সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

বকুলের মালা

ছেলেটির নাম বকুল। ঢাকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এ পড়াশোনা করে। ছেলেটি যখন ইন্টারমিডিয়েট অধ্যায়নরত ছিলো তখন বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে নানান ধরনের স্বপ্ন দেখতো। ঠিক তার আগের মুহূর্তে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও করোনার এক ভয়াবহ আকার দেখা দেয়। তখন অনলাইনে বাংলাদেশের সকল শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছিল। সেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে, তাদের ওরিয়েন্টেশন ক্লাস অনলাইনে হয়। ওরিয়েন্টেশন ক্লাসের শিক্ষক সবাইকে জিজ্ঞাসা করছিল তোমাদের বাড়ি কোথায়, কার জীবনে কি স্বপ্ন আছে এবং বড় হয়ে কে কি হতে চাও। সবাই এক এক করে পরিচয় দিচ্ছিল। একদম শেষ মুহূর্তে মালা নামের একটি মেয়ে তার পরিচয় দিয়েছিল। তার কথার সুরগুলো ছিল কোকিলের গান। তার নিঃশ্বাসে ছিল কালবৈশাখী ঝড়ের আওয়াজ। তার ঠোঁট ছিল সকালের শিমুল ফুলের সূর্যের আবরণ। নাম দুটো বেশ সুন্দর মানিয়েছিল বকুলের মালা।

মেয়েটার বাসা ঢাকাতেই ছিল। বকুলের মেয়েটাকে এতটাই ভাল লাগে, ওই যে কথায় বলে না ‘লাভ অ্যাট টেন সেকেন্ড’ ব্যাপারটা ছিল ঠিক তাই। বকুল মেয়েটাকে ফেসবুকে খোঁজার চেষ্টা করে ইনস্টাগ্রামে খোঁজার চেষ্টা করে অবশেষে সে পায়। বকুল নিয়মিত মেয়েটাকে ফেসবুকে ফলো করে, কিন্তু মালা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করছিল না।

বকুল শুয়ে শুয়ে মালার কথা ভাবে আর বলে ইস যদি আমার জীবনে মালাকে পেতাম। কয়েকদিন পর থেকে তাদের ক্লাস শুরু হয়। বকুল স্যারের লেকচার শুনা বাদ দিয়ে মালার জিমেইলের ছবিটার দিকে তাকিয়ে থাকতো আর জনম জনমের স্বপ্ন দেখতো। হঠাৎ করে পরের দিন সন্ধ্যায় মালা বকুলের ফেসবুক ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করে। বকুল সাথে সাথে ফেসবুকে ঢুকে দেখে মালা এক্টিভ নাই। একটু আগে চলে গেছে। মালা আবার অনেকটা কম কথা বলত বেশ চুপচাপ স্বভাবের ছিল। বকুল তো মন খারাপ করে বসে আছে। এত সাধনার পরে তাকে পেলাম, তবু কথা বলতে পালাম না। তবে একদিক থেকে খুশি ছিল মালা ওর ফেন্ড রিকোয়েস্টটা একসেপ্ট করেছে। বকুল ভেবেছিল আজ হোক কাল হোক কথা তো হবেই।

