এসি ছাড়া ঘর ঠান্ডা রাখবেন যেভাবে
মানুষের নির্মমতায় বিরক্ত প্রকৃতি খানিকটা উল্টোপাল্টা আচরণ করতে শুরু করেছে বেশ কয়েক বছর ধরে। এরই জের চলছে এই বর্ষায়ও। বৃষ্টির দেখা কদাচিৎ মেলে। অথচ তাপমাত্রা গ্রীষ্মের মতোই। গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। এরই মধ্যে বিদ্যুতের ঘাটতির কারণে ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দেখা দিয়েছে লোডশেডিং। এসি বা ফ্যান বন্ধ হলেই হাঁসফাঁস করে জনগণ। এসি বা ফ্যান থাকুক বা না থাকুক, কিছু কৌশল মানলেই ঘর ঠান্ডা রাখা সম্ভব। আসুন তাহলে জেনে নিই যেভাবে এসি ছাড়াই ঘর ঠান্ডা রাখবেন-
* সাধারণ টিউব লাইট-এ ঘর বেশি গরম হয়। সম্ভব হলে কম আলোর জন্য এলইডি ব্যবহার করতে হবে। এতে তুলনামূলক ঘর ঠান্ডা থাকবে। দিনের বেলা খুব প্রয়োজন না হলে অযথা আলো জ্বালিয়ে রাখবেন না।
* জলন্ত চুলা নিশ্চিতভাবে ঘরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে থাকে। তাই লোডশেডিং বেড়ে গেলে বা দীর্ঘায়িত হলে অপ্রয়োজনীয় রান্না কমিয়ে ফেলতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, ঘন ঘন চা পানের প্রবণতা থাকলে তা কমাতে পারেন অথবা পানি ফুটিয়ে বিশুদ্ধকরণের পরিবর্তে অন্যান্য উপায় অবলম্বন করতে পারেন। ঘরকে ঠান্ডা রাখতে চাইলে তাপের উৎস কমাতেই হবে।
* শীত বা গ্রীষ্মে বলে কথা নয়, সব সময়ই ঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এতে গরম অনেকটা কমে যায়। এ ছাড়া গরমের দিনে ঘরের অন্দরসজ্জায় সামান্য পরিবর্তন আনলেই তাপপ্রবাহ থেকে স্বস্তি পাওয়া সম্ভব। ঘরে যথা সম্ভব কম আসবাব রাখতে হবে।
* ঘরে গাঢ় রঙের পর্দা ব্যবহার করতে পারেন। হালকা রঙের পর্দায় ঘর বেশি গরম হয়ে যায়। জানলায় বা বারান্দায় ব্যবহার করুন খেসের পর্দা। খেস তাপ আটকাতে সক্ষম।
* হালকা রঙের সুতির চাদর ব্যবহার করা প্রয়োজন। গদির উপরে একটা মাদুর বা শীতলপাটি পেতে রাখতে পারেন এতে বিছানা ঠান্ডা থাকবে।
* ঘর মোছার সময়ে জলের মধ্যে বেশ খানিকটা নুন মিশিয়ে দিতে পারেন। নুন জল দিয়ে ঘর মুছলে ঘরের তাপমাত্রা অনেকটাই কমবে। তা ছাড়া এক বাটি বরফ নিয়ে তা টেবিল ফ্যানের সামনে রেখে দিন। বরফের জন্য ফ্যানের হাওয়া ঠান্ডা হবে। সারা ঘরে ঠান্ডা বাতাস ছড়িয়ে পড়বে।
* ঘরে গাছ রাখলেও গরমের দিনে বেশ আরাম পাওয়া যায়। জানলার ধারে সাজিয়ে রাখতে পারেন গাছগুলি।
* ওয়াশার, ডিশওয়াশার ও ড্রাইয়ারও ঘরের তাপমাত্রা বাড়ায়। তাই যথাসম্ভব পরিষ্কারকরণ ও শুকানোর কাজে বিদ্যুৎ ব্যবহার না করাই ভালো। আরো চমকপ্রদ তথ্য হলো, ফোন চার্জার ও অন্যান্য ছোট অ্যাপ্লায়ান্সও ঘরের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়িয়ে থাকে। তাই প্রয়োজন না হলে ঘরের যেকোনো অ্যাপ্লায়ান্স বন্ধ রাখুন বা আনপ্লাগ করুন।
* আপনি ঘরের যেখানে থাকেন ঠিক সেই রুমের শীতলতা বাড়াতে অন্য রুমের দরজা বন্ধ করে দিন।
* রোদ পড়ে গেলে জানলা খুলুন। ঘরকে ঠান্ডা রাখতে সকালে তেজি রোদ ওঠার আগেই জানলা বন্ধ করে দিন। রোদ পড়ে গেলে খুলে দিন। জানলা খুলতে সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষার প্রয়োজন নেই, রোদ নিস্তেজ হয়ে গেলেই খুলে দিতে পারবেন। পড়ন্ত বিকেলে বাইরের তাপমাত্রা ঘরের তাপমাত্রার চেয়ে কম হয়ে থাকে। তাই এসময় জানলা খুলে দিলে ঘর আরও ঠান্ডা হবে।
এসএন