শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩৭

নেই দেশের নাগরিক

“শুধু কী আর এই ত্রিপলে জমে থাকা পানি, ক্ষমতা থাকলে আস্ত ‘আশ্বিনের ঝড়’টাকেই গুলি করে মেরে ফেলতাম। সর্বনেশে ঝড় কোত্থেকে এসে চালচুলোহীন অসহায় মানুষগুলোকে জানের নাজেহাল করে দিয়ে গেল! কত মানুষ যে মাটিতে মিশে গেল তার ইয়ত্তা নেই!” মুখটা ক্ষোভে হিংসায় দীর্ণ হয়ে ওঠে সাদ্দামের। রাইফেলের নলটাকে আরও একবার খোঁচা দিয়ে বলল, “বুলেটের নলই তো এখন আমাদের একমাত্র সম্বল। ক্ষমতার উৎস। পেটে ভাত থাক না থাক, হাতে রাইফেল থাকলেই হলো। ওতেই সব খিদে মারা পড়বে। এই বন্দুকের নলের মাথা দিয়েই তো আসবে আমাদের নিজস্ব দেশ। স্বাধীন ভিটে।“
“সে পথের শেষ যে কোথায় কে জানে!“ উদাস হয়ে ওঠে আতিফ।
“পথ খাটো না দীর্ঘ, সেসবও তো ঠিক করে দেবে এই বন্দুকের নল।“ রাইফেলটার নলটা দেখিয়ে বলল সাদ্দাম। তারপর রাইফেলটাকে আগের গোপন জায়গায় রেখে দিয়ে সাদ্দাম বলল, “আতিফ, তোর ‘ইন্টারন্যাশনাল কানেকশন’এর কী খবর?”
“এখন কিছুটা থমকে গেছে।“
“কেন!” অবাক চোখে তাকায় সাদ্দাম।
“কেন বলতে ইউনিটে বাঁধা। আমাকে এখন ওসব বাদ দিয়ে অন্য কাজে বেশি সময় ব্যয় করতে হচ্ছে।“
“এ জন্যে কে কলকাঠি নাড়ছেন? আর জে এফ’এর কেউ না অন্য কোনো ইউনিটের কেউ?”
“আইএসআই। আইএসআই মায়ানমার পার্লামেন্ট আক্রমণের জন্যে ‘স্মাইলিং ইব্রাহিম’ নামের এক নতুন প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। আর এর দায়িত্বে রয়েছেন আইএসআই’এর জুনিয়ার ফিল্ড ব্রাঞ্চ অফিসার লেফটেন্যান্ট মজিদ ভাট। এই প্রজেক্টের দায়িত্ব আমার ঘাড়ে ন্যস্ত করেছেন। আমাকে এখন ‘স্মাইলিং ইব্রাহিম’ নিয়েই মাথা ঘামাতে হচ্ছে। আমাদের তো কিচ্ছু করার নেই। আমরা তো পাশার ঘুটি মাত্র। যেভাবে চালবেন, সেভাবে চলতে হবে।“ আতিফের কথায় আক্ষেপ ঝরে পড়ে।
“কিন্তু, তুই তো ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনশিপের কাজটা ভালোই করছিলি। ওতে তো আমাদের পক্ষে ভালোই সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল। সু চি’র উপর তো ভালোই আন্তর্জাতিক চাপ আসতে শুরু করেছিল।“

