বন্ধু নির্বাচনে যেসব বিষয় মাথায় রাখতে হবে
ছবি: সংগৃহীত
বন্ধুত্ব মানে মানুষের মধ্যে পারস্পরিক বিশেষ সম্পর্কের নাম, বন্ধুত্ব-আত্মার শক্তিশালী বন্ধন। বন্ধুত্ব হলো একে অন্যের সুখে-খুশিতে লাফিয়ে ওঠা কিংবা একে অন্যের দুঃখে পাশে দাঁড়ানো। বন্ধুত্ব হলো মন খুলে কথা বলা, হেসে গড়াগড়ি খাওয়া আর চূড়ান্ত পাগলামি করার একমাত্র আধার। বন্ধুত্ব কোনো বয়স মেনে হয় না, ছোট-বড় সবাই বন্ধু হতে পারে। তবে বন্ধুত্বের মধ্যে যে জিনিসটা অবশ্যই থাকা চাই তা হল ‘ভালোবাসা। আর এ জন্য আত্মার সঙ্গে আত্মার টান থাকতে হয়।
বই-পুস্তক, নাটক, সিনেমা থেকে শুরু করে বাস্তব জগৎ, জীবন সুন্দর করতে বন্ধুত্বের গুরুত্ব কতটা তা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। আবার একইভাবে বন্ধুত্বের কারণে জীবনে চরম বিপত্তিও ঘটতে পারে। তাই বন্ধু নির্বাচনে সতর্ক হওয়া জরুরি। ভালোভাবে জানতে হবে, যাকে আপনি বন্ধু বানাচ্ছেন; তিনি আপনার জন্য কতোটা নিরাপদ।
চলুন জেনে নিই বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে কী কী বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া উচিত :
মানুষটি সৎ কি-না তা অবশ্যই খেয়াল করতে হবে। যদি বুঝতে পারেন তিনি মিথ্যাচারে অভ্যস্ত, তাহলে তিনি কখনোই আপনার জন্য সঠিক নন। ঠিক তেমনই একজন সৎ মানুষ আপনার জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। কারণ, তিনি আপনার সঙ্গে কখনও বিশ্বাসঘাতকতা করবে না। আপনার ভালো ছাড়া কখনোই খারাপ চাইবে না।
বন্ধু নির্বাচনের আগে অবশ্যই তার মানসিকতা কেমন যাচাই করুন। খারাপ মানসিকতার ব্যক্তিদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন। এমন স্বভাবের মানুষ বন্ধু হিসেবে কখনোই ভালো হতে পারে না। তারা যেকোনো বিষয় নিয়ে বাজে মন্তব্য করে বসতে পারেন। সেটা অন্যের হোক বা আপনার ক্ষেত্রে।
বিশ্বাসের মাধ্যমেই বন্ধুত্বের ভিত্তি গড়ে ওঠে। আপনি কাকে বন্ধু হিসেবে নির্বাচন করছেন, সেটা বোঝার চেষ্টা করুন। তার ওপর আপনি ভরসা করতে পারেন কি-না, তা জানুন। কারণ, যেকোনো সম্পর্ক বিশ্বাস স্থাপনের মাধ্যমেই গড়ে ওঠে। এমন কাউকে নির্বাচন করুন যিনি আপনার সবকিছু নিজের মধ্যে আগলে রাখবে। আর যদি বন্ধু বিশ্বাসযোগ্য না হয়, তাহলে তিনি যেকোনো সময় আপনার জন্য বিপদজ্জনক হতে পারে। তাই তাকেই বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করুন। যাকে আপনি বিশ্বাস করতে পারবেন।
নিজেদের স্বার্থের জন্য অনেকেই আপনার বন্ধু হতে চাইবেন। জীবনে চলার পথে এমন অনেককে পাবেন। তারা নিজের স্বার্থে আপনার কাছে আসবেন। আবার প্রয়োজন শেষ হয়ে গেলে হঠাৎই গায়েব হয়ে যাবেন। এমন স্বার্থপর মানুষগুলো নিজের স্বার্থে আপনাকে পেছন থেকে ছুরি মারতেও দ্বিধাবোধ করবে না। এমন সম্পর্কগুলো আর যাই হোক বন্ধুত্বের হতে পারে না। তাই বুঝে নিন আপনার সঙ্গে থাকা মানুষটি নিঃস্বার্থভাবে আপনার পাশে আছে কি-না।
আপনার চারপাশে এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা সবসময় আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। তারা আপনার জীবনের যাবতীয় ভালো-মন্দ সবকিছুর সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। তারা চায় আপনি তার কথাতেই চলেন। সে ভুল কিছু বললেও আপনার তাতে কিছু বলার সুযোগ বা অধিকার কোনোটাই নেই। কিন্তু এমনটা তো হতে দেওয়া যায় না। তাই এমন বন্ধু নির্বাচন করুন, যিনি বন্ধুত্বের সীমা পেরিয়ে আপনার ব্যক্তিগত জীবনে প্রভাব বিস্তার করবেন না।
কারো সঙ্গে বন্ধুত্ব করার আগে সময় নিন। হুট করেই কোনো কিছু করবেন না। কথায় আছে, যে দড়ি গড়তে সময় লাগে না সে দড়ি ছিঁড়তেও সময় লাগে না। তাই আগে মানুষটার সঙ্গে সময় কাটান, কথা বলুন, চিনুন, বোঝার চেষ্টা করুন। এতে যদি বুঝতে পারেন আপনি তার সঙ্গে মন খুলে কোনো কিছু বলতে পারছেন না, তাহলে তার থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন। এমন কাউকে বন্ধু হিসেবে নির্বাচন করুন যার সঙ্গে আপনি মন খুলে মিশতে পারবেন বা তিনি আপনার সঙ্গে মিশতে পারবেন।