শীতে সব পদেই ধনেপাতা, কেন?
শীতের সঙ্গে কমলালেবুর যেমন অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক, ঠিক তেমনই ধনেপাতারও। আজকাল বারোমাস পাওয়া গেলেও শীতকাল এলে এই দুই যেন রাজত্ব করে বাঙালি ও বাঙালির রসনায়। তা সে যে কোনও রান্নায় হোক না কেন কিংবা ফুচকা বা চাটের মতো মুখরোচক পদ হোক, তাতে অল্প একটু ধনেপাতা কুঁচি ছড়িয়ে দিলেই খাবারে স্বাদ ও সৌন্দর্য বেড়ে যায় এক ধাক্কায়।
শীতকাল এলেই বাজারে রমরমিয়ে বিক্রি হয় এই সুগন্ধী পাতাটি। অনেকেই মনে করেন স্বাদ ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি ছাড়া ধনেপাতার অপর কোনও উপকারিতা নেই। কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। শরীরের পক্ষে উপকারী ধনেপাতা। জানুন ঠিক কী কী উপকারিতা এই সবুজ পাতার।
দৃষ্টি শক্তি বাড়ায়
ধনেপাতা দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ-তে সমৃদ্ধ হওয়ায় দৃষ্টি শক্তি বাড়ায় এই পাতা। পাশাপাশি চোখে ব্যথার সমস্যাও দূর করে। তাই নিজের খাদ্য তালিকায় ধনেপাতা অন্তর্ভূক্ত করা উচিত।
শরীরে পুষ্টি জোগায়
ধনেপাতায় প্রচুর পরিমাণে ম্যাগ্নেশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ভিটামিন এ, সি এবং পটাশিয়াম থাকে। শরীরে পুষ্টি জোগাতে ও সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক এই উপাদানগুলি।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
ধনেপাতায় ভিটামিন সি উপস্থিত থাকে। এই ভিটামিন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত ধনেপাতা খাওয়া উচিত। এর ফলে শরীর নানান ধরনের ভাইরাস ও রোগের মোকাবিলার শক্তি সঞ্চয় করে।
হজম শক্তি উন্নত করে
হজম শক্তি উন্নত করে থাকে ধনেপাতা। প্রতিদিন ধনেপাতা খেলে হজম প্রক্রিয়া ঠিক থাকে। এর ফলে গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য ও বদহজমের মতো সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
মধুমেহ কম করতে সাহায্য করে
রক্তে শর্করার পরিমাণ কম করতে সাহায্য করে ধনেপাতা। নিয়মিত ধনেপাতা খেলে ইনসুলিনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
অ্যানিমিয়া থেকে স্বস্তি দেয়
শরীরে রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে ধনেপাতা। ধনেপাতায় প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকায় অ্যানিমিয়া দূর করতে সাহায্য করে এটি। এর পাশাপাশি এতে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, মিনারেল, ভিটামিন এ ও সি থাকে। এ কারণে ক্যান্সার থেকেও স্বস্তি পাওয়া যায়।
কোলেস্টেরল কম করে
শুধু খাবারের স্বাদ বৃদ্ধিই নয়, বরং কোলেস্টেরলের স্তর কম করতে সাহায্য করে ধনেপাতা।
প্রস্রাবে জ্বালা কম করে
প্রস্রাব করার সময় জ্বালা অনুভব করলে ধনেপাতার জল পান করলে স্বস্তি পেতে পারেন।
হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী
নানান সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে যে, ধনপাতায় কোয়েরসেটিন নামক যৌগর পাশাপাশি বিভিন্ন ফ্ল্যাভনয়েডস উপস্থিত। এটি কম ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন অর্থাৎ, এলডিএল কম করেত সাহায্য করে, যার ফলে হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকে।