করোনার ভুয়া রিপোর্ট
সাবরিনা-আরিফের মামলায় কোন অপরাধের কী দণ্ড
জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারপারসন ডা. সাবরিনা চৌধুরী ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আরিফুল হক চৌধুরীসহ আটজনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য আছে আজ। করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে করা এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হলে তাদের সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৭০/২৬৯/৪২০/৪০৬/৪৬৬/৪৬৫/৪৭১/৩৪ ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচার হয়। ধারাগুলোর মধ্যে দণ্ডবিধি ৪২০ ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি সাত বছরের কারাদণ্ড। এ ছাড়া ১৭০ (ভুয়া সরকারি কর্মচারী বলিয়া পরিচয় দেওয়া) ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো সরকারি কর্মচারী হিসেবে বিশেষ সম্পত্তি ক্রয় বা ক্রয়ের জন্য দর কষাকষি না করতে আইনত বাধ্য থাকা সত্ত্বেও নিজের নামে অথবা অন্য কারো নামে অথবা যুক্তভাবে অথবা অন্যান্যের সঙ্গে অংশ নিয়ে উক্ত সম্পত্তি ক্রয় করেন বা ক্রয় করার জন্য দর কষাকষি করেন, তবে তিনি দুই বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদে বিনাশ্ৰম কারাদণ্ডে অথবা অর্থদণ্ডে অথবা উভয় দণ্ডেই দণ্ডিত হবেন এবং সম্পত্তিটি ক্রয় করা হয়ে থাকলে তা বাজেয়াপ্ত হবে।
২৬৯ (বিপজ্জনক কোনো রোগের সংক্রমণ ছড়াতে পারে জেনেও অবহেলা করা) ধারায় কোনো ব্যক্তি যদি বেআইনিভাবে বা অবহেলামূলকভাবে এমন কোনো কর্ম করে, যা জীবন বিপন্নকারী মারাত্মক রোগের সংক্রমণ ছড়াতে পারে, তা জানা সত্ত্বেও বা বিশ্বাস করার কারণ থাকা সত্ত্বেও তা করে, তবে সেই ব্যক্তি ছয় মাস পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে, অথবা অর্থদণ্ডে, অথবা উভয়বিধ দণ্ডেই দণ্ডিত হবে।
৪০৬ (অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের শাস্তি) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে, তবে সে ব্যক্তি তিন বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্ৰম কারাদণ্ডে, অথবা অর্থদণ্ডে, অথবা উভয়বিধ দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
৪২০ (প্রতারণা ও সম্পত্তি সমর্পণ করিবার জন্য অসাধুভাবে প্রবৃত্ত করা) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি প্রতারণা করে এবং প্রতারিত ব্যক্তিকে অসাধুভাবে অপর কোনো ব্যক্তিকে সম্পত্তির অংশ বা অংশবিশেষ প্রণয়ন, পরিবর্তন বা বিনাশ সাধনে প্রবৃত্ত করে অথবা অসাধুভাবে প্রতারিত ব্যক্তিকে এমন কোনো স্বাক্ষরিত বা সিল মোহরযুক্ত বস্তুর সমুদয় অংশ বা অংশবিশেষ প্রণয়ন, পরিবর্তন বা বিনাশ সাধনে প্রবৃত্ত করে, যা মূল্যবান জামানতে রূপান্তরযোগ্য, তবে উক্ত ব্যক্তি সাত বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রমের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং তদুপরি অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবে।
৪৬৫ (জালিয়াতির শাস্তি) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি জালিয়াতি করে, তবে উক্ত ব্যক্তি দুই বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে, অথবা অর্থদণ্ডে, অথবা উভয় দণ্ডেই দণ্ডিত হবে।
৪৬৬ (আদালতের নথিপত্র বা সরকারি রেজিস্টার ইত্যাদি জালকরণ) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি এমন একটি দলিল জাল করে, যা কোনো বিচারালয়ের নথি অথবা প্রসিডিং কিংবা বিচারালয়ে উত্থাপিত নথি বা প্রসিডিং বলে অথবা কোনো জন্ম, খ্রিস্টানদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান, বিয়ে কিংবা সমাধিকরণের রেজিস্টার বলে অথবা কোনো সরকারি কর্মচারী কর্তৃক সরকারি কর্মচারী হিসেবে রক্ষিত রেজিস্টার বলে অথবা কোনো সরকারি কর্মচারী দ্বারা তার সরকারি পদমর্যাদা বলে কৃত সার্টিফিকেট বা দলিল বলে, অথবা কোনো মামলা দায়ের করার বা উহাতে পক্ষ সমর্থনের কিংবা উহাতে কোনো কার্যক্রম গ্রহণের রায় মানার কিংবা পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বলে প্রতিভাত হয়, তবে উক্ত ব্যক্তি সাত বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম কিংবা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং তদুপরি অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবে।
৪৭১ (কোনো জাল দলিলকে খাটি হিসেবে ব্যবহার) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি প্রতারণামূলকভাবে বা অসাধুভাবে এমন একটি দলিলকে খাটি দলিল হিসেবে ব্যবহার করে, যে দলিলটি একটি জাল দলিল বলে সে জানে বা তার বিশ্বাস করার কারণ রয়েছে, তবে সে ব্যক্তি যেন সে নিজে দলিলটি জাল করেছে, এমনভাবে দণ্ডিত হবে।
এমএ/আরএ/
