বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫ | ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক গল্প: পর্ব- ২

অস্ফুট ভালোবাসা

স্টেশনে তখনো অনেক মানুষ। এরা সবাই ভাসমান। তবে ঢাকার চেয়ে কম। স্টেশনের এক পাশে একটা চায়ের দোকানে তখনো অনেক লোকের আনাগোনা। পুলিশ স্টেশনের গার্ড আর ভাসমানদের কয়েক জন। আমরা এগিয়ে গেলাম চা খেতে। সবাই আমাদের দিকে ফিরে তাকাচ্ছে। একজন জানতে চাইল কোথায় যাবেন? আমি বললাম যাব না কোথাও এখানেই এসেছি। কি বেড়াতে? অনেকটা তাই। লোকটার নাম কাশেম। চা খেতে খেতে পরিচয় হলো। তার বাড়ি কুমিল্লা। বাড়িতে দলাদলি তাই চট্টগ্রাম চলে এসেছে। দিনে ফুটপাতে বসে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা করেন। আমি তার কাছে জানতে চাইলাম ঢাকায় গেলেন না কেন? সবাইতো কাজের খোঁজে ঢাকায় ছুটে। লোকটা সাবলীল গলায় বলে দিল ঢাকায় এত মাইনসের ভিড়! যাইতে ইচ্ছা করে না। আর সবাই যদি ঢাকায় যাইতে চায় তয় অন্য এলাকায় থাকব কে?  আমি ভাই বেশি টাকা পয়সা চাই না। কোনো রকম ডাইল ভাত খাইয়া দিন পার করতে পারলেই অয়। স্টেশনের পাশেই কাশেমের বাসা। সারা দিন কাজ শেষে অনেক রাত পর্যন্ত এখানে বসে থাকে গল্প সল্প করে।
 
রাত গভীর হচ্ছে। স্টেশনে লোকজনও কমে আসছে। ঘণ্টাখানেক পর আমরা আবার স্টেশনের ভিতর ঢুকলাম। তখনও মেয়েটা ওই চেয়ারেই বসে আছে। আমরা চেয়ারে বসার কিছুক্ষণ পরে মেয়েটি মিজানকে ডাকল। মিজানও উঠে গেল। মিজানের ওপর আমার খুব রাগ হচ্ছিল। যে মেয়ে রাত বিরাতে একা স্টেশনে কাটায় সে বিপদের কথা জেনেই কাটায়। তারপরও নেহাত কৌতুহল থেকেই তার কাছে জানতে গিয়েছিলাম। স্টেশনে রাত কাটানোর উদ্দেশ্য কী? আর সে কিনা উল্টো ঝারি মারে।
প্রায় পাঁচ সাত মিনিট পর মেয়েটি আর মিজান আমার দিকে এগিয়ে এলো। মিজানই আমাকে মেয়েটির সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। ওর নাম স্মিতা। গুলশান বাসা। বাবার
সঙ্গে রাগ করে এখানে চলে এসেছে। মেয়েটি আমার দিকে চুইংগাম এগিয়ে দিয়ে বলল আমার ব্যবহারের জন্য আমি দুঃখিত। কিছু মনে করবেন না। আসলে আমি স্টেশনে আসার পর থেকে একেক বার একেক জন এসে যেচে কথা বলতে চাইছে। এ কারণে আপনাদের সঙ্গে এভাবে কথা বলেছি। তবে এখন একটু ভয় হচ্ছে। একটা অপরিচিত জায়গায় আমার এভাবে আসা উচিত হয়নি। আমি বললাম বুঝতে যখন পেরেছেন তখন এক জায়গায় চুপ করে বসে থাকুন। আমরা সারা রাত এখানে আছি। কিছু প্রয়োজন হলে বলবেন।

স্মিতা বলল। আমার ওপর থেকে এখনো নিশ্চয়ই রাগ সরছে না। ঠিক আছে আপনি আগে রাগ কমান তবেই আমি আপনার সঙ্গে কথা বলব। এ বলে স্মিতা আবার তার জায়গায় গিয়ে বসে পড়ল।

শীতের রাত স্টেশনের ভিতরে তেমন বোঝা যায় না। তবে বাইরে বেশ ঠান্ডা। আমি মিজানকে বললাম তুই ভেতরে থাক। আমি বাইরে ঘুরে আসি। মিজান বলল না চল আমিও যাই একা বসে থাকতে ভালো লাগবে না। ভালো লাগবে বন্ধু ভালো লাগার পথ্য এখানে আছে। তা ছাড়া শীতে কষ্ট আমি একাই করি যেহেতু কাজটা আমার।

চট্টগ্রাম স্টেশনের প্লাটফর্মটি বেশ বড়। এটা আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় প্লাটফর্ম। নতুন স্টেশনের সঙ্গে পুরাতন স্টেশনের সংযোগ করে এ প্লাটফম তৈরি করা হয়েছে। আমি প্লাটফর্ম ধরে হাটছিলাম। রাত প্রায় দেড়টা। এখনো চায়ের দোকানগুলোতে লোকের ভিড় আছে। পুরাতন স্টেশনে গিয়ে বিডিআরের একটা টিম পেলাম। তারা স্টেশনের পাশে রান্নার আয়োজন করছে। এক জন সদস্যের কাছে কথা হলো। রাঙামাটিতে একটা ট্রেনিং শেষে সকালের ট্রেনে ঢাকা যাবে। আমার পরিচয় পেয়ে আমার সঙ্গে বেশ আলাপ জমালো। আমাকে তাদের রান্না করা খাবার খেতে অফার করল। আমি না করলেও তারা আমাকে ছাড়তে চাচ্ছিল না। পরে অনেক বলে কয়ে তাদের হাত থেকে ছুটলাম। আসলে প্রায় ঘণ্টা দেড় তাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ হয়েছিল। তাই তাদের সঙ্গে একটা সাময়িক বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল।

ডিসেম্বর মাসের শীত। সবকিছু যেন জমিয়ে ফেলে। একটা চায়ের দোকানে গিয়ে চা চাইলাম। পাশের বেঞ্চিতে একটা লোক বসে আছে। মনে হলো স্টেশনের আশপাশের লোক। চা খেতে থেতে সামনে থেমে থাকা ট্রেনের দিকে চোখ পড়ল। সাধারনত প্লাট ফর্মে রাতে ট্রেন দাড়িয়ে থাকার নিয়ম নেই। কিন্তু নিয়ম ভাঙাই যেন আমাদের কাজ। কেউই নিয়ম মাফিক চলতে চায়না। ওই দিকটা একটু অন্ধকারও। এমন সময় চোখে পড়ল দুইজন তরুণী ট্রেনে উঠছে। আমার কৌতুহল জাগল। পাশের লোকটিকে জিজ্ঞেস করলাম থেমে থাকা ট্রেনে কারা থাকে। লোকটি আমার দিকে তাকিয়ে মুখ ফিরায় ট্রেনটির দিকে। বলে, ‘ওহানে হেতিরা হেগো বেডাগো লগে হুইত্তা থাকে’। আমি অবশ্য ভেবে ছিলাম শীত থেকে বাঁচাতে এ ব্যবস্থা। কিন্তু এখন দেখি তা না। আসলে এরা একটু বেশি ভাসমান। রাতে কোথায় কাত হতে হবে তা নিয়ে ভাবতে হয় না।

প্লাটফর্ম ছেড়ে স্টেশনের ভেতরে ঢুকে দেখি মিজান স্মিতার সঙ্গে বেশ আলাপ জমিয়ে ফেলেছে। আমাকে দেখে স্মিতা উঠে আবার তার আগের চেয়ারটায় গিয়ে বসল। আমিও মিজানকে জেঁকে ধরলাম।

