শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

নদীর ঘাটে এসে পৌঁছাবার পরে অশ্ব শকটের কিশোর চালক বখশিশের জন্যে হাত বাড়ালো। পকেট হাতড়ে একটা কুড়ি পাউন্ডের নোট তার হাতে দিলাম। এরপর সে তার ঘোড়া দেখিয়ে আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিলো, এবারে ঘোড়া জন্যেও কিছু দাও। এমনিতেই আর কোনো ছোট নোট ছিল না, কাজেই আমিও তাকে বাংলায় উচ্চারণ করে এবং হাতের ইশারায় বলে দিলাম, কুড়ি পাউন্ড ঘোড়ার সাথে ভাগাভাগি করে খাও।

টুইয়াতে ওঠার সময় আবার মাথাগুণতির কার্ড জমা দিয়ে একে একে লবিতে এসে জড়ো হবার পরে দেরি না করে সোজা ব্রেকফাস্টের টেবিলে বসে পড়লাম। আমরা যারা এক সাথে এডফু টেম্পল দেখতে গিয়েছিলাম সেই কয়জন ছাড়া রেস্তোঁরা পুরোপুরি খালি। সকাল নয়টাও বাজেনি, এরই মধ্যে নাস্তাপানির পালা শেষ! আমাদের সামনা সামনি একটা টেবিলে একজন সঙ্গীসহ মোস্তফা এবং বিপরীত দিকের একটি টেবিলে টুইয়ার ম্যানেজার নাস্তা খেতে বসেছেন। এটা যে বুফে ব্রেকফাস্ট, বিশেষ করে মোস্তফাকে এজন্য কোনো বিল দিতে হবে না সেটা তার উপচে পড়া প্লেট দেখলেই বোঝা যায়। ম্যানেজার সাহেবের নাস্তাও নিশ্চয়ই ফ্রি। তারপরেও তিনি এতো বেলায় টেবিলে বসে কেন শুধু কয়েকটা শুকনো বনরুটি চিবাচ্ছেন বুঝতে পারলাম না।

ছবি: টুইয়ার শপিং এলাকা

আমরা জাহাজে ওঠার পরপরই নোঙর তুলে যাত্রা শুরু করেছে টুইয়া। ধীরে ধীরে শহর এলাকা ছেড়ে যাবার সময় দেখলাম, আসোয়ানের মতো এখানেও নদীর তীরেই মসজিদসহ অনেকগুলা বহুতল ভবন। খুব দ্রুতই আমরা শহর এলাকা ছাড়িয়ে এক পাশের সারি সারি খেজুর গাছের ওপারে উঁচু নিচু পাহাড় আর অন্যপাশে খেজুর বনের ভেতরে ভেতরে সবুজ ফসলের মাঠ দেখতে দেখতে এগাতে শুরু করলাম। এদিকে সবুজের ছোঁয়া অনেক বেশি, কোথাও কোথাও মনে হলো জমিতে জল জমে আছে।

জাহাজে সম্ভবত আমাদের মতো পনের কুড়িজন হাভাতে টুরিস্ট বাদ দিলে বাকিরা সকলেই অভিজাত শ্রেণির। তারা হয়তো এর আগেও অনেক বার এইপথে আসা যাওয়া করেছে। সেই কারণে তারা প্রত্নতাত্ত্বিক কোনো নিদর্শন, মন্দির-মসজিদ-দুর্গ-দেয়াল কোনোটাই দেখতে যায় না। অনেক সময় জাহাজ থেকে নামেও না। তারা হয়তো এখন শুধু রিলাক্স করতেই নীল নদে ভেসে বেড়াতে এসেছে। এখন উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে বিয়ারের ক্যান অথবা কফির মগ হাতে ছাদে বসে আছে।

ছবি: জাহাজের সুইমিং পুল

সাড়ে নয়টার দিকে নাস্তা শেষ করে উপরে ওঠার সময় ভাবলাম টুইয়ার শপিং এলাকাটা একবার ঘুরে দেখা যাক। খুব বড় আকারের না হলেও দ্বিতীয় তলার একটা বড় অংশ জুড়ে পর্যটক প্রিয় নানা সামগ্রীর বিশাল সংগ্রহের পশরা সাজানো। সেখানে বিক্রি হচ্ছে মিশরের বিভিন্ন যুগের নানা নিদর্শনের রেপ্লিকা, টি শার্ট-টুপি, মেয়েদের স্কার্ফ-হিজাব, স্কার্ট-শর্টস, ধাতব এবং পাথরের গহনা, এমন কি জুতা স্যান্ডেল, চাদর-বালিশ, ব্যাগ- স্যুটকেস পর্যন্ত। জলযানে ভ্রমণ করতে এসে দাম কিছু বেশি দিয়ে হলেও স্যুভেনিয়ার নিশ্চয়ই কেনা যায়। কিন্তু এখানে যে বিপুল পরিমাণে জিনিসপত্রের সমাবেশ তা কারা যে কিনে নিয়ে যায় আল্লাহ মালুম।

আমরা ঘুরে ফিরে দেখে কিছুই না কিনে ঘরে ঢুকে সকালের বাড়তি জামা কাপড় রেখে সিঁড়ি দিয়ে আপার ডেকে উঠে গেলাম। মাঝে দুই সারিতে চেয়ার টেবিল পাতা থাকলেও আমাদের রানা ভাইসহ মাত্র দু চারজন বসে বই পড়ছেন অথবা বিয়ারের ক্যানে চুমুক দিতে দিতে গল্প করছেন। দুপাশের ডেক চেয়ারেও অলসভঙ্গিতে শুয়ে আছে অনেকেই। জাহাজের সামনের দিকে স্যুইমিং পুলে একটা ফোয়ারা থেকে অবিরাম জল ঝরছে। কিন্তু এই ভাসমান পুলে কাউকেই জলক্রীড়া করতে দেখা গেল না। তবে স্যুইমিং পুলের ওপারে একেবারে সামনের দিকে পাতা ডেক চেয়ারের একটিও খালি নেই। সকলেই সামনে এগিয়ে যাবার দৃশ্য দেখতে চায়। নীলের নিস্তরঙ্গ জল কেটে আমাদের ঠিক পাশাপাশি এগিয়ে যাচ্ছিল ক্রুইজ শিপ এম ভি কংক্রিট! দুই জাহাজের মধ্যে সামানে এগিয়ে যাবার কোনো প্রতিযোগিতা নেই। আমি অনেক্ষণ ধরে পাশ দিয়ে পিছিয়ে যাওয়া খেজুর বনের দৃশ্য দেখছিলাম। তবে দীর্ঘক্ষণ ধরে একই দৃশ্য দেখার একঘেয়েমিতে আক্রান্ত হবার পরে ভাবলাম ঘরে ফিরে স্নান সমাপন করে যথা সময়ে খেতে গেলেই চলবে।

ছবি: তোয়ালের বানর

জাহাজের কক্ষগুলোতে সে সময় ক্লিনিং আওয়ার চলছিল। পরিচ্ছন্নতা অভিযানের কারণে আমাদের কক্ষের দরজা খোলা। ঘরে ঢুকেই একটা অভাবনীয় দৃশ্য চোখে পড়লো। আমাদের কক্ষের বাথরুম এবং বিছানার মাঝখানের খোলা কপাটের উপর থেকে একটা বানর ঝুলছে! না–হাত পা এবং লেজওয়ালা আসল বানর নয়, তোয়ালে দিয়ে তৈরি বানর কাপড় শুকানোর ক্লিপ দিয়ে ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে একটা হ্যাঙ্গারে। রুম সার্ভিসের ছেলেটা একটা নিষ্পাপ হাসি দিয়ে বললো, ‘ডু ইউ লাইক ইট স্যার?’ লাইক না করে আর উপায় কী! মনুষ্যকুলের পূর্ব পুরুষের কথা মনে করিয়ে দেয়াটা কোনো অপরাধের পর্যায়ে পড়ে না। সম্ভবত ঘরের কাজ শেষ করার পরে হাতে সময় থাকায় সে একটু শিল্প চর্চায় মন দিয়েছিল। তাকে আপাতত ধন্যবাদ দিয়ে বিদায় করলাম।

দুপুরে খাবার সময় হঠাৎ একটা বিপত্তি ঘটে গেল। আমাদের তিনজনের টেবিলে দুজন খেতে বসে লাঞ্চ প্রায় শেষ করে ফেলেছি, কিন্তু রানা ভাইয়ের দেখা নেই। ঘরে ফোন করেও তাঁকে পাওয়া গেল না। এদিকে লাঞ্চের সময়ও প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। ভাবলাম প্লেটের খাবার শেষ করেই তাঁকে খুঁজতে ছাদে যাবো। ঠিক এই সময়ে রানা ভাই এসে হাজির। বুফে কাউন্টার থেকে প্লেটে খাবার তুলে নিয়ে এসে টেবিলে রেখে যখন বসতে গেছেন তখন তাড়াহুড়ার কারণে অথবা অসাবধানতা বশত চেয়ারের কিনারায় বসে চেয়ারসহ মেঝেতে পড়ে গেলেন। সঙ্গে সঙ্গেই রেস্তোরাঁর দুজন কর্মী ছুটে এলে আমরা তিনজনে মিলে রানা ভাইকে ধরে টেনে তুলে ফেললাম। তিনি তেমন কোনো আঘাত পাননি, তবে ঘটনাটা মারাত্মক হতে পারতো। লাঞ্চ টাইম শেষ হয়ে গেলেও চণ্ডীদাসের খুড়ো এসে বলে গেলেন, ‘নো হারি, ডোন্ট ওরি। এনজয় ইয়োর লাঞ্চ।’

