রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

নদীর ঘাটে এসে পৌঁছাবার পরে অশ্ব শকটের কিশোর চালক বখশিশের জন্যে হাত বাড়ালো। পকেট হাতড়ে একটা কুড়ি পাউন্ডের নোট তার হাতে দিলাম। এরপর সে তার ঘোড়া দেখিয়ে আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিলো, এবারে ঘোড়া জন্যেও কিছু দাও। এমনিতেই আর কোনো ছোট নোট ছিল না, কাজেই আমিও তাকে বাংলায় উচ্চারণ করে এবং হাতের ইশারায় বলে দিলাম, কুড়ি পাউন্ড ঘোড়ার সাথে ভাগাভাগি করে খাও।

টুইয়াতে ওঠার সময় আবার মাথাগুণতির কার্ড জমা দিয়ে একে একে লবিতে এসে জড়ো হবার পরে দেরি না করে সোজা ব্রেকফাস্টের টেবিলে বসে পড়লাম। আমরা যারা এক সাথে এডফু টেম্পল দেখতে গিয়েছিলাম সেই কয়জন ছাড়া রেস্তোঁরা পুরোপুরি খালি। সকাল নয়টাও বাজেনি, এরই মধ্যে নাস্তাপানির পালা শেষ! আমাদের সামনা সামনি একটা টেবিলে একজন সঙ্গীসহ মোস্তফা এবং বিপরীত দিকের একটি টেবিলে টুইয়ার ম্যানেজার নাস্তা খেতে বসেছেন। এটা যে বুফে ব্রেকফাস্ট, বিশেষ করে মোস্তফাকে এজন্য কোনো বিল দিতে হবে না সেটা তার উপচে পড়া প্লেট দেখলেই বোঝা যায়। ম্যানেজার সাহেবের নাস্তাও নিশ্চয়ই ফ্রি। তারপরেও তিনি এতো বেলায় টেবিলে বসে কেন শুধু কয়েকটা শুকনো বনরুটি চিবাচ্ছেন বুঝতে পারলাম না।

ছবি: টুইয়ার শপিং এলাকা

আমরা জাহাজে ওঠার পরপরই নোঙর তুলে যাত্রা শুরু করেছে টুইয়া। ধীরে ধীরে শহর এলাকা ছেড়ে যাবার সময় দেখলাম, আসোয়ানের মতো এখানেও নদীর তীরেই মসজিদসহ অনেকগুলা বহুতল ভবন। খুব দ্রুতই আমরা শহর এলাকা ছাড়িয়ে এক পাশের সারি সারি খেজুর গাছের ওপারে উঁচু নিচু পাহাড় আর অন্যপাশে খেজুর বনের ভেতরে ভেতরে সবুজ ফসলের মাঠ দেখতে দেখতে এগাতে শুরু করলাম। এদিকে সবুজের ছোঁয়া অনেক বেশি, কোথাও কোথাও মনে হলো জমিতে জল জমে আছে।

জাহাজে সম্ভবত আমাদের মতো পনের কুড়িজন হাভাতে টুরিস্ট বাদ দিলে বাকিরা সকলেই অভিজাত শ্রেণির। তারা হয়তো এর আগেও অনেক বার এইপথে আসা যাওয়া করেছে। সেই কারণে তারা প্রত্নতাত্ত্বিক কোনো নিদর্শন, মন্দির-মসজিদ-দুর্গ-দেয়াল কোনোটাই দেখতে যায় না। অনেক সময় জাহাজ থেকে নামেও না। তারা হয়তো এখন শুধু রিলাক্স করতেই নীল নদে ভেসে বেড়াতে এসেছে। এখন উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে বিয়ারের ক্যান অথবা কফির মগ হাতে ছাদে বসে আছে।

ছবি: জাহাজের সুইমিং পুল

সাড়ে নয়টার দিকে নাস্তা শেষ করে উপরে ওঠার সময় ভাবলাম টুইয়ার শপিং এলাকাটা একবার ঘুরে দেখা যাক। খুব বড় আকারের না হলেও দ্বিতীয় তলার একটা বড় অংশ জুড়ে পর্যটক প্রিয় নানা সামগ্রীর বিশাল সংগ্রহের পশরা সাজানো। সেখানে বিক্রি হচ্ছে মিশরের বিভিন্ন যুগের নানা নিদর্শনের রেপ্লিকা, টি শার্ট-টুপি, মেয়েদের স্কার্ফ-হিজাব, স্কার্ট-শর্টস, ধাতব এবং পাথরের গহনা, এমন কি জুতা স্যান্ডেল, চাদর-বালিশ, ব্যাগ- স্যুটকেস পর্যন্ত। জলযানে ভ্রমণ করতে এসে দাম কিছু বেশি দিয়ে হলেও স্যুভেনিয়ার নিশ্চয়ই কেনা যায়। কিন্তু এখানে যে বিপুল পরিমাণে জিনিসপত্রের সমাবেশ তা কারা যে কিনে নিয়ে যায় আল্লাহ মালুম।