-ভালোইতো মেয়েটাকে একা পেয়ে আলাপ জমিয়ে ফেলেছ।
-না। পারলাম কৈ? আসলে তার কাছ থেকে জানতে চাচ্ছিলাম কোথায় যাবে। এই আরকি।
-তো কি বলল। ওতো বলে আমরা যে কদিন এখানে থাকব এ কদিন সে আমাদের
সঙ্গে ঘুরবে। তারপর ঢাকায় ফিরে যাবে।
-তো তুই কি রাজি হয়েছিস।
-না। আমি তোর কথা বললাম। তুই রাজি থাকলে আমার কোন আপত্তি নেই। আর মেয়েটা আবেগের বশে এত দূর চলে এসেছে। তাকে সেল্টার দেওয়াতো আমাদের দায়িত্ব তাই না।
-দায়িত্ব। তবে সঙ্গে নিয়ে ঘুরানা। মেয়েটি সারারাত এখানে থাকবে আমরা দূর থেকে পাহারা দেব। কোনো সমস্যা হলে এগিয়ে আসব। আমি গার্ডকে বলে দিয়েছি যেন খেয়াল রাখে।
-সে না হয় বুঝলাম। সঙ্গে রাখলে সমস্যা কোথায়?
-দেখ মিজান। মেয়েটাকে আমরা চিনি না। সে যে আমাদের সঙ্গে সত্য কথা বলছে তার কি নিশ্চয়তা আছে?
-ওর নাকি ক্ষুধা পেয়েছে কিছু খেতে চাচ্ছে। সঙ্গে নাকি কোনো টাকা পয়সা নেই ।
-ওরে বাবা। তুই দেখি সিনেমা বানিয়ে ফেলেছিস। নায়িকার এখন ক্ষুধা লেগেছে। খাওয়া শেষে গায়ের ওপর কাত হয়ে ঘুমিয়ে পড়বে। সকাল হলে বাড়ি নিয়ে যাবি। তার পর পতেঙ্গা সি-বিচে হাবুডুবু। মিজান রীতিমত আমাকে মেরেই ফেলে। ঠিক আছে চল কিছু খাবারের ব্যবস্থা করি। আমারও ক্ষিদে পেয়েছে।
গার্ডকে বলে আমরা বাইরে বেরোলাম। স্টেশনের উল্টোপাশের হোটেল থেকে খেয়ে স্মিতার জন্য শুকনা কিছু খাবার নিয়ে এলাম। মিজানকে এগিয়ে দিলাম খাবার দিতে। স্মিতা মিজানের উপর ভালই আস্থা অর্জন করল। আর এ কারণে বাড়ি থেকে পালানোর কারণটা মিজানকে জানাল।

স্মিতার মা নেই। মা মারা যাবার পর তার বাবা আবার বিয়ে করেছে। ইন্টারমিডিয়েট সেকেন্ড ইয়ারের পড়ে। তার বাবা তার অমতে এক ব্যবসায়ির ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিতে চায়। পছন্দটা তার সৎ মায়ের। কিন্তু সে বিয়েতে রাজিনা। তাই বাসার কাউকে না বলে এখানে চলে এসেছে। সে আর ফিরে যেতে চায় না। যদি কোথাও একটা কাজের ব্যবস্থা করতে পারে তবে এখানেই থেকে যাবে। এখানকার আড়ং এ নাকি তার পরিচিত কে আছে। সকালে তার কাছে যাবে।

প্লাটফর্মে হাঁটতে হাঁটতে মিজান আমাকে কথাগুলো জানালো। মিজান তার কথায় কিছুটা বিগলিত হয়ে পড়েছে। আমি মিজানকে লক্ষ্য করলাম। মিজান চাচ্ছে স্মিতা আমাদের সঙ্গে থাকুক। সকালে ওর ব্যবস্থা করে দিয়ে পরে আমাদের কাজ করি। আমি মিজানকে বুঝাতে চেষ্টা করলাম আমার জন্য এই অ্যাসাইনমেন্টটা অনেক বড়। এখন মেয়েটিকে সেল্টার দিতে গিয়ে কাজের অবহেলা করা যাবে না। তবে মেয়েটার দিকে লক্ষ্য রাখব। সে যেন কোনো সমস্যায় না পড়ে।

ইতোমধ্যে সকাল হয়ে গেল। স্টেশন কর্মচাঞ্চল্য হয়ে উঠলো। আমিও আরও ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। ফলে স্টেশনের ভেতর ঢুকতে প্রায় সাতটা বেজে গেল। গিয়ে দেখি স্মিতা নেই আমরা দুজনই পুরো স্টেশন খুঁজলাম। কোথাও নেই। ইতোমধ্যে গার্ড পরিবর্তন হয়ে গেছে। ফলে কার কাছে জিজ্ঞেস করব বুঝতে পারছিলাম না। হঠাৎ মিজান রাতের গার্ডকে দেখে তার কাছে ছুটে গেল। আমিও গেলাম। গার্ড আমাদের জানাল আমরা যখন প্লাটফর্মে ছিলাম তখন অনেকক্ষণ প্লাটফর্মের দিকে তাকিয়ে একা একা কাঁদছিল। পরে ম্যানেজার সাহেব দেখে তার কামরায় নিয়ে যেতে দেখেছে। এরপর কই গেছে আমি জানি না। ও ম্যানেজারের কাছে আপনাদের কথা বলছে। যে সারারাত দুই সাংবাদিক আমারে পাহাড়া দিছে।

আমরা ম্যানেজারের কামরায় গিয়ে তাকে পাইনি। শুনলাম তিনি বাসায় গেছেন। পরে আসবে। মেয়েটির বিষয়ে টিকেট কাউন্টার থেকে জানাল ম্যানেজার সাহেব মেয়েটাকে বাসায় নিয়ে গেছে। ওর বাসায় খবর দেওয়া হয়েছে। ওর বাবা আসছেন তাকে নিতে। খবরটা শুনে আমরা আশ্বস্ত হলাম যে মেয়েটি বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। আমরা আবার আমাদের কাজে ফিরে গেলাম। সন্ধ্যার দিকে মিজান আমাকে বলল অনিন্দ চল স্মিতা বাড়ি ফিরল কি না খোঁজ নিয়ে আসি। আমরা স্টেশনে গিয়ে ম্যানেজার সাহেবকে পেলাম। আমাদের পরিচয় দিতেই ম্যানেজার সাহেব বলে উঠল ও তাহলে আপনারাই কাল সারা রাত ঐ মেয়েটাকে পাহাড়ায় রেখে ছিলেন। ওর বাবা আপনাদের ধন্যবাদ জানাতে এতক্ষণ বসে ছিল। ঘণ্টা খানেক আগে ঢাকায় ফিরে গেছে। ম্যনেজারের কাছ থেকে স্মিতার বাড়ি ফেরার খবরটা আমাদের আনন্দ দিলেও একট বিষয়ে আমরা দু জনই বেশ নাখোশ হলাম। তা হলো মেয়েটি আমাদের কাছে তার লুকিয়েছে। ম্যানেজারকে সে বলেছে আসলে ওর নাম ফারাহ।

ঢাকায় ফিরে অফিসে ফারাহর গল্প করেছিলাম। সবাই বেশ মজা পেয়ে ছিল। কিছু দিন পর একদিন অফিসে ঢুকতেই রিসিপশন থেকে আমাকে বলল একটা মেয়ে বেশ কয়েকবার ফোন করেছে। আপনার বাসার নম্বর দিয়ে দিয়েছি। বলেছে রাতে বাসায় ফোন করবে। আমি বুঝতে পারলাম ফোনটা ফারাহ করেছে। কারণ চট্টগ্রাম স্টেশনের উপর রিপোর্টটা গতকাল ছাপা হয়েছে। যেখানে ফারাহর কথাও আছে।

রাতে ফারাহ বাসায় ফোন করল। আমাকে লেখাটার জন্য ধন্যবাদ জানাল। এরপর মাঝে মধ্যে কথা হতো। কথা বলতে বলতে এক সময় ওর প্রতি আমার দুর্বলতা জাগে। ব্যাস শুরু প্রেম।

 

(চলবে..)

 

আরও পড়ুন:

ধারাবাহিক গল্প: পর্ব- ১

 

Header Ad
Header Ad

আমরা ভারতের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের প্রতিশোধ নিয়েছি: শেহবাজ শরিফ

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (বামে) এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। ছবি কোলাজ: ঢাকাপ্রকাশ

ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক পাল্টা হামলাকে ১৯৭১ সালের যুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধ হিসেবে বর্ণনা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। তিনি বলেন, "পাকিস্তানি সেনারা মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভারতের আগ্রাসন রুখে দিয়ে প্রমাণ করেছে, পাকিস্তান আর ১৯৭১ সালের সেই দুর্বল রাষ্ট্র নয়। আমরা আমাদের ইতিহাসের প্রতিশোধ নিয়েছি।"

বুধবার (১৪ মে) শিয়ালকোটের পাসরুর সেনানিবাসে "অপারেশন বুনইয়ান-উন-মারসুস"-এ অংশ নেওয়া সেনাদের সঙ্গে সাক্ষাতে এসব কথা বলেন শেহবাজ। তিনি এই সামরিক অভিযানের প্রশংসা করে বলেন, “এই অপারেশন পাকিস্তানের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। সেনারা দুর্দান্ত সাহস ও দ্রুততায় শত্রুর জবাব দিয়েছে।”

প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে ভারত ও বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনী যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানকে পরাজিত করে। এর আগে পাকিস্তান ভারতের বিমান ঘাঁটিতে ‘অপারেশন চেঙ্গিস খান’ চালায়, যার জবাবে ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।

শেহবাজ বলেন, “ইতিহাসে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে—পাকিস্তানের সাহসী সেনারা কীভাবে ভারতের অপ্ররোচিত আগ্রাসনের জবাব দিয়েছে। তারা শুধু বর্তমানের নয়, অতীতের অপমানেরও জবাব দিয়েছে।”

পাক প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “বিশ্ব জানে ১৯৭১ সালে মুক্তিবাহিনীকে কারা প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। আজও সেই একই শক্তি বেলুচ লিবারেশন আর্মি এবং তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সমর্থন দিচ্ছে। এর পেছনে আছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।”

মোদির উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে শেহবাজ বলেন, “আপনার জ্বালাময়ী বক্তব্য নিজের কাছে রাখুন। পাকিস্তান শান্তি চায়, কিন্তু কেউ যেন আমাদের শান্তির আহ্বানকে দুর্বলতা না ভাবে। যদি আপনি আরেকবার আগ্রাসনের চেষ্টা করেন, তাহলে ফলাফল আপনার কল্পনার বাইরে হবে।”

সম্প্রতি ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের পানি প্রবাহ বন্ধ করার হুমকির জবাবেও কড়া অবস্থান নেন শেহবাজ। তিনি বলেন, “পানি ও রক্ত একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না। এটি পাকিস্তানের লাল লাইন। এই সীমা লঙ্ঘন করা হলে চরম পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।”

শেহবাজের সফরে তার সঙ্গে ছিলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান ও বিমানবাহিনী প্রধানসহ অন্যান্য শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা।

Header Ad
Header Ad

পুলিশের লাঠিচার্জে ছত্রভঙ্গ নার্সিং শিক্ষার্থীরা, শাহবাগে যান চলাচল শুরু

পুলিশের লাঠিচার্জে ছত্রভঙ্গ নার্সিং শিক্ষার্থীরা, শাহবাগে যান চলাচল শুরু। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করছিলেন ডিপ্লোমা নার্সিং শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৪ মে) রাত ৯টার দিকে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে অবস্থান নেন।

পুলিশের লাঠিচার্জে অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে তিনজন বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং একজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নার্সিং শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হন। সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা শাহবাগ মোড়ে পৌঁছান। শাহবাগ থানার সামনে পুলিশ ব্যারিকেড দিলেও শিক্ষার্থীরা তা অতিক্রম করে মোড়ে অবস্থান নেন, ফলে যান চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়।

বিক্ষোভ চলাকালে রাত ৯টার দিকে পুলিশ শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে সরাতে লাঠিচার্জ শুরু করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিক্ষার্থীরা কিছুটা প্রতিরোধের চেষ্টা করলেও পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

আহত শিক্ষার্থী আভি শেখ বলেন, "আমরা পুলিশের কাছে মাত্র ১০ মিনিট সময় চেয়েছিলাম, যাতে শান্তিপূর্ণভাবে সড়ক ছেড়ে যেতে পারি। কিন্তু সেই সময় না দিয়ে তারা সরাসরি লাঠিচার্জ করে। এতে অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন, কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।" তিনি আরও জানান, "আমরা এখন শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছি এবং সেখান থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।"

লাঠিচার্জের পর শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় ছেড়ে যাওয়ায় সেখানে যান চলাচল আবারও স্বাভাবিক হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মোড়ে অবস্থান নিয়েছে, পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

Header Ad
Header Ad

অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত ৩ রিকশাচালককে দেড় লাখ টাকা অনুদান, পাবেন চাকরিও

ক্ষতিগ্রস্ত তিন রিকশাচালকের হাতে অনুদানের অর্থ তুলে দেন ডিএনসিসি প্রশাসক। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর আসাদগেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশা গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত তিন রিকশাচালককে দেড় লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। সেইসঙ্গে তাদের চাকরির ব্যবস্থাও করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।

বুধবার (১৪ মে) ডিএনসিসি ভবনে এক অনুষ্ঠানে প্রশাসকের নিজ কার্যালয়ে ক্ষতিগ্রস্ত তিন চালকের হাতে ৫০ হাজার টাকা করে মোট দেড় লাখ টাকার চেক তুলে দেন তিনি।

ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, "মানবিক দিক বিবেচনায় আমরা এই সহায়তা দিয়েছি। তবে এটা এককালীন। ভবিষ্যতে মূল সড়কে অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করলে একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" তিনি আরও জানান, চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে এরই মধ্যে ডিএনসিসির অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ মে) ডিএনসিসি ও ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) যৌথভাবে আসাদগেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে মূল সড়কে চলাচলরত অবৈধ ব্যাটারিচালিত বেশ কিছু রিকশা জব্দ করে। কিছু রিকশা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়, যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন কয়েকজন চালক।

এই ঘটনার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নজরে আসে ডিএনসিসি প্রশাসকের। পরে তিনি দ্রুত সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেন এবং তা বাস্তবায়ন করেন।

ডিএনসিসি প্রশাসক আরও জানান, রাজধানীর প্রধান সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবং যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশা অপসারণ করা হচ্ছে। সরকার ইতোমধ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অনুমোদিত মডেলে ব্যাটারিচালিত রিকশা উৎপাদনের অনুমতি দিয়েছে কয়েকটি কোম্পানিকে।

তিনি বলেন, "এসব রিকশাচালককে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বৈধ রিকশা পরিচালনার সুযোগ দেওয়া হবে। ব্র্যাকের সহায়তায় প্রায় এক লাখ রিকশাচালককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যা চলতি মাসেই শুরু হবে।"

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

আমরা ভারতের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের প্রতিশোধ নিয়েছি: শেহবাজ শরিফ
পুলিশের লাঠিচার্জে ছত্রভঙ্গ নার্সিং শিক্ষার্থীরা, শাহবাগে যান চলাচল শুরু
অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত ৩ রিকশাচালককে দেড় লাখ টাকা অনুদান, পাবেন চাকরিও
বিশ্বের ‘সবচেয়ে দরিদ্র প্রেসিডেন্ট’ হোসে মুজিকা মারা গেছেন
পিএসএলে দল পেলেন সাকিব আল হাসান!
বিজিবির অভিযানে মেহেরপুর সীমান্তে ৯৪ লাখ টাকার স্বর্ণসহ আটক ২
আ.লীগ সরকারের করা চুক্তিতে শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানো সম্ভব: দুদক
আইপিএলে ডাক পেলেন মোস্তাফিজ, বিসিবি জানে না কিছুই!
টাঙ্গাইলে জেমসের কনসার্টে মোবাইল চুরির হিড়িক, থানায় ১২৯ জিডি
ঈদে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ১৬ মে
আত্মপক্ষের সুযোগ হারালেন টিউলিপ সিদ্দিক
১ মাস না যেতেই পাল্টে গেল ডেসটিনির রফিকুলের দলের নাম
অশ্লীলতার অভিযোগে ৬ অভিনেত্রী ও ৩ নির্মাতার বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগামীকাল থেকে রেইড: আসিফ মাহমুদ
ইসরায়েলের বিমানবন্দরে হুথিদের মিসাইল হামলা (ভিডিও)
আইপিএলে ৬ কোটিতে মুস্তাফিজকে দলে নিল দিল্লি ক্যাপিটালস
টাঙ্গাইলে বিএনপি নেতার কারখানায় ডাকাতি, গ্রেফতার ৯
সেলিব্রিটি ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন গিগাবাইট টাইটানস, উচ্ছ্বসিত সিয়াম-মেহজাবীনরা
এপ্রিলে আইসিসির মাসসেরা ক্রিকেটার মিরাজ
সমাবর্তনে ড. ইউনূসকে ডি-লিট ডিগ্রি দিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়