বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩৭

নেই দেশের নাগরিক

“শুধু কী আর এই ত্রিপলে জমে থাকা পানি, ক্ষমতা থাকলে আস্ত ‘আশ্বিনের ঝড়’টাকেই গুলি করে মেরে ফেলতাম। সর্বনেশে ঝড় কোত্থেকে এসে চালচুলোহীন অসহায় মানুষগুলোকে জানের নাজেহাল করে দিয়ে গেল! কত মানুষ যে মাটিতে মিশে গেল তার ইয়ত্তা নেই!” মুখটা ক্ষোভে হিংসায় দীর্ণ হয়ে ওঠে সাদ্দামের। রাইফেলের নলটাকে আরও একবার খোঁচা দিয়ে বলল, “বুলেটের নলই তো এখন আমাদের একমাত্র সম্বল। ক্ষমতার উৎস। পেটে ভাত থাক না থাক, হাতে রাইফেল থাকলেই হলো। ওতেই সব খিদে মারা পড়বে। এই বন্দুকের নলের মাথা দিয়েই তো আসবে আমাদের নিজস্ব দেশ। স্বাধীন ভিটে।“
“সে পথের শেষ যে কোথায় কে জানে!“ উদাস হয়ে ওঠে আতিফ।
“পথ খাটো না দীর্ঘ, সেসবও তো ঠিক করে দেবে এই বন্দুকের নল।“ রাইফেলটার নলটা দেখিয়ে বলল সাদ্দাম। তারপর রাইফেলটাকে আগের গোপন জায়গায় রেখে দিয়ে সাদ্দাম বলল, “আতিফ, তোর ‘ইন্টারন্যাশনাল কানেকশন’এর কী খবর?”
“এখন কিছুটা থমকে গেছে।“
“কেন!” অবাক চোখে তাকায় সাদ্দাম।
“কেন বলতে ইউনিটে বাঁধা। আমাকে এখন ওসব বাদ দিয়ে অন্য কাজে বেশি সময় ব্যয় করতে হচ্ছে।“
“এ জন্যে কে কলকাঠি নাড়ছেন? আর জে এফ’এর কেউ না অন্য কোনো ইউনিটের কেউ?”
“আইএসআই। আইএসআই মায়ানমার পার্লামেন্ট আক্রমণের জন্যে ‘স্মাইলিং ইব্রাহিম’ নামের এক নতুন প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। আর এর দায়িত্বে রয়েছেন আইএসআই’এর জুনিয়ার ফিল্ড ব্রাঞ্চ অফিসার লেফটেন্যান্ট মজিদ ভাট। এই প্রজেক্টের দায়িত্ব আমার ঘাড়ে ন্যস্ত করেছেন। আমাকে এখন ‘স্মাইলিং ইব্রাহিম’ নিয়েই মাথা ঘামাতে হচ্ছে। আমাদের তো কিচ্ছু করার নেই। আমরা তো পাশার ঘুটি মাত্র। যেভাবে চালবেন, সেভাবে চলতে হবে।“ আতিফের কথায় আক্ষেপ ঝরে পড়ে।
“কিন্তু, তুই তো ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনশিপের কাজটা ভালোই করছিলি। ওতে তো আমাদের পক্ষে ভালোই সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল। সু চি’র উপর তো ভালোই আন্তর্জাতিক চাপ আসতে শুরু করেছিল।“

