রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫ | ৭ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

স্বকৃত নোমান  

লেখকের দায়বদ্ধতা  

একজন লেখক একজন স্রষ্টা। একইসঙ্গে একজন ব্যক্তিও। ব্যক্তিমানুষ ও স্রষ্টামানুষ কি আলাদা? ব্যক্তি মানুষটি যদি চোর, ডাকাত, গুন্ডা, বদমাশ, লম্পট, ধর্ষক হয়, তাতে কি তার সৃষ্টিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়? আমি বলি, হ্যাঁ, করা যায়। কিন্তু আপনি বলবেন, না করা যায় না। কারণ ব্যক্তিমানুষ ও স্রষ্টামানুষ সম্পূর্ণ আলাদা। মহাকবি হোমার অন্ধ ছিলেন, সুরগুরু বিঠোফেন বধির ছিলেন, শেক্সপীয়র মদ্যপ ও উচ্ছৃঙ্খল ছিলেন, বাল্মীকি দস্যু ছিলেন, আর কালিদাস ছিলেন মহামূর্খ। তাই বলে তাঁদের সৃষ্টি তো প্রশ্নবিদ্ধ নয়। তাঁদের সৃষ্টিকে তো আমরা খারিজ করে দিতে পারি না। রবীন্দ্রনাথ যেমন বলেছেন, ‘কবিরে পাবে না তাহার জীবনচরিতে।’ কার্ল গুস্তাভ ইয়ুং বলেছেন, ‘শিল্পী-স্বভাবকে পুরোপুরি প্রকাশ পেতে গেলে শিল্পীর নিজের ব্যক্তিস্বভাবকে আগে নির্বাসিত করতে হবে।’ ওদিকে টি.এস.এলিয়টও স্রষ্টার মধ্যে দুজনের অস্তিত্বের কথা বলেছেন, একজন the man who suffers এবং অপরজন the mind which creates. সুতরাং ব্যক্তি মানুষ ও স্রষ্টামানুষ যে সম্পূর্ণ আলাদা―এর পক্ষে মহান মনীষীদের ভারী ভারী সব উক্তি পাওয়া যাচ্ছে। অতএব, আপনার পাল্লা ভারী।

কিন্তু জনাব, বাটখারার পাল্লা একটি হয় না। বাটখারার জন্য দুটি পাল্লা লাগে। আপনার পাল্লাটি ভারী হলেও বিপরীত পাল্লাটি কি শূন্য? মোটেই তা নয়। আপনি নিশ্চয়ই সাহিত্যত্তাকে স্বীকার করেন? করতেই হবে। একটা জায়গায় স্বীকার না করে কিন্তু উপায় নেই। যেমন ধরুন, সাহিত্যতত্ত্ব কবিতাকে কবিতা বলেছে, গল্পকে গল্প বলেছে, উপন্যাসকে উপন্যাস বলেছে। এখন আপনি যদি বলেন, না, কবিতাকে আমি গল্প বলবো, গল্পকে নাটক বলবো, উপন্যাসকে কবিতা বলবো, আর নাটককে অংক বলবো―তাহলে আপনার সঙ্গে তর্ক বৃথা। আপনি শিল্পী নন, নৈরাজ্যবাদী। শিল্পরাজ্যে আপনার প্রবেশ নিষেধ। আপনি নিশ্চয়ই তা নন। সাহিত্যতত্ত্বকে আপনি স্বীকার করেন। আপনি জানেন যে, সাহিত্যের বহু তত্ত্বের মধ্যে মার্কসীয় সাহিত্যত্ত্ব অনেক প্রভাবশালী, অনেক বেশি বিখ্যাত। পৃথিবীর বহু প্রভাবশালী সাহিত্যিক এই তত্ত্বকে মেনেছেন, মানেন।

মার্কসীয় সাহিত্যতত্ত্বে আপনার ব্যক্তিমানুষ ও স্রষ্টামানুষের বিভাজনকে ‘অবস্তুতান্ত্রিক’ বা ‘ভাববাদী’ বলেছে। প্রাচীনকালের রচনাগুলো দেখুন না। যেমন ধর্মগ্রন্থ। ওগুলোকে তো মানব-রচিত বলেই স্বীকার করা হয় না। ওগুলোর উপর দৈবত্ব আরোপ করা হয়। অর্থাৎ এগুলো মানব-রচিত নয়। সেসব রচনায় দুটো সত্তার অস্তিত্বকে স্বীকার করা হচ্ছে। হতেই পারে। প্রাচীনকালে এমন দৈব ঘটনা হামেশাই ঘটতো। কারণ মানুষ তখনো তার চিন্তাকে শৃঙ্খলিত করতে পারেনি, তার ক্ষমতাকে সুসংহত করতে পারেনি, পৃথিবীতে তার অস্তিত্বের জয় ঘোষণা করতে পারেনি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কার্ল গুস্তাভ ইয়ুং বা টি.এস.এলিয়টও কার্ল মার্কস-কথিত সেই অবস্তুতান্ত্রিক বা ভাববাদী বা সেই দৈবযুগের মতবাদের সমর্থক। হতেই পারেন। দোষের কিছু নেই।

কিন্তু পৃথিবীটা এখন বদলে গেছে। এখন অন্ধকবি হোমারের যুগ নয়, এখন বধির বিঠোফেনের যুগ নয়, এখন মদ্যপ ও উচ্ছৃঙ্খল শেক্সপীয়রের যুগ নয়, এখন দস্যু বাল্মীকির যুগ নয়, এখন ‘মহামূর্খ’ কালিদাসের যুগ নয়। তাদের মৃত্যুপরবর্তীকালে পৃথিবীর সমস্ত নদ-নদীর অনেক জল গড়িয়েছে। অনেক নদী শুকিয়ে গেছে। এন্টার্টিকা-হিমালয়ের অনেক বরফ গলে গেছে। অনেক অরণ্য মরুভূমিতে রূপান্তরিত হয়েছে। ঘটে গেছে ফরাসি বিপ্লব, অক্টোবর বিপ্লব, ঘটে গেছে হাইতি, কিউবা, চাইনিজ বিপ্লব। দু-দুটি বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। হিরোশিমা-নাগাসাকি ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। মানুষ এখন কল্পিত স্বর্গকে পৃথিবীতে নামিয়ে এনেছে, একটি বাটনের মধ্য দিয়ে মানুষ এখন পৃথিবীকে শাসন করছে। একটি বাটনের চাপে গোটা স্থলভাগকে উড়িয়ে দিতে পারে মানুষ। মানুষের বুদ্ধির উৎকর্ষ এখন শিখরকে স্পর্শ করেছে।

পৃথিবীটা এখন পণ্যায়নের পৃথিবী। আপনি যে গল্পটি লিখছেন সেটা একটি পণ্য। আপনি যে কবিতাটি লিখছেন সেটি একটি পণ্য। আপনি যে উপন্যাসটি লিখছেন সেটি একটি পণ্য। আপনার কবিতার, গল্পের, উপন্যাসের বইটি একজন পাঠকও না কিনলে, আপনার বইটি কোনো প্রকাশক প্রকাশ না করলে, আপনি স্বীকার করুন বা না-ই করুন, আমি নিশ্চিত, আপনি লেখালেখি ছেড়ে দেবেন। ছেড়ে দেবেন, কারণ, আপনার মধ্যে হতাশা তৈরি হবে, নিরর্থকতা তৈরি হবে। আপনি কোনো অনুপ্রেরণা পাবেন না। লেখাবাহুল্য, শিল্পসৃষ্টির জন্য অনুপ্রেরণা জরুরি। সেই অনুপ্রেরণা আকাশ থেকে আসে না। রবীন্দ্রনাথের ‘অলৌকিক আনন্দের ভার বিধাতা যাহারে দেন’ এই উক্তিকে অচল ঘোষণা করেছে পণ্যসভ্যতা। অর্থাৎ আপনি একটি পণ্যসভ্যতায় বসবাস করছেন। গায়ের জোরে আপনি এই সভ্যতাকে অস্বীকার করতে পারবেন না।

এই পণ্যায়নের যুগে হোমার, বাল্মীকি আর কালিদাসরা জন্মগ্রহণ করেন না। কারণ এই পণ্যায়নের যুগের চাহিদা আলাদা। সামাজিক সম্পর্ক, শ্রমবিভাগ এবং সাংস্কৃতিক জীবনও আর সেই কালে দাঁড়িয়ে নেই। সমাজের এখন মূল লক্ষণ প্রগতি, অর্থাৎ সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। অতএব শেষ হয়ে যাওয়া, বিগত হয়ে যাওয়া সামাজিক অবস্থাকে ফিরিয়ে আনা এখন আর সম্ভব নয়। পুরনো সেই মহাকাব্য রচনার যুগ বা এলিজাবেথ-বিক্রমাদিত্যের যুগ বা জীবন আর ফিরে আসবে না। ফিরে আসবে না সেই সময়কার সাহিত্যকর্মও। এখনকার যুগটা সম্পূর্ণই আলাদা। এই আলাদা যুগে প্রত্যেক মানুষই এক বিশেষ সমাজে বাস করে। সেই সমাজ থেকে সে বন্ধনমুক্ত হতে পারে না। কবি, সাহিত্যিক, শিল্পীও বন্ধনমুক্ত হতে পারে না। পেটে একবেলা ভাত না থাকলে এখন আর কলম চলে না। তাই মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বা নজরুলরা এখন আর জন্মগ্রহণ করেন না।

আপনি যদি এই বাস্তবতাকে অস্বীকার করতে চান, তবে আপনার উদ্দেশে ভি.আই লেনিন বলছেন, ‘হে বুর্জোয়া লেখকগণ! আপনারা যে অবাধ স্বাধীনতার কথা বলেন, তা নিছক ভণ্ডামি মাত্র। যে সমাজে অর্থই শক্তি, যে সমাজে অসংখ্য শ্রমজীবী মানুষ দুঃসহ দারিদ্র্যে কষ্ট সহ্য করেন, আর মুষ্টিমেয় ধনী পরগাছার মতো জীবন-যাপন করে, সে সমাজে সত্য এবং সক্রিয় স্বাধীনতা বলতে কিছু থাকে না।’ সুতরাং এই পণ্যায়নের যুগে আপনি যে ব্যক্তিমানুষ ও স্রষ্টামানুষকে আলাদা করে আপনার পাল্লাটি ভারী করতে চাইলেন, বিপরীত পাল্লার ওজনের কাছে আপনার পাল্লাটি হালকা হয়ে গেল, আপনার পাল্লাটি উপরের দিকে উঠে গেল। অর্থাৎ আপনার পাল্লাটি হালকা, বিপরীত পাল্লাটি ভারী।

আপনি বলতে পারেন, এটি তো মার্কসীয় সাহিত্যতত্ত্ব। আমি এই তত্ত্ব মানি না। তাহলে আপনার তত্ত্বটি কী? ওই অবস্তুতান্ত্রিকতা? ওই ভাববাদীতা? ওই দৈবত্ব? ওই প্রাচীনতা? জনাব, সবিনয়ে আপনাকে বলছি, আপনি গায়ের জোরে বাস্তবকে অস্বীকার করছেন। আপনার চারদিকে যে জাজ্বল্যমান বাস্তব, তা আপনি দেখেও না দেখার ভান করছেন। আপনি কপটতা করছেন। কপটতা দিয়ে শিল্প-সাহিত্য হয় না। শিল্প-সাহিত্যের জন্য সততা আবশ্যক। তবু যদি আপনি গায়ের জোরে অস্বীকার করতে চান, করুন। আপনার সঙ্গে বিতর্কে না যাই। বিতর্কে যাই সেই লোকটির সঙ্গে, যিনি এই পণ্যায়নকে স্বীকার করছেন, নিজেকে মার্কসবাদী বলে দাবি করছেন, আবার একই সঙ্গে ব্যক্তিমানুষ ও স্রষ্টামানুষকে আলাদা করছেন। এই লেখা পড়ার পর, সেই মানুষটি, আশা করছি, হয়ত আর আলাদা করবেন না।

আসলেই কি তাই? আলাদা কি করা যায় না? যায়। কল্যাণরাষ্ট্রে করা যায়। যে রাষ্ট্রে মানুষে মানুষে সমতা এসেছে, জাতি গঠন হয়েছে, সেই কল্যাণ রাষ্ট্রে ব্যক্তিমানুষের দিকে আমাদের নজর না দিলেও চলে। যেমন ধরুন সুইডেন, নেদারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, লুক্সেমবুর্গ, লিশটেনস্টাইন। এসব রাষ্ট্রকে কল্যাণ রাষ্ট্র বলা যায়। অপরাধীদের অভাবে এসব দেশের কারাগারগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, এটি কল্যাণ রাষ্ট্রের প্রধান লক্ষণ। এসব দেশের একজন কবি-সাহিত্যিক ব্যক্তিজীবনে যদি চোর, ডাকাত, গুন্ডা, বদমাশ, লম্পট, ধর্ষক হন―তার ব্যক্তিজীবনের দিকে আমাদের না তাকলেও চলে। কারণ তার রাষ্ট্রের কোনো সংকট নেই, জাতির কোনো সংকট নেই। তার জাতি ‘কল্যাণ’-এর যে মহাসমুদ্র রচনা করেছে, সেই সমুদ্রে তার সমস্ত অপরাধ সিন্ধুর মাঝে বিন্দুর মতো বিলীন হয়ে যাবে।

কিন্তু বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রে ব্যক্তিমানুষের কি এই অবাধ স্বাধীনতার সুযোগ আছে? অর্থাৎ একজন কবি বা ঔপন্যাসিক বা নাট্যকারের কি সেই সুযোগ আছে? তাকে কি দুই সত্তায় বিভাজন করা যায়? এই রাষ্ট্র তিরিশ লক্ষ শহিদের হাড়-কঙ্কালের উপর দাঁড়িয়ে আছে। এই রাষ্ট্রের নাগরিকরা এখনো তার পরিচয় নিয়ে সংশয়ী। সে বাঙালি না মুসলামান, এখনো এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি। অর্থাৎ এখনো জাতিটাকে গঠন করতে পারেনি। এই রাষ্ট্রের অসংখ্য নাগরিক এখনো শত্রæরাষ্ট্র পাকিস্তানকে বন্ধু মনে করে, মুক্তিযুদ্ধকে বলে ‘গণ্ডগোল’। এই রাষ্ট্রের অসংখ্য তরুণ স্বাধীনতা-বিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে। এই রাষ্ট্রের মুসলমানরা হিন্দুদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়, ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করে। এই রাষ্ট্রের সংখ্যাগুরু নাগরিকরা ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠী নাগরিকদের মানুষ বলে স্বীকার করতে নারাজ। এই রাষ্ট্রের পরতে পরতে দুর্নীতির মহোৎসব। এই রাষ্ট্রের অসংখ্য প্রাচীনপন্থী নাগরিক শিল্প-সাহিত্যকে ‘অধর্মের কাজ’ বা ‘অকাজ’ বলে গণ্য করে। এমন একটি রাষ্ট্রের একজন কবি বা ঔপন্যাসিকে দুই সত্তায় বিভাজন করা যায় কিনা? এমন একটি রাষ্ট্রে একজন কবি-লেখক ব্যক্তিজীবনে চোর, ডাকাত, গুন্ডা, বদমাশ, লম্পট, ধর্ষক হতে পারেন কিনা? যুদ্ধাপরাধীদের কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করতে পারেন কিনা? প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিতে পারেন কিনা?

আপনি বলতে পারেন, কবি-লেখকের কোনো রাষ্ট্র নেই, কোনো দেশ নেই; কবি-লেখক বিশ্বনাগরিক। সুতরাং এই রাষ্ট্রের প্রতি তার দায় না থাকলেও চলে। আপনার উদ্দেশ্যে হোর্হে লুইস বোর্হেস বলছেন, ‘আমি সব ধরনের জাতীয়তাবাদকে ঘৃণা করি, আমি বিশ্বনাগরিক হতে চাই। সমগ্র বিশ্বের নাগরিক এবং আমি আর্হেন্তিনারও একজন ভালো নাগরিক। আর্হেন্তিনীয় প্রজাতন্ত্র পৃথিবীরই একটি অংশ।’

সুতরাং, আপনার সেই কবি-লেখকটিও বিশ্বনাগরিক হতে পারেন, কোনো সমস্যা নেই। শুধু এটুকু মনে রাখলে চলবে, এই গণপ্রজাতন্ত্রের বাংলাদেশ এই বিশ্বেরই অন্তর্ভুক্ত একটি দেশ।

 

লেখক : কথাসাহিত্যিক

 

Header Ad
Header Ad

একনেকে ২৪ হাজার কোটি টাকার ১৬ প্রকল্প অনুমোদন

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ২৪ হাজার ২৪৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৬টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। রোববার (২০ এপ্রিল) পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সভা-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বে টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পসহ মোট ১৬টি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ২৪ হাজার ২৪৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৩ হাজার ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ ১৬ হাজার ৭১৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকা এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৪ হাজার ৪২৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা।

এ সময় উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, পায়রা সমুদ্র বন্দর প্রকল্পে সঠিকভাবে অগ্রগতি না থাকায় এটি “সমুদ্র বন্দরও হবে না, খালের বন্দরও হবে না” - এমন মন্তব্য করেছেন তিনি।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, শিল্প ও গৃহায়ন উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বিদ্যুৎ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, নৌ ও শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। এছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সভায় অংশগ্রহণ করেন।

Header Ad
Header Ad

বিগত ৩ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার চায় এনসিপি

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন অনুষ্ঠিত বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, গত ১৫ বছরে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। এজন্য নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত প্রার্থীদের, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের এবং যারা অনিয়মে যুক্ত ছিল, তাদের তদন্ত করে বিচার করতে হবে।

রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ দাবি জানান। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশকে ফ্যাসিস্ট কাঠামোয় নিয়ে গেছে এবং মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছে, যার দায় নির্বাচন কমিশনেরও রয়েছে।

বৈঠকে এনসিপির পক্ষ থেকে আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে—মনোনয়নপত্র জমা দিতে সশরীরে আসার বিধান প্রবর্তন, প্রার্থীদের হলফনামা যাচাই-বাছাই করে সত্যতা নিরূপণ, নির্বাচনে সহিংসতা রোধে আচরণবিধি সংস্কার, ঋণখেলাপিদের প্রার্থিতা বাতিল, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা এবং রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র মনিটরিং করা।

এছাড়া একই নামে একাধিক দলের নিবন্ধন, অফিসবিহীন দলকে বৈধতা দেওয়া এবং এসব বিষয়ে সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়। এনসিপি মনে করে, এসব বাস্তবায়ন না হলে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। প্রতিনিধি দলে ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায়, খালেদ সাইফুল্লাহ, মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন ও তাজনুভা জাবীন।

Header Ad
Header Ad

এপ্রিলে ১৯ দিনেই প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ২১ হাজার কোটি টাকা ছাড়াল

ছবি: সংগৃহীত

চলতি এপ্রিল মাসের প্রথম ১৯ দিনেই দেশে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে জানা গেছে, ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত প্রবাসীরা ১৭১ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। ডলারপ্রতি ১২২ টাকা ধরে যার পরিমাণ প্রায় ২০ হাজার ৯৬৮ কোটি ১৪ লাখ টাকা।

রেমিট্যান্সের বড় একটি অংশ এসেছে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে—৯৮ কোটি ৫৪ লাখ ২০ হাজার ডলার। এছাড়া রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৬৩ কোটি ৯৭ লাখ ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো দিয়ে ৯ কোটি ২ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার।

এর আগেও চলতি বছরের মার্চ মাসে দেশে এক মাসে ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে—৩২৮ কোটি ৯৯ লাখ ৮০ হাজার ডলার। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতেও যথাক্রমে ২১৯ কোটি ও ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকার ঘোষিত প্রণোদনা, ডলারের ভালো বিনিময় হার এবং রমজান ও ঈদ উপলক্ষ্যে প্রবাসীদের বাড়তি পাঠানোর প্রবণতা—এসব কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, এপ্রিল শেষে এই প্রবাহ ৩৫০ কোটি ডলারের বেশি হতে পারে, যা নতুন একটি রেকর্ড হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

একনেকে ২৪ হাজার কোটি টাকার ১৬ প্রকল্প অনুমোদন
বিগত ৩ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার চায় এনসিপি
এপ্রিলে ১৯ দিনেই প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ২১ হাজার কোটি টাকা ছাড়াল
দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়া নিয়ে বিএনপির অভিমত
ফাইয়াজের মামলায় আইন মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার নেই: আসিফ নজরুল
ভারতের উত্তরপ্রদেশে এক ছাত্রীকে ৭ দিন ধরে আটকে ২৩ জন মিলে ধর্ষণ!
বিরামপুরে পিকআপের ধাক্কায় এসএসসি পরীক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যুবলীগ কর্মী মিঠু গ্রেফতার
ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে উত্তাল মুসলিম সমাজ, হায়দ্রাবাদে গণবিক্ষোভ
ফকিরাপুলে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৩ জন দগ্ধ
আল-আকসা ভেঙে মন্দির স্থাপনের পরিকল্পনা ফাঁস, ফিলিস্তিনের সতর্কবার্তা
শেখ হাসিনা-কাদেরসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যার প্রমাণ মিলেছে: চিফ প্রসিকিউটর
স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে ১৩৮ মিলিয়ন ডলার দেবে চীন : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
আইপিএলে অভিষেক ম্যাচেই তিন রেকর্ড গড়লেন ১৪ বছরের বৈভব সূর্যবংশী
৩ মে ঢাকায় মহাসমাবেশের ডাক হেফাজতে ইসলামের
আজ স্বামীর প্রশংসা করার দিন
ইসরায়েলি অভিনেত্রী থাকায় নিষিদ্ধ হলো সিনেমা
রাজধানীর ডেমরা ও মিরপুরে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে বিএনপি
যশোরের শার্শায় অস্ত্রসহ দুই ছিনতাইকারী আটক