শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১৪

স্নানের শব্দ

কয়েকদিন ধরে সকাল হলেই চারিদিক অন্ধকার করে বৃষ্টি নামছে। নিজের গাড়িতে বসে অসহ্য যানজটে আটকে থেকে ঢাকা শহরের উপর হুড়মুড় করে ঝরে পড়া বৃষ্টি উপভোগ করা হয়তো কবি কালিদাসের পক্ষে সম্ভব, কিন্তু শবনমের মতো কাঠখোট্টা বেরসিক মানুষদের কাছে এর চেয়ে বিরক্তিকর আর কিছু নেই। এরমধ্যে আজ সকালে ড্রাইভার আয়নাল ফোন করে জানালো রাত থেকেই তার প্রচণ্ড জ্বর, গাড়ি নিয়ে বের হতে পারবে না। অফিসে ফোন করলে কিছুক্ষণের মধ্যে বদলি ড্রাইভার পাঠিয়ে দেবে অথবা তারেকের গাড়িতেও অফিসে যাওয়া যায় কিন্তু শবনম দেখল, তার নিজেরও শরীরটা কেমন ম্যাজম্যাজ করছে। মাথা, নাক, গলা ভারী হয়ে আছে।

পর পর বেশ কয়েকটা শক্তিশালী হাঁচিও দিয়ে ফেলল সে। আজকে অফিসে কোনো জরুরি মিটিং আছে কি না, গুরুত্বপূর্ণ কোনো ফাইল সই করতে হবে কি না মনে মনে একটু ভেবে নিল সে। যখন সে রকম কিছু মনে পড়ল না, তখন সিদ্ধান্ত নিল অফিসে না যাবার। তারেক তাকে প্রতি দিনের মতো অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হতে না দেখে খানিকটা অবাকই হলো। ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে স্ত্রীর দিকে তাকাল সে। ‘শরীরটা ভাল্লাগছে না। তাই ভাবলাম আজকের দিনটা একটু রেষ্ট নেই।’ শবনম বলে।

‘একি কথা শুনি আজ মন্থরার মুখে, তোমার আবার রেস্ট লাগে নাকি?’ তারেক রসিকতা করে বলে। তারপর যোগ করে, ‘তবে হ্যাঁ, বিশ্রাম নেওয়ার জন্য খুব সুন্দর দিন, কাঁথা মুড়ি দিয়ে আরাম করে ঘুমাও। শরীর ঠিক হয়ে যাবে।’

যদিও অসময়ে ঘুমানোর মানুষ নয় শবনম, তবু আজ কেন যেন তার সারা গায়ে আলসেমি এসে ভর করেছে। ফলে বিছানা ছেড়ে উঠল না সে। তারেকের বর্ষাপ্রীতি অপরিসীম। বৃষ্টির দিনগুলিতে সে এমনিতেই খুব উতলা হয়ে থাকে। আজকেও বৃষ্টির অজুহাতে কিছুক্ষণ গড়াগড়ি শেষে গড়িমসি করে নিতান্ত অনিচ্ছায় বিছানা ছাড়ল তারেক। আগে থেকেই এক ভিআইপি কাষ্টমারের সঙ্গে মিটিং সেট করা ছিল, নইলে এমন দিনে তাকে বাড়ির বাইরে বের করা একটা অসম্ভব ব্যাপার। তারপরও বের হওয়ার আগে ভেজা বারান্দায় বসে কিছুক্ষণ গরম চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে ‘আহা’, ‘উহু’ করে যুগপৎ চা ও বৃষ্টির স্বাদ আস্বাদন করল সে।

শ্রাবণ এখন ঘুমাচ্ছে, বেলা করে উঠে মাকে বাসায় দেখলে নিশ্চয়ই বাবার মতোই মেয়েও খুব অবাক হবে। সারাক্ষণই তো মাকে বলতে থাকে, তুমি কাজের চাপ একটু কমাও। ওয়ার্কোহলিক হয়ে গেছো একেবারে। কাজ না করে থাকতে পার না। নিজের দিকে একটু তাকাও, নিজের যত্ন নাও। যেন সেই শবনমের অভিভাবক। আসলে বাবা মার বয়স বাড়লে সন্তানরাই এক পর্যায়ে মা বাবা হয়ে যায়। নিজের পরাক্রমশালী মায়ের কথা মনে পড়ে শবনমের, শেষ দিকে কেমন শিশুর মতো অবুঝ হয়ে পড়েছিলেন তিনি।

