সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

মাকে একটা গ্লাস দেয় বিথীকা। একটা বালিশ ছিঁড়ে তুলা বের করে। ঘরে কলাপাতা ছিল। কলাপাতার উপর তুলা বিছিয়ে ওখানে ভাইকে রেখে সুন্দর করে মুড়িয়ে কোলে রাখে। পাশের ঘরের একজন মহিলা বিথীকাকে সহযোগিতা করে। মহিলা বালিশের পরিষ্কার তুলা ছিঁড়ে গ্লাসে রাখা মায়ের দুধে ভিজিয়ে বিথীকাকে দেয়। বিথীকা ভাইয়ের মুখে তুলোটা দিলেই ও চুষতে শুরু করে। চোখ বন্ধ ছিল। দুধ চোষার সঙ্গে সঙ্গে চোখ খোলে। ওর দিকে তাকিয়ে মায়ারাণী চিৎকার করে বলতে থাকে, আমার স্বাধীনতা, আমার স্বাধীনতা। মাগো তোকে আমি আশীর্বাদ করি। তুই ছেলেটাকে বাঁচিয়ে এনেছিস। আহারে, তুই হ্রদের জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে ওকে তুলে এনেছিস। তুই বিশ্বাস করিসনি যে মরে গেছে। হায় ভগবান!

– মা, কাঁদতে হবে না। চুপ করে শুয়ে থাক। তুমি তাড়াতাড়ি সুস্থ হও। একটানা পাঁচদিন এভাবে দুধ খাইয়ে বিথীকা ভাইকে আদর-যত্নে ভরিয়ে রাখে। শরণার্থী ক্যাম্পের সবার মুখে বিথীকার নাম। মৃত ভেবে যারা বাচ্চাটিকে হ্রদের জলে ভাসিয়ে দিয়েছিল তারা ক্যাম্প থেকে বের হয়না। নিশ্চুপ বসে থাকে। কিভাবে তারা এমন একটি সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছিল ভেবে অবাক হয়। মাঝে মাঝে অন্য তিনভাই ওকে ঘিরে ধরে বসে থাকে। বিথীকা ওদের ছাড়া আর কাউকে ওর পাশে আসতে দেয়না। কেউ ঢোকার সাহস পায়না। সবাই মিলে ভাবে কত বড় একটা ঘটনা ঘটে গেল এই শরণার্থী ক্যাম্পে। সব ঘটনা স্মৃতি হয়ে বুক ভরে থাকে বিথীকার। ওর প্রশংসায় উজ্জ্বল হয়ে থাকে শরণার্থী ক্যাম্পের মানুষরা। এই দুঃসাহসী মেয়েটির দিকে তাকিয়ে সবাই বলে, এমন মেয়ে আমরা কখনো দেখিনি। বিথীকা প্রশংসায় আপ্লুত হয়না। ভাবে, ছোট্ট ভাইটিকে বাঁচিয়ে তুলেছি এটা আমার দায়িত্ব। এখন থেকে আমি চার ভাইয়ের বড় বোন। আমার জীবন ধন্য। শরণার্থী ক্যাম্পে জীবনযাপন অন্যরকম হয়ে যায়। মা ঠিকমতো সুস্থ হলে ও মুক্তিযুদ্ধের কাজ করবে। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করবে। একটি শিশুকে বাঁচানোর জন্য ও হ্রদে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। নিজেই ডুবে যাবে কিনা সেটাও ওর মাথায় আসেনি। মুক্তিযুদ্ধে এভাবেই কাজ করতে হবে। অসুস্থ যোদ্ধাদের সুস্থ করে ফেরত পাঠাতে হবে যুদ্ধক্ষেত্রে। তবেই শরণার্থী জীবন হয়ে উঠবে যুদ্ধের জীবন। নিজের সঙ্গে কথা বলে উৎফুল্ল হয় বিথীকা। মায়ের কাছে এসে বসে। তিনভাই মায়ের পাশে বসে আছে। ছোট্ট ভাই মায়ের কোলে। ওকে ঢুকতে দেখে তিন ভাই নড়েচড়ে বসে ওকে জায়গা দেয়। ওর মা বলে, এই ছেলেটার একটা নাম ঠিক করতে হবে রে। এখন থেকে ওই নাম ধরে ওকে ডাকব আমরা।

– আমি ওর জন্য একটা নাম মনে মনে ঠিক করে রেখেছি।

– বল, আমাকে বল।

– ওর নাম হবে অসীম।

– সুন্দর, সুন্দর। সবাই মিলে হাততালি দেয়।

অমল বলে, আমার সঙ্গে ওর নামের মিল আছে। অমল আর অসীম আমরা দুই ভাই।

নিরঞ্জন হাততালি দিয়ে বলে, আমরা চার ভাই। চার ভাই।

কৃষ্ণপদ হাসতে হাসতে বলে, আমরা চার ভাই এক বোন। অসীম আমাদের মায়ের স্বাধীনতা। দেশ স্বাধীন হলে আমরা ওকে নিয়ে দেশে যাব। ও আমাদের জয় বাংলা।

সবাই মিলে হাসে। হাসতে হাসতে মুখর হয় শরণার্থী শিবিরের একটি ঘর। বাইরে থেকে হাসির শব্দ শুনতে পায় হরেন্দ্রনাথ। ছেলেমেয়ের উচ্ছ্বাস তাকে আপ্লুত করে। দ্রুত ঘরের দরজায় এসে দাঁড়ায়। দরজা ঠেলে ঢুকলে হাসির রেশ বেড়ে যায়।

কৃষ্ণপদ একলাফে উঠে দরজার কাছে এসে বলে, বাবা, এসো এসো। আমাদের জয় বাংলা তোমার জন্য হাত-পা নাড়ছে।

– তোরা কি ওকে জয় বাংরা ডাকবি নাকি?

বিথীকা বলে, জয় বাংলার সময়ের ছেলে বলে ওর পরিচয় হবে। ওর নাম রেখেছি অসীম।

– বাহ্, সুন্দর নাম। ওকে আমার কোলে দে। বাইরে থেকে ঘুরিয়ে আনি।

– নাগো, কয়দিনের ছেলে মাত্র। ওকে বাইরে নিওনা।

– ভয় পেয়োনা তুমি। ও হ্রদের জলে ঘরে আসা সাহসী ছেলে।

আবার হাসির শব্দ ওঠে। সবাই মিলে একসঙ্গে হাসতে থাকে। শরণার্থী শিবির এমন আনন্দের জায়গা হবে বড়রা কেউ ভাবতে পারেনি। ছেলেমেয়েদের দিকে তাকিয়ে বুক ভরে যায় হরেন্দ্রনাথের। এই শরণার্থী শিবিরে থেকে জীবনের বিপুল অনুভব তাকে আন্দোলিত করে। সামনে আসছে স্বাধীনতা। মুক্তিযুদ্ধের নানা খবরে উদ্বুদ্ধ হয়ে যায় দিনের রশি। ভারতের সহযোগিতা বিচিত্র সম্ভারে পূর্ণ করে রাখছে মুক্তিযুদ্ধকে।

প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বেশ অনেকটি শরণার্থী শিবির দেখে গেছেন। সবাইকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। সামনের বিশাল ছবি হরেন্দ্রনাথকে নানা দিগন্তে উদ্ভাসিত করে রাখে। হরেন্দ্রনাথ মনে মনে প্রণাম করে ইন্দিরা গান্ধীকে। হাসিতে নিজেকে উচ্ছ্বল করে তোলে। চারদিকে কেউ নাই। তাই জোরে জোরে বলে, মাগো, তোমাকে আমি মায়ের মতো শ্রদ্ধা করব পুরো জীবন ধরে। তুমি আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধকে বিশ্বের মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছ। মাগো, মাগো, তুমি আমার মা হয়ে থাকলে আজ থেকে–ইন্দিরা মা। একটু পরেই দেখতে পায় রাস্তার ধারে বসে এলাকার একজন ট্রানজিস্টারে খবর শুনছে।

হরেন্দ্রনাথকে হাঁটতে দেখে ডেকে বলে, ও শরণার্থী দাদা, এদিকে আসেন। বিবিসিতে আপনার জন্য খবর আছে। বসেন খবর শোনেন। তখন ভেসে আসে কন্ঠস্বর–পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর এবং সামরিক আইন প্রশাসক লেটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান যেসব শরণার্থী ভারতে পালিয়ে গেছেন, তাঁদের ঘরে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দেশের আর সব নাগরিকের মতো তাঁরাও একইভাবে বসবাস করতে পারবেন। গভর্নরকে উদ্ধৃত করে রেডিও পাকিস্তাান জানিয়েছে, রাজনৈতিক নেতাসহ ছাত্র, ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মচারী, সশস্ত্র বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রাক্ষাকারী সংস্থার সদস্যদের স্বদেশে স্বাগত জানানো হবে।

জেনারেল টিক্কা খান বলেছেন, সীমান্তে শরণার্থী অভ্যর্থনা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে, সেখানে খাবার, আশ্রয়, চিকিৎসা ও যানবাহনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, পূর্ব পাকিস্তানে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে। মিথ্যা ও বিদ্বেষমূলক প্রচারণার প্রভাবিত হয়ে শরণার্থীরা দেশ ত্যাগ করেছেন এবং এখন অকারণে অপুষ্টি ও রোগে-শোকে ভুগছেন। বিবিসির কমনওয়েলথ সংবাদদাতা বলেছেন, জেনালেন টিক্কা খানের এই বিবৃতির যথার্থতা নিয়ে বিদেশি পর্যবেক্ষকরা সন্দিহান। আমাদের প্রতিনিধি বলেন, পূর্ব পাকিস্তান ছেড়ে বিপুলসংখ্যক লোকের চলে আসায় পাকিস্তানে যে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, তারই প্রতিক্রিয়ায় জেনারেল এই বক্তব্য দিয়েছেন।

(চলবে)

এসএ/

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমস

ছবি: সংগৃহীত

কাশ্মিরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ভারত এখন পাকিস্তানে সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইতিমধ্যে বিশ্বের এক ডজনেরও বেশি দেশের নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং দিল্লিতে কূটনৈতিকদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন। তবে এসব আলোচনা মূলত অভিযানের যৌক্তিকতা তুলে ধরতেই হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

কাশ্মির সীমান্তে দুই দেশের মধ্যে গুলিবিনিময় অব্যাহত রয়েছে। কাশ্মিরে ব্যাপক ধরপাকড় চলছে এবং শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অতীতের সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার ইতিহাস তুলে ধরলেও এবারকার হামলায় সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ এখনো প্রকাশ করেনি। পাকিস্তান সরকার সব ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, যেহেতু ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই পরমাণু শক্তিধর দেশ, তাই সামরিক সংঘাত বড় ধরনের বিপর্যয়ে রূপ নিতে পারে।

ইরান ও সৌদি আরব মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে। যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ের প্রতি সমর্থন জানালেও, দক্ষিণ এশিয়ার প্রতি তাদের মনোযোগ সীমিত বলেই মনে করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১৯ সালের ঘটনার তুলনায় এবার প্রমাণের স্বচ্ছতা কম, আর “রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট” নামে একটি অজ্ঞাত গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করলেও ভারত এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠনের ছায়া গোষ্ঠী বলে মনে করছে।

ভারতীয় সরকারের ওপর অভ্যন্তরীণ চাপ রয়েছে এবং মোদি সরকার “বড় ধরনের কিছু” করার পরিকল্পনায় এগোচ্ছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানিয়েছেন, রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সরাতে শিগগিরই অভিযান চালানো হবে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) মিরপুর পল্লবীতে রাস্তা, ফুটপাত ও নর্দমা নির্মাণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এজাজ জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ইতোমধ্যে অবৈধ অটোরিকশা তৈরির ওয়ার্কশপ ও চার্জিং স্টেশনের তালিকা প্রস্তুত করেছে। তালিকাভুক্ত স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে শিগগিরই যৌথ অভিযান চালানো হবে।

এছাড়া, ডিএনসিসি প্রশাসক আবাসিক এলাকাগুলোতে অবৈধ অটোরিকশা ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধে বাড়ির মালিক সমিতিগুলোকেও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে তিনি জলাধার রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে নাগরিকদের জমি কেনার আগে মৌজা ম্যাপ যাচাই করার অনুরোধ জানান।

পল্লবীর ইস্টার্ন হাউজিং এলাকার উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, সাতটি প্যাকেজে রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ শেষ হলে এলাকাটির জলাবদ্ধতা কমবে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। পাশাপাশি বর্ষায় বড় গাছ লাগিয়ে এলাকা সবুজায়নের উদ্যোগ নেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকির অভিযোগ দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে (ভিডিও)

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্টের কাছে চাঁদা দাবী করার অভিযোগ উঠেছে দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে। চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকিও দেয়া হয়েছে।সম্প্রতি তাদের কথোপকথনের একটি কল রেকর্ড ফাঁস হয়েছে।

অভিযুক্তরা হলেন রেলপথ মন্ত্রনালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসান এবং রেজাউল করীম। 

ভাইরাল হওয়া ওই কল রেকর্ড থেকে জানা যায়, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চট্টগ্রাম বিভাগের কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর কাছে ১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় ওই ২ সমন্বয়ক। তবে এটি করবে না যদি বর্তমানে ঢাকায় কর্মরত রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্ট মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম তাদের দাবীকৃত টাকা তাদের বুঝিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলামের সাথে এর আগেও বেশ কয়েকবার আলোচনা হয়েছিল ওই দুই সমন্বয়কের।

রেকর্ডে শোনা যায়- কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলাম ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসানকে বলছেন, ‘‘আমি তো ওইদিন আপনার সামনেই বললাম কোর্টের মধ্যে থেকে যে টাকাটা জমা হয় ওইটা তোলার জন্য। ওইটা না হলে দুই লাখ টাকা দিতে পারবো না, আমার কোন ইনকাম সোর্সও নাই। কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর যেহেতু বলছে তার কাছ থেকে দশ লাখ টাকা নিয়া নেন। সে মাত্র গেছে।’’

ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী বলছে, না। ‘‘সমস্যা নেই আপনার সাথে যে কথা হয়েছে নির্জন (রেজাউল ইসলামের ডাক নাম) ভাইয়ের, ওইটা দিলেই হবে। তাহলে ওইটা হচ্ছে কবে? কালকে?’’

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘কোর্ট থেকে টাকাটা উঠানোর সাথে সাথে আমি দিয়ে দিবো। যদিও আমার কষ্ট হইতেছে। কারণ এর বাইরে তো আমার কাছে টাকা নেই।’’

এরপর মেহেদী ফোন ধরিয়ে দেয় আরেক ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউলকে, ফোন দিয়ে বলে শফিক ভাই কথা বলবে। এরপর মেহেদী তার মুঠোফোনটি রেজাউলকে দিয়ে দেয়।

এ সময় শফিকুল ইসলাম রেজাউল করীমকে বলেন, ‘‘ভাই কালকে তো আপনার রেস্ট হাউজে গেলাম। গিয়ে বললাম না, আমি কি কালকে আসবো? কোর্টের বেঞ্চ সহকারী বললো আমি লিখে একাউন্টে পাঠাইছি। আমি জানাবো, জানালে আপনি আসবেন, আজকে এখনো জানায়নি কোর্টে যাওয়ার জন্য। জানাইলে আমি আসবো।’’

ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউল বলছে- ‘‘এখন ভাই আপনি দেখেন , ওইটা আমার কাছে কিছু বইলেন না। কোন বিষয় কি করবেন। সেইটা আপনার বিষয়। আপনি যেমন বলেছেন সেইটাই করা হয়েছে। এখন কিভাবে কি করবেন সেটা আপনার বিষয় ?’’

এদিকে ফাঁস হওয়া কল রেকর্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম বলেন- হ্যাঁ, ওই কল রেকর্ডটি আমাদের। আমাকে কমলাপুর রেস্ট হাউজে ডেকে নিয়ে ৫ লক্ষ টাকা চেয়েছিলো ছাত্র প্রতিনিধি রেজাউল।

তিনি আরো বলেন, রেজাউল আমাকে বলেছিলো উপদেষ্টাকে আমরা যা বলি, উপদেষ্টা তাই শোনে। চট্রগ্রামে উপদেষ্টা যখন গিয়েছিলো তখন কমান্ড্যান্ট শহীদুল্লাহ শহীদ ঢাকায় আসার জন্য আমাদের কাছে ১০ লক্ষ টাকা অফার করেছে। আপনি ৫ লক্ষ টাকা দিলে আপনাকে ঢাকাতে রাখবো। না হয় শহীদুল্লাহকে নিয়ে আসবো।

তিনি আরো বলেন, ‘আমি এই ঘটনার স্বাক্ষী প্রমান রাখার জন্য প্রথমে রাজি হয়ে যাই, এক লক্ষ টাকা বলি এবং পরে দুই লক্ষ টাকা বলি। যোগাযোগ দীর্ঘায়িত করি তথ্য প্রমানের জন্য। আর এই রেকর্ডটি আমিই করি এবং অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দেই। আজ (মঙ্গলবার) ডিজি মহোদয়ের সাথে সাক্ষাত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।’

এই ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী ও রেজাউলের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাদের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

চাঁদা দাবির বিষয়ে ছাত্র প্রতিনিধি আশিকুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা সকলেই একটি টিমে কাজ করি। আমি চাঁদা চেয়েছি এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না। আমি মেহেদী ও রেজাউলের সাথে জড়িত নই।

তবে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম জানান- ‘আশিকুর রহমান, মেহেদী ও রেজাউলের যোগসাজসে এই চাঁদা দাবি করা হয়েছে।’

সংবাদ সূত্র: রেল নিউজ ২৪

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পাকিস্তানে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমস
ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকির অভিযোগ দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে (ভিডিও)
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