‘ওঁর শান্তির নোবেল প্রাইজটা ফিরিয়ে নেওয়ার দাবিটা কেবলই জোরালো হচ্ছিল। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহল থেকে চাপও আসতে শুরু করেছে। আমি মনপ্রাণ দিয়ে এই কাজটাই করতে চাইছিলাম, সু চি যে একজন ভেকধারিনী শান্তির নেত্রি, সে মুখোশটা খুলে দিতে চাইছিলাম। কিন্তু আমাকে ওকাজ থেকে বিরত করে রাখা হলো। আমাকে এখন আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে কাজ করতে হচ্ছে।“
“অং সান সু চি যে কট্টর ইসলাম বিরোধী বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু আর সামরিক জান্তার অঙ্গুলিহেলনেই কাজ করছেন, সেটা কিছুটা হলেও আন্তর্জাতিক মহল আঁচ করতে পারছেন। তাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, সু চি অহিংস মতবাদে বিশ্বাসী হওয়া সত্ত্বেও, শান্তিতে নোবেল প্রাইজ পাওয়া সত্ত্বেও, রোহিঙ্গা গণহত্যা সম্বন্ধে কেন কোনো উচ্চবাচ্চ করছেন না? কেন সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে একটাও টু শব্দ ব্যয় করছেন না? তাঁর চোখের সামনে এই নৃশংস গণহত্যা অহরহ ঘটা সত্ত্বেও কীভাবে তিনি চুপ থাকছেন? অনেকেই বুঝে গেছেন, তাঁর মুখে বুদ্ধের ভড়ং আর মনে কার্তুজের চারণ।”
“উল্টে তিনি রোহিঙ্গাদের ঘাড়েই দোষ চাপাচ্ছেন! বলছেন, রোহিঙ্গারা নাকি জঙ্গি! রোহিঙ্গারা নাকি তাঁর দেশের পক্ষে বিপদ!”
“তিনি যে তলে তলে ‘রোহিঙ্গা খ্যাদাও অভিযান’এর মূল চক্রী, তা মনে হয় কেউ জানেন না। আরে রোহিঙ্গারা জঙ্গি হলেও তো তোমাদের দোষেই হয়েছে, নাকি? তুমি ঘরবাড়ি ভেঙে গুড়িয়ে পুড়িয়ে দেশ থেকে মেরে ধরে তাড়িয়ে দেবে, ধরে ধরে কচু কাটা করে কাটবে, আর আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মরব? তুমি আমার বংশ, আমার জাত, আমার ধর্ম নিশ্চিহ্ন করে দেবে, আর আমি বীণা হাতে গান করব? চুলের মুঠি আমরাও ধরতে জানি। আমরাও জানি বন্দুকের নলকে কীভাবে কথা বলাতে হয়।“ গায়ের রগ টানটান হয়ে ওঠে সাদ্দামের।
“আমরা বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমে রাষ্ট্রসংঘে দাবি তোলার চেষ্টা করেছিলাম, রাখাইন আমাদের আদিপুরুষের ভিটে। আমাদের পূর্বপুরুষরা যুগযুগ ধরে এদেশে বাস করে আসছেন। আমরা ইতিহাসের দলিলও পেশ করেছিলাম। কিন্তু সু চি’র সরকার সেসব মেনে নেয়নি। আর এসবের পেছনে ইন্ধন জোগাচ্ছে চীন।“
“রাষ্ট্রসংঘ তো আমাদের দাবি মেনে নিয়েছেন। তাঁরা তো জোর গলায় বলে দিয়েছেন, সমস্ত রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফিরিয়ে নিতে হবে।“
“কিন্তু, জাঁদরেল মিয়ানমার সরকার কি সে দাবি এত সহজে মেনে নেবে? আদৌ মেনে নেবে না। এই তো সেদিন পাকিস্তান ঘুরে এলাম। পাকিস্তানও আমাদের দাবি মেনে নিয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার প্রধানমন্ত্রীও আমাদের পক্ষে জোরাল সওয়াল করেছেন। এমনকি রাষ্ট্রসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতও বলেছেন, সু চি’র এবার ঘুম ভাঙা দরকার। কিন্তু মায়ানমার সেনা আর সু চি, সেদিকে বিন্দুমাত্র কর্ণপাত না করে লাগাতার রোহিঙ্গা নিধন করেই যাচ্ছেন! তাঁদের এত সহজে জব্দ করা যাবে না।“
“সেজন্যেই তো হাতে বন্দুক তুলে নেওয়া। বাঁকা ঘাড়কে কীভাবে সোজা করতে হয়, সেটা একমাত্র বন্দুকের নলই জানে।“ সাদ্দামের কণ্ঠে বারুদ জ্বলে ওঠে। আতিফ সে বারুদে ঘি ঢালে, “বন্দুকের জবাব বন্দুকই দেবে। গোটা মিয়ানমারকে বার্মিজ সেনাদের কবর বানিয়েই ছাড়ব। সু চি ও টের পাবেন, হিংসা কাকে বলে। মৃত্যুযন্ত্রণা কী। ধ্বংসের ভয়াবহ রূপ কেমন। একবার আগুনে ভস্ম হওয়া ছাই, দ্বিতীয়বার আগুনে পুড়লে কী বীভৎস হতে পারে।“