দুপুর বারোটা বাজার পরও শ্রাবণ যখন ঘুম থেকে উঠল না, তখন শবনম নিজেই উঠে গিয়ে ওর দরজায় নক করল। দরজা খুলে মাকে দেখে শ্রাবণের চোখে রাজ্যের বিস্ময়, ‘আরে, তুমি অফিস থেকে এসে পড়েছ? এত তাড়াতাড়ি? ’
শবনম মৃদু হাসল, ‘যাইনি আজকে, ব্রেক নিলাম।’

‘গ্রেট ! জীবনে ব্রেকের দরকার আছে।’ বুড়ো মানুষের মতো মুখ করে বলল শ্রাবণ।
‘তোর জন্য বসে আছি, একসঙ্গে ব্রাঞ্চ করি চল...’ শবনম প্রস্তাব দেয়। শ্রাবণ মুখে ব্রাশ আর গায়ে তোয়ালে জড়িয়ে বাথরুমে ঢুকছিল। আধা ঘন্টা পর বেরুল পরিপাটি হয়ে, বাইরে বেরুবার জামা কাপড়, ফতুয়া জিন্স পরে।

‘সরি মা, আমি তো জানতাম না, তুমি বাসায় থাকবা ! আমার তো আগে থেকে প্রোগ্রাম ঠিক করা আছে, ক্লাবের মিটিং, সিনিয়র, জুনিয়র সবাই অপেক্ষা করছে। যাওয়াই লাগবে। ইশ্ আগে জানলে আমি ঠিক মিটিং ক্যানসেল করতাম, থাকতাম তোমার সঙ্গে।’
‘না, না ঠিক আছে। তুই যা! অসুবিধা নেই।’

শবনম নিজেকে সামলে নেয়। মাকে জড়িয়ে ধরে দুই গালে শব্দ করে চুমু খেয়ে তাড়াহুড়া করে বেরিয়ে যায় শ্রাবণ। যাবার আগে পাকা বুড়ির মতো উপদেশ দিয়ে যায়, ‘শোনো, এটা তোমার ‘মি টাইম’। নিজের মনের সঙ্গে কথা বলো, নয়তো গান শোনো, ইচ্ছা করলে বন্ধুদের সঙ্গে ফোনে কথাও বলতে পারো...’ বৃষ্টি শেষে চমৎকার রোদ উঠেছে এখন। ব্যালকনিতে টবে লাগানো গাছের সবুজ পাতাগুলো রোদের আলোতে তেঁতুল দিয়ে ধোয়া সবুজ পিতলের থালা বাটির মতো ঝক ঝক, চক চক করছে। পিতলের রং কি সবুজ হয়? একা বাড়িতে এমন উপমা মনে আসায় নিজের মনেই হাসল শবনম। সে তো জানেই পিতলের রং স্বর্ণালী, তবে সেই স্বর্ণের মধ্যে সবুজ আভা ছড়ালে যা হয় পাতাগুলো এখন সেরকম রূপ ধরেছে। স্বর্ণ-সবুজ রঙের ভেজা মসৃণ পাতাগুলোতে একটু হাত বুলালো শবনম। ছোট্ট শিশুর মতো মন ভালো হয়ে গেল তার।

অনেকদিন মৌসুমীর সঙ্গে কথা হয় না ভেবে ঘরে ঢুকে মোবাইলের বোতাম টিপতেই ওপাশ থেকে মৌসুমীর ব্যস্ত গলা শোনা গেল। হড়বড় করে সে যা বলল, তার সারমর্ম হচ্ছে আগামী মাসে একটা সাহিত্য সম্মেলনে যোগ দিতে কলকাতা যাচ্ছে মৌসুমী, এখন মহা ব্যস্ত ভিসা প্রসেস করার কাগজপত্র যোগাড় করা নিয়ে। শবনম আর ওর ব্যস্ততায় ব্যাঘাত ঘটানো সমীচীন মনে করল না।
এবার সময় কাটাতে একটু দোনামোনা করে সুরাইয়াকে ফোন দেয় শবনম।
‘কিরে, তুই তো কোনো খোঁজ খবরই রাখিস না, এত পর হয়ে গেলি!’

এই সেই হেন তেন বলে কিছুক্ষণ মধুর অনুযোগ করে সুরাইয়া। বলে, ব্যাংকের চাকরিটা ছেড়েই দিচ্ছে। ‘সেকি কেন? এখনো তো আরও চার পাঁচ বছর রিটায়ারমেন্টের বাকি..’ ‘আসলে ছাড়তে চাইনি, কিন্তু দেখ, বাগেরহাটে পাঠাতে চাইছে প্রমোশন দিয়ে, এই বয়সে, ঘর সংসার ফেলে গ্রামে গিয়ে পড়ে থাকা যায়, বল?’

‘বাচ্চারা তো বড়ই হয়ে গেছে, তোর আর পিছুটান কি, বল !’ ‘না, না, তুই বুঝবি না। আমার শরীর মন কোনটাই আর চাকরি বাকরি করতে চাচ্ছে না, অনেক তো করলাম, এবার সব ছেড়ে ছুড়ে থিতু হয়ে বসি। আর ছোটাছুটি ভাল্লাগে না।’

সুরাইয়ার মতো তারও কি থিতু হয়ে বসার সময় এসে গেছে, ভাবে শবনম। অফিসের কথা মনে পড়ে তার, নাহ, যে রেস সে শুরু করেছে, তা তো এখনো শেষ হয়নি। পেশাগতভাবে প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ চূড়ায় এখনো পৌঁছানো হয়নি তার। নিজের মেধা ও কর্মক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ নেই শবনমের, তবে সে জানে, অফিসে নানা রকমের রাজনীতি আছে, আছে ল্যাং মারার বিভিন্ন অপকৌশল। প্রতিযোগীরা সবাই ফেয়ার খেলা খেলবে না। বিরোধী পক্ষকে ঘায়েল করতে সবাই ফাঁক ফোকড় খুঁজবে। মনিরুজ্জামানরা অডিটের কাছ থেকে যে তথ্য পেয়েছে জোরালো প্রমাণসহ সেটা সঠিক জায়গায় দাখিল করতে পারলে স্বভাবতই ওসমান গণি এই প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে। সত্যি বলতে তখন আর শবনমের প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ থাকবে না। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত কাউকে কোম্পানির উচ্চ পদে বসানোর প্রশ্নই আসে না। সেক্ষেত্রে সিনিয়রিটি, সিনসিয়ারিটি আর কর্ম অভিজ্ঞতার জোরেই সিইও পদে শবনমকে না নিয়ে পারবে না ম্যানেজমেন্ট। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই অ্যাকাউন্টস চিফ আতিউর কিংবা

অ্যাডমিন হেড শওকতের সমর্থন লাগবে। সমর্থনের জায়গাটাতে পুরুষদের একটা জাতিগত ঐক্য থাকে, হয়তো মনের অজান্তেই একটা লৈঙ্গিক পক্ষপাত লালন করে তারা। বেশিরভাগ সময় ভাল মন্দ বিচার না করেই পুরুষেরা নিজ জাতের প্রতি অন্ধ পক্ষাবলম্বন করে ফেলে। চাকরির শুরুতেও দেখেছে শবনম, পুরুষ সহকর্মীরা দিব্যি একে অন্যের সঙ্গে সিগারেটে টান দিতে দিতে প্রাণের বন্ধু হয়ে যায়। তাদের সিগারেটের আড্ডায় সাধারণত নারী সহকর্মীদের প্রবেশাধিকার থাকে না। (যদিও এখন দিন পাল্টেছে, নতুন প্রজন্মের মধ্যে নারী ধূমপায়ীর সংখ্যাও কম নয়)। সেই সময়ে তার সহকর্মী পল্লবি মাঝে মাঝে দুষ্টুমী করে বলত, ‘চলো, আমরাও ধোয়া গেলা শুরু করি, অন্তত সিগারেটের অজুহাতে বাইরে গিয়ে ছোটখাটো আড্ডা মেরে আসা যাবে...’

পুরুষদের আরেকটা সমস্যা, সহকর্মী হিসেবে মোটামুটি মেনে নিলে বা পছন্দ করলেও উচ্চপদে বা বস হিসেবে নারীকে মেনে নিতে পারেন না অনেকেই। আসলে নারীকে একটা নির্দিষ্ট বৃত্তে দেখতেই অভ্যস্ত তারা, সেই বৃত্ত ভাঙা সহজ নয়, হয়তো পরিচালনা পর্ষদের অনেকে সদস্যও চাইবেন না নারী সিইও হোক, তা তিনি যতই দক্ষ বা যোগ্য হন না কেনো! কী অসুবিধা?

না, উনি কি রাত বিরেতে পার্টি অ্যাটেন্ড করতে পারবেন? অন্য কোম্পানির সিইওদের জন্য (মদের) পার্টি থ্রো করতে পারবেন?
আসলে উনাকে কি কর্মীরা মান্যি গণ্যি করবে? মানবে উনার সিদ্ধান্ত? উনি কি কোম্পানিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে পারবেন? কর্মী ছাটাই টাটাই এর ব্যাপার আছে, ওইসব কঠিন সিদ্ধান্ত উনি কি নিতে পারবেন? ওইরকম মানসিক দৃঢ়তা কি তার আছে?

শবনম জানে, শুধুমাত্র নারী হওয়ার কারণে তার ক্ষেত্রে যেসব অতিরিক্ত প্রশ্ন উঠবে, শুধুমাত্র পুরুষ হওয়ার কারণেই ওসমান গণির ক্ষেত্রে কখনোই সেসব প্রশ্ন উঠবে না। সিইও পদটা ক্ষমতা চর্চার জায়গা। পুরুষতান্ত্রিক দুনিয়া মনে করে ক্ষমতার জগতে শুধু পুরুষরা একাই রাজত্ব করবে। নারী প্রজা হতে পারে, ছোটখাটো মন্ত্রী পদেও না হয় মেনে নেওয়া যায়, কিন্তু তার উপরে, কভি নেহি।
চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৩

স্নানের শব্দ: পর্ব-১২

স্নানের শব্দ: পর্ব-১১

স্নানের শব্দ: পর্ব-১০

স্নানের শব্দ: পর্ব-৯

স্নানের শব্দ: পর্ব-৮

Header Ad

দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানিয়েছেন, দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তারেক রহমান বলেন, সব রাজনৈতিক দল মিলে আমরা এই অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি। দেশের মানুষের হাতে ক্ষমতা ফিরে যেতে নির্বাচন প্রয়োজন।

তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য আরও ২ বছর আগে সংস্কারের প্রস্তাব ৩১ দফা দিয়েছি আমরা। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। একজন শুরু করবে, আরেকজন টেনে নিয়ে যাবে। অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ ও সত্যিকারের নির্বাচন আয়োজন করতে পারলে, জনগণ তবেই জনপ্রতিনিধি বাছাই করতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।

নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, অনেকের মনে প্রশ্ন আমরা কেন বারবার নির্বাচনের কথা বলছি। আমরা বিশ্বাস করি, অন্তর্বর্তী সরকার একটি নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে। এর ফলে সংসদের যারা জনপ্রতিনিধি বাছাই হয়ে আসবে, তারা সংসদে বসে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে, কীভাবে দেশের প্রত্যেকটি সেক্টরের সমস্যা সমাধান করা যায়। সকল সংস্কার বাস্তবায়ন সম্ভব প্রকৃত ও সত্যিকারের একটি নির্বাচনের মাধ্যমে।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দায়িত্ব নিতে হলে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে আশপাশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। যদি এই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারা যায়, তবেই মানুষ আপনাদের দায়িত্ব দিবে, অন্যথায় দ্বিতীয়বার ভাববে।

এর আগে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবুর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, বিএনপি খুলনা বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. শরীফুজ্জামান শরীফ, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল প্রমুখ।

Header Ad

২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা

ফাইল ছবি

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপ সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদের দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

আবহাওয়া অফিস জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে

রোববার (২৪ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এছাড়া সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এছাড়া আগামী পাঁচদিনে আবহাওয়া পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

Header Ad

অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের

ছবি: সংগৃহীত

গত অক্টোবর মাসে দেশজুড়ে সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৫৩৪টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫৭৫ জন এবং আহত হয়েছেন ৮৭৫ জন। এরমধ্যে ৪৫২টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪৭৫ জন এবং আহত হয়েছেন ৮১৫ জন। একই সময়ে রেলপথে ৬৩টি দুর্ঘটনায় ৭৬ নিহত, ২৪ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে ১৯টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত, ৩৬ জন আহত এবং ৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

এছাড়া এই সময়ে ১৩৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৩ জন নিহত, ২৩৯ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩০.৫৩ শতাংশ, নিহত ৩৪.৩১ শতাংশ ও আহত ২৯.৩২ শতাংশ।

শনিবার (২৩ অক্টোবর) সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর পাঠানো এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়। সংগঠনটি বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয়, আঞ্চলিক, অনলাইন এবং ইলেক্ট্রনিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ-পথের সংগঠিত দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ১৭ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১৪৯ চালক, ১৩৭ পথচারী, ৫১ পরিবহন শ্রমিক, ৭৩ শিক্ষার্থী, ১৮ শিক্ষক, ৭৬ নারী, ৬২ শিশু, ৫ চিকিৎসক, ৯ সাংবাদিক এবং ১৩ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে। এদের মধ্যে নিহত হয়েছে ৬ জন পুলিশ সদস্য, ৩ সেনা সদস্য, ১ আনসার সদস্য, ১২৪ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ১১৭ জন পথচারী, ৫৮ জন নারী, ৫১ জন শিশু, ৪৯ জন শিক্ষার্থী, ৩২ জন পরিবহন শ্রমিক, ১৫ জন শিক্ষক, ৪ জন চিকিৎসক, ৬ জন সাংবাদিক, ১৬ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।

এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত ৬৩১টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৪.৪১ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২২.৫০ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৮.৫৪ শতাংশ বাস, ১৭.৯১ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৩.৯৬ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৬.৬৫ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৬.০২ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৪৯.৪৮ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২৫.২৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৪.৭৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৯.৫১ শতাংশ বিবিধ কারণে, ০.২৫ শতাংশ ট্রেন যাববাহনে সংঘর্ষ। এবং চাকায় ওড়না পেছিয়ে ০.৭৫ শতাংশ।

সেপ্টেম্বর মাসে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে— দেশের সড়ক-মহাসড়কে ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশের অনুপস্থিতি সুযোগে আইন লঙ্ঘন করে যানবাহনের অবাধ চলাচল; জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কবাতি না থাকায় এবং অতি বৃষ্টির কারণে সড়কের মাঝে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়া; এসব গর্তের কারণে যানবাহন চলাচলে ঝুঁকি বেড়েছে; জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টানিং চিহ্ন না থাকার ফলে নতুন চালকের এসব সড়কে দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে; মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা; উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাদাঁবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন এবং অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং একজন চালক অতিরিক্ত সময় ধরে যানবাহন চালানোকে।

দুর্ঘটনার প্রতিরোধে সুপারিশ হিসেবে বলা হয়েছে— জরুরি ভিত্তিতে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের মত ছোট ছোট যানবাহন আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা; জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা; দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, যানবাহনের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস প্রদান; ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা; সড়কে চাদাঁবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা; মহাসড়কে ফুটপাত ও পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা রাখা, রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা; সড়ক পরিবহন আইন যথাযতভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা; উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা; মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেফটি অডিট করা; মেয়াদোত্তীর্ণ গণপরিবহন ও দীর্ঘদিন যাবৎ ফিটনেসহীন যানবাহন স্ক্যাপ করার উদ্যোগ নেওয়া এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক-মহাসড়ক দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করা।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার