বৃষ্টির দিনে রসনা বিলাস
“এমন দিনে তারে বলা যায়/এমন ঘনঘোর বরিষায়/এমন দিনে মন খোলা যায়/ এমন মেঘস্বরে বাদল-ঝরোঝরে”- মাঝ শরতের বর্ষণমুখর সকাল মানুষকে অনেকটা রোমাঞ্চিত করে তোলে। সকাল গড়িয়ে দুপুর, বিকেল, সন্ধ্যা আসে প্রকৃতির নিয়মে। কিন্তু রোমান্স শেষ হয় না। এমন দিনে প্রিয়জনকে পাশে নিয়ে গল্প করে, সিনেমা-নাটকে মনোনিবেশ করে বা বই পড়ে কাটে অলস দিনের প্রতিটি প্রহর। একঘেয়েমি কাটাতে বৃষ্টির দিনে বিনোদনের সঙ্গে যোগ হয় রসনা বিলাস। এমন দিনে দুপুরের ভোজে খিঁচুড়ির কথাই মাথায় আসে বেশি। তবে বর্ষার দিনে শুধু দুপুর নয়, মনটা খাই খাই করে সারাদিনই। গল্পের আসরে, সিনেমা-নাটক দেখার সময় অথবা বই পড়ার সময়ও চায়ের সঙ্গে খেতে ভালো লাগে নানা ধরনের ভাজাভুজি আইটেম।
বৃষ্টির দিনের দুর্দান্ত খাবার হিসেবে জনপ্রিয় হলো মুচমুচে ভাজাপোড়া। কুড়মুড় করে চিবিয়ে খেতে খেতে জানালার ধারে বসে বৃষ্টি দেখা কিংবা পছন্দের গান শোনা অথবা পছন্দের বই পড়া সবকিছুই করা যায় যদি আপনি চান। তবে এমন দিনে বাইরে যেতেও ইচ্ছে করে না। তাই ঘরেই তৈরি করে নিতে হবে নিজের পছন্দের খাবার।
* বৃষ্টির দিনের অন্যতম এবং বাঙালির সব সময়ের গল্পের সঙ্গী মুড়িমাখা। ঘানিতে ভাঙানো সরিষার তেল, কাঁচালঙ্কা, পেঁয়াজ কুচি, ধনে পাতা কুচি দিয়ে মাখিয়ে নিতে পারেন। তবে সঙ্গে যোগ করতে পারেন আদা কুচি ও লেবুল খোসা কুচি। এতে স্বাদ বেড়ে যাবে।
* খেতে পারেন চিড়া ভাজা। তবে চিড়া তেলে না ভেজে শুকনো তাওয়ায় ভেজে নেওয়ায় স্বাস্থ্যকর। সামান্য লবণ ও পানি মাখিয়ে অল্প কিছুক্ষণ রেখে তা শুকনো তাওয়ায় ভেজে নিতে পারেন। তারপর মুড়ির মতোই সরিষার তেল, কাঁচালঙ্কা, পেঁয়াজ কুচি, ধনে পাতা কুচি দিয়ে মাখিয়ে নিতে পারেন। সঙ্গে যোগ করতে পারেন অল্প পরিমাণ চানাচুরও। বর্ষার বিকেল আপনার ফুরফুরে হয়ে যাবে।
* চিড়াভাজার মতোই আর একটা খাবার হলো চালভাজা। চালভাজাও একটি দুর্দান্ত খাবার। বাসায় যে চাল আছে পরিমাণমতো সেই চাল নিন। চাল ভেজাবেন না। পরিষ্কার করে চিড়ার মতোই ভেজে নিন। এর সঙ্গে অল্প লবণ, পেঁয়াজ-মরিচকুচি, চানাচুর মিশিয়ে নিন। তারপর সরিষার তেল দিয়ে মাখতে থাকুন। বড় দানার চানাচুর ব্যবহার করুন। মাখা বা মেশানো শেষ হলে আয়েশ করে বসুন জানালার ধারে অথবা টিভির সামনে। চালভাজা বেশ ভারী খাবার, তাই পরিমাণের দিকে নজর রাখতে হবে। বেশি খাবেন না। এতে বদহজম বা পেট ফুলে যেতে পারে।
* চিকন দানার মুচমুচে চানাচুরও সরিষা তেল, কাঁচালঙ্কা, ধনে পাতা, সশা, টমেটো কুচি দিয়ে মাখিয়ে নিয়ে বসে যেতে পারেন লুডু বা ক্যারামের গুটি নিয়ে।
*এ ছাড়া আপনি বিভিন্ন ধরনের বীজও ভেজে খেতে পারেন বৃষ্টির দিনে আয়েশ করে। বীজের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো বাদাম, বুট, কাঁঠালবিচি, শিমবীজ, মিষ্টি কুমড়োর বীজ ইত্যাদি। এসব বীজ শুকনো তাওয়ায় ভাজতে পারেন অথবা বালু দিয়েও ভাজতে পারেন। তবে বালুতে ভাজলে ভালোমতো পরিষ্কার না করলে পেটে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই শুকনো তাওয়ায় ভেজে নেওয়ায় ভালো। তবে বাদাম বালুতে ভাজলেই ভালো। এসব বীজ চিড়া, মুড়ি বা চালভাজার সঙ্গে মিশিয়েও খেতে পারেন।
* আর বেশি অলসতা কাজ করলে খুব সহজেই ভেজে নিতে পারেন দোকান কিনে আনা পাঁপড় অথবা চিপস। এক বাটি থাই সুপের সঙ্গে পাঁপড় নিয়ে বসে যেতে পারেন জানালার পাশে।
এসএন