রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক গল্প: শেষ পর্ব

অস্ফুট ভালোবাসা

অনিন্দ্যের বাবা মোশাররফ হোসেন। তিনি একজন ব্যাংক কর্মকর্তা ও ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ। চাকরি জীবনে তিনি খুব সিনসিয়ার। শুধু চাকরির ক্ষেত্রে না, পরিবার, আত্মীয় স্বজনদের কাছেও তিনি শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি। পরিবারের সবাই তাকে খুব শ্রদ্ধার চোখে দেখে। কারও কাছে কুটু কথা শুনার মানুষ না। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বাড়িটা করেছেন। এলাকার লোকজন তাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখে। ছেলে মেয়ে দুজনকে নিয়েই তিনি গর্ব করেন। কারণ তাদের দুজনের নামে এলাকাবাসীর উচ্চ ধারণা। বিষয়টি মোশাররফ সাহেব খুব ইনজয় করেন। আশরাফ চৌধুরী আজ সকালে হঠাৎই ফোন করেছেন। এর আগেও তার সঙ্গে কথা হয়েছে। অনিন্দ্য যখন ফারাহকে চট্টগ্রামে সাহায্য করেছিল তখন। তিনি অনিন্দ্যের এতটাই প্রশংসা করেছিলেন মনে হয়েছিল যে অনিন্দ্য তার হাজার কোটি টাকার কাজ করে দিয়েছে। অনিন্দ্যকে নিয়ে আশরাফ চৌধুরির প্রশংসার বাক্যগুলো এখনো মনে করতে পারেন মোশাররফ সাহেব। কিন্তু আজ যে কথাগুলো তিনি বলেছেন তা মনে হয়েছে তিরের মতো বিধেছে। হতে পারে তার মতো অঢেল অর্থ-বিত্তের মালিক না, তার মেয়ের উপকার তো একদিন অনিন্দ্য করেছে। ওই উপকারের কথা সেদিন তিনিই অনিন্দ্যের প্রশংশায় পঞ্চমুখ ছিলেন। আজ যখন তার মেয়েটিকে ভালোবেসে অনিন্দ্য কাছে পেতে চাইছে তখন যেন তার আঁতে ঘা লেগেছে। বারান্দায় ইজি চেয়ারে বসে এসব নানা কথা ভাবছিলেন মোশাররফ সাহেব।

অনিন্দ্যের মা এলো-কি ঘুমাবে না? অনেক রাত হয়ে গেল।
-হু ঘুমাব।
-তবে বসে আছো কেন?
-ভাবছি?
-কি?

-ভাবছি, কত টাকার মালিক হলে ফারাহর সঙ্গে অনিন্দ্যের বিয়েটা দিতে পারব।
-শুন। তোমার হাজার কোটি টাকা থাকলেও তোমার ছেলের সঙ্গে ওই মেয়ের বিয়ে হবে না।
-কেন? আমার ছেলে কি তার যোগ্য না। ইউনিভার্সিটি থেকে পাস করেছে। সাংবাদিকতা করছে। খারাপ কী? আশরাফ সাহেব হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হতে পারে, কিন্তু আমার ছেলের যে আত্মমর্যাদা আছে, সন্মান আছে তা কি আশরাফ সাহেব পাবেন। কখনো পাবে না। আমি আজ তোমাকে বলছি। অনিন্দ্যকে আমি যাই বলি না কেন, আই ফিল প্রাউড যে আমি তার মতো একটা ছেলের বাবা।

-সেটাই তো আমি তোমাকে বললাম। তুমি হাজার কোটি টাকার মালিক হলেও উনি অনিন্দ্যকে পছন্দ করবে না। কারণ অনিন্দ্য কাউকে ঠকায় না। আর আশরাফ সাহেবদের মতো ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন একজন মানুষকে ঠকিয়ে ঘুমাতে যায়। ঘুম থেকে উঠে আরেক জনকে ঠকায়।

-কিন্তু ছেলেটা যে কষ্ট পাবে। আমি বুঝি অনিন্দ্য ফারাহকে অনেক ভালোবাসে।

-সে তো আমিও জানি। কিন্তু কি করবা। ভেবে দেখো। আমার মাথায় কিছু কাজ করছে না।

-কত বড় স্বার্থপর হলে একজন মানুষ বলতে পারে আমার মেয়ের মাসে যে টাকা হাত খরচ তা অনিন্দ্যের তিন মাসের বেতন। আরে বেটা ওই দিন অনিন্দ্য না থাকলে তো তোমার মেয়েকে শেয়ালে ছিঁড়ে খেত। সেটা ভাল হতো। এত সহজে সব ভুলে গেলি।

-থাক বাদ দাও এখন। ঘুমাতে আসো। দেখি অনিন্দ্যের‌ সঙ্গে কথা বলে ও কি বলে।

বাবার কথাগুলো বার বার কানে বাজছে অনিন্দ্যের। ঘুম আসছে না। রাতে ফারাহকে ফোন দেওয়া হয়নি। প্রতিরাতে গুড নাইট বলতে হয়। না হলে অভিমান করে। ফোনের রিসিভারটা তুলতে কেমন যেন কষ্ট হচ্ছে আজ। মনে হচ্ছে ফারাহ দূরে সরে যাচ্ছে। তবু কষ্ট করে ফোনের রিসিভারটা তুলে কল করল। ফারাহ ফোন ধরেই বলে উঠল এতক্ষণে মনে পড়ল। তুমি আর কত কষ্ট দেবে বলো তো। নাকি অন্যকারো প্রেমে পড়ছো। সত্যি করে বলো। জানি তো বলবে না। দাঁড়াও আমি গোয়েন্দা লাগাচ্ছি। দেখি তুমি কীভাবে আমাকে ফাঁকি দাও। পারবা না। আমি ঠিকই বের করে ফেলব। শুনো কাল অফিসে যাবার আগে তুমি আমার সঙ্গে দেখা করবা। আমি তোমার মোবাইল কল লিষ্ট দেখব। আহ বলে ফেললাম। খবরদার তুমি কিন্তু এখন কল লিস্ট মুছবা না। তা হলে কিন্তু আমি মরে যাব। কি হলো কতক্ষণ ধরে আমি বক বক করে যাচ্ছি। কিছু বলছো না কেন? হ্যালো...

-বলব কি করে। তুমি তো একাই বলে যাচ্ছ। নন স্টপ হিটস। আমাকে বলার সুযোগ দিয়েছ?

-কেন আমাকে থামাতে পার না।

-না পারি না। তোমার কথা শুনতে আমার খুব ভালোলাগে। তাই কান পেতে শুনি।

-কচু। তুমি আমাকে একদম ভালোবাস না। কি করতে যে তোমার সঙ্গে প্রেম করছি।

-আমি ছাড়া তোমাকে কে ভালবাসবে বলো।

-মানে। তুমি জানো এখনো কত ছেলে আমার জন্য পাগল। আমি একটু ইশারা করলে আমার পায়ে লুটিয়ে পড়বে।

-তার মানে অনেকেই তোমার সঙ্গে প্রেম করার চেষ্টা করছে। আজ জানলাম।

-এই না না। আমি চাপা মারছি। সত্যি কেউ নাই তুমি ছাড়া।

-সত্যি বলছো।

-হু। সত্যি। তিন সত্যি। তোমাকে ছাড়া কাকে ভালোবাসব বলো। তোমার মতো সুন্দর মন কোথায় পাব।

-শুনতে খুব ভাল লাগছে। আমিও অবাক হই কেমন করে তোমার মত সুন্দর মনের সঙ্গে আমার পরিচয় হলো। এখন তো আষ্টে পিষ্টে জড়িয়ে গেছ।

-খবরদার দূরে থাক। বিয়ে করবা যখন তখন আষ্টে পিষ্টে জড়িয়ে রেখ। এর আগে না।

-কিন্তু আমার যে এখনই রাখতে ইচ্ছে করছে।

-অনিন্দ্য। আমার কিন্তু লজ্জা লাগছে।

-লাগুক। তাতে কি? আমি তো তোমার হৃদয়ের উষ্ণতা পাব।

-লোভ হচ্ছে। কিন্তু। হতে থাকুক।

-আমি রাখছি। ঘুমাও।

-ঠিক আছে। ঘুমাই। তবে তোমাকে জড়িয়ে ধরেই ঘুমাব।

-এতই যখন ইচ্ছে, বিয়ে করে ঘরে তুলে নিতে পার না।

-তোমার সাথে এ নিয়ে কাল কথা বলব। এখন ঘুমাও। গুড নাইট।

-হু , গুড নাইট।

মেঘনায় লঞ্চ ডুবে গেছে। বহু যাত্রী নিখোঁজ। সকাল থেকে টিভিগুলো ব্রেকিং দিচ্ছে। সকাল ৮টায় ফোন আসল প্রতিনিধির। অনিন্দ্য ঘুম থেকে জেগে রিপোর্টারকে ফোন দিল। এডিটর খবর জানতে চাইছে কি অবস্থা। প্রতিনিধি একটু পর পর ফোন করে আপডেট জানাচ্ছে। হঠাৎ এডিটরের ফোন। তাড়াতাড়ি অফিস আসো। গাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছি। অনিন্দ্য তখনও নাস্তা করেনি। ৯টার মধ্যে বেরিয়ে পড়ল। গাড়িতে উঠে মনে হলো ফারাহকে ফোন করা হয়নি। সকালে কথা না হলে সারাদিন গাল ফুলিয়ে থাকবে। কিন্তু আজকের জরুরি অবস্থাটা নিশ্চয় ফারাহ বুঝবে। ও কখনো অনিন্দ্যের কাজে ডিট্রার্ব করে না। তারপরও মনটা খচখচ করছে।

মোবাইলে কল করল। কিন্তু মোবাইল বন্ধ পেল। দুইবার ট্রাই করতেই গাড়ি অফিস পৌঁছে গেল। অফিসে ঢুকে অনিন্দ্য সরাসরি এডিটরের রুমে চলে গেল। সেখানে বসে আছেন আর দুই জন রিপোর্টার। এডিটর বললেন অনিন্দ্য তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। খবর কী?

অনিন্দ জানাল, লঞ্চটিকে প্রায় ৭/৮শ যাত্রী ছিল। নদীতে অনেক স্রোত আর বাতাস প্রচণ্ড। আর মাঝ নদীতে হওয়ায় বেশির ভাগ যাত্রী তলিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আমাদের প্রতিনিধি নৌকা করে যাওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু নদীতে ঢেউ প্রচণ্ড। সাহস পাচ্ছে না। আমাদের কি সেখানে রিপোর্টার পাঠানো দরকার আছে, বললেন এডিটর। অনিন্দ্য বলল দুর্ঘটনাটি অনেক বড়। পাঠানো দরকার। প্রতিনিধি একা পারবে না। ফটোগ্রাফার একজনকে আমি পাঠিয়ে দিয়েছি। ঠিক আছে ওদের দুইজনকে পাঠিয়ে দাও। আর তুমি নিজে এটা মনিটর করো।

এডিটরের কথা মতো রিপোর্টার দুই জনকে পাঠিয়ে দিল। বাইরে প্রচণ্ড বৃষ্টি। পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে মনে হচ্ছে। একটু পরপর প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হচ্ছে। এ করতে করতে দুপুর হয়ে গেল। তিনটা নাগাদ পিয়ন এসে বলল ভাই, খাবেন না? ও তাইতো। কটা বাজে। তিনটা বাজে। ঠিক আছে খাবার নিয়ে আসো।

হঠাৎ মনে পড়ল। ফারাহর সঙ্গে সকালে কথা হয়নি। কি জানি কি করছে। মোবাইলটা বের করে ফোন দিল। ফোন রিসিভ করল না। আবার কল। কিন্তু রিসিভ হলো না। পিয়ন খাবার নিয়ে এলো। অনিন্দ্য ভাবল ভাত খেয়ে কথা বলবে। এরই মধ্যে এডিটর মিটিং এ ডাকল। অনিন্দ্য কোনো মতে কিছু খেয়ে ছুটল মিটিংএ। মিটিং এ সার্বিক পরিস্থিতি এডিটরকে জানাল অনিন্দ্য। মিটিং শেষে দেখে ৫টা বেজে গেছে। শুরু হলো নিউজের কাজ। অনিন্দ্য উসখুস করছে। ফারাহ জানি কি করছে। নিশ্চয়ই খুব বেশি রেগে আছে। সকাল থেকে না খাওয়া। তা না হলে ফোন রিসিভ করবে না কেন। ফারাহর এ অভ্যাস নতুন না। একটু দেরি হলেই গাল ফুলিয়ে বসে থাকে। তার সাফ কথা। সকালটা শুরু হবে তোমার সাথে কথা বলার মধ্য দিয়ে। অনিন্দ্যেরও অভ্যাস হয়ে গেছে। এখন ফারাহর সঙ্গে কথা না বললে মনে হয় দিনটা শুরু হয়নি। এতো দিনে এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। আজই প্রথম। আবার মোবাইলে ফোন দিল অনিন্দ্য। ফোনটা বাজছে। হঠাৎ রিসিভ হলো। ফারাহর বাবা। অনিন্দ্য চুপ করে রইল। কথা বলবে কি না বুঝতে পারছে না। এরপর বলল। আংকেল আমি অনিন্দ্য। কেমন আছেন। ফারাহর বাবা উত্তর দিল ভালো নেই অনিন্দ্য।

