সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

সন্ধ্যার আগে সবাইকে ভাত খেতে দেয় মায়ারানী। বলে, এটা রাতের খাবার। রাতে নৌকায় খাওয়ার ব্যবস্থা হবেনা। এখন পেট ভরে খেয়ে নাও সবাই। অজয় তুমিও এই পাশে বসো। তোমাকেতো নৌকা বাইতে হবে। আমি যতক্ষণ পারি তোমার সঙ্গে জেগে থাকব। বাচ্চারা ঘুমাবে। তোমার বেশি কষ্ট হয়ে গেলে বীথিকার বাবাও নৌকা বেয়ে তোমাকে সহযোগিতা করবে।

হরেন্দ্রনাথ মাথা নেড়ে বলে, হ্যাঁ, ঠিক বলেছো। বাবারা খেতে বসো।

অমল বলে, আমার যদি রাতে খিদা পায়?

-বিস্কুট খেতে দেব।
-হ্যাঁ, খাব খাব।

তিন ছেলে একসঙ্গে চেঁচিয়ে কথা বলে। বনের পাখিদের কূজন ভেসে আসে। ভাত খেয়ে সূর্য ডোবার আগে নৌকায় ওঠে সবাই। অজয় মাঝি নৌকা বাইতে শুরু করে। এভাবে রাতের অন্ধকারে নদীপথ পার হয় সবাই। আশেপাশে ছোট ছোট অনেক নৌকা আছে। মাঝে মাঝে জয় বাংলা ধ্বনি ভেসে আসে নৌকা থেকে। হরেন্দ্রনাথ নিজেও জয় বাংলা-স্লোগান দেয়। সঙ্গে বীথিকা, মায়রানীও স্লোগান দেয়। রাত বাড়ে। নদীপথে অন্ধকার গাঢ় হয়। তারপর চাঁদের হালকা আলোয় নৌকা চালায় অজয়। মায়ারাণীর মনে হয় দেশ ছেড়ে যেতে হচ্ছে অন্য দেশে বেঁচে থাকার জন্য। দেশের এই নদী, রাতের আকাশ, অজয় মাঝির মতো সাহসী মানুষ রাতের অন্ধকারে নদী পার করে দিচ্ছে! এমন সুন্দর জীবনের স্বপ্ন নিয়ে ফিরে আসবে স্বাধীন দেশে। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণ করবে এ দেশের সাহসী মানুষেরা। মায়ারাণী সবার মুখ থেকে শোনা স্লোগানটি উচ্চারণ করে -‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো -বাংলাদেশ স্বাধীন করো।’
বাতাসে ভেসে যায় তার কন্ঠস্বর -নদীর স্রোতে মিশে যায় কন্ঠস্বর। হরেন্দ্রনাথ শুয়েছিল। স্লোগান শুনে সঙ্গে সঙ্গে উঠে বসে বলে, স্লোগান দিচ্ছ?


- হ্যাঁ গো, স্লোগান দিয়ে ভরিয়ে দেব এই অপরূপ দেশ। মানুষেরা সবাই মিলে যুদ্ধ করবে।
-আমরা কি করব?
-আমরাও দেখব কি সহযোগিতা করা যায়?
-তা ঠিক, শুধুতো অস্ত্র হাতে যুদ্ধ না, যুদ্ধের নেপথ্যেও অনেক কাজ থাকে।
-যে মুক্তিযোদ্ধারা আহত হবে তাদের সেবা করব আমি।
-মায়ের সঙ্গে আমিও সেবার কাজ করব। আর যদি অস্ত্র চালানো শিখতে পারি তাহলে পাকসেনাদের মারব। ওরা যেভাবে গানবোট নিয়ে যায় তখন গাছের আড়ালে লুকিয়ে থেকে ওদেরকে গুলি করব।
- সাবাস, আমার মা। দেখি ভারতের কোথায় ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা আছে। তোকে সেখানে নিয়ে যাব।
-বাবা, নদীর স্রোতের সঙ্গে ভেসে আসা লাশ দেখে আমি মর্মাহত। আমার মনে হয় আমার শক্তি ফুরিয়ে যাচ্ছে। একসঙ্গে এত মৃত মানুষ দেখতে হচ্ছে।
-এসব নিয়ে এত ভাবিসনা মা। মনে সাহস রাখ। সাহসই এখন খুব দরকার। এখন আমরা মৃত্যু শোক করবনা। এই মৃত্যু গৌরবের। তারা দেশের বীর সন্তান। স্বাধীনতার জন্য জীবন দিচ্ছে।
হরেন্দ্রনাথের কথা শেষ করতেই অজয় বলে, নৌকাটা একটু তীরে ঠেকাই কাকু?
-কেন রে?
-আমার ঘুম পাচ্ছে। তীরে ঠেকিয়ে আমি ঘন্টাখানেক ঘুমাব। তারপর আপনারা আমাকে জাগিয়ে দেবেন।
-আচ্ছা ঠিক আছে। ঠেকাও।


অজয় নৌকা ঠেকিয়ে শুয়ে পড়ে একদম নৌকার কিনারে। ওর মাথা ঝিমঝিম করছে। কানের কাছে পানির শব্দ। কোনোকিছুতে বাধাগ্রস্থ হয়না। ঘুমিয়ে পড়ে। হরেন্দ্রনাথও শুয়ে পড়লে মায়ারাণী চুপচাপ বসে থাকে। এত রাতে নদীতে গানবোট নাই। দূরে তাকালে দু’একটা নৌকা যেতে দেখা যায়। মানুষজন বসে আছে। সুন্দরবন এখানে নেই, পুরো এলাকা খোলা মাঠ। ধানক্ষেত বিস্তারিত হয়ে আছে। অনেকদূর পর্যন্ত দৃষ্টি চলে যায়। মায়ারাণী মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে। এভাবে নিজের দেশকে দেখা কোনোদিন হয়নি। এই যাত্রায় প্রথমে মন খারাপ ছিল শরণার্থী হওয়ার জন্য। কিন্তু এই যাত্রা বদলে দেয় দেশের ছবি। মায়ারাণী গভীরবোধে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেকে বলে, এই দেশ হবে শুধুই বাঙালির। পাকিস্তানিদের না। বাঙালি নিজের ভাষা রক্ষা করার জন্য প্রাণ দিয়েছে। মায়ারণী নৌকা থেকে লাফ দিয়ে তীরে নামে। খালি পায়ে মাটিতে হেঁটে পা-ভরে মাটি লাগায়। তারপর ফিরে আসে নৌকায়। হরেন্দ্রনাথ এটা বুঝে বলে, ভালো করেছো। দেশের মাটি পায়ে ভরেছো। এখন যেখানেই থাকবে মনে রাখবে দেশ তোমার, শত্রুদের না।
দুজনের কথায় অজয় উঠে বসে। বলে, কাকু নৌকা ছাড়ি?


- হ্যাঁ, ছাড়। আমাদের তিন দিন তিন রাত লাগবে পৌঁছাতে। দেরি করা উচিত না।
অজয় নৌকা ছেড়ে দেয়। মধ্যরাত শেষ হয়ে ভোররাতের আভা শুরু হয়েছে। চারদিকে ফিকে আলোর স্নিগ্ধতা ছড়িয়ে আছে। হরেন্দ্রনাথ চারদিকে তাকিয়ে বলে, একটুপরে সূর্য উঠবে। তখন আমরা পার হয়ে যাব শিবসা নদী। তাইনা অজয়?


-হ্যাঁ কাকু ঠিক বলেছেন। ইছামতি নদী পার হতে সারাদিন সারারাত লাগবে।
-হ্যাঁ, তা আমি জানি।


কেউ আর কথা বলেনা। চারদিকে তাকিয়ে থেকে নিজেদের দৃষ্টিকে স্নিগ্ধ করে। একসময় সূর্য ওঠে। ছেলেমেয়েরা উঠে বসে। চারদিকে তাকিয়ে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে ওদের চেহারা। চারজনই বলে, কি সুন্দর লাগছে চারদিক।
কৃষ্ণপদ হাসতে হাসতে বলে, বড় হয়ে আমি একটি নৌকা কিনব। আর নৌকায় ঘুরে বেড়াব সব নদীতে।
বীথিকা চেঁচিয়ে বলে, আমিও তোর সঙ্গে ঘুরে বেড়াব ছোট্ট দাদা। তুই যখন ঘুরবি তখন আমার মনে হবে, আমি তোর ছোট বোন। তুই আমার বড় ভাই।


- হুররে, হুররে। আমি দিদির বড়ভাই হব।
কৃষ্ণপদ হাততালি দেয়। বীথিকা হাসতে হাসতে বলে, নিরঞ্জন আর অমল আমার ছোট ভাই থাকবে।
- হ্যাঁ, আমরা ছোটভাই থাকব। দিদির আদর কুড়াব।
- ঠিক বলেছিস।
কৃষ্ণপদ সায় দেয়।
- আমি বড় ভাই হয়ে দিদিকে আদর দেব।
মায়ারাণী হাত তুলে ওদেরকে বলে, এবার তোরা থাম। সকালের খাবার খেতে হবে না?
- হবে মা। কখন খাব?
- এখনই দিচ্ছি।

 

(চলবে)

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমস

ছবি: সংগৃহীত

কাশ্মিরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ভারত এখন পাকিস্তানে সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইতিমধ্যে বিশ্বের এক ডজনেরও বেশি দেশের নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং দিল্লিতে কূটনৈতিকদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন। তবে এসব আলোচনা মূলত অভিযানের যৌক্তিকতা তুলে ধরতেই হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

কাশ্মির সীমান্তে দুই দেশের মধ্যে গুলিবিনিময় অব্যাহত রয়েছে। কাশ্মিরে ব্যাপক ধরপাকড় চলছে এবং শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অতীতের সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার ইতিহাস তুলে ধরলেও এবারকার হামলায় সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ এখনো প্রকাশ করেনি। পাকিস্তান সরকার সব ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, যেহেতু ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই পরমাণু শক্তিধর দেশ, তাই সামরিক সংঘাত বড় ধরনের বিপর্যয়ে রূপ নিতে পারে।

ইরান ও সৌদি আরব মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে। যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ের প্রতি সমর্থন জানালেও, দক্ষিণ এশিয়ার প্রতি তাদের মনোযোগ সীমিত বলেই মনে করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১৯ সালের ঘটনার তুলনায় এবার প্রমাণের স্বচ্ছতা কম, আর “রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট” নামে একটি অজ্ঞাত গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করলেও ভারত এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠনের ছায়া গোষ্ঠী বলে মনে করছে।

ভারতীয় সরকারের ওপর অভ্যন্তরীণ চাপ রয়েছে এবং মোদি সরকার “বড় ধরনের কিছু” করার পরিকল্পনায় এগোচ্ছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানিয়েছেন, রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সরাতে শিগগিরই অভিযান চালানো হবে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) মিরপুর পল্লবীতে রাস্তা, ফুটপাত ও নর্দমা নির্মাণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এজাজ জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ইতোমধ্যে অবৈধ অটোরিকশা তৈরির ওয়ার্কশপ ও চার্জিং স্টেশনের তালিকা প্রস্তুত করেছে। তালিকাভুক্ত স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে শিগগিরই যৌথ অভিযান চালানো হবে।

এছাড়া, ডিএনসিসি প্রশাসক আবাসিক এলাকাগুলোতে অবৈধ অটোরিকশা ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধে বাড়ির মালিক সমিতিগুলোকেও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে তিনি জলাধার রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে নাগরিকদের জমি কেনার আগে মৌজা ম্যাপ যাচাই করার অনুরোধ জানান।

পল্লবীর ইস্টার্ন হাউজিং এলাকার উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, সাতটি প্যাকেজে রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ শেষ হলে এলাকাটির জলাবদ্ধতা কমবে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। পাশাপাশি বর্ষায় বড় গাছ লাগিয়ে এলাকা সবুজায়নের উদ্যোগ নেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকির অভিযোগ দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে (ভিডিও)

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্টের কাছে চাঁদা দাবী করার অভিযোগ উঠেছে দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে। চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকিও দেয়া হয়েছে।সম্প্রতি তাদের কথোপকথনের একটি কল রেকর্ড ফাঁস হয়েছে।

অভিযুক্তরা হলেন রেলপথ মন্ত্রনালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসান এবং রেজাউল করীম। 

ভাইরাল হওয়া ওই কল রেকর্ড থেকে জানা যায়, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চট্টগ্রাম বিভাগের কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর কাছে ১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় ওই ২ সমন্বয়ক। তবে এটি করবে না যদি বর্তমানে ঢাকায় কর্মরত রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্ট মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম তাদের দাবীকৃত টাকা তাদের বুঝিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলামের সাথে এর আগেও বেশ কয়েকবার আলোচনা হয়েছিল ওই দুই সমন্বয়কের।

রেকর্ডে শোনা যায়- কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলাম ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসানকে বলছেন, ‘‘আমি তো ওইদিন আপনার সামনেই বললাম কোর্টের মধ্যে থেকে যে টাকাটা জমা হয় ওইটা তোলার জন্য। ওইটা না হলে দুই লাখ টাকা দিতে পারবো না, আমার কোন ইনকাম সোর্সও নাই। কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর যেহেতু বলছে তার কাছ থেকে দশ লাখ টাকা নিয়া নেন। সে মাত্র গেছে।’’

ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী বলছে, না। ‘‘সমস্যা নেই আপনার সাথে যে কথা হয়েছে নির্জন (রেজাউল ইসলামের ডাক নাম) ভাইয়ের, ওইটা দিলেই হবে। তাহলে ওইটা হচ্ছে কবে? কালকে?’’

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘কোর্ট থেকে টাকাটা উঠানোর সাথে সাথে আমি দিয়ে দিবো। যদিও আমার কষ্ট হইতেছে। কারণ এর বাইরে তো আমার কাছে টাকা নেই।’’

এরপর মেহেদী ফোন ধরিয়ে দেয় আরেক ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউলকে, ফোন দিয়ে বলে শফিক ভাই কথা বলবে। এরপর মেহেদী তার মুঠোফোনটি রেজাউলকে দিয়ে দেয়।

এ সময় শফিকুল ইসলাম রেজাউল করীমকে বলেন, ‘‘ভাই কালকে তো আপনার রেস্ট হাউজে গেলাম। গিয়ে বললাম না, আমি কি কালকে আসবো? কোর্টের বেঞ্চ সহকারী বললো আমি লিখে একাউন্টে পাঠাইছি। আমি জানাবো, জানালে আপনি আসবেন, আজকে এখনো জানায়নি কোর্টে যাওয়ার জন্য। জানাইলে আমি আসবো।’’

ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউল বলছে- ‘‘এখন ভাই আপনি দেখেন , ওইটা আমার কাছে কিছু বইলেন না। কোন বিষয় কি করবেন। সেইটা আপনার বিষয়। আপনি যেমন বলেছেন সেইটাই করা হয়েছে। এখন কিভাবে কি করবেন সেটা আপনার বিষয় ?’’

এদিকে ফাঁস হওয়া কল রেকর্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম বলেন- হ্যাঁ, ওই কল রেকর্ডটি আমাদের। আমাকে কমলাপুর রেস্ট হাউজে ডেকে নিয়ে ৫ লক্ষ টাকা চেয়েছিলো ছাত্র প্রতিনিধি রেজাউল।

তিনি আরো বলেন, রেজাউল আমাকে বলেছিলো উপদেষ্টাকে আমরা যা বলি, উপদেষ্টা তাই শোনে। চট্রগ্রামে উপদেষ্টা যখন গিয়েছিলো তখন কমান্ড্যান্ট শহীদুল্লাহ শহীদ ঢাকায় আসার জন্য আমাদের কাছে ১০ লক্ষ টাকা অফার করেছে। আপনি ৫ লক্ষ টাকা দিলে আপনাকে ঢাকাতে রাখবো। না হয় শহীদুল্লাহকে নিয়ে আসবো।

তিনি আরো বলেন, ‘আমি এই ঘটনার স্বাক্ষী প্রমান রাখার জন্য প্রথমে রাজি হয়ে যাই, এক লক্ষ টাকা বলি এবং পরে দুই লক্ষ টাকা বলি। যোগাযোগ দীর্ঘায়িত করি তথ্য প্রমানের জন্য। আর এই রেকর্ডটি আমিই করি এবং অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দেই। আজ (মঙ্গলবার) ডিজি মহোদয়ের সাথে সাক্ষাত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।’

এই ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী ও রেজাউলের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাদের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

চাঁদা দাবির বিষয়ে ছাত্র প্রতিনিধি আশিকুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা সকলেই একটি টিমে কাজ করি। আমি চাঁদা চেয়েছি এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না। আমি মেহেদী ও রেজাউলের সাথে জড়িত নই।

তবে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম জানান- ‘আশিকুর রহমান, মেহেদী ও রেজাউলের যোগসাজসে এই চাঁদা দাবি করা হয়েছে।’

সংবাদ সূত্র: রেল নিউজ ২৪

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পাকিস্তানে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমস
ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকির অভিযোগ দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে (ভিডিও)
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