বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক হত্যা
পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক সাফায়েত মাহবুব ফারাইজিকে হত্যার অভিযোগে মামলার আবেদন করেছে তার পরিবার। এ আবেদনে পুলিশের তৎকালীন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বাড্ডা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) তয়াছের জাহানসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিবের আদালতে বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) এই আবেদন করা হয়। আবেদন করেন ফারাইজির মা শামিমুন নাহার। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আদেশ পরে দেবেন বলে জানিয়েছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, রাজধানীর ভাটারা থানার সাব-ইন্সপেক্টর মশিউর, জনৈক সুজানা তাবাসসুম সালাম, আফতাব, শাখাওয়াত, আসওয়াদ, কামরুল হক (বাড়ির মালিক) ও রিপন।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর জন্মদিন পালনের জন্য ভুক্তভোগী সাফায়েত মাহাবুব ফারাইজী বাংলাদেশে আসেন। এরপর সাফায়েত তার মা শামীমুন নাহার লিপির সঙ্গে আসামি সুজানা তাবাসসুম সালাম, মো. আফতাব, মো. শাখাওয়াত ও আসওয়াদকে বন্ধু বলে পরিচয় করে দেন। মাঝে মাঝে আসামি সুজানা তাবাসসুম সালাম দেখা করতে ভুক্তভোগী সাফায়েতের বাসায় আসতেন। পরে এ মামলার বাদিনী শামীমুন নাহার জানতে পারেন, আসামিরা তাদের বাসায় নেশা গ্রহণ করেন এবং বাদিনীর ছেলে সাফায়েতকে তা খেতে বলতেন। এরপর আসামি সুজানা তাবাসসুমকে ভুক্তভোগী সাফায়েতের সঙ্গে দেখা ও বাসায় আসতে না করেন বাদিনী। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ২০২১ সালের ২৩ নভেম্বর আসামি সুজানা তাবাসসুম, মো. আফতাব, মো. শাখাওয়াত ও আসওয়াদ পরস্পর যোগসাজশে বাদিনীর বাসায় এসে গালিগালাজ ও আঘাত করেন। তখন বাদিনী ৯৯৯ কল দিলে রামপুরা থানা থেকে পুলিশ এসে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং মীমাংসা করেন। এরপর ভুক্তভোগী সাফায়েত আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
পরবর্তীতে ১০ ডিসেম্বর বাদিনী ও তার ছেলে সাফায়েত গুলশানে কাজে যান। সেখান থেকে বাসায় ফেরার পথে আসামি সুজানা তাবাসসুম, মো. আফতাব, মো. শাখাওয়াত ও আসওয়াদ তাদের উপর অতর্কিত আক্রমণ করে আহত করে। এরপর তারা চিকিৎসা নিয়ে সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে গুলশান থানা তা গ্রহণ করেনি। এ ঘটনার দিন আসামিরা বাদিনীর বাড়িতে গিয়ে আসামি তাবাসসুমের সাথে ভুক্তভোগী সাফায়েতের যোগাযোগ ও সম্পর্ক রাখতে বলেন। নাহলে সাফায়েত দেশে থাকতে পারবে না বলে জানায় আসামিরা।
এরপর গত বলেন বছর ২৫ ডিসেম্বর ভুক্তভোগী সাফায়েত বড় দিনের অনুষ্ঠান পালন করতে বের হন এবং রাত পৌনে ১২ টায় ফিরে আসেন। এ সময় আসামি সুজানা তাবাসসুম, মো. আফতাব, মো. শাখাওয়াত ও আসওয়াদকে দেখে বাদিনী রাগান্বিত হন। তখন ভুক্তভোগী সাফায়েত তাদের নিয়ে চলে যান। পরবর্তী ভুক্তভোগী সাফায়েত আর বাসায় ফিরে আসে না। এরপর ২৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬ টার দিকে ভাটারা থানা এলাকা থেকে ভুক্তভোগী সাফায়েতের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এমএ/