ব্যাংক কর্মকর্তাদের দুর্নীতির দায়মুক্তির আদেশ কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট

ব্যাংক কর্মকর্তাদের দুর্নীতির ক্ষেত্রে দায়মুক্তির আদেশ কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে এবং সংশ্লিষ্ট নথি তলব করতে চার সপ্তাহের রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
অগ্রণী ব্যাংকের ক্রেডিট ডিভিশনের প্রধান আব্দুস সালাম মোল্লা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ৭০০ কোটি টাকার দুর্নীতি মামলার বিষয়ে দুদকের ম্যানুয়াল অনুসারে অনুসন্ধান না করে তাদের দায়মুক্তির সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। কমিশনের ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থে গত ২৯ আগস্ট একটি রিট পিটিশন দায়ের করলে বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চে এই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। দুদকের অনুসন্ধান সমাপ্ত ঘোষণার সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা হবে না এবং পুনরায় তদন্ত করার কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না— তা জানতে চেয়ে চার সপ্তাহের রুল জারি করেছে এই বেঞ্চ।
এক্ষেত্রে রিট পিটিশনটি করেন চট্টগ্রামের আনোয়ার হোসেন। বিবাদীরা হলেন- অর্থ সচিব, দুদকের চেয়ারম্যান ও সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিনান্সিয়াল এন্টিলিজেন্সের প্রধান, অগ্রণী ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আব্দুস সালাম মোল্লা, মো. আবুল কাশেম এবং মো. রাকিবুল ইসলাম।
রিট পিটিশনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ, তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈ এবং অ্যাডভোকেট সঞ্জয় মন্ডল। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শাহিন আহমদ।
অগ্রণী ব্যাংকের ক্রেডিট ডিভিশনের প্রধান মো. আব্দুস সালাম মোল্লার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে ৬শ’ থেকে ৭শ’ কোটি টাকা ঋণ বরাদ্দ করে তার থেকে অবৈধভাবে কমিশন আদায় করে বসুন্ধরা, গুলশান ও ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন জায়গায় অনেক অবৈধ সম্পত্তি অর্জন করেন। এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা দুদকে অভিযোগ দায়ের করে আবেদন করেন। প্রথমে দুদক ওই আবেদনের উপরে অনুসন্ধান করলেও পরবর্তীতে দুর্নীতির সঙ্গে অভিযুক্ত আব্দুস সালাম মোল্লা তার সহযোগী আবুল কাশেম এবং রাকিবুল ইসলামের সম্পদ দুদক ম্যানুয়াল অনুসারে অনুসন্ধান না করে কমিশন দায় মুক্তি দিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
শুনানিতে বাদী পক্ষের কৌশলী সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, ব্যাংকে জনগণের রক্ষিত অর্থ কিছু অসাধু কর্মচারী আইন কানুন না মেনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেন। এই ঋণ থেকে অবৈধভাবে কমিশন গ্রহণ করে শত কোটি টাকার মালিক হন তারা। দুদকের অনুসন্ধানের ম্যানুয়াল অনুযায়ী নিয়ম থাকলেও তারা সঠিকভাবে না করে তাদের দায়মুক্তি দেন। এর পরবর্তীতেই দুদকের অনুসন্ধান সমাপ্ত ঘোষণার সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা হবে না এবং পুনরায় তদন্ত করার কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না— তা জানতে চেয়ে চার সপ্তাহের রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আরএ/