রাত দশটার পরে বকুল মালাকে তাই লিখে একটি এসএমএস করে। কিন্তু মালা রিপ্লাই না করেই ফেসবুক থেকেচলে যায়। এভাবেই  কিছুদিন যেতে যেতে শোনা গেল তাদের বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিবে। বকুল তো শুনে মহা খুশি। মালার সাথে তার দেখা হবে। মালার সাথে কথা বলুক আর না বলুক চোখের দেখাটাতো বকুল দেখতে পারবে। তারপর বাসা খোঁজা নিয়ে এর মধ্যে দিন পার হচ্ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিন বেশ ভদ্রতার সাথে সুন্দর একটি ড্রেস পড়ে সে বিশ্ববিদ্যালয়ে গেল। কিন্তু দেখে মালা নেই। বকুলের তো মনটা ভীষণ খারাপ। যাকে দেখার জন্য এত উৎফুল্ল হয়ে সে ঢাকা আসলো কিন্তু এখনো সে আসেনি। সে নিয়মিত ক্লাস করছিল, কিন্তু কোন কিছুতে মনোযোগ দিতে পারছিল না। এভাবেই প্রায় ১৫ দিন পার হয়ে গেল। হুট করে একদিন ক্লাসে মালা উপস্থিত। বকুলের যেন আনন্দের বন্যা বয়ে যেতে লাগলো মালাকে দেখে। এই প্রথম বকুল মালাকে সরাসরি দেখল। মালা ক্লাসে এসে চুপচাপ ক্লাস করছিল। কারো সাথে তেমন কথা বলছিল না। বকুল অনেকবার কথা বলার চেষ্টা করে কোনো বার সফল হতে পারছিল না। এভাবেই তিনটা ক্লাস শেষ হয়ে যায়।

বিশ্ববিদ্যাল শেষে মালার পিছু নেয় বকুল। মালার বাসাটা চেনার জন্য। অনেক বড় একটি বাড়িতে মালা ঢুকলো। বকুল ভাবছিল মালারা হয়তোবা অনেক ধনী।। বকুল মাঝে মধ্যেই মালার বাসার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতো মালাকে একনজর দেখার জন্য। হঠাৎ করে কেউ একজন মালার পিছু নিচ্ছে মালা বুঝতে পারে। পরের দিন দেখে সেই ছেলেটা বকুল, তার ক্লাসমেট। বেশ রাগান্বিত হওয়ার পরেও বকুলকে মালা কিছু বলে না। বকুল কখনো মালার সামনাসামনি এসে কথা বলার সাহস পায়নি। কিন্তু ব্যাপারটা মালার কাছে বেশ বিরক্তিকর ছিল। মালা বকুলের উপর রাগ করে অনেক কিছু বলতে চাইলেও বলতে পারছিল না। কারণ বকুল মালার ক্লাসমেট। মালা বুঝতে পেরেছিল বকুল ওকে অনেক ভালোবাসে।

হঠাৎ করে মালার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। কেমন জানি উধাও হয়ে গেল। বকুল মালার বাসার সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মালার জন্য অপেক্ষা করে তবু মালার দেখা পায় না। তার মনটা বেশ খারাপ। কিন্তু মজার ব্যাপারটা হল মালা তখন চুপি চুপি ফলো করছিল। ততদিনে বকুলের প্রতি মালার ও একটা ভালো লাগা তৈরি হয়ে যায়। কিন্তু মালা চায়না কারও সাথে তার জীবনকে জড়াতে। কিছু দিন পর মালার সাথে হঠাৎ বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরিতে দেখা। হুট করে বকুল মালাকে ঐদিন প্রপোজ করে। মালা বললো অসম্ভব, মাফ করবেন।

পরের দিন বিকালে বকুল মালাদের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ওই বাড়িটি থেকে একজন ভদ্রলোক বেরিয়ে আসে এবং বলে এই ছেলে তোমার কদিন ধরে দেখছি তুমি এখানে দাঁড়িয়ে থাকো। যাও এখান থেকে চলে যাও। আর কখনো যেন তোমাকে এদিকে না দেখি। ভদ্রলোক সঙ্গে সঙ্গে বাসায় যায়। এবং মালাকে বলে বাড়ির সামনে যে ছেলেটা দাঁড়িয়ে থাকে ছেলেটা কে? তুমি কি তাকে চেনো। মালা বলে, হ্যাঁ। তুমি তাকে নিষেধ করে দিবে সে যেনো কখনো বাড়ির সামনে না আসে। পরের দিন মালা বেশ রাগান্বিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়। সে বকুলকে বলে প্লিজ দয়া করে আমার পিছু নিও না। এক সড়ক দুর্ঘটনায় আমি আমার পুরো পরিবার হারিয়েছি। আমার চাচা-চাচি, মামা-মামি কেউ আমাকে ঠাঁই দেয়নি। অবশেষে আমার বাবার আমাকে আশ্রয় দেন। তার স্ত্রী অসুস্থ। তাদের একটা মেয়ে ছিল। আমার মত। সে হঠাৎ বন্ধুদের সাথে কক্সবাজার বেড়াতে গিয়ে সাগরে ডুবে মারা যায়। তারপর থেকেই আমি তাদের বাড়িতে মেয়ের অভিনয় করে থাকছি। আমার যাবতীয় খরচ তারই বহন করছে। আর আন্টিও তার নিজের মেয়ে মনে করে ভালোবাসে এবং সে আমাকে পেয়ে মানসিকভাবে অনেকটা সুস্থ। আমি এক পরিবারকে হারিয়েছি। আর একটি পরিবার আমি হারাতে চাই না।

