উত্তরা গার্ডার ট্রাজেডি: অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগে মামলা

বিআরটি প্রকল্পের গার্ডারচাপায় রাজধানীর উত্তরায় প্রাইভেটকারে থাকা শিশুসহ পাঁচজন নিহতের ঘটনায় অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। মামলাটি উত্তরা পশ্চিম থানাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালতে রবিবার (২১ আগস্ট) এই মামলা দায়ের করেন নিহত আইয়ুব হোসেন রুবেলের প্রথম স্ত্রী শাহিদা খানম।
মামলার আসামিরা হলেন- আইএফএসসিওএন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইফতেখার হোসেন ও হেড অব অপারেশনস আজহারুল ইসলাম মিঠু, সিজিজিসি’র প্রকিউরমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল ইসলাম, সেফটি ইঞ্জিনিয়ার জুলফিকার আলী শাহ, ক্রেনচালক আলামিন হোসেন ওরফে হৃদয়, হেলপার রাকিব হোসেন, ইফতেখার হোসেন, তোফাজ্জল হোসেন তুষার, রুহুল আমীন মৃধা, রুবেল ও আফরোজ মিয়া।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ১৫ আগস্ট উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় প্যারাডাউস টাওয়ারের সামনে আশুলিয়াগামী ঢাকা ময়মনসিংহ সেক্টর-৩ এর ৩ নম্বর রোডে প্রাইভেটকারের ওপর বিআরটি প্রকল্পের অধীনে কর্মরত ৫০ টন ওজনের গার্ডার বক্স পড়ে গাড়িতে অবস্থানরত আইয়ুব হোসেন রুবেল ওরফে নুর ইসলাম রুবেলসহ ৫ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে। প্রতিষ্ঠানের সেফটি ইঞ্জিনিয়ার জুলফিকার আলী শাহের দায়িত্বকালে হেলথ সেফটি অ্যান্ড এনভার্নমেন্টের ওপর কোনো জ্ঞান না থাকায় সেফটির জন্য অর্থাৎ ক্রেন চালানোর প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বলয় তৈরি করার যা যা প্রয়োজন তার যথার্থ পদক্ষেপ কখনোই গ্রহণ করেননি। চরম অবহেলা এবং খামখেয়ালি করে প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দীর্ঘদিন ধরে সুবিধা ভোগ করে চলেছেন, যার ফলশ্রুতিতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ক্রেনচালক আলামিন নিজে দায়িত্ব পালন না করে হেলপার রাকিবকে দিয়ে ক্রেন পরিচালনা করে বেআইনি কাজ করে যাচ্ছিলেন। ঘটনার সময় আলামিন ও রাকিব মৃত্যু পরিস্থিতি জেনেও কোনোরূপ সহযোগিতা না করেই স্থান ত্যাগ করে পালিয়ে যান। আসামিদের চরম অবহেলা, গাফিলতি এবং অদক্ষ, অযোগ্য জনবল নিয়োগের মাধ্যমে অবৈধ সুবিধা গ্রহণের কারণে পাঁচজন মৃত্যুবরণ করেছে বলেও মামলায় অভিযোগ করা হয়।
উল্লেখ্য গত ১৫ আগস্ট বিকাল ৪টার দিকে উত্তরায় প্যারাডাইস টাওয়ারের সামনে বিআরটি প্রকল্পের ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে পড়ে প্রাইভেটকারের পাঁচ যাত্রী নিহত হন। গাড়িতে থাকা নবদম্পতি গুরুতর আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান। হতাহতরা ঢাকায় বৌভাতের একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ফিরছিলেন তারা।
নিহতদের মধ্যে ফাহিমা আক্তার ও ঝরণা আক্তারের ভাই মো. আফরান মণ্ডল বাবু বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করেন।
ঘটনার একদিন পর গত ১৭ আগস্ট রাতে ক্রেনের চালক ছাড়াও সহকারী ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাকর্মীসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
এমএ/এএস
