অন্যকে হাই তুলতে দেখলে হাই ওঠে কেন,হাই কি ছোঁয়াচে?
ছবি সংগৃহিত
শিশুদের মনে নানা সময় নানা প্রশ্ন জাগে! আর তাদের যত প্রশ্ন সবই বাবা-মায়ের কাছে। এটা কেন হয়? ওটা কী ভাবে হয়? নানা প্রশ্নবাণ ছুড়ে বাবা-মাকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে খুদেরা। কখনও কখনও তারা এমন সব প্রশ্ন করে বসে, যার উত্তর থাকে না অভিভাবকের কাছে।
হাই তোলা হাসি ও কান্নার মতোই সংক্রামক একটি ব্যাপার। একজনকে হাসতে বা কাঁদতে দেখলে আমরা যেমন হাসি বা কাঁদি তেমনি একজনকে হাই তুলতে দেখলে অন্যজনেরও হাই ওঠে।
প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ দলবদ্ধভাবে বসবাস করে; একইসঙ্গে কাজ করতে পছন্দ করে। কারও ঘুম পেলে আরেকজনেরও ঘুম ঘুম বোধ হয়। এর ফলে পুরো দলের সদস্যদের রুটিনের মধ্যে একটি সামঞ্জস্য তৈরি হয়। এজন্য আরেকজনের হাই তোলা দেখে মানুষ নিজেও অবচেতনভাবে হাই তোলে।
হাই তোলার ঘটনা খুবই সাধারণ একটি বিষয়। বাসে, ট্রেনে, কিংবা রাস্তাঘাটে কেউ হাই তুললেই অন্যজনও হাই তুলে তার প্রতিক্রিয়া জানান। কিন্তু কেনো এমন হয়, তা নিয়ে নানা জনমত প্রচলিত থাকলেও এর বেশির ভাগটাই কল্পনা। এর বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তিও নেই।
চিকিৎসকরা বলছেন, এ রকম হওয়ার কারণ মূলত শরীরে মিরর নিউরোনের উপস্থিতি। অনেক সময়ে দেখা যায় অন্য কাউকে আঘাত করলে, শারীরিকভাবে না হলেও মানসিকভাবে ব্যথা অনুভূত হয়।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষ তো আসলে দলবদ্ধ জীব। তাই সব সময়ে দলগতভাবে চিন্তা-ভাবনা করে কাজ করতে ভালোবাসে। প্রাচীনকাল থেকেই এ ধারা চলে আসছে। কাউকে ঘুরতে যেতে দেখলে তখনই ঘুরতে যেতে ইচ্ছে করে। খেতে দেখলে খেতে ইচ্ছে করে। ঘুমাতে দেখলেও ঘুমিয়ে পড়তে ইচ্ছে করে। একই কারণে হাই তুলতে দেখলেও অসচেতন ভাবেই হাই উঠে যায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, এক শিম্পাঞ্জির হাই তোলার ভিডিও করে অন্য এক দল শিম্পাঞ্জিকে দেখানো হয়েছিল। পরে দেখা যায়, শিম্পাঞ্জির হাইয়ের ভিডিও দেখে বাকি শিম্পাঞ্জিদেরও হাই ওঠে। একে ‘মিররিং বিহেভিয়ার’ বলা হয়। মানুষ ছাড়া শিম্পাঞ্জি ও কুকুরের মধ্যেও হাই তোলার বিষয়টি দেখা যায়।
গবেষকরা বলছেন, এ দেখা দেখি হাইয়ের জন্য দায়ী একমাত্র মিরর হরমোন। যে হরমোনের উপস্থিতি মানুষের শরীরে আছে। যার ফলে এমনটা হয়।