আমের আঁটির যত গুণ
আম খেতে পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় না। মৌসুমি এ ফলের নেশায় মজে বাঙালি। আম খেয়ে আঁটিটা আমরা সাধারণত ফেলে দিই। আমের মতোই আমের আঁটিও পুষ্টিগুণে ভরপুর। নানা রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয় আমের আঁটির শাঁস। এ ছাড়া এটি কাজে লাগাতে পারেন রূপচর্চায়ও। আসুন জেনে নিই আমের আঁটির ব্যবহার।
*আমের আঁটিতে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, ই, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, কপার, ফলেটের মতো উপকারী উপাদান। আমের আঁটিতে রয়েছে ম্যাঞ্জিফেরিন নামে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। এটি ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া আমের আঁটির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুবই কম। ফলে ডায়াবেটিসে আক্রান্তরা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে খেতে পারেন আমের আঁটি দিয়ে।
* তরকারিতে আমের বীজ ব্যবহার করলে স্বতন্ত্র এক স্বাদ পাওয়া যায়। মেক্সিকোতে ঐতিহ্যবাহী মোল সস তৈরিতে আমের বীজ ব্যবহার করা হয়।
* বিশ্বের অনেক দেশেই শিশুদের দাঁতের মাড়ি মজবুত করতে তাদের আমের বীজ খাওয়ানো হয়। এক্ষেত্রে মায়েরা খাওয়ার পর আমের আঁটি বা বীজটা শিশুর মুখে দেন। এটি চাবানোর পর মাড়ির ব্যথা অনেকটাই কমে যায়। পাকা আমের আঁটিতে থাকা সুস্বাদু অংশ মুখে নেওয়ার মাধ্যমে শিশু তার মাড়ির ব্যথা অনেকটাই ভুলে যায়।
* রূপচর্চায়ও ব্যবহৃত হয় আমের আঁটি। আমের আঁটি শুকিয়ে গুঁড়ো করে মাথার তেলের সঙ্গে মিশিয়ে তা চুলে লাগাতে পারেন। খুশকির সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন চিরতরে। খুশকি ছাড়াও চুল ওঠার সমস্যা দূর করতেও ব্যবহার করতে পারেন আমের আঁটির গুঁড়ো।
* অতিরিক্ত ওজন কমাতেও দারুণ সাহায্য করে আমের আঁটি। আমের আঁটি গুঁড়ো করে রেখে দিতে পারেন। গরম জলে মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন। কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতেও সাহায্য করে এ আমের আঁটির বীজ। গরম দুধে সেই গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা থাকবে নিয়ন্ত্রণে।
* আমের বীজ শুকিয়ে গুঁড়ো করে তার সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে ডায়রিয়া দূর হয়। নিয়মিত অল্প পরিমাণে আমের বীজের গুঁড়ো খেলে হৃদরোগ ও হাইপারটেনশনের ঝুঁকি কমে।
* ত্বকের যত্নের জন্য নানা পণ্য তৈরিতে ব্যবহৃত ম্যাংগো বাটার বা অয়েল। এটি বানানো হয় আমের বীজের সাদা শাঁস থেকে। ম্যাংগো বাটারে রয়েছে ওলিয়েক, স্টিয়েরিক, লিনোলিয়েক নামে ফ্যাটি অ্যাসিড। আরও আছে ট্রাইগ্লিসারাইডস। এসব উপাদান ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়তা করে। তাই যাদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক, তারা নির্দ্বিধায় ম্যাংগো বাটার ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া এটি ত্বকের ইনফ্ল্যামেশন এবং অস্বস্তিকর চুলকানি, জ্বালাপোড়া কমাতে পারে।
* ত্বকের দাগছোপ দূর করে ও পায়ের গোড়ালি ফেটে গেলে এ বাটার লাগালে উপকার পাওয়া যাবে। ম্যাংগো বাটার সব ত্বকের জন্য উপযোগী। তবে সবচেয়ে বেশি ভালো শুষ্ক ত্বকের জন্য। এটি ত্বকের লোমকূপ ব্লক করে না। এতে আছে অনেক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান, যা ব্রণ বা র্যাশ প্রতিরোধ করতে পারে।
এসএন