শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ২৪ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব: ৪

অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব: ৪

পরদিন রাতে শাবিনকে বেশ ফুরফুরে মনে হলো। ঘর আটকে সে মেঝেতে আয়োজন করে বসেছে। তার সামনে ছোটো ব্যাগ। সেই ব্যাগ থেকে তিনটা ছোটো বোতল বের করল। আমি একজন মানুষ যে এ ঘরে আছি তা যেন ভুলে গেছে।
শাবিনের পাশে গিয়ে বসলাম। সে একটা বোতল খুলল। মুখ হা করে সেই বোতল থেকে ঢক করে অর্ধেকটা তরলকিছু খেয়ে ফেলল। ওষুধের হালকা গন্ধ আসছে। জিগ্যেস করলাম, ‘এটা কী?’
শাবিন বলল, ‘ডাইল।’
‘ডাইল কী?’
‘ফেন্সি।’
‘ফেনসিডিল?’
‘হু।’
‘খেলে কী হয়?’
‘নেশা হয়।’
‘নেশা করার জন্য তুমি ফেনসিডিল কেন খাবে, শাবিন! তুমি হুইস্কি খাবে, ভদকা খাবে, নহয় ওয়াইন খাবে। কিছু না পেলে ইন্ডিয়া থেকে প্রচুর রাম আসছে, রাম খাবে। ফেনসিডিল কেন খাচ্ছ?’
‘হুইস্কি খাওয়ার পয়সা জোগাড় করতে পারি না। মা টাকা দেয় না। বাপের কোনো খবর নেই দিনের পর দিন।’
‘এসব খাবে না। আমি তোমাকে হুইস্কি খাওয়াব। আমার সাথে খাবে।’
‘ফেনসিডিলেই আমার এখন নেশা ভালো হয়।’
বলে বোতলের বাকি ফেনসিডিল গলায় ঢেলে দিলো।
জানতে চাইলাম, ‘গতকাল কী খাচ্ছিলে?’
‘শাকসবজি।’
‘শাকসবজি?’
‘ঘাস।’
‘ঘাস কী?’
‘গাঁজা।’
‘তুমি রোজ খাও?’
‘হ্যাঁ।’
‘কেন খাও?’
‘তুমি খাবে? খেয়ে দেখো। মনে হবে আকাশে উড়ছ। মেঘের সঙ্গে তোমার প্রেম। তার হাত ধরে তুমি উড়বে।’
শাবিন আরেকটা বোতলের মুখ খুলল। এক ঢোক ফেনসিডিল খেলাম। আমার কিছু হলো না।
শাবিন সেই বোতলটাও শেষ করে আরেকটা বোতল খুলেছে। সে বলল, ‘তুমি খুব ভালো। তোমার হাতটা ধরি?’
হাত বাড়িয়ে দিলাম। শাবিন আমার হাত ধরে আলগোছে টান দিলো। তিন বোতল ফেনসিডিল খেয়ে তার নেশা হয়েছে মনে হচ্ছে। খানিকটা ঝুঁকে ওর কোলে শুয়ে পড়লাম।
শাবিন বলল, ‘তোমার কাঁধের কাছে লাল হয়ে আছে। কিসের দাগ?’
‘গতরাতে তুমি আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিলে। চড় মেরেছিলে।’
‘গাঁজা খেলে কিছু মনে থাকে না। আমার কিছু মনে নেই। তুমি সেই কথা বাড়ির অন্যদের বলোনি তো?’
‘না, বলিনি।’
‘কেন বলোনি?’
‘এটা তোমার আর আমার পারসোনাল ব্যাপার। অন্যদের কেন জানাব?’
‘তুমি সত্যি খুব ভালো মেয়ে। তোমাকে ঠিক ওরকম আরেকটা সোনার চেইন বানিয়ে দেব।’
‘আমার চেইন কী করেছ?’
‘বেচে দিয়েছি। তবে সব টাকা এখনো নিইনি। ওর কাছে কিছু রেখে দিয়েছি।’
‘কার কাছে?’
‘যার কাছে বেচেছি। টাকা নিয়ে ডাইল কিনেছি আর পুরিয়ার অর্ডার দিয়েছি।’
‘পুরিয়া কী?’
‘হেরোইন। চকলেটের খোঁজে আছি। সবুজ ম্যানেজ করবে বলেছে।’
‘সবুজ কে?’
‘আমার বন্ধু। সবুজ, হাবিব, এনায়েত। ওদের আজ সবাইকে তিন বোতল করে ডাইল গিফট করেছি। আমার বিয়ে উপলক্ষে বাদশাহী খাওয়া। অনেকদিন আমাদের হাতে টাকা ছিল না। এখন আমার টাকা হয়েছে। সেই টাকায় আমরা চকলেট খেতে পারব। সব হয়েছে তোমার জন্য। তুমি লাকী।‘
‘কী চকলেট?‘
‘হিটলার চকলেট। বাবা। শালা আমার বাবা। এতদিন চাকা খেয়েছি। এবার বাবা খাব।’
‘চাকা কী?’
‘নেশার ট্যাবলেট।’
‘বাবা কী?’
‘ইয়াবা। খামাখা দাম বেশি। তুমি দারুণ লাকী। তুমি আমাদের জন্য বাবা আনার ব্যবস্থা করে দিয়েছ। তোমাকে আজ ভীষণ আদর করতে ইচ্ছে হচ্ছে।’
উঠে বিছানায় এলাম। শাবিন এলো। অবসন্ন হাতে আমার পরনের কাপড় খুলতে থাকল। শাবিনকে সাহায্য করলাম। সে কী করবে যেন বুঝতে পারছে না। এলোমেলোভাবে আমাকে আদর করতে গেল। আমার ওপরে উঠল। আমাকে তারওপরে তুলে নিলো। কিছুতেই যেন নিজেকে প্রস্তুত করতে পারল না।
খাট থেকে নেমে পড়েছে শাবিন। ফ্লোরে বসে খাটে মাথা দিয়ে আছে। আমার অসহ্য লাগছে। শরীর অস্থির হয়ে গেছে। চুপচাপ চিত হয়ে শুয়ে আছি।
শাবিন কাঁদছে। সে খাট চেপে ধরে ফোঁপাতে ফোঁপাতে বলল,‘ আই অ্যাম ফিনিশড। আমি শেষ হয়ে গেছি, তুরি। আমাকে ক্ষমা করে দাও। আমার সব শেষ হয়ে গেছে।’

বাথরুমে গেলাম। ঠান্ডা পানিতে শাওয়ার নিলাম। ঘরে ফিরে এসে দেখি শাবিন ঘুমিয়ে গেছে। সে বিছানায় শুয়ে ঘুমাচ্ছে।
সুনসান ঘর। বাতাসে ফেনসিডিলের হালকা গন্ধ। শাবিনের ভারী শ্বাসের শব্দ। আমার ঘুম এলো না। জেগে থাকলাম।

আমার মাথায় নতুন ভাবনা এসেছে। এরপর কী? শাবিনকে আটকে দিয়েছে তুরি। বাড়ি থেকে বেরুতে দেয়নি। কী করছে তখন শাবিন?
ল্যাপটপে নতুন ফাইল ওপেন করলাম। ফাইলের নাম দিলাম ‘তুরির নোটবুক’। ওয়ার্ড ডকুমেন্টে গিয়ে লিখতে শুরু করলাম।

অনেক বেলা করে চাঁদের ঘুম ভাঙল। সে এলোমেলো হয়ে ঘুমিয়েছিল। ঘুমানোর সময় তার পরনে কাপড় ছিল না। তুরি তাকে বিছানায় গুছিয়ে শুইয়ে দিয়েছে। গায়ের ওপর চাদর দিয়েছে। তুরি আজ সেজেছে। তাকে অপূর্ব দেখাচ্ছে।
ঘুম ভেঙে শাবিন খেয়াল করল পরনে কিছু নেই। তার গতরাতের কথা মনে পড়েছে। সে ফ্যালফ্যাল করে ঘরের চারপাশে তাকাচ্ছে। তুরি সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তার হাতে শাবিনের ট্রাউজার আর টিশার্ট।
তুরি বলল, ‘দাঁত ব্রাশ করো। শেভ করবে। গোসল করে বেরুবে। এগুলো পরবে। পরিষ্কার কাপড়। ইস্তিরি করিয়ে এনেছি। তোমার কাপড়গুলো ময়লা হয়েছে। ওগুলো কাচতে হবে।’


শাবিনের পরনে থাকে জিনসের প্যান্ট। ওই এক জিনসের প্যান্ট যে শাবিন কতদিন পরে তার হিসেব বলতে পারবে না। তাতে ময়লা জমে। চিটচিটে হয়ে যায়। তাও পরে। ঘরে শার্ট, টিশার্ট যা পায় পরে নেই। সেসব শার্ট, টিশার্ট কোনোদিন কেচে কেউ পরিষ্কার করে বলে মনে হয় না।
শাবিন বাথরুমে গিয়ে দাঁত মাজছে। তার মনে হচ্ছে সে অনেকদিন পর দাঁত ব্রাশ করছে। রোজ সকালে উঠে দাঁত মাজার মতো ব্যাপারগুলোকে সে পাত্তা দেয় না। প্রতিদিন গোসল করতেই হবে এমন নিয়ম মানে না। সে আরও অনেককিছুকেই পাত্তা দেয় না। নিজের মতো থাকে।
আজ তার দিন ভালো। আজ সে সবকিছুকে পাত্তা দেবে। চুলে শ্যাম্পু দিয়ে, সাবান দিয়ে ডলে গোসল করবে। হিটলার চকলেট আনবে। আর পাউডার। আহ্ হোয়াইট পাউডার। আজ তারা রাজাধিরাজ।
শাবিন মাথা দুলিয়ে মনে মনে বলল, ‘লাভ ইউ, তুরি। তোমার জন্য এত সব আয়োজন হচ্ছে। তোমার সোনার চেইন আমাদের বাবা এনে দিয়েছে।’
শাবিনের নাস্তা ঘরে নিয়ে এসেছে তুরি। গুছিয়ে নাস্তা খেয়েছে শাবিন। সে চিনি বেশি দিয়ে চা খেতে চেয়েছিল। তাকে চিনি বেশি দিয়ে চা দেওয়া হয়েছে।
শাবিন আয়েশ করে চা খাচ্ছে। তুরি বসে আছে তার সামনে। ‘শাবিন বলল, তোমাকে কিছু গিফট দিতে ইচ্ছে হচ্ছে। কী গিফট দেওয়া যায় বলো দেখি?’
‘আজকের দিনটা তুমি আমাকে দাও। আমার কাছে থাকো। তোমার সঙ্গে আমার অনেক কথা আছে।’
মাথা ঝাঁকাচ্ছে শাবিন। সে বলল, ‘আজ ফেরার সময় তোমার জন্য অনেকগুলো টিপ নিয়ে আসব। টিপ পরলে তোমাকে আরও সুন্দর দেখবে। কী রঙের টিপ আনব, লাল, সবুজ?’
চায়ের কাপ, নাস্তার এঁটো প্লেট নিয়ে তুরি চলে গেল। শাবিন উঠে পড়েছে। সে আয়নায় নিজেকে আরেকবার দেখল। পরিপাটি চুল আবার আঁচড়াল। হলুদ পোলো গেঞ্জিতে বেশ মানিয়েছে। আজকে সান্গ্লাস কিনবে। তার নিজের সানগ্লাস থাকা দরকার।
দরজা খুলতে গিয়ে শাবিন খেয়াল করল দরজা বাইরে থেকে বন্ধ। সে তুরিকে ডাকল। তুরি সাড়া দিলো না। শাবিন মাকে ডাকল। মা সাড়া দিলেন না। শাবিন চিৎকার করছে। কেউ আসছে না।
শাবিনের নেশা উঠে গেছে। সে হাত দিয়ে ঘনঘন নাক ঘষছে। নাক দিয়ে সর্দি ঝরছে। গা-হাত-পা থরথর করে কাঁপছে। মনে হচ্ছে হাতে পায়ে খিল ধরে আসছে। আড়ষ্ট হয়ে গেছে হাত-পা।
শাবিন জোরে জোরে সবাইকে ডাকতে থাকল। কেউ তার কথা শুনছে না। টেবিলের ওপর তুরির কাচের চুড়ি অগোছালো হয়ে আছে। শাবিন সেগুলো ছুড়ে ফেলল। ওয়ারড্রবের ওপর থেকে কাচের ফুলদানি নিয়ে মেঝেতে ছুড়ে মারল। ফুলদানি ভেঙে ঘরের চারপাশে কাচ ছড়িয়ে পড়েছে।
শাবিনের পেটে ব্যথা করছে। তার সমস্ত নাড়িভুঁড়ি ছিঁড়ে বের হয়ে আসতে চাইছে। সে পেট চেপে ধরে শরীর মুচড়াচ্ছে। তার হেঁচকি উঠতে শুরু করেছে। হেঁচকি এখন হিক্কা হয়ে গেছে। হিক্কা থামছে না। হিক্কা দিতে দিতে শাবিন ঘরের মেঝে ভাসিয়ে হড়হড় করে বমি করল। বমির টক গন্ধে ঘরের বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।
শাবিন দলা পাকিয়ে বমির ভেতর শুয়ে গড়াচ্ছে।
এ পর্যন্ত লিখে মনে হলো শাবিন আর তুরির প্রথম দেখা, তাদের মেলামেশা এগুলো লিখে আসা দরকার। তুরি লিখেছে শাবিন আর সে একসঙ্গে চাকরি করেছে। সেটা আনতে হবে কাহিনিতে।

আমার ভালো লাগছে। গল্পের লাইন পেয়ে গেছি। নতুন গল্প মানে অতি সুন্দর সময়।

(চলবে)

 

তৃতীয় পর্ব: অঘ্রানের অন্ধকারে

দ্বিতীয় পর্ব: অঘ্রানের অন্ধকারে

প্রথম পর্ব: অঘ্রানের অন্ধকারে

Header Ad
Header Ad

জিজ্ঞাসাবাদের পর শাওন ও সোহানা সাবাকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন ও সোহানা সাবা। ছবি: সংগৃহীত

রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে আটক হওয়া জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন ও সোহানা সাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

শুক্রবার বিকেলে ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, "ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শাওন ও সাবাকে তাদের পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।"

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, গত ১৫ জানুয়ারি কলকাতার হোটেল পার্কে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সরাসরি ও ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন শাওন। সেই সভায় তার নাম উঠে আসার পর থেকেই তিনি গোয়েন্দা নজরদারিতে ছিলেন।

এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে তাকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

একইদিন সন্ধ্যায় জামালপুরের নরুন্দি রেলওয়ে সংলগ্ন এলাকায় শাওনের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে স্থানীয় ছাত্র-জনতা।

পরে শুক্রবার রাতে ধানমন্ডি থেকে সোহানা সাবাকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

ডিবি সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে শাওন ও সাবাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এছাড়া, আওয়ামী লীগপন্থি শিল্পীদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ‘আলো আসবেই’ এর সক্রিয় সদস্য ছিলেন সোহানা সাবা, যা তদন্তের অংশ হিসেবে গুরুত্ব পেয়েছে।

তবে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তারা কোনো রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে সরাসরি জড়িত কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানানো হয়নি।

Header Ad
Header Ad

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতীয়দের ‘হাত-পা বেঁধে’ ফেরত, তোপের মুখে মোদি সরকার

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতীয়দের ‘হাত-পা বেঁধে’ ফেরত, তোপের মুখে মোদি সরকার । ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানোর সময় অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের হাতকড়া ও পায়ে শিকল পরানোর অভিযোগ উঠেছে, যা নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার।

গত বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১০৪ জন ভারতীয়কে সামরিক পণ্যবাহী বিমানে করে দেশে ফেরত পাঠানো হয় এবং তাদের নামানো হয় অমৃতসর বিমানবন্দরে। তবে যাত্রাপথে অভিবাসীদের হাত-পা বাঁধার ছবি ও ভিডিও প্রকাশিত হলে বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন অভিবাসীর পায়ে শিকল পরানো রয়েছে। যদিও ভিডিওটির সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি।

দেশে ফেরত আসা অভিবাসীরা গণমাধ্যমকে জানান, তাদের প্রতি অবমাননাকর আচরণ করা হয়েছে। এক ভুক্তভোগী বলেন, "আমাদের হাত-পা বেঁধে বন্দিশালায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর হঠাৎ জানানো হয় যে আমাদের ভারতে পাঠানো হচ্ছে। দীর্ঘ ৪০ ঘণ্টার যাত্রার পর অমৃতসরে নামানোর পরই আমাদের হাতকড়া ও শিকল খোলা হয়।"

অন্য এক ব্যক্তি বলেন, "শিশুদের ছাড়া নারীসহ সবাইকে হাত-পা বেঁধে রাখা হয়। খাবার বা ওয়াশরুমে যাওয়ার সুযোগও ঠিকভাবে দেওয়া হয়নি।"

এমন ঘটনায় ভারতের বিরোধী দলগুলো পার্লামেন্টে আলোচনা চাইলেও তা নাকচ করা হয়। এর প্রতিবাদে রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধীসহ বিরোধী দলের নেতারা পার্লামেন্ট চত্বরে বিক্ষোভ করেন।

বিরোধীদের চাপের মুখে বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর পার্লামেন্টে বিবৃতি দেন। তিনি বলেন, "বিমানে নিরাপত্তার স্বার্থে অভিবাসীদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হাতকড়া ও পায়ে বেড়ি পরানো হয়। শুধু ভারতীয়দেরই নয়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো অন্যান্য দেশের নাগরিকদেরও একইভাবে আনা হয়।"

তবে বিরোধীরা অভিযোগ করেছে, ভারত সরকার এই অবমাননাকর আচরণের নিন্দাও জানায়নি। তারা প্রশ্ন তুলেছে, কেন কলম্বিয়া সরকারের মতো ভারত নিজস্ব বিমান পাঠিয়ে নাগরিকদের সম্মানজনকভাবে ফিরিয়ে আনেনি। অনেকে মনে করছেন, মোদির আসন্ন যুক্তরাষ্ট্র সফরের আগে ভারত সরকার এই ইস্যুতে বিতর্ক এড়াতে চাইছে।

Header Ad
Header Ad

নিজের কেনা বুলডোজারেই গুঁড়িয়ে গেল সাদিক আবদুল্লাহর পারিবারিক বাড়ি

বরিশালে সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

বরিশালে সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর কালীবাড়ি রোডের পারিবারিক বাসভবন বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের পর বরিশালে সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বাসভবন ভাঙার উদ্যোগ নেয় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে সেনা সদস্যরা হাসানাত আব্দুল্লাহর বাসভবনের প্রবেশপথে অবস্থান নেন।

রাত পৌনে ১২টার দিকে ছাত্র-জনতা সেখানে পৌঁছে। প্রথমে সেনাবাহিনী বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও পরে পিছু হটে। এরপর বিক্ষোভকারীরা গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে হাতুড়ি ও শাবল দিয়ে বাড়ি ভাঙতে শুরু করে। রাত ১২টার দিকে একটি বুলডোজার এসে পৌঁছালে সেনা সদস্যরা এর চাবি নিয়ে নেয়। তবে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পর ছাত্রদের কাছে সেটি ফেরত দেওয়া হয়। পরে মাত্র ৪০-৪৫ মিনিটের মধ্যেই বুলডোজার দিয়ে বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, পারিবারিক কোটায় মনোনয়ন পাওয়া এবং বিতর্কিত নির্বাচনে মেয়র হওয়া হাসানাত আব্দুল্লাহর বড় ছেলে সাদিক আবদুল্লাহ বরিশাল সিটি করপোরেশনের জন্য যে বুলডোজার এনেছিলেন, সেই একই বুলডোজারেই গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় তার পৈতৃক বাড়ি। একইসঙ্গে তার মা সাহান আরা বেগমের নামে প্রতিষ্ঠিত একটি শিশু পার্কও ধ্বংস করা হয়।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে মেয়র হওয়ার পর সাদিক আবদুল্লাহ নগরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য এই বুলডোজার সংগ্রহ করেছিলেন। যদিও অভিযোগ রয়েছে, এটি মূলত রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছে, যেখানে বিএনপি নেতাদের পাশাপাশি ছাত্রলীগের নগর সভাপতি জসিমউদ্দিনও ছিলেন। সবশেষ সেই একই বুলডোজারেই নিজের পারিবারিক বাড়ি এবং মায়ের নামে গড়া পার্ক ভাঙার নজির সৃষ্টি হলো।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জিজ্ঞাসাবাদের পর শাওন ও সোহানা সাবাকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতীয়দের ‘হাত-পা বেঁধে’ ফেরত, তোপের মুখে মোদি সরকার
নিজের কেনা বুলডোজারেই গুঁড়িয়ে গেল সাদিক আবদুল্লাহর পারিবারিক বাড়ি
‘ছাগলের ঘর’ থেকে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
নতুন রূপে সেজেছে মিরপুর, চিটাগংয়ের প্রথম নাকি বরিশালের দ্বিতীয়
চলতি বছরের শেষ দিকে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে: প্রধান উপদেষ্টা
টাঙ্গাইলে নসিমন কেড়ে নিল মাদ্রাসায় পড়ুয়া এক শিশুর প্রাণ
নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ককে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ভাঙচু্রের ঘটনায় ভারতের তীব্র নিন্দা
চুয়াডাঙ্গায় আবারও বাড়ছে শীত, তাপমাত্রা নামল ১০ ডিগ্রিতে
গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়
নারায়ণগঞ্জে দুর্বৃত্তদের গুলিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা নিহত
আ.লীগ কর্মীদের বিশেষ ট্রেনিং, সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের ফোনালাপ ফাঁস!
দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে যা বলল বিএনপি
আন্তর্জাতিক আদালতের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলেন ট্রাম্প
বনানীতে শেখ সেলিমের বাসায় অগ্নিসংযোগ, বিক্ষুব্ধ জনতার তাণ্ডব
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদকসহ ৭ কিশোর আটক
এবার অভিনেত্রী সোহানা সাবা গ্রেপ্তার, নেওয়া হয়েছে ডিবি কার্যালয়ে
নওগাঁয় আওয়ামী লীগ কার্যালয়কে গণশৌচাগার ঘোষণা, খাদ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ভাঙচুর
সাবেক সেনাপ্রধান মঈন ইউ আহমেদের বাড়িতে হামলা-অগ্নিসংযোগ