‘ওঁর শান্তির নোবেল প্রাইজটা ফিরিয়ে নেওয়ার দাবিটা কেবলই জোরালো হচ্ছিল। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহল থেকে চাপও আসতে শুরু করেছে। আমি মনপ্রাণ দিয়ে এই কাজটাই করতে চাইছিলাম, সু চি যে একজন ভেকধারিনী শান্তির নেত্রি, সে মুখোশটা খুলে দিতে চাইছিলাম। কিন্তু আমাকে ওকাজ থেকে বিরত করে রাখা হলো। আমাকে এখন আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে কাজ করতে হচ্ছে।“
“অং সান সু চি যে কট্টর ইসলাম বিরোধী বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু আর সামরিক জান্তার অঙ্গুলিহেলনেই কাজ করছেন, সেটা কিছুটা হলেও আন্তর্জাতিক মহল আঁচ করতে পারছেন। তাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, সু চি অহিংস মতবাদে বিশ্বাসী হওয়া সত্ত্বেও, শান্তিতে নোবেল প্রাইজ পাওয়া সত্ত্বেও, রোহিঙ্গা গণহত্যা সম্বন্ধে কেন কোনো উচ্চবাচ্চ করছেন না? কেন সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে একটাও টু শব্দ ব্যয় করছেন না? তাঁর চোখের সামনে এই নৃশংস গণহত্যা অহরহ ঘটা সত্ত্বেও কীভাবে তিনি চুপ থাকছেন? অনেকেই বুঝে গেছেন, তাঁর মুখে বুদ্ধের ভড়ং আর মনে কার্তুজের চারণ।”
“উল্টে তিনি রোহিঙ্গাদের ঘাড়েই দোষ চাপাচ্ছেন! বলছেন, রোহিঙ্গারা নাকি জঙ্গি! রোহিঙ্গারা নাকি তাঁর দেশের পক্ষে বিপদ!”
“তিনি যে তলে তলে ‘রোহিঙ্গা খ্যাদাও অভিযান’এর মূল চক্রী, তা মনে হয় কেউ জানেন না। আরে রোহিঙ্গারা জঙ্গি হলেও তো তোমাদের দোষেই হয়েছে, নাকি? তুমি ঘরবাড়ি ভেঙে গুড়িয়ে পুড়িয়ে দেশ থেকে মেরে ধরে তাড়িয়ে দেবে, ধরে ধরে কচু কাটা করে কাটবে, আর আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মরব? তুমি আমার বংশ, আমার জাত, আমার ধর্ম নিশ্চিহ্ন করে দেবে, আর আমি বীণা হাতে গান করব? চুলের মুঠি আমরাও ধরতে জানি। আমরাও জানি বন্দুকের নলকে কীভাবে কথা বলাতে হয়।“ গায়ের রগ টানটান হয়ে ওঠে সাদ্দামের।
“আমরা বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমে রাষ্ট্রসংঘে দাবি তোলার চেষ্টা করেছিলাম, রাখাইন আমাদের আদিপুরুষের ভিটে। আমাদের পূর্বপুরুষরা যুগযুগ ধরে এদেশে বাস করে আসছেন। আমরা ইতিহাসের দলিলও পেশ করেছিলাম। কিন্তু সু চি’র সরকার সেসব মেনে নেয়নি। আর এসবের পেছনে ইন্ধন জোগাচ্ছে চীন।“
“রাষ্ট্রসংঘ তো আমাদের দাবি মেনে নিয়েছেন। তাঁরা তো জোর গলায় বলে দিয়েছেন, সমস্ত রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফিরিয়ে নিতে হবে।“
“কিন্তু, জাঁদরেল মিয়ানমার সরকার কি সে দাবি এত সহজে মেনে নেবে? আদৌ মেনে নেবে না। এই তো সেদিন পাকিস্তান ঘুরে এলাম। পাকিস্তানও আমাদের দাবি মেনে নিয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার প্রধানমন্ত্রীও আমাদের পক্ষে জোরাল সওয়াল করেছেন। এমনকি রাষ্ট্রসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতও বলেছেন, সু চি’র এবার ঘুম ভাঙা দরকার। কিন্তু মায়ানমার সেনা আর সু চি, সেদিকে বিন্দুমাত্র কর্ণপাত না করে লাগাতার রোহিঙ্গা নিধন করেই যাচ্ছেন! তাঁদের এত সহজে জব্দ করা যাবে না।“
“সেজন্যেই তো হাতে বন্দুক তুলে নেওয়া। বাঁকা ঘাড়কে কীভাবে সোজা করতে হয়, সেটা একমাত্র বন্দুকের নলই জানে।“ সাদ্দামের কণ্ঠে বারুদ জ্বলে ওঠে। আতিফ সে বারুদে ঘি ঢালে, “বন্দুকের জবাব বন্দুকই দেবে। গোটা মিয়ানমারকে বার্মিজ সেনাদের কবর বানিয়েই ছাড়ব। সু চি ও টের পাবেন, হিংসা কাকে বলে। মৃত্যুযন্ত্রণা কী। ধ্বংসের ভয়াবহ রূপ কেমন। একবার আগুনে ভস্ম হওয়া ছাই, দ্বিতীয়বার আগুনে পুড়লে কী বীভৎস হতে পারে।“