বাইরের হিমঠান্ডা বাতাস ঝিরঝির করে ভেতরে ঢুকছে। বৃষ্টি প্রায় থামার মুখে। ছেড়ে যাওয়ার আগে ময়দা চালার মতো করে গুঁড়িগুঁড়ি করে ঝরছে। চরাচরের ক্যানভাসে দিয়ে যাচ্ছে শেষ তুলির টান। ত্রিপলের চাটায় ঘেরা ঘরের বাহিরটা যত ঠান্ডা ভেতরটা ততই গরম। আতিফ ও সাদ্দাম দুজনেই এখন তেতে ‘টং’ হয়ে গেছে। যেন ফুলকি ওঠার আগের তপ্ত বারুদ।
“ঝড়টা এবার থামল মনে হয়।“আতিফ জানালায় মুখ বাড়াল। সাদ্দাম বলল, “আমেরিকা কী বলছে? তুই তো রাষ্ট্রসংঘে ওদের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও কথা বলেছিস?”
“ওদেরও একসুর। আমেরিকা চায়, মায়ানমার রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরাক।“
“এত আন্তর্জাতিক চাপ সহ্য করেও সু চি’র সরকার মুখে কুলুপ এঁটে ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে বসে আছে!”
“শুধু কী কুলুপ, মুখে ঠুসি, চোখে ঠুলি আর কানে তুলো গুঁজে বসে আছে। এদের না আছে হৃদয় না আছে মন। এরা মানুষ খেকো দানব। পিশাচ অসুর। মুখে এদের নাম নেওয়াও পাপ।“ মনে মনে খিস্তি দিতে দিতে উন্মুক্ত দরজাটা দিয়ে বাইরে বেরিয়ে এল আতিফ। আকাশ রঙ বদলাতে শুরু করেছে। মোষের মতো কালো মেঘটা কেটে নীল বুকে একটা একটা করে ফুটছে তারা। আতিফ আকাশে একটা একটা করে যেই তারা ফুটতে দেখছে, আর অমনি কষ্টের ফাঁক দিয়ে ঠিকরানো আনন্দ তার মনে উতলে উঠছে। ভাবছে, মতিভাইরাও নিশ্চয় এতক্ষণে নিজেদের সামলে উঠছে। আমাদের নৌকোটা আবারও বৈঠা ঠেলে ভাসতে শুরু করেছে। আতিফ, আবারও মেঘ কেটে কেটে যাওয়া আকাশের দিকে তাকিয়ে ফিসফিস করে বলল, “একটাই আকাশ অথচ কত তার রঙ কত তার ঢং!”
“মানুষের মনও তো এই বদলে বদলে যাওয়া আকাশের মতোই।“ পেছনে এসে দাঁড়াল সাদ্দাম।
“হ্যাঁ, ঠিকই বলেছিস।“ মাথা নড়াল আতিফ।
“সত্যি মানুষের মন মাপা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। কখন যে কীভাবে বদলে যায়, তা মনে হয় শরীরও জানতে পারে না!”
“আমার মনে হয়, শুধু আকাশ নয়, মানুষের মনে একটা গিরগিটিও থাকে। মুহূর্তে বদলে নেয় রঙ। এই যেমন আমাদের নেত্রী সু চি, বহির্বিশ্বে একরূপ আর নিজের দেশে আরেক রূপ! ক্ষমতায় থাকলে এক চরিত্র আর ক্ষমতায় না থাকলে আরেক চরিত্র!”
“আসলে মানুষ বিরোধী আসনে থাকলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে যতটা হম্বিতম্বি করে, নেকড়ের মতো হামলায়, গর্জায়, ক্ষমতায় এলে ঠিক ততটায় ‘বিড়াল’ হয়ে যায়! তখন ওই যে বললি না, মুখে ঠুসি, চোখে ঠুলি পরে আর কানে তুলো গুঁজে বসে থাকা আর কী।“ সাদ্দাম ভেজা গামছাটা পাক দিয়ে চিপতে চিপতে বলল। আতিফ জিজ্ঞেস করল, “এখন বেরোনো যাই না?”
“কোথায়!” সাদ্দামের চোখে বিস্ময়।
“নাফ নদীতে। মোহনার দিকে।“
“এখন! তোর মাথা সত্যি গেছে!”
“কেন? এখন কী সমস্যা? ঝড়-বৃষ্টি তো থেমে গেছে। আকাশে তারাও ফুটতে শুরু করেছে।“
“শুধু তারা ফুটলেই হবে? মানুষের চোখ ফুটতেও তো হবে। যাদেরকে হাত করে স্পিডবোট ম্যানেজ করব, তারা যে এখন ঘুমিয়ে কাদা। হাত আর পা নিয়ে তো আর যাওয়া যাবে না? নদীর ব্যাপার। পানির ব্যাপার। এ তো আর গাছের ফল না যে হাত বাড়ালেই পাওয়া যাবে?“
“কিন্তু এখন গেলেই ভালো হতো রে। ঝড়-বৃষ্টিতে কী যে হলো, কিছুই তো বুঝতে পারছি নে।“ দুশ্চিন্তা দানা বাঁধছে আতিফের মনে। সে আশঙ্কা করছে, যে গতিতে ঝড়-বৃষ্টিটা হলো, তাতে আব্বাদের নৌকোটা কি আদৌ জলে ভেসে থাকতে পেরেছে? এই দুর্যোগে জান নিয়ে বেঁচে আছে? ঝড় যা বলছে, তাতে তাদের টিকে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। স্রোতে উল্টে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। আব্বার শেষ ইচ্ছেটা মনে হয় আর পূরণ হলো না! আকাশের কালো মেঘ যত কেটে যাচ্ছে, মনে আশংকার কালো মেঘ তত জমছে আতিফের। আর একদণ্ডও মন টিকছে না এখানে। মন শুধু ‘আব্বা-মা, ভাই-ভাবি’ গাহাচ্ছে।
“ওঁরা নিশ্চয় মেঘ দেখে পাড়ে নৌকো ভিড়াবেন। যদি নৌকো পার ঘেষা থাকে, তাহলে কিচ্ছু হবে না।“ বলল সাদ্দাম।

চলবে...

আগের পর্ব পড়ুন

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

এসএন  

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া