-কেন কি হয়েছে?
-সকাল ১০টার দিকে যখন ঝড় হচ্ছিল। তখন ফারাহ গাড়ি নিয়ে বের হয়েছিল। কিছু দূর যাওয়ার পর একটা ট্রাক ফারাহর গাড়িটা ধাক্কা দেয়। ফারাহার মারাত্মক আহত অনিন্দ্য। ও এখন আইসিইউতে।

অনিন্দ্যের মাথার ওপর ছাদ নেই। শুধু খোলা আকাশ। কিছুই যেন নেই সেখানে। কোনো কিছু ভাবানার সময় নিল না। ব্যাগটা হাতে নিয়ে ছুটল। পিছন দিয়ে কে যেন ডাকছে। কিন্তু বুঝতে পারছিল না। ফিরেও তাকাল না। বাইরে ঝড়ো বাতাস। হালকা বৃষ্টি পড়ছে। রিকশাটা যেন তারই অপেক্ষায় ছিল।

হাসপাতালে ঢুকতেই ফারাহর বাবা এগিয়ে এল। অনিন্দ্যকে জড়িয়ে ধরে অঝোড় কান্না করছিল লোকটা। বললো অনিন্দ্য তুমি একদিন আমার মেয়েকে বাঁচিয়ে ছিলে আজও তুমি বাঁচাও। আমার মেয়েটাকে ছাড়া আমি বাঁচব না।

কোনো কথা বললো না অনিন্দ্য। ডাক্তারের কাছে ছুটে গেল।

-কি অবস্থা, ডাক্তার?
-মাথায় আঘাত পেয়েছে। ব্লিডিং হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা না গেলে কিছুই বলা যাবে না।
-আমি ওর কাছে যাব।
-ডাক্তার অনুমতি দিল।

-অনেকগুলো তার ফারাহকে জড়িয়ে রেখেছে। নাকে মুখে হাতে। মাথায় ব্যান্ডেজ। চোখ দুটো বুজে আছে। যন্ত্রে টুক টুক শব্দ জানান দিচ্ছে। নিথর দেহটা। ঘুমাচ্ছে ফারাহ। অনিন্দ্য ভাবছে কখন সে জেগে উঠবে। জেগে কী বলবে।

সারাদিন কোথায় ছিলে। সকাল থেকে একবারও আমার কথা মনে হয়নি। আমি বেঁচে আছি না মরে গেছি তুমি কি কোনো খোঁজ নিয়েছ। বুঝলাম না একটা মানুষ এত পাষাণ হয় কি করে! সকালে ফোন দিলে না। তোমাকে কতবার ফোন দিয়েছি। আর তুমি। এজন্যই মানুষকে এতবেশি ভালোবাসতে নেই। এতবেশি ভালোবাসি বলে মানুষ আমাকে কষ্ট দেয়। ওরা বুঝে না আমার ভালোবাসা। কারণ, ওরা তো আমাকে ভালোবাসে না। যদি ভালোবাসতো তবে নিশ্চয় একবার হলেও খোঁজ নিত আমি কোথায় আছি কী অবস্থায় আছি।

অনিন্দ্য হাত বাড়িয়ে ফারাহর হাত স্পর্শ করল। নড়ে উঠে ফারাহ। যন্ত্রের রেখা বেপরোয়া হয়ে উঠে। ফারাহ লড়ছে। সে অনিন্দ্যের কাছে যাবে। যন্ত্রের রেখা সরল হয়, ফারাহ নিশ্চিন্তে ঘুমায়।

 

আরও পড়ুন:

ধারাবাহিক গল্প: পর্ব- ৩

ধারাবাহিক গল্প: পর্ব- ২

ধারাবাহিক গল্প: পর্ব- ১

 

Header Ad

বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন ব্রিটিশ রাজা চার্লস

ফাইল ছবি

বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস। সরকারি সফরের অংশ হিসেবে ভারতীয় উপমহাদেশে আসার পরিকল্পনা করছেন তিনি। চলতি বছরের শুরুর দিকে শরীরে ক্যানসার শনাক্ত হওয়ার পর বিদেশ সফর থেকে বিরত রয়েছেন ব্রিটিশ এই রাজা। তবে কিছু দিনের মধ্যে তিনি বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান সফর করতে পারেন বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিররের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

শুক্রবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস ও তার স্ত্রী রানি ক্যামিলা অদূর ভবিষ্যতে ভারতীয় উপমহাদেশ সফরের পরিকল্পনা করছেন। রাজা তৃতীয় চার্লস ক্যানসার থেকে ধীরে ধীরে সেরে ওঠায় শিগগিরই এই সফরে বের হতে পারেন। ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটেনের রাজার সফরের পরিকল্পনাকে তার শারীরিক অবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নতির লক্ষণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ঠিক কবে নাগাদ ব্রিটিশ রাজা ও রানির এই সফর শুরু হতে পারেন, সেই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য জানায়নি ডেইলি মিরর।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর তৃতীয় চার্লস সব ধরনের সফর বাতিল করতে বাধ্য হন। তবে ভারতীয় উপমহাদেশের তিন দেশ—বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তান সফরের এই পরিকল্পনার মাধ্যমে পুনরায় তার সফর শুরু হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ব্রেক্সিট পরবর্তী বিশ্বে তাৎপর্যপূর্ণ অর্থনৈতিক সংযোগ প্রতিষ্ঠা করতে চায় ব্রিটেন। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্রিটিশ রাজা ও রানির সফর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

দেশটির একটি সূত্র বলেছে, ‘‘রাজা এবং রানির জন্য এই ধরনের সফরের পরিকল্পনা করাটা অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক। ভারতীয় উপমহাদেশে তাদের একটি সফর শুরুর কথা রয়েছে; যা বিশ্ব মঞ্চে ব্রিটেনের জন্য রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে ব্যাপক তাৎপর্যপূর্ণ হবে। এই সময়ে ব্রিটেনের জন্য রাজা এবং রানিই জুতসই রাষ্ট্রদূত।’’

ডেইল মিরর বলছে, রাজ সফরের জন্য সম্ভাব্য আয়োজক দেশগুলোর সাথে আলোচনার করতে ব্রিটেনের পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তান সফরের খসড়া তৈরি করা হচ্ছে। গত বছর ভারত সফর বাতিল করার পর রাজা ও রানিকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে দেশটিতে ব্রিটিশ রাজা ও রানির সফর নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। গত মাসে ব্রিকসের শীর্ষ সম্মেলনে সাক্ষাৎ করেছিলেন এই দুই রাষ্ট্রনেতা। এছাড়া গত মঙ্গলবার ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার ‘‘কৌশলগত অংশীদারত্বে’’ স্বাগত জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। যদিও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইউক্রেন যুদ্ধ ‘‘শান্তিপূর্ণভাবে শেষ’’ হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছিলেন।

২০০৬ সালে ক্যামিলাকে সঙ্গে নিয়ে ওয়েলসের যুবরাজ হিসেবে এক সপ্তাহের জন্য পাকিস্তান সফর করেছিলেন চার্লস। সেই সময় শুভাকাঙ্ক্ষীদের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আপনাদের কাছে পৌঁছাতে আমার প্রায় ৫৮ বছর লেগেছে। তবে এটা যে চেষ্টা করার অভাবে নয়, তা আমি বলতে পারি।’’

Header Ad

নির্বাচনের ফাঁকা মাঠ ভেবে খুশি হচ্ছেন, সাবধান হন : তারেক রহমান

ছবি: সংগৃহীত

যেসব নেতাকর্মী সামনে নির্বাচনের ফাঁকা মাঠ ভেবে খুশি হচ্ছেন। তারা সাবধান হন। সামনে ভয়ংকর অন্ধকার দেয়াল আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেল পাঁচটায় রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠানটি ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলার বিষয়ে আইনজীবীর প্রশ্নের উত্তরে তারেক রহমান বলেন, স্বৈরাচার পড়ে গেছে, পালিয়ে গেছে। তারা তো বসে নাই, তারা ষড়যন্ত্র করছে। যদি তাদের ষড়যন্ত্র সফল হয়- মামলা তো উঠবেই না বরং নেতাকর্মীদের নামে জ্যামিতিক হারে ২০টা মামলা হয়ে যাবে। সেই সম্ভাবনাও আছে। সেই সম্ভাবনাকে যদি নস্যাৎ করে দিতে হয়, তাহলে আজকে থেকে আপনাদের প্রত্যেকেই সতর্ক হতে হবে।

তিনি বলেন, আপনাদের একটাই টার্গেট হতে হবে। জনগণ, জনগণ অ্যান্ড জনগণ। এর বাইরে যদি কিছু চিন্তা করেন। তাহলে পতিত স্বৈরাচার সফল হবে। তারা সফল হলে আইনজীবী সহকর্মীর বক্তব্য অনুযায়ী মামলা আপনাদের মিটবে না। বরং মাথার ওপরে আরও ১০টি, ২০টি মামলা চেপে বসবে। আপনাদের নিজেকে যদি বাঁচাতে হয় তাহলে উপায় একটাই- জনগণের আস্থা অর্জন করেন। আপনার পরিবার-পরিজনকে রক্ষা করতে হলে উপায় একটাই জনগণের আস্থা আর্জন করেন।

তিনি বলেন, ফারাক্কা বাঁধের বিষয়ে আমাদের একটি ধারণা আছে। এটি একটি আন্তর্জাতিক বিষয়। বিএনপির বাইরে অন্য সরকার যখন ক্ষমতায় এসেছে, তারা যথাযথভাবে এটা দেখেনি। পতিত স্বৈরাচার সরকার প্রতিবেশী দেশকে খুশি করার জন্য ইচ্ছা করেই করেনি। আমরা সময়মতো অবশ্যই বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কাজ করবো। আমাদের ন্যায্য হিস্যা আদায়ের জন্য প্রয়োজনে দেশের স্বার্থে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের নিয়েই কাজ করবো।

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে পাঁচ বছরে পাঁচ কোটি বৃক্ষরোপণের ইচ্ছে আছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের পানি বাড়ছে। গবেষণায় উঠে আসছে বাংলাদেশের অনেকাংশ, অর্ধেক বা তার কম অংশ ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। এই দেশের মানুষকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। খালেদা জিয়া সরকারের সময় আমরা বৃক্ষমেলা করতাম। আমাদের যেভাবেই হোক, এই কর্মসূচি আবার শুরু করতে হবে। সবাইকে উৎসাহ দিতে হবে বৃক্ষরোপণের জন্য। গাছ প্রকৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ব্যক্তিগতভাবে আমার একটা পরিকল্পনা আছে। আগামী দিনে আমরা সুযোগ পেলে পাঁচ বছরে আমরা পাঁচ কোটি বৃক্ষরোপণ করব।

এর আগে সকাল ১০টায় প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু হয়। এসময় বক্তব্য দেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ, চেয়ারপারসনের বিদেশ বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ড. মাহাদী আমিন।

কর্মশালায় আলোচনা করেন, বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রাশিদা বেগম হীরা ও কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা হাবিব। সভাপতিত্ব করেন, বিএনপির রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত।

বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটির সদস্য সচিব এবিএম মোশাররফ হোসেনের সঞ্চালনায় কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় নেতা ওবায়দুর রহমান চন্দন, আমিরুল ইসলাম আলীম প্রমুখ।

Header Ad

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল

ছবি: সংগৃহীত

একইসঙ্গে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক নারী। স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করেননি দুই স্বামীর কাউকেই। গোপনে মন জয় করে চলছিলেন দুই স্বামীর। প্রায় দুই বছর দুই স্বামীর সংসার করার পর অবশেষে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চার বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে হলফনামার মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করেন রাজবাড়ী সদরের আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের আবু হানিফ শেখের ছেলে ইউটিউবার সাগর শেখ ও আলীপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস।

বাবা, মা ও ভাই প্রবাসে থাকায় বাবার বাড়িতে একাই বসবাস করতেন জান্নাতুল। সেখানে যাতায়াত করতেন স্বামী সাগর শেখ। সংসার জীবন ভালোই চলছিল এ দম্পতির। হঠাৎ জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় শ্বশুরবাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় সাগরের। এরই মধ্যে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে পরিবারের সিদ্ধান্তে অন্য এক যুবককে দ্বিতীয় বিয়ে করেন জান্নাতুল।

এদিকে স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের বাড়িতে তুলে না নেয়ায় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটান জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামী সাগরের দাবি, প্রায় দুই বছর ধরে তার সঙ্গেও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ঠিক রেখে চলছিলেন জান্নাতুল।

স্ত্রীর পরিবার তাকে মেনে না নেয়ায় তার বোনের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে একান্তে সময় কাটাতেন স্বামী-স্ত্রী। চলতি মাসের ২ নভেম্বর তারা একসঙ্গে নিজেদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন বলেও দাবি করেন সাগর।

তবে দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামীর ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে জানতে পারেন সাগর। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি। তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন জান্নাতুল। এখন দ্বিতীয় স্বামী নিয়েই সংসার করতে আগ্রহী তিনি। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি আদালতে মামলা করেছেন সাগর।

সাগর শেখ বলেন, জান্নাতুল ও আমার বিয়ের বিষয়টি জান্নাতুলের মা ও বোন জানতো। বিয়ের পর আমাদের সংসার জীবন ভালোই কাটছিল। তবে হঠাৎ করে জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় তাদের বাড়িতে আমার যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের বিয়ের চার মাসের মাথায় আমি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির কাজে কয়েকদিনের জন্য রাজবাড়ীর বাইরে যাই।

কাজ থেকে এসে শুনি আমার স্ত্রী জান্নাতুল অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমি আমার স্ত্রীকে প্রশ্ন করলে সে বলে, ‘পরিবারের চাপে বিয়ে করেছি। ওই ছেলের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক হয়নি। আমি তোমার স্ত্রী আছি, তোমারই থাকবো। আমার আম্মু দেশে আসলে আমি তোমার কাছে চলে আসবো।’

সাগর বলেন, ‘আমি জান্নাতুলদের বাড়ি যাতায়াত করতে না পারার কারণে বিভিন্ন সময় আমরা রাজবাড়ী শহরে আমার বোনের বাসায় ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতাম। ওর কলেজে আনা-নেয়াসহ সবকিছু আমিই করতাম। এমনকি গত ২ নভেম্বরও আমরা আমার বোনের বাসায় আমাদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছি।

তবে বিবাহ বার্ষিকী পালনের দুদিন পরে আমি জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে ওই ছেলের (দ্বিতীয় স্বামীর) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চলছে। ওই ছেলে নিয়মিত জান্নাতুলের বাবার বাড়িতে এসে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি জান্নাতুলকে প্রশ্ন করলে সে আমাকে গালাগালি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সে আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলেও জানায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জান্নাতুলের মা প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছে। তিনিও এখন আমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে অস্বীকার করছেন। অথচ তার মেয়ের সঙ্গে আমার প্রেম থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত সবকিছুই তিনি জানতেন।

এখন বাধ্য হয়ে আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পেতে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে গত ১১ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছি। এছাড়া ১৭ নভেম্বর রাজবাড়ীর বিজ্ঞ ১নং আমলি আদালতে মামলা করেছি।’

সাগর আরও বলেন, ‘আমাকে ডিভোর্স না দিয়ে আমার স্ত্রী অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে আমাকেও ম্যানেজ করে চলেছে, একইভাবে তার দ্বিতীয় স্বামীকেও ম্যানেজ করে চলেছে।

এটা আইন ও ধর্মীয় দুই দিক থেকেই অপরাধ। এছাড়া আমি এ পর্যন্ত আমার স্ত্রীর পেছনে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তারপরও আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই। তাকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।’

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজী হননি জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। তবে তার দাবি, জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে তিনি জানতেন। সাগরের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না।

জান্নতুলের দ্বিতীয় স্বামীর বাবা বলেন, ‘কোন এক সূত্রে আমার শ্বশুর জান্নাতুলদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তাকে পছন্দ করে। পরে আমি গিয়ে তার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিয়ের দিন ধার্য হয়। বিয়ের আগের দিন সাগর নামে এক ছেলে আমার ছেলেকে ফোন করে বলে জান্নাতুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক আছে।

সে জান্নাতুলের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও আমার ছেলেকে পাঠায়। এরপর আমি ওই এলাকায় আমার আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের কোন সম্পর্ক ছিল না। এছাড়া জান্নাতুলকেও আমি সরাসরি প্রশ্ন করলে সেও সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে।

পরে ঘরোয়া আয়োজনে জান্নাতুলের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে হয়। এখন সাগর নামে ছেলেটি জান্নাতুলকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করছে। আমি যতদূর জেনেছি সাগরের স্ত্রী ও সন্তান আছে। এখন বিষয়টি আইনগতভাবেই সমাধান হবে।

আর জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে কথা বলতে তার বাবার বাড়িতে গেলে ভেতরে ঢোকার অনুমতি মেলেনি।’

বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে তার মা হাচিনা বেগম বলেন, ‘সাগরের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছিল৷ তবে বিয়ের দুই মাসের মাথায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। আমার মেয়ে তো ছোট বুঝে নাই, যে কারণে সেসময় ওরা ডিভোর্সের কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছে। এর ৪/৫ মাস পরে আমার মেয়ের আবার বিয়ে হয়েছে। সাগর আমার মেয়েকে চাপে ফেলে এতোদিন তার সঙ্গে সময় কাটাতে বাধ্য করেছে।’

আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘সাগর ও জান্নাতুলের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তার নোটিশের একটি কপি ইউনিয়ন পরিষদে আসার কথা। এরকম কোন কপি কখনো পাননি তারা।’

তিনি বলেন, ‘সাগর আমার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছে। আমিও খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সাগর জান্নাতুলের প্রথম স্বামী। সে সাগরকে তালাক না দিয়েই বিয়ের চার মাসের মাথায় অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করে। প্রায় দুই বছর সে চালাকি করে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করেছে। সাগরের কাছ থেকে জান্নাতুল অনেক টাকা-পয়সা খেয়েছে বলেও আমি জানতে পেরেছি।’

আবু বক্কার বলেন, ‘সাগরের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি জান্নাতুলের বাবাকে নোটিশের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকি। তবে নোটিশ পেয়ে তিনি তার ছোটভাই ও তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে বলেন, আমি যেন পরিষদে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেই। তবে এর ১/২ দিন পরে তিনি জানান, এ বিষয়ে তারা বসতে চান না।

আইনগতভাবে তারা বিষয়টি সমাধান করতে চান। পরে আবার তারা বসতে সম্মত হলে জান্নাতুল ও তার বাবা এবং তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামসহ পরিষদের অন্য সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলাম। সাগরও সেখানে ছিল। তবে সেখানে জান্নাতুল বলে দিয়েছে সে কোনভাবেই সাগরের সঙ্গে ঘর সংসার করবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা নির্যাতিত হয়। কিন্তু ছেলেরা যে কতোটুকু নির্যাতিত হয় তা এই সম্পর্কের জের দেখলে বোঝা যায়। আমাদের সমাজে ছেলেরা আরও বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। সেটা নীরবে নিভৃতে ছেলেরা সহ্য করে যাচ্ছে। আমি আশা করবো আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা বিষয়টি তুলে ধরবেন।

আপনাদের সংবাদের মাধ্যমে মানুষ যাতে সচেতন হতে পারে। আজকে আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে। আর কোন ইউনিয়নে যেন এমন ঘটনা কোনদিন না ঘটে।’

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন ব্রিটিশ রাজা চার্লস
নির্বাচনের ফাঁকা মাঠ ভেবে খুশি হচ্ছেন, সাবধান হন : তারেক রহমান
গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল
শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