আমরা ঘুরে ফিরে দেখে কিছুই না কিনে ঘরে ঢুকে সকালের বাড়তি জামা কাপড় রেখে সিঁড়ি দিয়ে আপার ডেকে উঠে গেলাম। মাঝে দুই সারিতে চেয়ার টেবিল পাতা থাকলেও আমাদের রানা ভাইসহ মাত্র দু চারজন বসে বই পড়ছেন অথবা বিয়ারের ক্যানে চুমুক দিতে দিতে গল্প করছেন। দুপাশের ডেক চেয়ারেও অলসভঙ্গিতে শুয়ে আছে অনেকেই। জাহাজের সামনের দিকে স্যুইমিং পুলে একটা ফোয়ারা থেকে অবিরাম জল ঝরছে। কিন্তু এই ভাসমান পুলে কাউকেই জলক্রীড়া করতে দেখা গেল না। তবে স্যুইমিং পুলের ওপারে একেবারে সামনের দিকে পাতা ডেক চেয়ারের একটিও খালি নেই। সকলেই সামনে এগিয়ে যাবার দৃশ্য দেখতে চায়। নীলের নিস্তরঙ্গ জল কেটে আমাদের ঠিক পাশাপাশি এগিয়ে যাচ্ছিল ক্রুইজ শিপ এম ভি কংক্রিট! দুই জাহাজের মধ্যে সামানে এগিয়ে যাবার কোনো প্রতিযোগিতা নেই। আমি অনেক্ষণ ধরে পাশ দিয়ে পিছিয়ে যাওয়া খেজুর বনের দৃশ্য দেখছিলাম। তবে দীর্ঘক্ষণ ধরে একই দৃশ্য দেখার একঘেয়েমিতে আক্রান্ত হবার পরে ভাবলাম ঘরে ফিরে স্নান সমাপন করে যথা সময়ে খেতে গেলেই চলবে।

ছবি: তোয়ালের বানর

জাহাজের কক্ষগুলোতে সে সময় ক্লিনিং আওয়ার চলছিল। পরিচ্ছন্নতা অভিযানের কারণে আমাদের কক্ষের দরজা খোলা। ঘরে ঢুকেই একটা অভাবনীয় দৃশ্য চোখে পড়লো। আমাদের কক্ষের বাথরুম এবং বিছানার মাঝখানের খোলা কপাটের উপর থেকে একটা বানর ঝুলছে! না–হাত পা এবং লেজওয়ালা আসল বানর নয়, তোয়ালে দিয়ে তৈরি বানর কাপড় শুকানোর ক্লিপ দিয়ে ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে একটা হ্যাঙ্গারে। রুম সার্ভিসের ছেলেটা একটা নিষ্পাপ হাসি দিয়ে বললো, ‘ডু ইউ লাইক ইট স্যার?’ লাইক না করে আর উপায় কী! মনুষ্যকুলের পূর্ব পুরুষের কথা মনে করিয়ে দেয়াটা কোনো অপরাধের পর্যায়ে পড়ে না। সম্ভবত ঘরের কাজ শেষ করার পরে হাতে সময় থাকায় সে একটু শিল্প চর্চায় মন দিয়েছিল। তাকে আপাতত ধন্যবাদ দিয়ে বিদায় করলাম।

