ওসির ৮ তলা বাড়ি: ব্যারিস্টার সুমনের সঙ্গে একমত হাইকোর্ট
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি দখলের অভিযোগ ও রাজধানীতে আটতলা বাড়িসহ বিপুল সম্পদের বিষয়ে অনুসন্ধান চেয়ে রিট করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বলেছেন, আপনার মনোভাবের সঙ্গে আমরা শতভাগ একমত। তবে অভিযোগের বিষয়ে দুদকে একটি আবেদন করুন। দুদক যদি ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আমরা দেখব। এরপর আদালত রিট শুনানি আগামী ২১ আগস্ট পর্যন্ত মুলতবি করেন।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার (১০ আগস্ট) এ কথা বলে।
আদালত আরও বলেন, সবকিছুর জবাবদিহিতা থাকতে হবে। এভাবে দুর্নীতি-অনিয়ম চলতে পারে না। এভাবে চলতে দেওয়া যায় না।
রিটের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন নিজে। আর দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। বুধবার সকালেই এই রিট আবেদন করা হয়। জনস্বার্থে এই রিট আবেদন করেন তিনি। দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানসহ রিটে সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
গত ৮ আগস্ট (সোমবার) ওসি মনিরুল ইসলামের আটতলা বাড়িসহ বিপুল সম্পদ ও মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি দখলের অভিযোগ হাইকোর্টের নজরে আনেন ব্যারিস্টার সুমন।
পত্রিকায় এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন ওইদিন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চের নজরে আনা হয়। তখন আদালত দুদকের আইনজীবীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, এ বিষয়ে অবশ্যই অনুসন্ধান হওয়া উচিত।
পরে আদালত তদন্ত চেয়ে ব্যারিস্টার সুমনকে একটি আবেদন হাইকোর্টে দাখিল করতে বলেন। এ বিষয়ে সে সময় ব্যারিস্টার সুমন বলেন, মনে হয়েছে, বিষয়টি আদালতের নজরে আনা দরকার। দুদকের তদন্তের জন্য এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ মামলা।
আইনজীবী বলেন, অসংখ্য সৎ পুলিশ অফিসার রয়েছেন দেশে। তবে এই ওসির মতো যদি সবাই এত সম্পদ বানান, তাহলে সৎ অফিসার যারা, তারা মনে অনেক বেশি কষ্ট পাবেন। এর ফলে দেশে আর সৎ অফিসার নাও হতে পারেন।
তিনি বলেন, অসৎ অফিসাররা যদি ট্রেন্ড তৈরি করেন, তাহলে সৎ অফিসার খুঁজে পাওয়া যাবে না। এজন্য বিষয়টি আদালতের নজরে নিয়ে এসেছি। আদালত শুনেছে। শুনে আদালত বলেছেন, এটা তো ঠিক না। আদালত দুদকের আইনজীবীকে ডেকেছেন। দুদকের আইনজীবীও বলেছেন, এটা খুবই হুমকিস্বরূপ, এটা হতাশাজনক। তখন আদালত আমাকে পিটিশন নিয়ে যেতে বলেছেন।
উল্লেখ্য গত ৪ আগস্ট ‘ঢাকায় ওসির আটতলা বাড়িসহ বিপুল সম্পদ’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বলা হয়, ঢাকায় আটতলা বাড়ি করেছেন। বানাচ্ছেন আরেকটি ডুপ্লেক্স বাড়ি। ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জে তার রয়েছে চারটি প্লট। বাড়ি, প্লটসহ এই বিপুল সম্পদের মালিক ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম। রাজধানীর মোহাম্মদপুর হাউজিং সোসাইটিতে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি দখলেরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
একটি সরকারি সংস্থার তদন্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে পত্রিকাটির অনুসন্ধানে ওসি মনিরুলের এসব অবৈধ সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। অবশ্য পুলিশ সূত্র বলছে, যতটুকু তথ্য পাওয়া গেছে, তার সম্পদের পরিমাণ এর চেয়ে অনেক বেশি।
এমএ/আরএ/