বাইরের হিমঠান্ডা বাতাস ঝিরঝির করে ভেতরে ঢুকছে। বৃষ্টি প্রায় থামার মুখে। ছেড়ে যাওয়ার আগে ময়দা চালার মতো করে গুঁড়িগুঁড়ি করে ঝরছে। চরাচরের ক্যানভাসে দিয়ে যাচ্ছে শেষ তুলির টান। ত্রিপলের চাটায় ঘেরা ঘরের বাহিরটা যত ঠান্ডা ভেতরটা ততই গরম। আতিফ ও সাদ্দাম দুজনেই এখন তেতে ‘টং’ হয়ে গেছে। যেন ফুলকি ওঠার আগের তপ্ত বারুদ।
“ঝড়টা এবার থামল মনে হয়।“আতিফ জানালায় মুখ বাড়াল। সাদ্দাম বলল, “আমেরিকা কী বলছে? তুই তো রাষ্ট্রসংঘে ওদের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও কথা বলেছিস?”
“ওদেরও একসুর। আমেরিকা চায়, মায়ানমার রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরাক।“
“এত আন্তর্জাতিক চাপ সহ্য করেও সু চি’র সরকার মুখে কুলুপ এঁটে ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে বসে আছে!”
“শুধু কী কুলুপ, মুখে ঠুসি, চোখে ঠুলি আর কানে তুলো গুঁজে বসে আছে। এদের না আছে হৃদয় না আছে মন। এরা মানুষ খেকো দানব। পিশাচ অসুর। মুখে এদের নাম নেওয়াও পাপ।“ মনে মনে খিস্তি দিতে দিতে উন্মুক্ত দরজাটা দিয়ে বাইরে বেরিয়ে এল আতিফ। আকাশ রঙ বদলাতে শুরু করেছে। মোষের মতো কালো মেঘটা কেটে নীল বুকে একটা একটা করে ফুটছে তারা। আতিফ আকাশে একটা একটা করে যেই তারা ফুটতে দেখছে, আর অমনি কষ্টের ফাঁক দিয়ে ঠিকরানো আনন্দ তার মনে উতলে উঠছে। ভাবছে, মতিভাইরাও নিশ্চয় এতক্ষণে নিজেদের সামলে উঠছে। আমাদের নৌকোটা আবারও বৈঠা ঠেলে ভাসতে শুরু করেছে। আতিফ, আবারও মেঘ কেটে কেটে যাওয়া আকাশের দিকে তাকিয়ে ফিসফিস করে বলল, “একটাই আকাশ অথচ কত তার রঙ কত তার ঢং!”
“মানুষের মনও তো এই বদলে বদলে যাওয়া আকাশের মতোই।“ পেছনে এসে দাঁড়াল সাদ্দাম।
“হ্যাঁ, ঠিকই বলেছিস।“ মাথা নড়াল আতিফ।
“সত্যি মানুষের মন মাপা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। কখন যে কীভাবে বদলে যায়, তা মনে হয় শরীরও জানতে পারে না!”
“আমার মনে হয়, শুধু আকাশ নয়, মানুষের মনে একটা গিরগিটিও থাকে। মুহূর্তে বদলে নেয় রঙ। এই যেমন আমাদের নেত্রী সু চি, বহির্বিশ্বে একরূপ আর নিজের দেশে আরেক রূপ! ক্ষমতায় থাকলে এক চরিত্র আর ক্ষমতায় না থাকলে আরেক চরিত্র!”
“আসলে মানুষ বিরোধী আসনে থাকলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে যতটা হম্বিতম্বি করে, নেকড়ের মতো হামলায়, গর্জায়, ক্ষমতায় এলে ঠিক ততটায় ‘বিড়াল’ হয়ে যায়! তখন ওই যে বললি না, মুখে ঠুসি, চোখে ঠুলি পরে আর কানে তুলো গুঁজে বসে থাকা আর কী।“ সাদ্দাম ভেজা গামছাটা পাক দিয়ে চিপতে চিপতে বলল। আতিফ জিজ্ঞেস করল, “এখন বেরোনো যাই না?”
“কোথায়!” সাদ্দামের চোখে বিস্ময়।
“নাফ নদীতে। মোহনার দিকে।“
“এখন! তোর মাথা সত্যি গেছে!”
“কেন? এখন কী সমস্যা? ঝড়-বৃষ্টি তো থেমে গেছে। আকাশে তারাও ফুটতে শুরু করেছে।“
“শুধু তারা ফুটলেই হবে? মানুষের চোখ ফুটতেও তো হবে। যাদেরকে হাত করে স্পিডবোট ম্যানেজ করব, তারা যে এখন ঘুমিয়ে কাদা। হাত আর পা নিয়ে তো আর যাওয়া যাবে না? নদীর ব্যাপার। পানির ব্যাপার। এ তো আর গাছের ফল না যে হাত বাড়ালেই পাওয়া যাবে?“
“কিন্তু এখন গেলেই ভালো হতো রে। ঝড়-বৃষ্টিতে কী যে হলো, কিছুই তো বুঝতে পারছি নে।“ দুশ্চিন্তা দানা বাঁধছে আতিফের মনে। সে আশঙ্কা করছে, যে গতিতে ঝড়-বৃষ্টিটা হলো, তাতে আব্বাদের নৌকোটা কি আদৌ জলে ভেসে থাকতে পেরেছে? এই দুর্যোগে জান নিয়ে বেঁচে আছে? ঝড় যা বলছে, তাতে তাদের টিকে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। স্রোতে উল্টে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। আব্বার শেষ ইচ্ছেটা মনে হয় আর পূরণ হলো না! আকাশের কালো মেঘ যত কেটে যাচ্ছে, মনে আশংকার কালো মেঘ তত জমছে আতিফের। আর একদণ্ডও মন টিকছে না এখানে। মন শুধু ‘আব্বা-মা, ভাই-ভাবি’ গাহাচ্ছে।
“ওঁরা নিশ্চয় মেঘ দেখে পাড়ে নৌকো ভিড়াবেন। যদি নৌকো পার ঘেষা থাকে, তাহলে কিচ্ছু হবে না।“ বলল সাদ্দাম।

