বিবাহবহির্ভূত সন্তান জন্মদান: কিশোর বাবার জামিন

অপ্রাপ্তবয়স্ক এক যুগলের বিবাহবহির্ভূত সন্তান জন্মদানের ঘটনায় কিশোরকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতের নির্দেশে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে কিশোরীকে বিয়ে করায় রংপুরের পীরগাছার ওই কিশোরকে জামিনে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহ সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ছয় মাসের জন্য এই আদেশ দেন। বুধবার (৩১ আগস্ট) এই আদেশ দেন আদালত। এদিন আদালতে কিশোরের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন সেলিনা আক্তার। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
সেলিনা আক্তার আদালতে বলেন, গতকাল যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে ৫ লাখ টাকা ও ৫০ হাজার টাকার গহনা দেনমোহরে কিশোর-কিশোরীর বিয়ে ও কাবিন সম্পন্ন হয়েছে। এ সময় আদালত কিশোরকে ৬ মাসের জন্য জামিনে মুক্তির নির্দেশ দেন।
আদেশে তারা সংসার জীবনে সুখী হয়েছে কি না তা পর্যবেক্ষণ করার জন্য আগামী ২৫ অক্টোবর বাবা-মাসহ কিশোর-কিশোরীকে আদালতে হাজির করতে নির্দেশ দেন।
গত ২৮ আগস্ট রংপুরের পীরগাছায় অপ্রাপ্তবয়স্ক যুগলের সন্তান জন্মদানের ঘটনায় উভয় পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের ব্যবস্থা করতে বলেন হাইকোর্ট। যশোর শিশু সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করতে বলেন উচ্চ আদালত।
এর আগে রংপুরের পীরগাছায় প্রেমের সম্পর্ক করে অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরীর সন্তান জন্মদান ও সন্তান জন্মের পরও তাদের বিয়ে না হওয়ার ঘটনায় অভিভাবকদের তলব করেন হাইকোর্ট।
গত ১০ আগস্ট কিশোর আসামির জামিন শুনানির সময় বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
সে সময় কিশোরের আইনজীবী সেলিনা আক্তার বলেন, মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রতিবেশী মো. লাল মিয়ার অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া কিশোর ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেন মেয়ের বাবা। মামলায় অভিযোগ করা হয়, তার কিশোরী মেয়ে স্থানীয় দাখিল মাদরাসায় নবম শ্রেণিতে পড়ে। দেড় বছর আগে মেয়েটিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে লাল মিয়ার ছেলে প্রেমের সম্পর্ক করে। তারপর একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করে তারা। যার ফলে মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়। গত ২৫ মে পরীক্ষা করে কিশোরীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। পরে ১ জুন পীরগাছা থানায় কিশোরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করা হয়। মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় ওই কিশোরকে। আসামি বর্তমানে যশোর শিশু সংশোধনাগারে আছে। গত ঈদুল আজহার দুই দিন পর কিশোরী সন্তান প্রসব করে। বিয়ে না হওয়ায় সন্তান বাবার স্বীকৃতি পায়নি।
আইনজীবী জানান, ছেলেপক্ষ কিশোরীর বাবার সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগ করেছে। কিশোরীকে বিয়ে করে সন্তানের দায়িত্ব নিতে তার পরিবার রাজি। কিন্তু স্থানীয় গ্রাম্যপ্রধান, চেয়ারম্যান, মেম্বারের প্ররোচনায় কিশোরীর বাবা টাকা ও তিন বিঘা জমি দাবি করে। যার কারণে বিষয়টি সমাধান হয়নি।
এমএ/এসএন
