সাবরিনা-আরিফদের সর্বোচ্চ শাস্তির আশা রাষ্ট্রপক্ষের
জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারপারসন ডা. সাবরিনা চৌধুরী ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আরিফুল হক চৌধুরীসহ আট আসামির সবার সর্বোচ্চ শাস্তি হবে বলে আশা করছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছেন দাবি করে তাদের সাত বছরের (সর্বোচ্চ শাস্তি) কারাদণ্ডের প্রত্যাশা ব্যাক্ত করেন তারা। আর আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেছেন।
করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে করা এই মামলার রায়ের জন্য আগামীকাল মঙ্গলবার দিন ধার্য আছে। ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন।
উল্লেখ্য ২০২০ সালের ২৩ জুন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় করোনা শনাক্তের জন্য নমুনা সংগ্রহ করে জেকেজি হেলথকেয়ার। তবে এসব নমুনা পরীক্ষা না করেই ২৭ হাজার মানুষকে ভুয়া রিপোর্ট দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করা হয় মামলায়।
এই মামলার দুই মাসের মাথায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ১৭০/২৬৯/৪২০/৪০৬/৪৬৬/৪৬৫/৪৭১/৩৪ ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন নিম্ন আদালত। ধারাগুলোর মধ্যে দণ্ডবিধি ৪২০ ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি সাত বছরের কারাদণ্ড।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান বলেন, করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার মামলায় জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারপারসন ডা. সাবরিনা চৌধুরী ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল হক চৌধুরীসহ আটজনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায় মঙ্গলবার ঘোষণা করবেন আদালত।
আমরা রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। রায়ে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি সাত বছরের কারাদণ্ড প্রত্যাশা করছি।
এদিকে সাবরিনার আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, ডা. সাবরিনার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ তা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়নি। আশা করছি আমরা ন্যায়বিচার পাব।
আর আরিফের আইনজীবী বলেন, আরিফের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়নি। আশা করছি রায়ে খালাস পাবেন তিনি।
গত ২৯ জুন ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এ দিন ধার্য রাখেন। এর আগে ১১ মে ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনে আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন।
গত ২০ এপ্রিল একই আদালতে সাক্ষ্য দেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়া। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ ঘোষণা করে। এ মামলায় ৪০ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৬ জন বিভিন্ন সময়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
জানা যায়, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় করোনা শনাক্তের জন্য নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা না করেই জেকেজি হেলথকেয়ার ২৭ হাজার মানুষকে ভুয়া রিপোর্ট দেন।
এ অভিযোগে ২০২০ সালের ২৩ জুন অভিযান চালিয়ে সিলগালা করে দেওয়া হয় প্রতিষ্ঠানটি। পরে তাদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলা করলে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই বছরের ৫ আগস্ট ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে সাবরিনা ও আরিফসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী।
অভিযোগপত্রভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন-আবু সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ূন কবির হিমু, তানজিলা পাটোয়ারী, বিপ্লব দাস, শফিকুল ইসলাম রোমিও এবং জেবুন্নেসা।
এমএ/এমএমএ/