ছবি: এসনা লক

খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠা, এডফুর মন্দিরে দীর্ঘক্ষণ ঘোরাঘুরি এবং সব শেষে লোভনীয় লাঞ্চ যথেষ্ট পরিমাণে ‘এনজয়’ করার ফলে দুপুরে ঘরে এসেই বিছানায় গড়িয়ে পড়েছিলাম। শুয়ে শুয়ে কিছুক্ষণ নদী তীরের দৃশ্য, খেজুর বাগান আর ফসলের ক্ষেত, পাহাড়ের পাশ দিয়ে ছুটে চলা আন্তনগর ট্রেন এবং পাশ দিয়ে নৌযানের চলাচল দেখতে দেখতে চোখ ধরে এসেছিল। কিছু সময় ঘুমিয়েও নিয়ে মনে হয়। হঠাৎ জাহাজের পাশে বেশ হৈ চৈ শুনে তন্দ্রা ছুটে গেল। উঠে জানালার পাশে এসে দেখলাম আমাদের জাহাজ থেমে গেছে আর তার পাশে কয়েকটা নৌকায় ভাসমান ফেরিওয়ালা হাঁকডাক দিয়ে নদী থেকে জাহাজের আপার ডেক পর্যন্ত পুরো এলাকা সরগরম করে তুলেছে। প্রত্যেক নৌকায় একজন মাঝি হাল ধরে বসে আছে আর একজন ‘হ্যালো স্যার... ওনলি হান্ড্রেড পাউন্ড... গুড কোয়ালিটি... হ্যান্ড মেড স্যার...’ ইত্যাদি বলে সম্ভাব্য ক্রেতা আকর্ষণে ব্যস্ত। আমাদের পাশের ঘর থেকে রানা ভাইয়ের কণ্ঠও শোনা গেল। তিনি ফেরিওয়ালাদের সাথে কথোপকথন শুরু করে দিয়েছেন। একটু পরেই দেখলাম নদী থেকে বিক্রেতা উপরের দিকে কাপড়ের পোটলা ছুঁড়ে মারছে আর একটু পরেই কাপড়ের খালি ব্যাগ উপর থেকে নিচে চলে যাচ্ছে। নৌকায় দাঁড়ানো ফেরিওয়ালা ক্রিকেট বল ধরার মতো করে ব্যাগটা লুফে নিচ্ছে।

বুঝলাম আমাদের জাহাজ এসনায় পৌঁছে গেছে। শহর হিসাবে এসনা প্রাচীন মিশরীয়, টলেমিক, গ্রিকো-রোমান, ইসলামিক এবং একই সাথে বিশ শতকের আধুনিক নগরী। খ্রিস্টপূর্ব তিনশ অব্দে এসনা ছিল সে সময়ের আপার ঈজিপ্টের রাজধানী। নীল নদের উপরে এখানেই রয়েছে বিখ্যাত ‘এসনা লক!’ এডফু থেকে লক্সর অথবা লক্সর থেকে এডফু যাবার ঠিক মাঝখানে এই পথে প্রতিটি টুরিস্ট নৌযানকে একটি দীর্ঘ বাঁধের নিয়ন্ত্রিত অপরিসর পথ পেরিয়ে অপর পারে যেতে হয়। দুশ একুশ মিটার দীর্ঘ পথটুকু পেরোতে কুড়ি মিনিটের বেশি সময় লাগে না, তবে যেহেতু দু পারের নৌযান পারাপারের ক্ষেত্রে এটি একটি ‘ওয়ান ওয়ে’ বা একমুখি পারাপারের ব্যবস্থার কারণে এবং একই সাথে পানির স্তর সম্পর্কিত কৌশলগত সীমাবদ্ধতার ফলে একপাশের জাহাজকে ওপারে যাবার জন্যে অনেক সময় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। ‘লক’ মানে যখন তালা, তাহলে তালা খুলবার অপেক্ষায় তো থাকতেই হবে। এখন এই তালা খোলার চাবিটি কার হাতে সেটিই হলো আসল কথা।

ছবি: নীল নদের ভাসমান ফেরিওয়ালা

বাঁধ নির্মাণে প্রকৌশলগত উৎকর্ষের দিক থেকে সতের মিটার চওড়া এবং দুশ একুশ মিটার লম্বা ‘এসনা লক’ নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। আসোয়ান হাইড্যাম থেকে প্রায় একশ সত্তুর কিলোমিটার ভাটিতে নীল নদের গতিপথ পরিবর্তন করিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আসোয়ানের ভাটিতে নির্মিত সাতটি বাঁধের মধ্যে অন্যতম ‘এসনা লক’ নির্মিত হযেছিল নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ এবং উজানে পানির স্তর স্থিতিশীল রাখার জন্যে। জলের গভীরতা এখানে কম বেশি সাড়ে চৌদ্দ মিটার। ১৯০৬ সালে প্রথমে ব্রিটিশদের তৈরি এই বাঁধের আধুনিকায়ন হয়েছে ১৯৯৬ সালে।

ঐতিহাসিক এসনা লক পারাপারের দৃশ্য নিজের চোখে দেখার জন্যে ক্যামেরা হাতে উপরে উঠে এলাম। এ সময় টুইয়ার আপার ডেকের সামনের দিকে ভিড় করে বিপুল সংখ্যক আর্য নরনারী যেভাবে ক্যামেরা বাগিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তাতে খর্বকায় দ্রাবিড়ের পক্ষে সামনে থেকে ছবি তোলা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ালো। রানাভাইও তাঁর ভাসমান বাজারের কেনাকাটা শেষ করে উপরে উঠে এসেছেন। জানলাম একশ পাউন্ড দামের একটা শাল দরদাম করে সত্তুর পাউন্ডে কিনেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত একটা একশ পাউন্ডের নোট নিচে ছুঁড়ে দিয়ে হাল ধরে থাকা মাঝিকে কুড়ি পাউন্ড দিয়ে দিতে বলেছেন।

ছবি: এসনা লক পারাপার

এখানে অনেক সময় তালা খুলতে দেড় দুই ঘণ্টাও লাগে বলে শুনেছি। আমাদের কপাল ভালো বলে এই অপেক্ষার সময় কুড়ি পঁচিশ মিনিটের বেশি হলো না। একপাশে নদী বন্দর এসনা এবং অন্যদিকে দীর্ঘ বাঁধের দৃশ্য বেশ আকর্ষণীয় বলে ছবি তোলার জন্যে সকলেই ব্যস্ত। আমি এদিক সেদিক ঘুরে আবার যখন জাহাজের সামনের দিকে এসে দাঁড়ালাম তখন অনেকেরই উৎসাহে ভাটা পড়েছে। অতএব টুইয়া পারাপারের অনুমতি পেলে সামনে থেকে এই ‘তালাবদ্ধ’ বাঁধ পেরোবার অসাধারণ দৃশ্যটি ধরে রাখতে সমস্যা হলো না। জাহাজ চলতে শুরু করার পরে প্রায় প্রতি মুহূর্তেই মনে হচ্ছিল, এই বোধহয় একপাশের পাড় বা খুঁটি ছুঁয়ে দিল। কিন্তু না, আমাদের সাড়ে চৌদ্দ মিটার চওড়া এবং বাহাত্তর মিটার লম্বা জাহাজ ধীরে ধীরে বলা যায় অতি ধীরে সরু পথ পাড়ি দিয়ে নির্বিঘ্নে ওপারে পৌঁছে গেল।

এই শীর্ণ নৌপথে যদি এতো বড় জাহাজ পারাপার করতে পারে, তাহলে আমাদের লঞ্চগুলো পদ্মা সেতুর দুই খুঁটির নিচে দিয়ে যাবার সময় যথেষ্ট জায়গা থাকা সত্ত্বেও মাঝে মাঝেই ধাক্কা দেয় কেন! আমাদের আমলা কর্মচারীরা কতো কিছু শিখতে বিদেশে যান, জাহাজ পারাপারের কৌশল শিখতে জাহাজের ক্যাপ্টেন সারেং বা মাস্টারদের নীল নদে পাঠানো যেতে পারে।
এসনা লক পার হয়ে আসার পরে ‘টুইয়া’ আবার পূর্ণ গতিতে ছুটতে শুরু করল।

চলবে...

এসএ/

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত