শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫ | ১৬ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

মাসুদ খান

প্রিয় ১০ কবিতা

সংশ্লেষ

সাহারা যদি হয় এক ধূসর থিসিস,
কঙ্গোর বৃষ্টিবন তবে তার এক অনবদ্য অ্যান্টিথিসিস।
ধূসর ও সবুজের এমন দাউদাউ সংশ্লেষের নামই আফ্রিকা।

বস্তুত পৃথিবীটাই এরকম বালু ও বাষ্পের,
রাগ ও স্নেহের দুর্দান্ত সিনথিসিস।

কোথায়ই-বা যাবে তুমি? কোথাও পাবে না এই কূটাভাস, একসঙ্গে মধু আর বিষ 
যেখানেই যাও, বুধে বা মঙ্গলে, সবখানে একটানা ঊষর থিসিস।

শুধু এক মহাজাগতিক জ্যোৎস্না, মানে
অশ্রুত অলীক সুর, টিপটিপ ঝরতে থাকবে সবখানে।

সেই জ্যোৎস্না, অলীক স্পন্দন—মৃদু, স্নিগ্ধ, আকস্মিক
কিন্তু না-তারা পার্থিব, না বৌধিক, কিংবা মাঙ্গলিক! 

 

 

বিস্তার

কেউ চলে যাবার পরেও থেকে যায় তার নিঃশব্দ আবেশ
বৃষ্টি থেমে গেলেও যেমন থাকে মিষ্টি আওয়াজের মৃদু রেশ।

থেমে গেছে সুফিগান, ঘুমিয়ে পড়েছে শ্রোতা, আজকের মতো এই শেষ
তবুও ঘূর্ণনজাড্যে ঘুরেই চলেছে ধীরে সেই এক আবিষ্ট দরবেশ।

 

 

তৃষ্ণা

তেতে-ওঠা বালুর ওপর দিয়ে হাহাকার করে ধেয়ে আসে
এক মরুসরীসৃপ, মুসাফিরের দিকে।
‘বিষ ঢালব না, ছিঁড়ে খাব না মাংস, শুধু একটু গলা ভেজাব রক্তরসে,
এমন ছাতিফাটা কহর তৃষ্ণায় প্রাণ যায়-যায়, এটুকু রহম করো হে বেদুইন’
ব’লে সেই গনগনে সরীসৃপ ঝাঁপ দিয়ে পড়ে বিদ্যুৎ গতিতে,
গোড়ালি কামড়ে ধরে রক্ত শুষে ভিজিয়ে নেয় জিহ্বা ও গলা,   
তারপর নিমেষে উধাও, এক ক্ষমাহীন বিষুবীয় ক্রুদ্ধ মরীচিকার ভেতর।

 

 

ফাতনা

সরল ছিপের এক প্রান্তে মাছশিকারি, চুপচাপ।
অন্য প্রান্তে মাছ।

মাঝখানে নিরীহ ফাতনা—ভাসে নিরুপায়, মধ্যপক্ষরূপে
তাকায় চঞ্চল শিকারের দিকে একবার, পরক্ষণে ধূর্ত শিকারির প্রতি।

জগতের প্রত্যেকটি ঘটনার তীব্র, তুঙ্গ মুহূর্তে হাজির থাকে
তৃতীয় একটি পক্ষ। থাকে এক সুদর্শন মাছরাঙা—
বড়শির বিবেকের মতো বাঁকা, রঙিন, আকর্ষণীয়।

আর এই সমস্তকিছুর মৌনী মধ্যস্থতা আকারে ভাসতে থাকে
একা এক শোলার ফাতনা।

 

 

উপমান

তোমার মুখের ওপর ঝেঁপে নেমে আসছে বেসামাল কেশদাম, খেয়ালি হাওয়ায়।
তারই ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছে এক লালচে নির্জন দুষ্টব্রণ, গণ্ডদেশে তোমার—
যেন পুঞ্জাক্ষ আনারসের ঝোপে খুব ছোট্ট এক রূপদক্ষ গিরগিটি...

অতিদূর অতীত থেকে ভেসে আসে দূরগামী তূর্ণ ট্রেনের সিটি।

 

 

আন্তর্জাগতিক

ভিন গ্যালাক্সির মেয়ে তুমি, ভিন্ন গ্রহের মেয়ে
তোমায় আমি ফুটিয়ে তুলি ইচ্ছাশক্তি দিয়ে।
দেখতে কেমন, ভাষা কী তার, কেমন অবয়ব—
জড়বুদ্ধি জাহিল আমি, জানি না ওসব।

তার মন তৈরি রূপ তৈরি কেমন উপাদানে
কল্পভীরু এই কবি আর কীই-বা তার জানে!  
জানি না তার অনুভূতি, আবেগ, স্বভাবগতি
স্রেফ অনুমানেই ফুটিয়ে তুলি, এমন প্রাণবতী!

ছায়াপথ ছাড়িয়ে, দূরের ওই সুরগঙ্গা, তারও ওইপারে, বহির্গোলকে,
শঙ্কু-আকৃতির এক মিটিমিটি আলো-জ্বলা ঘরে ব’সে
ভিন্ন ভুবনের মেয়ে তুমি 
নির্নিমেষ চেয়ে আছ হে আমারই জানালার দিকে।

হৃদয়ের নেশা, এক আন্তর্জাগতিক নেশা...
একদিন ঘনিয়ে আসব ঠিকই দুইজনে, পরস্পরে।

তোমার আমার ঘনীভূত অভিকর্ষ দিয়ে
আস্তে-আস্তে বাঁকিয়ে ফেলব দেশকাল
দূর দুই জগতের মাঝখানে যে ব্যাকুল মহাশূন্য,
বেঁকে যাবে তা টানটান অশ্বক্ষুরাকার চুম্বকের মতো।
আলোকবর্ষের ওই মহাদূর দূরত্বই হয়ে যাবে
তুড়ি-মেরে-উড়িয়ে-দেওয়া ঘণ্টা কয়েকের পথ।
আর আমি ঠিকই সাঁতরে পাড়ি দেবো ওইটুকু মহাকাশ।

জ্যামিতির ছুড়ে-দেওয়া এক জেদি অথচ লাজুক স্পর্শকের মতো
তোমাকেই ছুঁয়ে ছুঁয়ে বয়ে যাব আমি
পৃথিবী নামের গ্রহ থেকে ছোটা হেমন্তদিনের হাওয়া।

 

 

কাঠবিড়ালির দর্শন

নিষ্ফলা কাঠবাদাম গাছ।

কী খেয়ে বাঁচবে তবে কাঠবিড়ালিরা!
তা-ভেবে কে যেন প্রতিদিন
চুপিচুপি গোড়ায় ছড়িয়ে রাখে প্রচুর চিনাবাদাম।

তন্ন-তন্ন করে খুঁজছে বাদামফল, গাছবিড়ালিরা, ডাল থেকে ডালে।    
কিন্তু নিষ্ফল।

আর সেই নিদারুণ বাদাম-বিফলতার পর   
একসময় গাছ থেকে নেমে আসে হতাশ কাঠবিড়ালি।
নেমেই স্ফারিত চোখে চেয়ে দ্যাখে 
প্রচুর চিনাবাদাম ছড়ানো মাটিতে।

কে দেয়, কোত্থেকে আসে, কিছুই জানে না তারা। শুধু জানে—
কাঠবাদাম গাছের গোড়ার বাকল ফুঁড়ে
প্রতিদিন প্রকাশিত হয় আর টুপটাপ ঝরে পড়ে
খোসাসহ রাশি-রাশি আমান চিনাবাদাম।

 

 

 

মিসিং লিংক


কালোবাজারের মর্মস্থলে বসে এতকাল
চালান করেছ দারুচিনি, ভাবাবেগ...সীমান্তের এপার-ওপার।
আজ দেখি আনাগোনা
না-কালো-না-শাদা এই হৃদগন্ধা ধূসরবাজারে!

এই তো এখন চারপাশ থেকে
কানে ভেসে আসছে বকুলের গন্ধধ্বনি
নাকের ঝিল্লিতে ঝাপসা ধাক্কা খাচ্ছে
ব্রতবদ্ধ ব্যস্ত মৌমাছির বিবিধ গুঞ্জনগন্ধ।
আর কিছুক্ষণ পরে ঝোপের আড়াল থেকে
ঢুলুঢুলু চোখে তাকাবে বহুচক্ষু আনারস
তার চূড়ায় চড়ে-বসা এক মাথাগরম গিরগিটি 
চেরা জিভ বাড়িয়ে দিয়ে মাপতে থাকবে
টিপটিপ রোদের সুর, ছন্নমতি খেয়ালি হাওয়ার গতি।
রূপসী আকন্দফুল, অভিনয়পটু, সখিদল নিয়ে ছিনালি-আনন্দে
মান ভাঙাবে তিরিক্ষিমেজাজ কিছু বিছুটিপাতার।

এইবার মেলাও তো দেখি হে গুনিন
ওপরের দুই স্তবকের মধ্যকার মিসিং লিংক?

 

 

তদন্ত

কী ঘটেছে ওইখানে, ওই ছায়াপথে,
রাতের আকাশে ফুটে-ওঠা
ওই চেরি-ব্লসমের পুষ্পসমাবেশে?

যেন এক মহাজাগতিক অপরাধপট,
তদন্ত চলছে, নেমে পড়েছে বাঘা-বাঘা সব
জ্যোতির্গোয়েন্দা ও মহাকাশীয় পুলিশ
অকুস্থলে খোঁজা হচ্ছে ক্লু, মোটিভ, সাক্ষী ও সাবুদ,
কিংবা অ্যালিবাই...

ওই যে ওখানে একটি তারা ছিল,
লাপাত্তা হঠাৎ। মেরে ফেলেছে কি কেউ?
কোথায়ই-বা লুকালো সে-ডেডবডি?

হঠাৎ হাউৎ করে ডুকরে-ওঠা, গায়ে-হিম-ধরানো কসমিক কান্না...

আর কারাই-বা, কোন ধীর বিষপ্রক্রিয়ায়,
আস্তে-আস্তে হনন করছে প্রিয় এই গ্যালাক্সিকে!

দীর্ঘ তদন্তের পর জানা গেল—
ওই যে আবর্তমান তারা-ফোটা মহাজাগতিক চাকতি,
কল্পনাকেও ক্লান্ত-করে-ফেলা ওই মহাকায় যমজাঙাল,
মর্মদেশে বসে আছে তার
সে-এক ভাবগম্ভীর, রাশভারী, ঘনীভূত কালামামা।

এইসব নাকি তারই কাজ।

 

 

দুঃস্বপ্নের মধ্যপর্ব

পাকা রাস্তা ভেদ করে ফুঁসে উঠছে চাপা-পড়া উলু ঘাস।
এমনই অদম্য তবে উদ্ভিদের উৎপ্রেষ?
ভাং-মেশানো ভাষার ভেতর বইয়ে দিচ্ছে ভেজা-ভেজা সুর    
ঊর্ধ্বমুখী তাড়নায় ওই দ্যাখো 
যুক্তি বাঁকিয়ে গোলাকার করে ফেলছে সব প্রসাদপুষ্ট বুধমণ্ডলী,
কুবের কুমির আর যক্ষদের সপক্ষে।
চোখেমুখে তাদের অনর্গল বুধবিকিরণ। আর বলাই বাহুল্য—
যখনই অ্যাপেন্ডিক্সরা ভূমিকা নেয় জিহ্বার, আর তা চলতে থাকে অবিরাম,
তখনই সমাজে দেখা দেয় চণ্ড ব্যথা অ্যাপেন্ডিসাইটিসের।    

তবে বুধবর্গ ভয়ে থাকে সারাক্ষণ—কখন যে কে এসে তাদের
সুরক্ষিত সফটঅয়্যারের মেঘে মিশিয়ে দেয় দুরারোগ্য বাগ ও ভাইরাস
আনডু করে দেয় সরাসরি সমস্ত অর্জন ও আস্ফালন।
ভয়ে থাকে সারাক্ষণ
কখন যে কারা এসে গোল করে ফেলে দুর্ভেদ্য চাট্টিবাট্টি তাদের
কিংবা ক্লোজ করে দেয় সানডে মানডে একদম দূরতর ফ্রাইডে অবধি।
সুধী দুর্ধী সবাই থাকে তাই এক চিনচিনে ভয়ের ভেতর।
আর কে না-জানে-- দুঃস্বপ্ন দেখাটাও এক ধরনের দক্ষতা।

নিচে নেমে এসো ন্যায়াধীশ, দেখে যাও—
বলকানো ভাতের হাঁড়ি ঘিরে বসে আছে তিনটি ক্ষুধার্ত শিশু
মাছের চাতুর্যে নাজেহাল হচ্ছে বাচ্চা বক, দূরে, আত্রাই নদীতে
বনপথে বানরেরা লুট করে নিচ্ছে ট্রাকভর্তি পাকা কলা
জিনদের জীবাণু এসে ধরছে ইনসানে
এসব কি ন্যায় হচ্ছে কোনো, ন্যায়াধীশ?
এ কেমন দুরাচার, আয়ুর অসম বণ্টন   
চোর দিয়ে চোর ধরাধরি, নাটকীয় কাঁটা দিয়ে কাঁটা...  
আর এ সবই ঘটে সেইদিন
যেদিন তুখোড়তম গোয়েন্দাকে আবারও উল্লু বানিয়ে
সটকে পড়ে খতরনাক অপরাধী। 

দমকা হাওয়ায় দ্রুত মুড সুইং হচ্ছে নদীর।
ফের দমকা হাওয়ায় কার যেন হাত ধরে পালিয়েছে
মল্লিকবাড়ির আফরোজা মল্লিকা। জীবনের প্রথম ক্রাশ...
আর তা-ই নিয়ে কত কথা!
বিয়ের আগে যেন স্বপ্নে-পাওয়া দিব্যপ্রভা  
অথচ বিয়ের পর নিরেট আসবাবশোভা।
মেকি দাম্পত্যসুখের ছবি, ফটোশপ-করা সুখ
নদী শুধু একবার ভ্যাবাচ্যাকা খাবে উত্তাল সাগরের মোহনায়
তারপর স্বতঃস্ফূর্ত মিশে যাবে দরিয়ায়  
নির্বিকার নির্বিকল্প। আনকোরা নতুন জাহাজ
জীবনে প্রথম জলে নামে শঙ্কা-থরোথরো
জ্যোতির্ময় জলদস্যুর সম্ভাবনা-জেগে-ওঠা জলরাশি... 

ইউরেকা ইউরেকা বলে সেই কবে আচমকা ছুটেছিল উত্তেজিত আর্কিমিডিস,
তারও বহু আগে থেকেই মানুষ ভাসিয়েছে নৌকা ও জাহাজ।
বস্তুত যে-কোনো সূত্র উদ্ভাবনের আগেই
মানুষ জেনে এসেছে সে-সূত্রের ব্যবহার, এমনকি দুর্ব্যবহারও।
মানুষের চর্চা ও চর্যা তাই তার সফল জ্ঞাননাট্যের প্রিক্যুয়েল মাত্র।     

দীক্ষার্থী এসেছে মঠে, যাকে বসিয়ে রেখেছিলে
ওই দূর ঊনপঞ্চাশের নির্জনে।
দাও দীক্ষা এখন এ অর্বাচীনে
সেইসাথে দিৎসাও জাগিয়ে তোলো ধীরে, অভ্যন্তরে।
আধার এগিয়ে ধরো যদি নিরাধারে
আশ্রয় এগিয়ে দাও যদি নিরাশ্রয়ে
ভিক্ষার্থীকে দিয়ো তবে মুষ্টিভিক্ষা ওগো দানেশ্বরী।
নচেৎ বিফলে যায় আমাদের এ দুঃখদিনের মাধুকরী।

আলাভোলা মার্বেল, চুপচাপ থেমে আছে পথের ঢালে।
ঢালু, গতি নেই তবু। মনোযোগ নেই তার গড্ডয়নে।
তাকে দিয়ো মনোযোগ
মার্বেলের অগতিকে দিয়ে দিয়ো রঙিন রিনিঝিনি গতিজাড্য
জঙ্গলের তমোমণি তুমি হে জোনাকি
তমসা কাটিয়ে দিয়ো হেসে মিটিমিটি।

নিজের পুরনো খাত ফেলে এঁকেবেঁকে পালিয়েছে নদী
সীমান্ত পার হয়ে অন্য দেশে।
এখন সে বয়ে যায় অন্য এক বিষণ্ন হারাবতীর শুকিয়ে-যাওয়া খাতে 
যেমন বিপ্লব ব্যর্থ হলে গেরিলারা বনবাসে যায় প্রতিবেশী রাজ্যে
যেমন পিক-আপ থেকে পালায় ধরে-আনা বাঘের শাবক।

ময়ূরাক্ষী বইছে এখন ডাকাতিয়ার খাতে
খাত বদলের চমকলীলা চলছে দিনে রাতে
স্পষ্ট দিনের বেলা
খাত বদলের খেলা...
নদীশাসন পলিবহন বিষম অনুপাতে।

 কী যে দুষ্ফল ফলেছে এবার গাছে গাছে খুনখারাবি রং
গতিদীর্ণ খানাখন্দ পথ, দারুদহনের দিনে নিঃস্ব বনভূমি...
চত্বরের বেদিতে উঠে সমবেত পায়রাদের উদ্দেশে
অনর্গল বলকাতে-থাকা এক ধূসর ধুরন্ধর ঘুঘু,
পাশে এক বাচ্চা গোল্লা কবুতর
যেন ওয়াজের উত্তেজিত বক্তার পাশে দাঁড় করিয়ে-রাখা কাঁচুমাচু নওমুসলিম।
ওদিকে মাদক আর নারীশিকারের ফাঁদ পেতে রাখে কালাধনে ধনাঢ্য ফাঁদিয়াল
তাদের রয়েছে কত পালিত পুলিশ আর সারি-সারি সব শায়িত সাংবাদিক...।

এদের তো চিনি না, এরা কারা
আচমকা থানা আক্রমণ করে আমাদের উদ্ধার করে নিয়ে
ছেড়ে দিয়ে গেল নিরাপদে! বিপ্লবীরা অবাক রীতিমতো।
সেইসঙ্গে উদ্ধারকদেরসহ
সবাইকে ফের তাবা-তাবা করে দেবার শপথ নেয় তারা।
শুধু দেয় এইটুকু নিশ্চয়তা-- শবসৎকার হবে সবারই, যথাযথ ধর্মমতে।

দংশনের চূড়ান্ত দিনক্ষণ ঠিক করে ফেলে বাস্তুতক্ষকও
দুঃস্বপ্নের মাঝপথ থেকে  
ধড়ফড় করে জেগে ওঠে ভীত তক্ষকতাড়িত গৃহস্থ।    
জোরে বাক দিয়ে ওঠে মিনারচূড়ার আবহমোরগ
মোটেও ভালো নয় কিন্তু এইসব উঁচু আলামত...
ঝটপট বলে ওঠে গণৎকার।

কপোতাক্ষ বইতে থাকে দামোদরের খাতে
খাত বদলের নর্মলীলা চলছে দিনে রাতে
স্পষ্ট দিবালোকে
খাত বদলের ঝোঁকে
পড়ছে ভেঙে এ-কূল ও-কূল দুকূল একই সাথে।

 

Header Ad
Header Ad

দেশের আকাশে চাঁদ দেখা গেছে, কাল থেকে রোজা শুরু

ফাইল ছবি

বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আগামীকাল রোববার (২ মার্চ) থেকে দেশে রোজা শুরু হচ্ছে। সেই হিসেবে আজ শনিবার (১ মার্চ) রাতে তারাবির নামাজ শুরু হবে।

শনিবার (১ মার্চ) সন্ধ্যায় বায়তুল মোকাররমে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক শেষে এই ঘোষণা দেয়া হয়।

রমজান মাসে সিয়াম সাধনা ও ইবাদতে কাটান সারা বিশ্বের প্রায় ১৮০ কোটি মুসলমান। মুসলিম উম্মাহর প্রতি আল্লাহর বিশেষ অনুকম্পার মাস রমজান। তাই এই রমজান মাসে ত্যাগ ও সংযমের চর্চা করে খোদার সন্তুষ্টি অর্জনে সচেষ্ট থাকেন মুসলিম উম্মাহ।

এ মাসেই মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর কোরআন শরীফ নাজিল হয়। রমজান মাসে রোজা রাখা ইসলাম ধর্মের ৫টি মূল ভিত্তির অন্যতম এবং সব স্বাস্থ্যবান মুসলিমের জন্য রোজা রাখা ফরজ।

হাজার বছর ধরে সন্ধ্যার আকাশে চাঁদ দেখে রমজান মাসের শুরু এবং দুই ঈদের দিন সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে আসছে সারা বিশ্বের মুসল্লিরা। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে সূচিত হয় রমজান মাস। তারাবির নামাজও পড়া শুরু হয় সেদিন থেকে।

Header Ad
Header Ad

আওয়ামী লীগ ও জাতীয় নাগরিক পার্টির মধ্যে পার্থক্য কোথায়, প্রশ্ন নুরের

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। ছবি: সংগৃহীত

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। তার দাবি, সরকারে থাকা অবস্থায় যদি ছাত্রনেতারা একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন, তবে এটি সরকারী দলেরই অংশ হবে। এমনকি তিনি প্রশ্ন তোলেন, "তাহলে আওয়ামী লীগের মধ্যে এবং জাতীয়অ নাগরিক পার্টির মধ্যে পার্থক্য কোথায়?"

শনিবার (১ মার্চ) রাজধানীর বিজয়নগরের আল রাজি কমপ্লেক্সে গণঅধিকার পরিষদের একটি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন নুরুল হক নুর। তিনি আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থানের ভূমিকাকে ভুলে গিয়ে একটি নির্দিষ্ট বলয়কেন্দ্রিক সরকার গঠন করা হয়েছে, যা জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।

নুর সরকারের ছাত্র উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, "তারুণ্যের রাজনৈতিক দল হিসেবে গণঅধিকার পরিষদ সবসময় তরুণদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ উৎসাহিত করে এবং নতুন দলকে স্বাগত জানায়। তবে, আন্দোলনের পরিচিত মুখ থেকে যদি ছাত্ররা সরকারে অংশগ্রহণ করে রাজনৈতিক দল গঠন করে, তবে তা সরকারের পক্ষ থেকে জনগণের আস্থা ক্ষুণ্ন করতে পারে।"

তিনি আরও বলেন, সরকারে প্রতিনিধিত্বকারী ছাত্রনেতাদের মধ্যে থেকে কয়েকজন রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন, যাদের কারণে জনগণের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হচ্ছে। নুর বলেন, সরকারে থাকা ছাত্রদের উচিত অবিলম্বে পদত্যাগ করা, যাতে সরকারে নিরপেক্ষতা বজায় থাকে এবং জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।

গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচার এবং আহতদের চিকিৎসার প্রসঙ্গে নুর বলেন, এনাফ ইজ এনাফ। যথেষ্ট হয়েছে আমরা আর চুপচাপ থাকব না। গত ছয় মাসে গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের অল্প কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে সংবাদ সম্মেলন করে আহতদের অবস্থা বলতে হবে এবং আহত ও নিহতদের ক্যাটাগরির ব্যাপারে যে বৈষম্য করা হয়েছে, তা সংশোধন করতে হবে। গত ছয় মাসে বিভিন্ন কমিউনিটির যৌক্তিক দাবি-দাওয়া আমলে নেওয়া হয়নি। সংস্কারের কোনো বাস্তবায়ন দেখছি না। পুরনো ধারায়ই চলছে দেশ। এখন জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে এগিয়ে যাওয়া উচিত।

তিনি আরও বলেন, "জাতীয় নির্বাচন আগে স্থানীয় নির্বাচন প্রয়োজন। গণঅধিকার পরিষদ আগামী জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনে লড়বে এবং নির্বাচনের সময় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের পদ্ধতি চালু করার জন্য প্রয়োজনে আন্দোলনে নামবে।"

এছাড়া, নুরুল হক নুর কিছু গুরুত্বপূর্ণ দাবিও তুলে ধরেন:

১. জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে গণঅভ্যুত্থানের অংশীজনের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন।
২. আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন, শহীদ পরিবারকে ক্ষতিপূরণ।
৩. গণহত্যার বিচার এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ।
৪. রাষ্ট্র সংস্কার শেষ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন।

Header Ad
Header Ad

ভোট কারচুপিতে জড়িত ইউএনওদের বিচারের আওতায় আনতে হবে : ফারুক

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক। ছবিঃ সংগৃহীত

শুধু জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদেরই নয়, গত তিন নির্বাচনে ভোট কারচুপির সাথে জড়িত উপজেলা নির্বাহী অফিসারদেরও (ইউএনও) বিচারের আওতায় আনতে হবে,এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক।

শনিবার (১ মার্চ) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আবারও দেশবিরোধী চক্রান্ত শুরু হয়েছে। এই চক্রান্তকে রুখতে দ্রুততম সময়ে জাতীয় নির্বাচন প্রয়োজন। নির্বাচনের মাধ্যমেই সকল সমস্যার সমাধান হবে।

নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নতুন দলকে জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে অভিনন্দন। এ সময় নতুন দলটিকে গণতন্ত্রের স্বপক্ষে থাকার আহ্বানও জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দেশের আকাশে চাঁদ দেখা গেছে, কাল থেকে রোজা শুরু
আওয়ামী লীগ ও জাতীয় নাগরিক পার্টির মধ্যে পার্থক্য কোথায়, প্রশ্ন নুরের
ভোট কারচুপিতে জড়িত ইউএনওদের বিচারের আওতায় আনতে হবে : ফারুক
শ্মশানের যায়গা দখল ও মন্দিরে ডাকাতি করেছে আ'লীগ: আব্দুস সালাম
৪৫ দিনের মধ্যে শুরু হবে শেখ হাসিনার বিচার কাজ: চিফ প্রসিকিউটর
মেট্রোরেলের নতুন নির্দেশনা: রমজানে বহন করা যাবে ২৫০ মিলি পানি
চট্টগ্রামে 'ভুয়া পুলিশ' বলে এসআইকে মারধর ও ছিনতাই, গ্রেপ্তার ২
পল্লবী থেকে চায়নিজ রাইফেলের ৩০০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
জামিল আহমেদের কথা সব সত্য নয়, কিছু ডাহা মিথ্যা: ফারুকী
দেশে একমাত্র শান্তির দল হলো বিএনপি: শাহজাদা  
ভারতীয়রা সীমান্ত আইন না মানলে বিজিবি আরো কঠোর হবে : ডিজি
রমজানে ঢাকায় ২৫টি স্থানে ৬৫০ টাকায় মিলবে গরুর মাংস
মিঠাপুকুরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে খামারের মাছ চুরির অভিযোগ
রমজানে শপিংমল, বাস টার্মিনালে ছদ্মবেশে দায়িত্ব পালন করবে ডিবি সদস্যরা  
টাঙ্গাইলে সংস্কার দিয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের দাবি সুজনের  
এনসিপির আত্মপ্রকাশের অনুষ্ঠানে সরাসরি ডাক পায়নি আবু সাঈদের পরিবার
নির্বাচনে প্রমাণ হবে নাগরিক পার্টির জনসমর্থন: বিএনপি  
জেলেনস্কিকে ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চাইতে বললেন রুবিও  
ভোলায় একদিন আগেই রোজা রাখছেন ১০ গ্রামের মানুষ  
কসবায় বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত