছি। আপনাকে ঠকাতে চাই না।
আমি কী চাই তা আমি ভালো জানি।

আপনি কী চান?
তোমাকে।
সব জেনেশুনে!
অবশ্যই।
মানুষ এমনকিছু না যে সে পচে যায়।

তুরি আবার গভীরভাবে বুকের ভেতর নিঃশ্বাস টেনে নিল। নিজের পায়ের দিকে তাকিয়ে প্রায় ফিসফিস করে বলল, সেদিন আপনার সঙ্গে বিছানায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। এমন কোনো ভাবনা আমার ভেতর আগে আসেনি। হয়তো আপনাকেই সবকিছু দিতে চেয়েছি।
শাবিন চুপ করে আছে। জানালার পর্দা সরানো। ঘরের ভেতর জানালা দিয়ে রোদ ঢুকেছে। তুরি চুলের ক্লিপ খুলে হাতের ব্যাগে রাখল। চুলগুলো গুছিয়ে নিয়ে খোঁপা করল।
চোখ তুলে বলল, আমার অ্যাক্সিডেন্টের পর ভেবেছিলাম আর কারও সঙ্গে জড়াব না। ঘটনা কাউকে বলিনি। লুকিয়ে রেখেছিলাম। কী যেন হলো। আপনাকে বলতে ইচ্ছে করল।
তুরিকে দেখে শাবিনের মন ভিজে উঠল। তাকে দেখাচ্ছে অত্যন্ত দুর্ভাগা একজন মানুষ। তুরিকে বুকের ভেতর জড়িয়ে ধরে আদর করতে ইচ্ছে করছে।

শাবিন বলল, তুমি কি এ কথাগুলো বলতে এসেছ! কেন বলছ আজ এসব!
তুরি বলল, সেদিন ভীষণ অস্থির ছিলাম। আপনাকে ঘরে একা পেয়ে ভেতরে ভেতরে উত্তেজিত হয়েছি। প্রকাশ করিনি। প্রবলভাবে চাইছিলাম আপনি আমাকে শক্তভাবে জড়িয়ে ধরুন। আমার শরীরের জামাকাপড় টেনে ছিঁড়ে ফেলুন। আমাকে প্রচন্ডভাবে আদর করুন। আদর করতে করতে দম বন্ধ করে আমাকে মেরে ফেলুন। আপনার আদর পেতে পেতে আমার মরে যেতে ইচ্ছে হয়েছিল। খুব করে চাইছিলাম।
তুমি আমার গালে গাল ঘষছিলে। চোখ নাক কপাল স্পর্শ করলে। তোমার সেই স্পর্শ আমাকে জাগিয়ে দিয়েছিল।
আগে কখনো এমন হয়নি আমার। মিটুনের সাথেও না। কখনো কারও প্রতি তীব্র আকর্ষণ বোধ করিনি। কেন করিনি জানি না, যেমন আকর্ষণ অনুভব করেছি আপনাকে দেখে। আপনি যখন আদর করছিলেন আমার চোখ ভরে পানি চলে এসেছিল। নিজেকে মনে হচ্ছিল মাখন, উত্তাপ পেয়ে গলে যাচ্ছি।
তুরি কাঁদছে। তার শরীর থিরথির করে কাঁপছে। চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। শাবিনের ইচ্ছে করছে সেদিনের মতো তুরিকে বুকের ভেতর শক্ত করে জড়িয়ে ধরতে। আদর করতে। সম্ভব হচ্ছে না। বাড়িতে মা আছেন।
শাবিন বলল, চলো যাই। বাইরে থেকে হেঁটে আসি।
চোখ মুছে তুরি বলল, কোথায় যাব?
সেই পুকুরপাড়ে। তারপর দুপুরে রেস্টুরেন্টে খাব।

শাবিন অনেক দিন পর শেভ করল। তুরিকে বসিয়ে রেখে শাওয়ার নিয়েছে। তার ভালো লাগছে। সে পরিষ্কার জামাপ্যান্ট পরে তুরিকে নিয়ে রওনা হলো।
বেরুনোর আগে শাবিনের মা বললেন, রান্না চড়িয়েছি। যেখানে যাচ্ছ যাও। দুপুরে এখানে খাবে।
দুপুরে ফিরে আসতে হলো। অল্প কয়েকপদের খাওয়া। তবে যত্ন নিয়ে রান্না করেছেন শাবিনের মা। কই মাছের ঝোল। মুরগির মাংস। লাল শাক, ছোটোমাছের চচ্চড়ি আর ডাল।
খাওয়াদাওয়ার পর শাবিনের মা বললেন, তুমি কি আমার ছেলেকে বিয়ে করবে?
তিনি প্রস্তাব দেওয়ার মতো করে সম্মতির জন্য বলেছেন। হকচকিয়ে গেছে তুরি। এমন প্রস্তাব পাবে ভাবেনি। নিজেকে সামলে নিয়ে বলল, আপনার ছেলে রাজি কিনা জানতে হবে।
সে রাজি। তোমার কথা অনেক আগে আমাকে বলেছে। তোমাকে খুঁজে পাচ্ছিল না। তুমি নিজে যখন এসেছ, তোমাকে আর যেতে দেব না, মা।
তুরির ভালো লাগছে। শাবিনের মা যথেষ্ট আন্তরিক মানুষ। তিনি ভালোবাসা আর আদর মিশিয়ে কথা বলছেন।
তুরি বলল, বাবাকে জানাতে হবে।
তুমি রাজি থাকলে তোমার বাবার সাথে কথা বলব।
তুরি বলল, আপনি বাবার সাথে কথা বলুন।
এই ঘটনার তিন মাসের মাথায় শাবিনের সাথে তুরির বিয়ে হয়ে গেল।

(চলবে)

 

পর্ব ১০: অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ৯: অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ৮ : অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ৭ : অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ৬: অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ৫: অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ৪: অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ৩: অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ২: অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ১: অঘ্রানের অন্ধকারে

Header Ad

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল

ছবি: সংগৃহীত

একইসঙ্গে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক নারী। স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করেননি দুই স্বামীর কাউকেই। গোপনে মন জয় করে চলছিলেন দুই স্বামীর। প্রায় দুই বছর দুই স্বামীর সংসার করার পর অবশেষে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চার বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে হলফনামার মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করেন রাজবাড়ী সদরের আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের আবু হানিফ শেখের ছেলে ইউটিউবার সাগর শেখ ও আলীপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস।

বাবা, মা ও ভাই প্রবাসে থাকায় বাবার বাড়িতে একাই বসবাস করতেন জান্নাতুল। সেখানে যাতায়াত করতেন স্বামী সাগর শেখ। সংসার জীবন ভালোই চলছিল এ দম্পতির। হঠাৎ জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় শ্বশুরবাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় সাগরের। এরই মধ্যে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে পরিবারের সিদ্ধান্তে অন্য এক যুবককে দ্বিতীয় বিয়ে করেন জান্নাতুল।

এদিকে স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের বাড়িতে তুলে না নেয়ায় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটান জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামী সাগরের দাবি, প্রায় দুই বছর ধরে তার সঙ্গেও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ঠিক রেখে চলছিলেন জান্নাতুল।

স্ত্রীর পরিবার তাকে মেনে না নেয়ায় তার বোনের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে একান্তে সময় কাটাতেন স্বামী-স্ত্রী। চলতি মাসের ২ নভেম্বর তারা একসঙ্গে নিজেদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন বলেও দাবি করেন সাগর।

তবে দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামীর ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে জানতে পারেন সাগর। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি। তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন জান্নাতুল। এখন দ্বিতীয় স্বামী নিয়েই সংসার করতে আগ্রহী তিনি। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি আদালতে মামলা করেছেন সাগর।

সাগর শেখ বলেন, জান্নাতুল ও আমার বিয়ের বিষয়টি জান্নাতুলের মা ও বোন জানতো। বিয়ের পর আমাদের সংসার জীবন ভালোই কাটছিল। তবে হঠাৎ করে জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় তাদের বাড়িতে আমার যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের বিয়ের চার মাসের মাথায় আমি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির কাজে কয়েকদিনের জন্য রাজবাড়ীর বাইরে যাই।

কাজ থেকে এসে শুনি আমার স্ত্রী জান্নাতুল অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমি আমার স্ত্রীকে প্রশ্ন করলে সে বলে, ‘পরিবারের চাপে বিয়ে করেছি। ওই ছেলের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক হয়নি। আমি তোমার স্ত্রী আছি, তোমারই থাকবো। আমার আম্মু দেশে আসলে আমি তোমার কাছে চলে আসবো।’

সাগর বলেন, ‘আমি জান্নাতুলদের বাড়ি যাতায়াত করতে না পারার কারণে বিভিন্ন সময় আমরা রাজবাড়ী শহরে আমার বোনের বাসায় ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতাম। ওর কলেজে আনা-নেয়াসহ সবকিছু আমিই করতাম। এমনকি গত ২ নভেম্বরও আমরা আমার বোনের বাসায় আমাদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছি।

তবে বিবাহ বার্ষিকী পালনের দুদিন পরে আমি জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে ওই ছেলের (দ্বিতীয় স্বামীর) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চলছে। ওই ছেলে নিয়মিত জান্নাতুলের বাবার বাড়িতে এসে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি জান্নাতুলকে প্রশ্ন করলে সে আমাকে গালাগালি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সে আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলেও জানায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জান্নাতুলের মা প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছে। তিনিও এখন আমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে অস্বীকার করছেন। অথচ তার মেয়ের সঙ্গে আমার প্রেম থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত সবকিছুই তিনি জানতেন।

এখন বাধ্য হয়ে আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পেতে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে গত ১১ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছি। এছাড়া ১৭ নভেম্বর রাজবাড়ীর বিজ্ঞ ১নং আমলি আদালতে মামলা করেছি।’

সাগর আরও বলেন, ‘আমাকে ডিভোর্স না দিয়ে আমার স্ত্রী অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে আমাকেও ম্যানেজ করে চলেছে, একইভাবে তার দ্বিতীয় স্বামীকেও ম্যানেজ করে চলেছে।

এটা আইন ও ধর্মীয় দুই দিক থেকেই অপরাধ। এছাড়া আমি এ পর্যন্ত আমার স্ত্রীর পেছনে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তারপরও আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই। তাকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।’

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজী হননি জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। তবে তার দাবি, জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে তিনি জানতেন। সাগরের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না।

জান্নতুলের দ্বিতীয় স্বামীর বাবা বলেন, ‘কোন এক সূত্রে আমার শ্বশুর জান্নাতুলদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তাকে পছন্দ করে। পরে আমি গিয়ে তার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিয়ের দিন ধার্য হয়। বিয়ের আগের দিন সাগর নামে এক ছেলে আমার ছেলেকে ফোন করে বলে জান্নাতুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক আছে।

সে জান্নাতুলের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও আমার ছেলেকে পাঠায়। এরপর আমি ওই এলাকায় আমার আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের কোন সম্পর্ক ছিল না। এছাড়া জান্নাতুলকেও আমি সরাসরি প্রশ্ন করলে সেও সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে।

পরে ঘরোয়া আয়োজনে জান্নাতুলের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে হয়। এখন সাগর নামে ছেলেটি জান্নাতুলকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করছে। আমি যতদূর জেনেছি সাগরের স্ত্রী ও সন্তান আছে। এখন বিষয়টি আইনগতভাবেই সমাধান হবে।

আর জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে কথা বলতে তার বাবার বাড়িতে গেলে ভেতরে ঢোকার অনুমতি মেলেনি।’

বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে তার মা হাচিনা বেগম বলেন, ‘সাগরের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছিল৷ তবে বিয়ের দুই মাসের মাথায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। আমার মেয়ে তো ছোট বুঝে নাই, যে কারণে সেসময় ওরা ডিভোর্সের কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছে। এর ৪/৫ মাস পরে আমার মেয়ের আবার বিয়ে হয়েছে। সাগর আমার মেয়েকে চাপে ফেলে এতোদিন তার সঙ্গে সময় কাটাতে বাধ্য করেছে।’

আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘সাগর ও জান্নাতুলের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তার নোটিশের একটি কপি ইউনিয়ন পরিষদে আসার কথা। এরকম কোন কপি কখনো পাননি তারা।’

তিনি বলেন, ‘সাগর আমার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছে। আমিও খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সাগর জান্নাতুলের প্রথম স্বামী। সে সাগরকে তালাক না দিয়েই বিয়ের চার মাসের মাথায় অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করে। প্রায় দুই বছর সে চালাকি করে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করেছে। সাগরের কাছ থেকে জান্নাতুল অনেক টাকা-পয়সা খেয়েছে বলেও আমি জানতে পেরেছি।’

আবু বক্কার বলেন, ‘সাগরের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি জান্নাতুলের বাবাকে নোটিশের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকি। তবে নোটিশ পেয়ে তিনি তার ছোটভাই ও তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে বলেন, আমি যেন পরিষদে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেই। তবে এর ১/২ দিন পরে তিনি জানান, এ বিষয়ে তারা বসতে চান না।

আইনগতভাবে তারা বিষয়টি সমাধান করতে চান। পরে আবার তারা বসতে সম্মত হলে জান্নাতুল ও তার বাবা এবং তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামসহ পরিষদের অন্য সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলাম। সাগরও সেখানে ছিল। তবে সেখানে জান্নাতুল বলে দিয়েছে সে কোনভাবেই সাগরের সঙ্গে ঘর সংসার করবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা নির্যাতিত হয়। কিন্তু ছেলেরা যে কতোটুকু নির্যাতিত হয় তা এই সম্পর্কের জের দেখলে বোঝা যায়। আমাদের সমাজে ছেলেরা আরও বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। সেটা নীরবে নিভৃতে ছেলেরা সহ্য করে যাচ্ছে। আমি আশা করবো আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা বিষয়টি তুলে ধরবেন।

আপনাদের সংবাদের মাধ্যমে মানুষ যাতে সচেতন হতে পারে। আজকে আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে। আর কোন ইউনিয়নে যেন এমন ঘটনা কোনদিন না ঘটে।’

Header Ad

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

২৪ এর গনঅভূ্থানে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী, শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন।

এ সময় মোবাইল ফোনে লাউডস্পিকারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, আব্দুল্লাহ দেশের জন্য মানুষের জন্য মানবতার কল্যাণের জন্য জীবনকে উৎস্বর্গ করে আল্লাহর দরবারে চলে গেছেন, আল্লাহ তাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন। শহীদরা মরে না। তারা আল্লাহর জীম্মায় জীবন্ত থাকে। এ সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের খোঁজ খবর নেন,কবর জিয়ারত করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এর আগে তিনি নাভারণ দারুল আমান ট্রাষ্টে ওলামা সম্মেলনে যোগদান করেন। পরে ২০১৬ সালে গুম হওয়া ইসলামি ছাত্র শিবিরে নেতা রেজোয়ানের বাড়িতে যান এবং খোঁজ খবর ও সমবেদনা জানান।

এসময় তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যু বরনকারী সকলে ন্যায় বিচার পাবেন বলে পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন। এবং গনঅভূ্থানে নিহত সকল পরিবারের সাথে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম আছে থাকবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, যশোরের জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম রসূল, সাবেক জেলা আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, জেলা জামায়াতের নেতা মাওলানা আবু জাফর, মাওঃ শিহাব উদ্দিন শার্শা থানা আমীর রেজাউল ইসলাম, সেক্রেটারী মাওলানা ইউসুফ আলী ও ঝিকরগাছা থানা আমীর মাওলানা আসাদুল আলম প্রমূখ।

Header Ad

বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে বিশনি পাহান (৫৫) নামের এক আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ময়না মোড় এলাকার ধানক্ষেত থেকে ওই নারীর হাতবাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিশনি পাহান উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের বেণুপুর গ্রামের সাধন পাহানের মেয়ে।

নিহতের ভাই চরকা পাহান বলেন, আমার ছোট বোনের স্বামী বিশনি পাহানকে ছেড়ে চলে গেছেন। সে প্রতিরাতেই নেশা করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার বাড়িতে থাকতো আমার বোন। আমার বোন এলাকায় মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শুক্রবার বিকেলে এলাকার এক ব্যক্তির জমিতে ধান কাটার কাজ শেষ করে আর বাড়িতে ফেরেননি। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে ধানক্ষেতে হাতবাঁধা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে আদিবাসী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে তাকে কে বা কাহারা হত্যা করেছে। তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল
শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি