হাতকড়া নিয়েই স্লোগানে মুখর আদালত, হাসিমাখা মুখে মির্জা ফখরুল
ছবি:সংগৃহীত
গতকাল (সোমবার) মূখ্য মহানগর হাকিম আদালত প্রাঙ্গণে চোখ ধাধানো দৃশ্যে চোখ আটকে যায় সবার। হাতে হাতকড়া নিয়ে পুলিশের গাড়িতে স্লোগান দিতে দেখা যায় কয়েক জন আসামীকে। কোন মামলা বা কি অপরাধে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া না গেলেও তাদের সাথে কন্ঠ মেলান বিএনপির আইনজীবীরাও। গণমাধ্যম কর্মীরাও ব্যাস্ত হয়ে পড়েন তাদের ক্যামেরা বন্দি করতে ।
এদিন গ্রেফতারের ১ মাস ২০ দিন পর কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে । গোয়েন্দা পুলিশের মাইক্রোবাসে এনে প্রথমে তাদের রাখা হয় গারদ খানায় । দুপুরের দিকে তাকে নেওয়া হয় বিচারকের সামনে । পুরোটা সময হাসি মাখা মুখেই ছিলেন মির্জা ফখরুল । হাত নেরে নেতা কমীদের প্রতিবাদ গ্রহন করেন তিনি । তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খশরু মাহমুদ চৌধুরীও ।
সোমবার মির্জা ফখরুলের শারীরিক অসুস্থতার বিষয়টির বিবেচনায় আদালতে জামিন চাওয়া হয় । অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে চাওয়া হয় ১০ দিনের রিমান্ডের । আদালত জামিন দেননি তবে রিমান্ড নামঞ্জুর করে দুইদিন জেলগেটে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন দিয়েছে মির্জা ফখরুল ও আমির খশরুকে।
মির্জা ফখরুল ও আমির খশরুকে আদালতে হাজির করাকে কেন্দ্র করে পুরো সময় বিক্ষোভ করেছেন বিএনপির আইনজীবীরা । উচ্চ আদালতেও সংবাদ সম্মেলন করেছেন আইনজীবী নেতারা। তারা অভিযোগ করে বলেছেন, বিচার বিভাগ চলছে সরকারের ইশারায়। নির্বাচনে আনতে কোন অনৈতিক প্রস্তাবের কাছে বিএনপি আপোষ করবেনা বলে জানয়েছেন আইনজীবীরা।
বিএনপির দাবি গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে এখন পর্যন্ত সারাদেশে ২২ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে । সাজা দেওয়া হয়েছে ১২০০ জনের বেশি নেতা কর্মীকে ।
গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ শুরুর আগেই কাকরাইলে দুপুর থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষ পরে বিজয়নগর পানির ট্যাংক ও শান্তিনগর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে বিকেল তিনটার দিকে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। এই সংঘর্ষে পুলিশের এক সদস্য ও যুবদলের ওয়ার্ড পর্যায়ের এক নেতা নিহত হন। আহত হন পুলিশের ৪১ ও আনসারের ২৫ সদস্য। এছাড়া কমপক্ষে ২০ জন সাংবাদিক আহত হন।
এই ঘটনার পরদিন মির্জা ফখরুলকে গুলশানের নিজ বাসা থেকে আটক করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এরপর তাকে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এরপর গত ২ নভেম্বর দিবাগত রাত ১টার দিকে গুলশানের একটি বাসা থেকে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে আটক করে ডিবি। পরদিন ৩ নভেম্বর সমাবেশ চলাকালীন সংঘর্ষে পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাকে। মামলায় তার ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে ৯ নভেম্বর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।