দুপুরে খাবার সময় হঠাৎ একটা বিপত্তি ঘটে গেল। আমাদের তিনজনের টেবিলে দুজন খেতে বসে লাঞ্চ প্রায় শেষ করে ফেলেছি, কিন্তু রানা ভাইয়ের দেখা নেই। ঘরে ফোন করেও তাঁকে পাওয়া গেল না। এদিকে লাঞ্চের সময়ও প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। ভাবলাম প্লেটের খাবার শেষ করেই তাঁকে খুঁজতে ছাদে যাবো। ঠিক এই সময়ে রানা ভাই এসে হাজির। বুফে কাউন্টার থেকে প্লেটে খাবার তুলে নিয়ে এসে টেবিলে রেখে যখন বসতে গেছেন তখন তাড়াহুড়ার কারণে অথবা অসাবধানতা বশত চেয়ারের কিনারায় বসে চেয়ারসহ মেঝেতে পড়ে গেলেন। সঙ্গে সঙ্গেই রেস্তোরাঁর দুজন কর্মী ছুটে এলে আমরা তিনজনে মিলে রানা ভাইকে ধরে টেনে তুলে ফেললাম। তিনি তেমন কোনো আঘাত পাননি, তবে ঘটনাটা মারাত্মক হতে পারতো। লাঞ্চ টাইম শেষ হয়ে গেলেও চণ্ডীদাসের খুড়ো এসে বলে গেলেন, ‘নো হারি, ডোন্ট ওরি। এনজয় ইয়োর লাঞ্চ।’

ছবি: এসনা লক

খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠা, এডফুর মন্দিরে দীর্ঘক্ষণ ঘোরাঘুরি এবং সব শেষে লোভনীয় লাঞ্চ যথেষ্ট পরিমাণে ‘এনজয়’ করার ফলে দুপুরে ঘরে এসেই বিছানায় গড়িয়ে পড়েছিলাম। শুয়ে শুয়ে কিছুক্ষণ নদী তীরের দৃশ্য, খেজুর বাগান আর ফসলের ক্ষেত, পাহাড়ের পাশ দিয়ে ছুটে চলা আন্তনগর ট্রেন এবং পাশ দিয়ে নৌযানের চলাচল দেখতে দেখতে চোখ ধরে এসেছিল। কিছু সময় ঘুমিয়েও নিয়ে মনে হয়। হঠাৎ জাহাজের পাশে বেশ হৈ চৈ শুনে তন্দ্রা ছুটে গেল। উঠে জানালার পাশে এসে দেখলাম আমাদের জাহাজ থেমে গেছে আর তার পাশে কয়েকটা নৌকায় ভাসমান ফেরিওয়ালা হাঁকডাক দিয়ে নদী থেকে জাহাজের আপার ডেক পর্যন্ত পুরো এলাকা সরগরম করে তুলেছে। প্রত্যেক নৌকায় একজন মাঝি হাল ধরে বসে আছে আর একজন ‘হ্যালো স্যার... ওনলি হান্ড্রেড পাউন্ড... গুড কোয়ালিটি... হ্যান্ড মেড স্যার...’ ইত্যাদি বলে সম্ভাব্য ক্রেতা আকর্ষণে ব্যস্ত। আমাদের পাশের ঘর থেকে রানা ভাইয়ের কণ্ঠও শোনা গেল। তিনি ফেরিওয়ালাদের সাথে কথোপকথন শুরু করে দিয়েছেন। একটু পরেই দেখলাম নদী থেকে বিক্রেতা উপরের দিকে কাপড়ের পোটলা ছুঁড়ে মারছে আর একটু পরেই কাপড়ের খালি ব্যাগ উপর থেকে নিচে চলে যাচ্ছে। নৌকায় দাঁড়ানো ফেরিওয়ালা ক্রিকেট বল ধরার মতো করে ব্যাগটা লুফে নিচ্ছে।

বুঝলাম আমাদের জাহাজ এসনায় পৌঁছে গেছে। শহর হিসাবে এসনা প্রাচীন মিশরীয়, টলেমিক, গ্রিকো-রোমান, ইসলামিক এবং একই সাথে বিশ শতকের আধুনিক নগরী। খ্রিস্টপূর্ব তিনশ অব্দে এসনা ছিল সে সময়ের আপার ঈজিপ্টের রাজধানী। নীল নদের উপরে এখানেই রয়েছে বিখ্যাত ‘এসনা লক!’ এডফু থেকে লক্সর অথবা লক্সর থেকে এডফু যাবার ঠিক মাঝখানে এই পথে প্রতিটি টুরিস্ট নৌযানকে একটি দীর্ঘ বাঁধের নিয়ন্ত্রিত অপরিসর পথ পেরিয়ে অপর পারে যেতে হয়। দুশ একুশ মিটার দীর্ঘ পথটুকু পেরোতে কুড়ি মিনিটের বেশি সময় লাগে না, তবে যেহেতু দু পারের নৌযান পারাপারের ক্ষেত্রে এটি একটি ‘ওয়ান ওয়ে’ বা একমুখি পারাপারের ব্যবস্থার কারণে এবং একই সাথে পানির স্তর সম্পর্কিত কৌশলগত সীমাবদ্ধতার ফলে একপাশের জাহাজকে ওপারে যাবার জন্যে অনেক সময় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। ‘লক’ মানে যখন তালা, তাহলে তালা খুলবার অপেক্ষায় তো থাকতেই হবে। এখন এই তালা খোলার চাবিটি কার হাতে সেটিই হলো আসল কথা।

ছবি: নীল নদের ভাসমান ফেরিওয়ালা

বাঁধ নির্মাণে প্রকৌশলগত উৎকর্ষের দিক থেকে সতের মিটার চওড়া এবং দুশ একুশ মিটার লম্বা ‘এসনা লক’ নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। আসোয়ান হাইড্যাম থেকে প্রায় একশ সত্তুর কিলোমিটার ভাটিতে নীল নদের গতিপথ পরিবর্তন করিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আসোয়ানের ভাটিতে নির্মিত সাতটি বাঁধের মধ্যে অন্যতম ‘এসনা লক’ নির্মিত হযেছিল নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ এবং উজানে পানির স্তর স্থিতিশীল রাখার জন্যে। জলের গভীরতা এখানে কম বেশি সাড়ে চৌদ্দ মিটার। ১৯০৬ সালে প্রথমে ব্রিটিশদের তৈরি এই বাঁধের আধুনিকায়ন হয়েছে ১৯৯৬ সালে।

ঐতিহাসিক এসনা লক পারাপারের দৃশ্য নিজের চোখে দেখার জন্যে ক্যামেরা হাতে উপরে উঠে এলাম। এ সময় টুইয়ার আপার ডেকের সামনের দিকে ভিড় করে বিপুল সংখ্যক আর্য নরনারী যেভাবে ক্যামেরা বাগিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তাতে খর্বকায় দ্রাবিড়ের পক্ষে সামনে থেকে ছবি তোলা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ালো। রানাভাইও তাঁর ভাসমান বাজারের কেনাকাটা শেষ করে উপরে উঠে এসেছেন। জানলাম একশ পাউন্ড দামের একটা শাল দরদাম করে সত্তুর পাউন্ডে কিনেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত একটা একশ পাউন্ডের নোট নিচে ছুঁড়ে দিয়ে হাল ধরে থাকা মাঝিকে কুড়ি পাউন্ড দিয়ে দিতে বলেছেন।

ছবি: এসনা লক পারাপার

এখানে অনেক সময় তালা খুলতে দেড় দুই ঘণ্টাও লাগে বলে শুনেছি। আমাদের কপাল ভালো বলে এই অপেক্ষার সময় কুড়ি পঁচিশ মিনিটের বেশি হলো না। একপাশে নদী বন্দর এসনা এবং অন্যদিকে দীর্ঘ বাঁধের দৃশ্য বেশ আকর্ষণীয় বলে ছবি তোলার জন্যে সকলেই ব্যস্ত। আমি এদিক সেদিক ঘুরে আবার যখন জাহাজের সামনের দিকে এসে দাঁড়ালাম তখন অনেকেরই উৎসাহে ভাটা পড়েছে। অতএব টুইয়া পারাপারের অনুমতি পেলে সামনে থেকে এই ‘তালাবদ্ধ’ বাঁধ পেরোবার অসাধারণ দৃশ্যটি ধরে রাখতে সমস্যা হলো না। জাহাজ চলতে শুরু করার পরে প্রায় প্রতি মুহূর্তেই মনে হচ্ছিল, এই বোধহয় একপাশের পাড় বা খুঁটি ছুঁয়ে দিল। কিন্তু না, আমাদের সাড়ে চৌদ্দ মিটার চওড়া এবং বাহাত্তর মিটার লম্বা জাহাজ ধীরে ধীরে বলা যায় অতি ধীরে সরু পথ পাড়ি দিয়ে নির্বিঘ্নে ওপারে পৌঁছে গেল।

এই শীর্ণ নৌপথে যদি এতো বড় জাহাজ পারাপার করতে পারে, তাহলে আমাদের লঞ্চগুলো পদ্মা সেতুর দুই খুঁটির নিচে দিয়ে যাবার সময় যথেষ্ট জায়গা থাকা সত্ত্বেও মাঝে মাঝেই ধাক্কা দেয় কেন! আমাদের আমলা কর্মচারীরা কতো কিছু শিখতে বিদেশে যান, জাহাজ পারাপারের কৌশল শিখতে জাহাজের ক্যাপ্টেন সারেং বা মাস্টারদের নীল নদে পাঠানো যেতে পারে।
এসনা লক পার হয়ে আসার পরে ‘টুইয়া’ আবার পূর্ণ গতিতে ছুটতে শুরু করল।

চলবে...

এসএ/

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

Header Ad
Header Ad

হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের হাকিমপুরে সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির (ওএমএস) সাড়ে ৫ মেট্রিকটন চাল ও ১০৪টি খালি চালের বস্তা উদ্ধার করা হয়েছে। এসব চাল একটি ধান ভাঙ্গা মিলের গুদামে মজুদ করা ছিল। ঘটনাটি ঘটেছে ২৬ এপ্রিল, শনিবার রাতে, যখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত রায় অভিযান চালিয়ে এসব উদ্ধার করেন।

গুদামটির মালিক আসাদুজ্জামান আসাদ, যিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের সদস্য, তার বিরুদ্ধে চাল মজুদ করার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা জানান, আলীহাট ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের কাছে তার মিলের গুদামে এসব চাল মজুদ ছিল। অভিযান চালিয়ে সাড়ে ৫ মেট্রিকটন চাল জব্দ করা হয়, তবে অভিযানের সময় মিল মালিক এবং কোনো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় আসাদকে গ্রেপ্তার করা না গেলেও তাকে আসামী করে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, চাল মজুদ করা বেআইনি এবং এটি অপরাধ। উদ্ধারকৃত চাল উপজেলা খাদ্যগুদামে পাঠানো হয়েছে এবং পরবর্তীতে নিয়মিত মামলায় তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা খালেদা খাতুন জানিয়েছেন, মামলাটি রবিবার বিকালে থানায় করা হবে, যেখানে আসাদুজ্জামান আসাদকে প্রধান আসামী হিসেবে দায়ের করা হবে।

এদিকে, আসাদ আগেও বৈষম্যবিরোধী দুই ছাত্র হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন।

Header Ad
Header Ad

চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

ক্যামেরার লেন্স চুরির অভিযোগ প্রমাণের ভিত্তিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আইন বিভাগের দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত দুই শিক্ষার্থী হলেন ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের আনাস আহমেদ ও শামীম ভূঁইয়া।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল হাকিম। 

আনাস আহমেদকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার ও আবাসিক হলের সীট বাতিল এবং শামীম ভুঁইয়াকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া তার ব্যাপারে পরিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে আগামীকাল সিন্ডিকেটে আলোচনা করা হবে বলে জানা গেছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল হাকিম বলেন, "গণমাধ্যমে আনাসকে নিয়ে রিপোর্ট হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট হয়েছে। এছাড়া তার চুরির সত্যতা পাওয়া গেছে। ফলে তাকে এক বছরের বহিষ্কার এবং হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আর শামীমের ব্যাপারে শৃঙ্খলা বোর্ড বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে। আগামীকাল বিষয়টি সিন্ডিকেটে আলোচনা হবে।'

এ ব্যাপারে রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, 'শৃঙ্খলা বোর্ড দুইটি সিদ্ধান্তের সুপারিশ করেছে। এখনো সাইন হয়নি পেপারে। আগামীকাল সিন্ডিকেটে ফাইনাল হবে বিষয়টি।'

উল্লেখ্য, এর আগে কুমিল্লার একটি অভিজাত হোটেল থেকে ক্যামেরার লেন্স চুরি করে আনাস এবং শামীম। সিসি ফোটেজ বিশ্লেষণ করে এর সত্যতাও পাওয়া যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২৫ এপ্রিল রাতে বেশ কয়েকজন বহিরাগত এসে ক্যাম্পাসে আনাসকে মারধরও করে।

Header Ad
Header Ad

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

অধিকৃত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা বেড়েই চলছে। তবে এই ইস্যুতে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে চলমান উত্তেজনা প্রশমনের পক্ষে বাংলাদেশ। দুটি বন্ধুপ্রতিম দেশ চাইলে বাংলাদেশ মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করতে পারে। তবে তার আগে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা।