প্লিজ, দয়া করে আমার পড়াশোনাটা বন্ধ করো না। আমি আমার এই জীবনের সাথে কাউকে জড়াতে চাই না। তুমি যদি আমার বাসার সামনে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকো তাহলে হয়তো বা কদিন পরে আমাকে তারা বাড়ি থেকে বের করে দিবে। তারপর আমার যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। তাই তোমাকে হাতজোড় করে বলছি। আমর পিছু ছেড়ে দাও।

বকুল বলে ঠিক আছে আর কখেনো তোমাকে বিরক্ত করব না। কখনোই তোমার বাসার সামনে যাব না। তবে শুনে রাখ। আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। এই বলে বকুল চলে গেল। মনে মনে মালারও বেশ কষ্ট হচ্ছিল। কারণ মালা জানতো বকুল তাকে অনেক ভালোবাসে। মালা রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল আর বলছিলো, আমিও তোমাকে ভালোবাসি বকুল। কিন্তু ইচ্ছে করলেই আমি আমার জীবনে তোমার জড়াতে পারবো না। আমায় মাফ করে দিও বকুল।

আবার করোনার কারনে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেল। সবাই সবার বাসায় চলে যাচ্ছিল। কিন্তু বকুলের একদম বাড়িতে যেতে ভালো লাগছিলো না। কিন্তু বাড়ির চাপে বকুল বাড়ি যেতে বাধ্য হয়। বাড়ি যাওয়ার বেশ কদিন পরে বকুলের বন্ধু রুপম বকুলকে বলে কিরে, তোর মালা তো অসুস্থ। ওর কি অবস্থা এখন। বকুল বলে আমার সাথে তো ওর কথা হয় না। আর মালার কি হয়েছে?

রুপম বলে, তেমন কিছু জানি না। শুনলাম অসুস্থ, হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। এটা শুনে বকুল এর মাথা ঘুরে যায়। বকুল প্ল্যান করতে থাকে ঢাকা যাবে। কিন্তু তার কাছে টাকাও ছিলো না। ঘুম ও নাই বকুলের চোখে। পরের দিন সকালে বন্ধুর বাসায় যাওয়ার কথা বলে বকুল তার মায়ের কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে ঢাকায় আসে মালাকে দেখার জন্য। বকুল সরাসরি হাসপাতালে চলে যায়। বকুল গিয়ে দেখে সেই ভদ্রলোকটি সেখানে দাঁড়িয়ে আছেন। বকুল বলে স্যার মালার কি হয়েছে?

ভদ্রলোক বলে মালার দুটো কিডনি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অনেক চেষ্টা করলাম কিডনি জোগাড় করতে পারলাম না। দেখা যাক আজকে সন্ধ্যায় একজনের সাথে কথা হয়েছে। সে নাকি জোগাড় করে দিতে পারবে।

