ফকির ইলিয়াস-এর কবিতা
সমুদ্রতীরে ছায়ামিছিল
১
এখানে কেউ রুয়ে গিয়েছিল একটি তর্কের তরুগাছ। একদিন ঝড় এসে
তার ছায়ার সাথে মিশিয়ে দেবে সেই তর্কের ছায়া-এমন আশাবাদ ব্যক্ত
করেছিল উত্তপ্ত সমুদ্রের মধ্যজল! ডানে ও বায়ে যে ঢেউগুলো মানুষের
আয়ু নির্ণয় করত- তারাও একবাক্যে বলেছিল; বাঁচার জন্যে পৃথিবীর
আর আকুতি নেই।মৃত্যুর জন্য কা'রা কা'রা প্রস্তুত -সেই দ্বিতীয় প্রশ্নটি
এসেছিল এর ঠিক কিছুক্ষণ পরেই।কয়েকটি উত্তর সাজিয়ে পাখিগুলো উড়ে
গিয়েছিল সেই সমুদ্রের বুক ভেদ করে।
২
ভেদ করার কথাই যখন উঠলো- তখন একটি ছোট্ট গল্প আমিও সেদিন
শোনাতে চেয়েছিলাম, ওই বরফঘেরা সমুদ্রকে!বলতে চেয়েছিলাম,সেই আদিম
যুগে ধনুক কীভাবে ভেদ করত যুদ্ধের ময়দান!লাঙল কীভাবে জমিনের বুক
ভেদ করে করে তৈরি করতো কার্তিকে ফসলের যৌবন।আর তীব্র তুষারপাতের
পর,হাটঁতে হাঁটতে পথিক কীভাবে অনুভব করত শিলা ভেদ করা পায়ের অস্তিত্ব!
৩
মূলত অস্তিত্ব বলে, প্রাণের কোনো অণুই সমুদ্রের ফেনাটুকু পর্যন্ত হতে পারে না।
স্বরূপ কিংবা অপরূপ বলে যে মেঘের মিছিল আমরা যাপনের তালিকায় লিখে
রাখি প্রতিদিন, রাত হলেই তা আঁধারে মিলিয়ে যায়।প্রেমিক প্রশ্বাস,তার প্রেমিকা
নিশ্বাসের কাছাকাছি যাওয়ার জন্যে ব্যাকুল হয় মাত্র। আঁকে তছনছের কোলাজ।
৪
যাবতীয় তছনছের পরেই,পৃথিবীর দশম মৃত্যু ঘটে।শবদেহগুলো চোখে দেখা যায় না।