চলবে...

আগের পর্ব পড়ুন

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

এসএন  

Header Ad
Header Ad

খিলগাঁওয়ের আগুনে পুড়ে ছাই ২০টি দোকান ও দুটি স’মিল

ছবিঃ সংগৃহীত

রাজধানীর খিলগাঁওয়ের তালতলা মার্কেটের পাশের একটি স’মিলে শুক্রবার রাত ৭টা ৩০ মিনিটে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। পরে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট ৯টা ৩৫ মিনিটে এই আগুন নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়। আগুনে প্রায় ২০টি দোকান ও দুটি স’মিল পুড়ে গেছে।

আগুন নিয়ন্ত্রণের পর ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশনস) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, কেমিক্যাল ড্রাম বিস্ফোরণে স’মিলে লাগা আগুন চারদিক ছড়িয়ে পড়ে।

তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘খিলগাঁওয়ের আগুনে আনুমানিক ২০টি দোকান এবং দুটি স মিল পুড়েছে। আগুনে হয়তো কেমিক্যাল ড্রাম বিস্ফোরিত হয়েছে; যার ফলে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আমাদের নয়টি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে আরো চারটি ইউনিট ছিল, তবে সেগুলোকে কাজ করতে হয়নি।

লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আগুনে কেউ নিখোঁজ রয়েছে এমন কোনো সংবাদ আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত আসেনি। এ ছাড়া আমরা এখন পর্যন্ত আহত ও নিহতের কোনো সংবাদ পাইনি।’

আগুনের উৎসটি কি ছিল প্রাথমিকভাবে জানা গেছে কিনা প্রশ্ন করা হলে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এই মুহূর্তে এ বিষয়ে বলা যাবে না তদন্ত ছাড়া। সিগারেটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে নাকি স্যাবোটেজ হয়েছে— এই প্রত্যেকটা বিষয়ে আমাদের তদন্ত করে দেখতে হবে।

অনেকগুলো সোর্স থেকে আগুনের সৃষ্টি হতে পারে। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকেও আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তাই তদন্ত ছাড়া এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না।’
এদিকে, দুই ঘণ্টা ধরে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ জানান, ‘শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সেখানে আগুন লাগার খবর পাই।

প্রথমে আমাদের দুটি ইউনিট কাজ শুরু করে। পরে আরো সাতটি ইউনিট যোগ দেয়। এরপর রাত ৯টা ৩৫ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন লাগার পরে ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা করতে ছুটে আসেন সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‍্যাবের সদস্যরা।’

তবে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স মিল থেকে আগুন গাড়ির গ্যারেজে ছড়িয়ে পড়ে। পরে গ্যারেজে থাকা বিভিন্ন গাড়িতে আগুন লেগে সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়। এ সময় আশপাশের মানুষ ছোটাছুটি করতে থাকে। উৎসুক জনতার ভিড়ে ফায়ার সার্ভিসকে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেশ বেগ পেতে হয়।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান, ওই এলাকায় একটি গাড়ির গ্যারেজ ও রাবারের কাঁচামালের গোডাউন রয়েছে। কিছু গাড়ি বের করা সম্ভব হলেও অনেক গাড়ি পুড়ে গেছে।

খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দাউদ হোসেন বলেন, ‘ওই স মিল খিলগাঁও থানার কাছেই। পাশের একটি গাড়ির গ্যারেজেও আগুন ছড়িয়েছে। ক্রাউডের কারণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছিল।

 

Header Ad
Header Ad

পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার  

ব্যবসায়ী আবুল বাসার ওরফে মিন্টু। ছবিঃ সংগৃহীত

রাজশাহী নগরীর পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো একটি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকালে নগরীর লালন শাহ মুক্তমঞ্চ সংলগ্ন এলাকার কাশবন থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণা, হত্যা করে কাশবনে ফেলে দেওয়া হয়েছে লাশটি।

নিহত ব্যক্তির নাম আবুল বাসার ওরফে মিন্টু (৩৫)। পেশায় ব্যবসায়ী মিন্টু নগরীর মির্জাপুর পূর্বপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। বিনোদপুর বাজারে তার ইলেকট্রিক ব্যবসার দোকান আছে।

নগরীর রাজপাড়া থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম জানান, কাশবনে ঘুরতে আসা কয়েকজন লাশটি দেখে পুলিশে খবর দেয়। ঘুরতে আসা অনেকে লাশের ছবিটি সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে শেয়ার করে। জানাজানির পর নিহতের পরিবার ঘটনাস্থলে এসে লাশটি শনাক্ত করে।

আশরাফুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে মিন্টুর খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার। কাশবনে তার মুখ পলিথিন দিয়ে ঢাকা ছিল। পলিথিনের ওপর স্কচটেপ প্যাঁচানো ছিল।

ওসি আরও বলেন, ‘আলামত দেখে মনে হয়েছে এটি হত্যাকাণ্ড। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে হত্যা মামলা হবে।’

Header Ad
Header Ad

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত

ওমানের মাসকটে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ওমানের রাজধানী মাস্কাটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার ( ২১ ফেব্রুয়ারি) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ভারত- বাংলাদেশের মধ্যকার উক্ত বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

তিনি বলেন, মাস্কাটে ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার সবাই জানে কোন দেশ ও তার কী ধরনের কর্মকাণ্ড সার্ককে কোণঠাসা করে রেখেছে। তৌহিদ হোসেনকে জয়শঙ্কর এ কথাও বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের স্বাভাবিকীকরণ করাটা বাংলাদেশের উচিত নয়।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের কোনো কোনো উপদেষ্টার কিছু কিছু মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। জবাবে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ভারত এসব মন্তব্য নজরে রেখেছে। ওই ধরনের মন্তব্য ও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজকর্মে তার প্রভাব–প্রতিক্রিয়ার বিষয়ও ভারতের গোচরে রয়েছে।

তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্য অবশ্যই সহায়ক নয়। এর প্রতিক্রিয়া কী, তা তাদেরই ভেবে দেখা দরকার।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালকদের বৈঠক সদ্য শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, বাংলাদেশে ৫ আগস্টের পালাবদলের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত, মিডিয়ার সৃষ্টি।

এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে জয়সোয়াল বলেন, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কী হয়েছে, সে বিষয়ে সবাই অবগত। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ বারবার প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্রকেও এ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খিলগাঁওয়ের আগুনে পুড়ে ছাই ২০টি দোকান ও দুটি স’মিল
পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার  
সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত
জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  
একুশে টিভির জিডি, কর্মচারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে জামায়াত  
আফ্রিকার রানের চাপে বড় ব্যবধানে হারলো আফগানিস্তান
আগামীকাল দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে
অপারেশন ডেভিল হান্ট: ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ৪৬১
খিলগাঁওয়ে স-মিলে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পশ্চিম তীরে নতুন করে হামলার নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
মেসির অটোগ্রাফ চেয়ে শাস্তি পেলেন রেফারি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে হয়নি দুই বাংলার মিলন মেলা
মাতৃভাষার গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে যা বললেন ড. ইউনূস
চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: তিন দিন পর মামলা, আতঙ্কে যাত্রীরা
বিপ্লবের আত্মত্যাগ উন্নত বাংলাদেশের পথে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে : পররাষ্ট্রসচিব
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে আওয়ামী সরকারের পতনের কারণ উদঘাটন
চ্যাম্পিয়নশিপের দল শেফিল্ডে মাসে ৪০ কোটি টাকা বেতন পাবেন হামজা চৌধুরী
পবিপ্রবিতে আবাসিক হলগুলোর নাম পরিবর্তন, মুছে ফেলা হলো শেখ পরিবারের নাম