ফখরুল-আব্বাসের জামিন বহাল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। তাদের মুক্তিতে আর বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
রবিবার (৮ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।একই সঙ্গে হাইকোর্টে রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ, মেহেদী হাছান চৌধুরী ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
অপরদিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম ও মির্জা আব্বাসের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। সঙ্গে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট সগীর হোসেন লিওন।
এই আদেশের ফলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসের কারামুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তাদের আইনজীবীরা।
৩ জানুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে ছয় মাসের অন্তবর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। একই সঙ্গে কেন তাদের স্থায়ী জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে চার সপ্তাহের রুলও জারি করেন আদালত।
এরপর তাদের জামিন স্থগিত চেয়ে বুধবার (৪ জানুয়ারি) সকালে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার আদালত জামিন স্থগিত করে রবিবার (৮ জানুয়ারি) শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। শুনানি শেষে তাদের জামিন বহাল রাখলেন আপিল বিভাগ।
গত ৮ ডিসেম্বর রাতে নিজ বাসা থেকে ফখরুল ও আব্বাসকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। পরদিন ৯ ডিসেম্বর পুলিশ তাদের আদালতে হাজির করে। এ সময় মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত গ্রেপ্তার বিএনপি নেতাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম।
অন্যদিকে, আসামি পক্ষের আইনজীবীরা জামিন আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ৭ ডিসেম্বর বিকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। আহত হন অনেকে। এ সময় বিএনপি কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে চাল-ডাল, পানি, নগদ টাকা ও বিস্ফোরকদ্রব্য পাওয়া যায় বলে দাবি করে পুলিশ।
সংঘর্ষের ঘটনায় ৪৭৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় দেড় থেকে দুই হাজার বিএনপি নেতা-কর্মীকে আসামি করে মামলা করা হয়। রাজধানীর পল্টন মডেল থানায় পুলিশ বাদী হয়ে এ মামলা করে।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন-বিএনপি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপাসনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল প্রমুখ। এদের মধ্যে আমান উল্লাহ আমান ও আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল জামিনে রয়েছেন।
আরএ/