বকুল বলে স্যার তার প্রয়োজন নেই। আমি আমার একটি কিডনি মালাকে দিতে চাই। একটা সুযোগ দিন স্যার। প্লিজ। আমি আর মালা একসাথে বকুল মালা হয়ে থাকতে চাই। দয়া করেন স্যার। ভদ্রলোক শুনে অনেক আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়লেন। ভদ্রলোক বললেন ঠিক আছে। বকুল বলে স্যার, কিন্তু আমি যে মালাকে কিডনি দিচ্ছি মালাকে আপনি কখনো বলবেন না। ভদ্রলোক বললেন, কিন্তু কেন? বকুল বলে মালা আমাকে ভালোবাসে না। ওর জীবনের সাথে কাউকে জড়াতেও চায় না। ভদ্রলোক খানিকটা ভেবে বললেন ঠিক আছে। তারপর বকুলকে বিভিন্ন টেষ্ট করানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। পরের দিন বকুলের অপারেশন। কিন্তু তার মনে ভয় থেকে খুশি ছিলো বেশি। সাতদিন পরে বকুল সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে যায়। মালার সুস্থ হতে প্রায় তিন সপ্তাহের মত লেগে যায়। কদিন পরে মালাকে তার আংকে বলে, দেখ মালা বকুল ছেলেটা অনেক ভালো। তোমাকে অনেক ভালোবাসে। তুমি চাইলেই ওর ব্যাপারটা ভেবে দেখতে পার। তুমি আমাদের মেয়ের মতো। মেয়ের মতই থাকবে। মালা বলে কি ব্যাপার আংকেল । তুমি হঠাৎ ওর হয়ে কথা বলছো কেন?

তুমি যে কিডনি দিয়ে বেঁচে আছ, সেই কিডনি বকুল তোমাকে ডোনেট করেছে। সে আমাকে এটাও বলেছে আমি যেন কথাটা তোমাকে না বলি। এখন তুমি দেখো কি করবে।

মালা কথাগুলো শুনে নিস্তবদ্ধ হয়ে যায়। সে নিজকেই নিজে দোষী মনে করে। ইস, ছেলেটা আমার এত ভালোবাসে। সাথে সাথে মালা বকুলকে ফোন করে কোন কথা নাই, সরাসরি বকুলকে আই লাভ ইউ বলে। বকুল আমি তোমার সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করেছি। আমায় মাফ করে দাও। বকুল বলে, আরে কি যে বলো তুমি। আমি জানি তুমিও কতটা চাপে ছিলে। বকুল খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়। পরের সপ্তাহে বকুল মালার সাথে দেখা করতে ঢাকায় আসে। তারপর তাদের একজনের প্রতি আরেকজনের এক অন্ধ ভালোবাসা তৈরি হয়। এভাবে বকুল আর মালা ভালোবাসর মালা গাঁথার দিনগুলো শুরু হয়।

Header Ad
Header Ad

ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানিয়েছেন, রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সরাতে শিগগিরই অভিযান চালানো হবে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) মিরপুর পল্লবীতে রাস্তা, ফুটপাত ও নর্দমা নির্মাণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এজাজ জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ইতোমধ্যে অবৈধ অটোরিকশা তৈরির ওয়ার্কশপ ও চার্জিং স্টেশনের তালিকা প্রস্তুত করেছে। তালিকাভুক্ত স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে শিগগিরই যৌথ অভিযান চালানো হবে।

এছাড়া, ডিএনসিসি প্রশাসক আবাসিক এলাকাগুলোতে অবৈধ অটোরিকশা ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধে বাড়ির মালিক সমিতিগুলোকেও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে তিনি জলাধার রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে নাগরিকদের জমি কেনার আগে মৌজা ম্যাপ যাচাই করার অনুরোধ জানান।

পল্লবীর ইস্টার্ন হাউজিং এলাকার উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, সাতটি প্যাকেজে রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ শেষ হলে এলাকাটির জলাবদ্ধতা কমবে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। পাশাপাশি বর্ষায় বড় গাছ লাগিয়ে এলাকা সবুজায়নের উদ্যোগ নেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকি দিলেন দুই সমন্বয়ক (ভিডিও)

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্টের কাছে চাঁদা দাবী করার অভিযোগ উঠেছে দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে। চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকিও দেয়া হয়েছে।সম্প্রতি তাদের কথোপকথনের একটি কল রেকর্ড ফাঁস হয়েছে।

অভিযুক্তরা হলেন রেলপথ মন্ত্রনালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসান এবং রেজাউল করীম। 

ভাইরাল হওয়া ওই কল রেকর্ড থেকে জানা যায়, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চট্টগ্রাম বিভাগের কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর কাছে ১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় ওই ২ সমন্বয়ক। তবে এটি করবে না যদি বর্তমানে ঢাকায় কর্মরত রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্ট মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম তাদের দাবীকৃত টাকা তাদের বুঝিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলামের সাথে এর আগেও বেশ কয়েকবার আলোচনা হয়েছিল ওই দুই সমন্বয়কের।

রেকর্ডে শোনা যায়- কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলাম ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসানকে বলছেন, ‘‘আমি তো ওইদিন আপনার সামনেই বললাম কোর্টের মধ্যে থেকে যে টাকাটা জমা হয় ওইটা তোলার জন্য। ওইটা না হলে দুই লাখ টাকা দিতে পারবো না, আমার কোন ইনকাম সোর্সও নাই। কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর যেহেতু বলছে তার কাছ থেকে দশ লাখ টাকা নিয়া নেন। সে মাত্র গেছে।’’

ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী বলছে, না। ‘‘সমস্যা নেই আপনার সাথে যে কথা হয়েছে নির্জন (রেজাউল ইসলামের ডাক নাম) ভাইয়ের, ওইটা দিলেই হবে। তাহলে ওইটা হচ্ছে কবে? কালকে?’’

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘কোর্ট থেকে টাকাটা উঠানোর সাথে সাথে আমি দিয়ে দিবো। যদিও আমার কষ্ট হইতেছে। কারণ এর বাইরে তো আমার কাছে টাকা নেই।’’

এরপর মেহেদী ফোন ধরিয়ে দেয় আরেক ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউলকে, ফোন দিয়ে বলে শফিক ভাই কথা বলবে। এরপর মেহেদী তার মুঠোফোনটি রেজাউলকে দিয়ে দেয়।

এ সময় শফিকুল ইসলাম রেজাউল করীমকে বলেন, ‘‘ভাই কালকে তো আপনার রেস্ট হাউজে গেলাম। গিয়ে বললাম না, আমি কি কালকে আসবো? কোর্টের বেঞ্চ সহকারী বললো আমি লিখে একাউন্টে পাঠাইছি। আমি জানাবো, জানালে আপনি আসবেন, আজকে এখনো জানায়নি কোর্টে যাওয়ার জন্য। জানাইলে আমি আসবো।’’

ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউল বলছে- ‘‘এখন ভাই আপনি দেখেন , ওইটা আমার কাছে কিছু বইলেন না। কোন বিষয় কি করবেন। সেইটা আপনার বিষয়। আপনি যেমন বলেছেন সেইটাই করা হয়েছে। এখন কিভাবে কি করবেন সেটা আপনার বিষয় ?’’

এদিকে ফাঁস হওয়া কল রেকর্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম বলেন- হ্যাঁ, ওই কল রেকর্ডটি আমাদের। আমাকে কমলাপুর রেস্ট হাউজে ডেকে নিয়ে ৫ লক্ষ টাকা চেয়েছিলো ছাত্র প্রতিনিধি রেজাউল।

তিনি আরো বলেন, রেজাউল আমাকে বলেছিলো উপদেষ্টাকে আমরা যা বলি, উপদেষ্টা তাই শোনে। চট্রগ্রামে উপদেষ্টা যখন গিয়েছিলো তখন কমান্ড্যান্ট শহীদুল্লাহ শহীদ ঢাকায় আসার জন্য আমাদের কাছে ১০ লক্ষ টাকা অফার করেছে। আপনি ৫ লক্ষ টাকা দিলে আপনাকে ঢাকাতে রাখবো। না হয় শহীদুল্লাহকে নিয়ে আসবো।

তিনি আরো বলেন, ‘আমি এই ঘটনার স্বাক্ষী প্রমান রাখার জন্য প্রথমে রাজি হয়ে যাই, এক লক্ষ টাকা বলি এবং পরে দুই লক্ষ টাকা বলি। যোগাযোগ দীর্ঘায়িত করি তথ্য প্রমানের জন্য। আর এই রেকর্ডটি আমিই করি এবং অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দেই। আজ (মঙ্গলবার) ডিজি মহোদয়ের সাথে সাক্ষাত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।’

এই ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী ও রেজাউলের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাদের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

চাঁদা দাবির বিষয়ে ছাত্র প্রতিনিধি আশিকুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা সকলেই একটি টিমে কাজ করি। আমি চাঁদা চেয়েছি এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না। আমি মেহেদী ও রেজাউলের সাথে জড়িত নই।

তবে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম জানান- ‘আশিকুর রহমান, মেহেদী ও রেজাউলের যোগসাজসে এই চাঁদা দাবি করা হয়েছে।’

সংবাদ সূত্র: রেল নিউজ ২৪

Header Ad
Header Ad

বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!

ছবি: সংগৃহীত

বলিউডের অ্যাকশনধর্মী সিনেমায় ভারতীয় সেনারা সবসময়ই বিজয়ী। কখনো পাকিস্তানি ঘাঁটি ধ্বংস, কখনো আফগানিস্তানে অভিযান—সবখানেই তারা অবিশ্বাস্য দক্ষতায় জয়ী। তবে বাস্তবতা যে এতটা সহজ নয়, তা কাশ্মীরে সাম্প্রতিক হামলায় আবারও স্পষ্ট হলো।

এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ২৬ জন। অথচ হামলা ঠেকাতে বা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি ভারতীয় সেনারা। হামলার জন্য কোনো পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ছাড়াই পাকিস্তানকে দায়ী করে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার চেষ্টা করছে তারা। ঘটনাটির রেশে সীমান্তে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে, ভারী অস্ত্রসহ মোতায়েন করা হয়েছে সেনা, মাঝেমধ্যেই হচ্ছে গোলাগুলি।

নেটিজেনরা বলিউড সিনেমার বাহাদুর সেনাদের সঙ্গে বাস্তবের ব্যর্থ ভারতীয় সেনাদের তুলনা করে রীতিমতো ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করছে। সিনেমার মতো বাস্তবে অজয় দেবগান বা অক্ষয় কুমারের মতো নায়কোচিত সেনা যে নেই, তা এখন স্পষ্ট।

কেবল স্থলবাহিনী নয়, বিমানবাহিনীর ব্যর্থতাও হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে। কাশ্মীর হামলার পর পাকিস্তানে হামলা চালাতে গিয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনী ভুল করে নিজের দেশের একটি বাড়ির ওপর হামলা চালায়। এই ঘটনার ভিডিও ও প্রতিবেদন সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে ভারতীয় বাহিনী।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, হামলার পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় সেনারা যথাসময়ে পদক্ষেপ নেয়নি। হামলার ২০ মিনিট পর তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, তখন হামলাকারীরা নিরাপদে পালিয়ে যায়।

২০১৯ সালের ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার সময় মিগ-২১ নিয়ে পাকিস্তানে ঢুকে পড়া ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন বর্তমানের ঘটনাও আবার আলোচনায় এসেছে। সেবার তার বিমান ভূপাতিত হয় এবং তাকে আটক করে পাকিস্তান পরে ফিরিয়ে দিয়েছিল।

নেটিজেনরা বলছেন, বলিউডের সিনেমার কল্প-কাহিনীর সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। যুদ্ধ লাগলে তা হবে সমান শক্তির লড়াই, সিনেমার মতো একপাক্ষিক নয়। অধিকাংশই আবার যুদ্ধের বিপক্ষে মত দিয়েছেন, মানবিক বিপর্যয়ের ভয় দেখিয়ে শান্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

বলিউডের রঙিন পর্দায় ভারতীয় সেনারা 'অপরাজেয়' হলেও বাস্তবে কাশ্মীর হামলার ব্যর্থতা প্রমাণ করেছে, বাস্তব যুদ্ধ সিনেমার গল্পের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন এবং অপ্রত্যাশিত।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকি দিলেন দুই সমন্বয়ক (ভিডিও)
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে