জামিন পেলেন ফখরুল-আব্বাস

পুলিশের ওপর হামলার পরিকল্পনা ও উসকানি দেওয়ার অভিযোগে পল্টন থানায় করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মনিরুজ্জামান মনির।
বিচারিক (নিম্ন) আদালতে চার দফায় জামিন চেয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর সোমবার (২ জানুয়ারি) মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাস হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন। এদিন আদালতের বার্ষিক ছুটি শেষে হাইকোর্টে এ আবেদন করেন তাদের আইনজীবীরা।
এর আগে গত ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর পল্টন থানায় করা মামলায় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন আবেদন করেন বিএনপির এ দুই নেতা। ওইদিন বিকালে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আসাদুজ্জামান তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন এবং পরবর্তী শুনানির জন্য ২৫ জানুয়ারি ধার্য করেন।
এ ছাড়া, গত ১৫ ডিসেম্বর ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন শুনানি শেষে তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এরও আগে গত ১২ ডিসেম্বর মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসসহ ২২৪ নেতা-কর্মীর জামিন নামঞ্জুর করেন আদালত।
গত ৮ ডিসেম্বর রাতে নিজ বাসা থেকে ফখরুল ও আব্বাসকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। পরদিন ৯ ডিসেম্বর পুলিশ তাদের আদালতে হাজির করে। এ সময় মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত গ্রেপ্তার বিএনপি নেতাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম।
অন্যদিকে, আসামি পক্ষের আইনজীবীরা জামিন আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ৭ ডিসেম্বর বিকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। আহত হন অনেকে। এ সময় বিএনপি কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে চাল-ডাল, পানি, নগদ টাকা ও বিস্ফোরকদ্রব্য পাওয়া যায় বলে দাবি করে পুলিশ।
সংঘর্ষের ঘটনায় ৪৭৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় দেড় থেকে দুই হাজার বিএনপি নেতা-কর্মীকে আসামি করে মামলা করা হয়। রাজধানীর পল্টন মডেল থানায় পুলিশ বাদী হয়ে এ মামলা করে।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন-বিএনপি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপাসনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল প্রমুখ। এদের মধ্যে আমান উল্লাহ আমান ও আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল জামিনে রয়েছেন।
আরএ/