রোববার (২৭ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

তিনি বলেন, আমাদের অবস্থান স্পষ্ট, আমরা শান্তি চাই দক্ষিণ এশিয়ায়। আমরা জানি, বিভিন্ন ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতময় সম্পর্ক আছে। কিন্তু আমরা চাই না এখানে কোনো বড় কোনো সংঘাত সৃষ্টি হোক, যাতে এটা এ অঞ্চলের মানুষের কোনো বিপদের কারণ না হয়ে উঠতে পারে। ভারত-পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক বিদ্যমান।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা চাইব তারা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তাদের সমস্যার সমাধান করে ফেলুক। আমরা ইতোমধ্যে দেখেছি, দু’একটি দেশের পক্ষ থেকে মধ্যস্থতার প্রস্তাব এসেছে। যেভাবে হোক মধ্যস্থতার মাধ্যমে হোক, দ্বিপক্ষীয় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে হোক, আমরা চাই উত্তেজনা প্রশমিত হোক এবং শান্তি বজায় থাকুক।

ভারত-পাকিস্তান দুটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইরান ও সৌদি আরব ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সমস্যা সমাধানে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশও মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করতে পারি কি না– এমন প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, আমি মনে করি না এই মুহূর্তে আমাদের মধ্যস্থতা করার মতো কোনো ভূমিকা নেওয়া উচিত। আমরা চাইব, তারা নিজেরা নিজেরা সমস্যার সমাধান করুক। তারা যদি আমাদের সহায়তা চায়, আপনারা মধ্যস্থতা করুন তাহলে হয়ত আমরা যাব। কিন্তু তার আগে আমরা আগবাড়িয়ে কিছু করতে চাই না।

ভারত-পাকিস্তানের চলমান উত্তেজনার কোনো প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে কি না– জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আধুনিক জামানায় সবকিছু সবাইকে কমবেশি প্রভাবিত করে। কাজেই কোনো কিছু আমাদের একটুও প্রভাবিত করবে না, সেটা আমি বলি না। তাদের যেই সংঘাত সেটা আমাদের সরাসরি প্রভাবিত করার কিছু নাই। কারণ, আমরা এতে কোনো পক্ষ নিইনি। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যেকোনো সংঘাত বা সম্পর্ক খারাপ হলে প্রভাব পড়ে।

‘তবে তাদের কাছ থেকে আমাদের যদি কোনো স্বার্থ থাকে আমদানি করার, আমরা করব।’, যোগ করেন তৌহিদ হোসেন।

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশ্নে উপদেষ্টা জানান, এটা হয়ত নিরাপত্তা নিয়ে যারা সরাসরি কাজ করেন তারা বলতে পারবেন। এই মুহূর্তে আমার কাছে এরকম কোনো তথ্য নেই।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে
চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা
সাব-ইন্সপেক্টর পদে প্রাথমিক সুপারিশ পেল ৫৯৯ জন
দুই উপদেষ্টার এপিএস-পিও’র দুর্নীতির খোঁজে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু
নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা চায় জামায়াত
কক্সবাজার-১ আসনের সাবেক এমপি জাফর আলম গ্রেপ্তার
ভারতের দিকে তাক করা পাকিস্তানের ১৩০ পারমাণবিক বোমা
চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় তাওহিদ হৃদয়, বাড়ছে নাটকের রঙ
উত্তেজনার মধ্যেই যুদ্ধজাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাল ভারত
ছেলে খুঁজে পাচ্ছি না, একজন জীবনসঙ্গী দরকার: মিলা
টাঙ্গাইলে শ্রমিকদলের নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধে ভারতের ১.১৪ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির শঙ্কা
দেশের পথে প্রধান উপদেষ্টা
রাজনীতির চেয়ারে ঘুণপোকা ধরেছে, এটি সংস্কার করা প্রয়োজন: ব্যারিস্টার ফুয়াদ
উত্তাল ইউআইইউ ক্যাম্পাস, ভিসি-ডিনসহ ১১ কর্মকর্তার পদত্যাগ
এপ্রিলেই দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, সঙ্গে থাকবেন দুই পুত্রবধূ
বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে বিশাল নিয়োগ, পদ ৬০৮
ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় ফ্যাসিবাদী শাসক পালাতে বাধ্য হয়েছে: আলী রীয়াজ
মহেশপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত