শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | ৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক গল্প: শেষ পর্ব

অস্ফুট ভালোবাসা

অনিন্দ্যের বাবা মোশাররফ হোসেন। তিনি একজন ব্যাংক কর্মকর্তা ও ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ। চাকরি জীবনে তিনি খুব সিনসিয়ার। শুধু চাকরির ক্ষেত্রে না, পরিবার, আত্মীয় স্বজনদের কাছেও তিনি শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি। পরিবারের সবাই তাকে খুব শ্রদ্ধার চোখে দেখে। কারও কাছে কুটু কথা শুনার মানুষ না। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বাড়িটা করেছেন। এলাকার লোকজন তাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখে। ছেলে মেয়ে দুজনকে নিয়েই তিনি গর্ব করেন। কারণ তাদের দুজনের নামে এলাকাবাসীর উচ্চ ধারণা। বিষয়টি মোশাররফ সাহেব খুব ইনজয় করেন। আশরাফ চৌধুরী আজ সকালে হঠাৎই ফোন করেছেন। এর আগেও তার সঙ্গে কথা হয়েছে। অনিন্দ্য যখন ফারাহকে চট্টগ্রামে সাহায্য করেছিল তখন। তিনি অনিন্দ্যের এতটাই প্রশংসা করেছিলেন মনে হয়েছিল যে অনিন্দ্য তার হাজার কোটি টাকার কাজ করে দিয়েছে। অনিন্দ্যকে নিয়ে আশরাফ চৌধুরির প্রশংসার বাক্যগুলো এখনো মনে করতে পারেন মোশাররফ সাহেব। কিন্তু আজ যে কথাগুলো তিনি বলেছেন তা মনে হয়েছে তিরের মতো বিধেছে। হতে পারে তার মতো অঢেল অর্থ-বিত্তের মালিক না, তার মেয়ের উপকার তো একদিন অনিন্দ্য করেছে। ওই উপকারের কথা সেদিন তিনিই অনিন্দ্যের প্রশংশায় পঞ্চমুখ ছিলেন। আজ যখন তার মেয়েটিকে ভালোবেসে অনিন্দ্য কাছে পেতে চাইছে তখন যেন তার আঁতে ঘা লেগেছে। বারান্দায় ইজি চেয়ারে বসে এসব নানা কথা ভাবছিলেন মোশাররফ সাহেব।

অনিন্দ্যের মা এলো-কি ঘুমাবে না? অনেক রাত হয়ে গেল।
-হু ঘুমাব।
-তবে বসে আছো কেন?
-ভাবছি?
-কি?

-ভাবছি, কত টাকার মালিক হলে ফারাহর সঙ্গে অনিন্দ্যের বিয়েটা দিতে পারব।
-শুন। তোমার হাজার কোটি টাকা থাকলেও তোমার ছেলের সঙ্গে ওই মেয়ের বিয়ে হবে না।
-কেন? আমার ছেলে কি তার যোগ্য না। ইউনিভার্সিটি থেকে পাস করেছে। সাংবাদিকতা করছে। খারাপ কী? আশরাফ সাহেব হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হতে পারে, কিন্তু আমার ছেলের যে আত্মমর্যাদা আছে, সন্মান আছে তা কি আশরাফ সাহেব পাবেন। কখনো পাবে না। আমি আজ তোমাকে বলছি। অনিন্দ্যকে আমি যাই বলি না কেন, আই ফিল প্রাউড যে আমি তার মতো একটা ছেলের বাবা।

-সেটাই তো আমি তোমাকে বললাম। তুমি হাজার কোটি টাকার মালিক হলেও উনি অনিন্দ্যকে পছন্দ করবে না। কারণ অনিন্দ্য কাউকে ঠকায় না। আর আশরাফ সাহেবদের মতো ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন একজন মানুষকে ঠকিয়ে ঘুমাতে যায়। ঘুম থেকে উঠে আরেক জনকে ঠকায়।

-কিন্তু ছেলেটা যে কষ্ট পাবে। আমি বুঝি অনিন্দ্য ফারাহকে অনেক ভালোবাসে।

-সে তো আমিও জানি। কিন্তু কি করবা। ভেবে দেখো। আমার মাথায় কিছু কাজ করছে না।

-কত বড় স্বার্থপর হলে একজন মানুষ বলতে পারে আমার মেয়ের মাসে যে টাকা হাত খরচ তা অনিন্দ্যের তিন মাসের বেতন। আরে বেটা ওই দিন অনিন্দ্য না থাকলে তো তোমার মেয়েকে শেয়ালে ছিঁড়ে খেত। সেটা ভাল হতো। এত সহজে সব ভুলে গেলি।

-থাক বাদ দাও এখন। ঘুমাতে আসো। দেখি অনিন্দ্যের‌ সঙ্গে কথা বলে ও কি বলে।

বাবার কথাগুলো বার বার কানে বাজছে অনিন্দ্যের। ঘুম আসছে না। রাতে ফারাহকে ফোন দেওয়া হয়নি। প্রতিরাতে গুড নাইট বলতে হয়। না হলে অভিমান করে। ফোনের রিসিভারটা তুলতে কেমন যেন কষ্ট হচ্ছে আজ। মনে হচ্ছে ফারাহ দূরে সরে যাচ্ছে। তবু কষ্ট করে ফোনের রিসিভারটা তুলে কল করল। ফারাহ ফোন ধরেই বলে উঠল এতক্ষণে মনে পড়ল। তুমি আর কত কষ্ট দেবে বলো তো। নাকি অন্যকারো প্রেমে পড়ছো। সত্যি করে বলো। জানি তো বলবে না। দাঁড়াও আমি গোয়েন্দা লাগাচ্ছি। দেখি তুমি কীভাবে আমাকে ফাঁকি দাও। পারবা না। আমি ঠিকই বের করে ফেলব। শুনো কাল অফিসে যাবার আগে তুমি আমার সঙ্গে দেখা করবা। আমি তোমার মোবাইল কল লিষ্ট দেখব। আহ বলে ফেললাম। খবরদার তুমি কিন্তু এখন কল লিস্ট মুছবা না। তা হলে কিন্তু আমি মরে যাব। কি হলো কতক্ষণ ধরে আমি বক বক করে যাচ্ছি। কিছু বলছো না কেন? হ্যালো...

-বলব কি করে। তুমি তো একাই বলে যাচ্ছ। নন স্টপ হিটস। আমাকে বলার সুযোগ দিয়েছ?

-কেন আমাকে থামাতে পার না।

-না পারি না। তোমার কথা শুনতে আমার খুব ভালোলাগে। তাই কান পেতে শুনি।

-কচু। তুমি আমাকে একদম ভালোবাস না। কি করতে যে তোমার সঙ্গে প্রেম করছি।

-আমি ছাড়া তোমাকে কে ভালবাসবে বলো।

-মানে। তুমি জানো এখনো কত ছেলে আমার জন্য পাগল। আমি একটু ইশারা করলে আমার পায়ে লুটিয়ে পড়বে।

-তার মানে অনেকেই তোমার সঙ্গে প্রেম করার চেষ্টা করছে। আজ জানলাম।

-এই না না। আমি চাপা মারছি। সত্যি কেউ নাই তুমি ছাড়া।

-সত্যি বলছো।

-হু। সত্যি। তিন সত্যি। তোমাকে ছাড়া কাকে ভালোবাসব বলো। তোমার মতো সুন্দর মন কোথায় পাব।

-শুনতে খুব ভাল লাগছে। আমিও অবাক হই কেমন করে তোমার মত সুন্দর মনের সঙ্গে আমার পরিচয় হলো। এখন তো আষ্টে পিষ্টে জড়িয়ে গেছ।

-খবরদার দূরে থাক। বিয়ে করবা যখন তখন আষ্টে পিষ্টে জড়িয়ে রেখ। এর আগে না।

-কিন্তু আমার যে এখনই রাখতে ইচ্ছে করছে।

-অনিন্দ্য। আমার কিন্তু লজ্জা লাগছে।

-লাগুক। তাতে কি? আমি তো তোমার হৃদয়ের উষ্ণতা পাব।

-লোভ হচ্ছে। কিন্তু। হতে থাকুক।

-আমি রাখছি। ঘুমাও।

-ঠিক আছে। ঘুমাই। তবে তোমাকে জড়িয়ে ধরেই ঘুমাব।

-এতই যখন ইচ্ছে, বিয়ে করে ঘরে তুলে নিতে পার না।

-তোমার সাথে এ নিয়ে কাল কথা বলব। এখন ঘুমাও। গুড নাইট।

-হু , গুড নাইট।

মেঘনায় লঞ্চ ডুবে গেছে। বহু যাত্রী নিখোঁজ। সকাল থেকে টিভিগুলো ব্রেকিং দিচ্ছে। সকাল ৮টায় ফোন আসল প্রতিনিধির। অনিন্দ্য ঘুম থেকে জেগে রিপোর্টারকে ফোন দিল। এডিটর খবর জানতে চাইছে কি অবস্থা। প্রতিনিধি একটু পর পর ফোন করে আপডেট জানাচ্ছে। হঠাৎ এডিটরের ফোন। তাড়াতাড়ি অফিস আসো। গাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছি। অনিন্দ্য তখনও নাস্তা করেনি। ৯টার মধ্যে বেরিয়ে পড়ল। গাড়িতে উঠে মনে হলো ফারাহকে ফোন করা হয়নি। সকালে কথা না হলে সারাদিন গাল ফুলিয়ে থাকবে। কিন্তু আজকের জরুরি অবস্থাটা নিশ্চয় ফারাহ বুঝবে। ও কখনো অনিন্দ্যের কাজে ডিট্রার্ব করে না। তারপরও মনটা খচখচ করছে।

মোবাইলে কল করল। কিন্তু মোবাইল বন্ধ পেল। দুইবার ট্রাই করতেই গাড়ি অফিস পৌঁছে গেল। অফিসে ঢুকে অনিন্দ্য সরাসরি এডিটরের রুমে চলে গেল। সেখানে বসে আছেন আর দুই জন রিপোর্টার। এডিটর বললেন অনিন্দ্য তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। খবর কী?

অনিন্দ জানাল, লঞ্চটিকে প্রায় ৭/৮শ যাত্রী ছিল। নদীতে অনেক স্রোত আর বাতাস প্রচণ্ড। আর মাঝ নদীতে হওয়ায় বেশির ভাগ যাত্রী তলিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আমাদের প্রতিনিধি নৌকা করে যাওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু নদীতে ঢেউ প্রচণ্ড। সাহস পাচ্ছে না। আমাদের কি সেখানে রিপোর্টার পাঠানো দরকার আছে, বললেন এডিটর। অনিন্দ্য বলল দুর্ঘটনাটি অনেক বড়। পাঠানো দরকার। প্রতিনিধি একা পারবে না। ফটোগ্রাফার একজনকে আমি পাঠিয়ে দিয়েছি। ঠিক আছে ওদের দুইজনকে পাঠিয়ে দাও। আর তুমি নিজে এটা মনিটর করো।

এডিটরের কথা মতো রিপোর্টার দুই জনকে পাঠিয়ে দিল। বাইরে প্রচণ্ড বৃষ্টি। পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে মনে হচ্ছে। একটু পরপর প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হচ্ছে। এ করতে করতে দুপুর হয়ে গেল। তিনটা নাগাদ পিয়ন এসে বলল ভাই, খাবেন না? ও তাইতো। কটা বাজে। তিনটা বাজে। ঠিক আছে খাবার নিয়ে আসো।

হঠাৎ মনে পড়ল। ফারাহর সঙ্গে সকালে কথা হয়নি। কি জানি কি করছে। মোবাইলটা বের করে ফোন দিল। ফোন রিসিভ করল না। আবার কল। কিন্তু রিসিভ হলো না। পিয়ন খাবার নিয়ে এলো। অনিন্দ্য ভাবল ভাত খেয়ে কথা বলবে। এরই মধ্যে এডিটর মিটিং এ ডাকল। অনিন্দ্য কোনো মতে কিছু খেয়ে ছুটল মিটিংএ। মিটিং এ সার্বিক পরিস্থিতি এডিটরকে জানাল অনিন্দ্য। মিটিং শেষে দেখে ৫টা বেজে গেছে। শুরু হলো নিউজের কাজ। অনিন্দ্য উসখুস করছে। ফারাহ জানি কি করছে। নিশ্চয়ই খুব বেশি রেগে আছে। সকাল থেকে না খাওয়া। তা না হলে ফোন রিসিভ করবে না কেন। ফারাহর এ অভ্যাস নতুন না। একটু দেরি হলেই গাল ফুলিয়ে বসে থাকে। তার সাফ কথা। সকালটা শুরু হবে তোমার সাথে কথা বলার মধ্য দিয়ে। অনিন্দ্যেরও অভ্যাস হয়ে গেছে। এখন ফারাহর সঙ্গে কথা না বললে মনে হয় দিনটা শুরু হয়নি। এতো দিনে এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। আজই প্রথম। আবার মোবাইলে ফোন দিল অনিন্দ্য। ফোনটা বাজছে। হঠাৎ রিসিভ হলো। ফারাহর বাবা। অনিন্দ্য চুপ করে রইল। কথা বলবে কি না বুঝতে পারছে না। এরপর বলল। আংকেল আমি অনিন্দ্য। কেমন আছেন। ফারাহর বাবা উত্তর দিল ভালো নেই অনিন্দ্য।

-কেন কি হয়েছে?
-সকাল ১০টার দিকে যখন ঝড় হচ্ছিল। তখন ফারাহ গাড়ি নিয়ে বের হয়েছিল। কিছু দূর যাওয়ার পর একটা ট্রাক ফারাহর গাড়িটা ধাক্কা দেয়। ফারাহার মারাত্মক আহত অনিন্দ্য। ও এখন আইসিইউতে।

অনিন্দ্যের মাথার ওপর ছাদ নেই। শুধু খোলা আকাশ। কিছুই যেন নেই সেখানে। কোনো কিছু ভাবানার সময় নিল না। ব্যাগটা হাতে নিয়ে ছুটল। পিছন দিয়ে কে যেন ডাকছে। কিন্তু বুঝতে পারছিল না। ফিরেও তাকাল না। বাইরে ঝড়ো বাতাস। হালকা বৃষ্টি পড়ছে। রিকশাটা যেন তারই অপেক্ষায় ছিল।

হাসপাতালে ঢুকতেই ফারাহর বাবা এগিয়ে এল। অনিন্দ্যকে জড়িয়ে ধরে অঝোড় কান্না করছিল লোকটা। বললো অনিন্দ্য তুমি একদিন আমার মেয়েকে বাঁচিয়ে ছিলে আজও তুমি বাঁচাও। আমার মেয়েটাকে ছাড়া আমি বাঁচব না।

কোনো কথা বললো না অনিন্দ্য। ডাক্তারের কাছে ছুটে গেল।

-কি অবস্থা, ডাক্তার?
-মাথায় আঘাত পেয়েছে। ব্লিডিং হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা না গেলে কিছুই বলা যাবে না।
-আমি ওর কাছে যাব।
-ডাক্তার অনুমতি দিল।

-অনেকগুলো তার ফারাহকে জড়িয়ে রেখেছে। নাকে মুখে হাতে। মাথায় ব্যান্ডেজ। চোখ দুটো বুজে আছে। যন্ত্রে টুক টুক শব্দ জানান দিচ্ছে। নিথর দেহটা। ঘুমাচ্ছে ফারাহ। অনিন্দ্য ভাবছে কখন সে জেগে উঠবে। জেগে কী বলবে।

সারাদিন কোথায় ছিলে। সকাল থেকে একবারও আমার কথা মনে হয়নি। আমি বেঁচে আছি না মরে গেছি তুমি কি কোনো খোঁজ নিয়েছ। বুঝলাম না একটা মানুষ এত পাষাণ হয় কি করে! সকালে ফোন দিলে না। তোমাকে কতবার ফোন দিয়েছি। আর তুমি। এজন্যই মানুষকে এতবেশি ভালোবাসতে নেই। এতবেশি ভালোবাসি বলে মানুষ আমাকে কষ্ট দেয়। ওরা বুঝে না আমার ভালোবাসা। কারণ, ওরা তো আমাকে ভালোবাসে না। যদি ভালোবাসতো তবে নিশ্চয় একবার হলেও খোঁজ নিত আমি কোথায় আছি কী অবস্থায় আছি।

অনিন্দ্য হাত বাড়িয়ে ফারাহর হাত স্পর্শ করল। নড়ে উঠে ফারাহ। যন্ত্রের রেখা বেপরোয়া হয়ে উঠে। ফারাহ লড়ছে। সে অনিন্দ্যের কাছে যাবে। যন্ত্রের রেখা সরল হয়, ফারাহ নিশ্চিন্তে ঘুমায়।

 

আরও পড়ুন:

ধারাবাহিক গল্প: পর্ব- ৩

ধারাবাহিক গল্প: পর্ব- ২

ধারাবাহিক গল্প: পর্ব- ১

 

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় হার, শঙ্কায় বাংলাদেশের নারী বিশ্বকাপ স্বপ্ন

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের শুরুতে দুর্বল প্রতিপক্ষদের বিপক্ষে টানা তিন জয়ে শীর্ষে ছিল নিগার সুলতানা জ্যোতির নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। তবে শক্ত প্রতিপক্ষের মুখে পড়ে একের পর এক হারে এখন অনিশ্চয়তায় পড়েছে তাদের বিশ্বকাপ স্বপ্ন। প্রথমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৩ উইকেটে হারের পর শনিবার (১৯ এপ্রিল) লাহোরে পাকিস্তানের কাছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে বসেছে বাংলাদেশ।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। মাত্র ২১ রানের মধ্যেই ফিরেছেন তিন ব্যাটার—ফারজানা হক (০), দিলারা আক্তার (১৩) ও অধিনায়ক নিগার সুলতানা (১)। এরপর শারমিন আক্তার ও রিতু মনির ৪৪ রানের জুটি এবং রিতু ও নাহিদা আক্তারের ৪৭ রানের জুটি কিছুটা স্থিতি আনলেও তা বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি। রিতু মনি করেন ৪৭ রান, আর ফাহিমা খাতুন অপরাজিত থাকেন ৪৪ রানে। ৫০ ওভারে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৭৮ রান। পাকিস্তানের সাদিয়া ইকবাল ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ ধসিয়ে দেন।

 

ছবি: সংগৃহীত

জবাবে পাকিস্তানও শুরুতেই শাওয়াল জুলফিকারকে হারায়, যাকে এলবিডব্লিউ করেন মারুফা আক্তার। তবে এরপর সিদরা আমিন (৩৭), মুনিবা আলি (৬৯), আলিয়া রিয়াজ (৪৮*) এবং নাতালিয়া পারভেজ (১৩*) মিলে ৩৯.৪ ওভারে জয় তুলে নেয় পাকিস্তান।

এই হারের ফলে বাংলাদেশের নেট রানরেট নেমে এসেছে +০.৬৪-এ। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের নেট রানরেট এখন -০.২৮। ফলে এখন বাংলাদেশকে তাকিয়ে থাকতে হবে থাইল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের দিকে। ক্যারিবিয়ানরা যদি বড় ব্যবধানে না জেতে, তবেই কেবল বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়ার সম্ভাবনা থাকবে বাংলাদেশের।

শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ব্যর্থতা, ব্যাটিং দুর্বলতা এবং ধারাবাহিকতা না থাকায় কঠিন হয়ে উঠেছে টাইগ্রেসদের বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করা। এখন সব কিছু নির্ভর করছে অন্য দলের পারফরম্যান্সের ওপর, যা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ নারী দলের জন্য উদ্বেগের বিষয়।

Header Ad
Header Ad

ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ জানানো যাবে দুই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে

ছবি: সংগৃহীত

ঘুষ, দুর্নীতি বা হয়রানির শিকার হলে এখন সরাসরি ই-মেইলে অভিযোগ জানানো যাবে স্থানীয় সরকার ও যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে। অভিযোগকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে এবং যথাযথ প্রমাণসহ অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ঘুষ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরি এবং ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে সরাসরি অভিযোগ জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) এক ফেসবুক পোস্টে তিনি জানান, দুই মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ যেকোনো সংস্থা বা দফতরে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়া, দুর্নীতি, অনিয়ম কিংবা সেবা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হলে তা ই-মেইলে জানাতে পারবেন সেবা গ্রহীতারা।

অভিযোগ পাঠানোর ঠিকানা:
advisorasifofficial1@gmail.com

পোস্টে বলা হয়, অভিযোগের সঙ্গে যথাযথ তথ্য ও প্রমাণ সংযুক্ত করলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেকোনো অভিযোগ গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হবে এবং অভিযোগকারীর পরিচয় সম্পূর্ণরূপে গোপন রাখা হবে।

"জনস্বার্থে এই উদ্যোগ। ঘুষ, অনিয়ম ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়তে সক্রিয় নাগরিক অংশগ্রহণ আমাদের সবচেয়ে বড় প্রেরণা।"

এ উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অনেকে। তারা মনে করছেন, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘব এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এটি একটি সাহসী পদক্ষেপ।

Header Ad
Header Ad

টঙ্গীতে দুই শিশুকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা, মায়ের স্বীকারোক্তি

টঙ্গীতে দুই শিশুকে কুপিয়ে হত্যার শিকার করেছে মা। ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের টঙ্গীর আরিচপুর এলাকায় দুই শিশু সন্তানকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন তাদের মা সালেহা বেগম। নিহতরা হলেন মালিহা আক্তার (৬) ও আবদুল্লাহ বিন ওমর (৪)। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম জানান, আরিচপুরের জামাইবাজার রুপবানের টেক এলাকার সেতু ভিলা ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘর থেকে রক্তমাখা একটি বঁটি জব্দ করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, ঘটনার সময় ঘরে ছিলেন শুধু সালেহা বেগম। সিসিটিভি ফুটেজেও দেখা গেছে, বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে অন্য কেউ ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেনি। ঘটনার পর সালেহা নিজেই তার দুই দেবরকে ডেকে আনেন এবং তার কথাবার্তা অসংলগ্ন ছিল।

পরে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হলে মধ্যরাতে সালেহা স্বীকার করেন, তিনিই বঁটি দিয়ে দুই সন্তানকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। তবে তিনি কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন, তা এখনো অস্পষ্ট।

নিহত শিশুদের বাবা আবদুল বাতেন মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তাতুয়াকান্দি এলাকার বাসিন্দা। পরিবার নিয়ে তিনি ওই ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন।

সালেহার মা শিল্পি বেগম জানান, সালেহা দীর্ঘদিন ধরে মাইগ্রেনের সমস্যায় ভুগছেন। তবে কখনও অস্বাভাবিক আচরণ করেননি। পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি আরও গভীরভাবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে এবং সালেহার মানসিক অবস্থা যাচাই করতে চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করা হবে।

এদিকে দুই শিশুর মরদেহ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ বলছে, ঘটনাটি অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং বিস্তারিত তদন্ত শেষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় হার, শঙ্কায় বাংলাদেশের নারী বিশ্বকাপ স্বপ্ন
ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ জানানো যাবে দুই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে
টঙ্গীতে দুই শিশুকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা, মায়ের স্বীকারোক্তি
টানা ৫ দিন দেশজুড়ে বৃষ্টি, তাপমাত্রা বাড়ার পূর্বাভাস
বাফুফের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা সরফরাজের পদত্যাগ
ভর্তুকি মূল্যে পাটের তৈরি বাজারের ব্যাগ সরবরাহ করা হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা
রবিবার সারা দেশে মহাসমাবেশের ঘোষণা পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের
দেশের ইতিহাসে এবারের নির্বাচন সর্বোত্তম হবে: প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে ভারত: রিজভী
ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালই যেন নিজেই অসুস্থ!
জাতীয় পার্টি কোনো সুবিধাবাদী দল নয়: জিএম কাদের
প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে আইসিইউতে পরিচালক সৃজিত মুখার্জি
জুলাই গণঅভ্যুত্থান যেন কোনোভাবেই ব্যর্থ না হয় : নাহিদ ইসলাম
আ.লীগের মিছিল ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশ
হাসিনা-কাদেরসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন
নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর সেই শিশু সেহেরিশের লাশ উদ্ধার
আগামী ঈদের আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কাজ করছে সরকার
লাল কাপড়ে ঢাকা হবে দেশের সব পলিটেকনিকের ফটক
৬০ বছর বয়সে বিয়ে করলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে ১২ কেজি রূপার গয়না জব্দ