মামুনুল ওই নারীকে ধর্ষণ করেছেন: আদালতে সাক্ষী
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক ভূক্তভোগী নারীকে রিসোর্টে বিয়ের আশ্বাসে ধর্ষণ করেছেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন সাক্ষীরা। মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় নারায়ণগঞ্জ আদালতে দুই সাক্ষী এই সাক্ষ্য দেন। তারা আদালতকে বলেন, সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে ঘটনার দিন মামুনুল হকের সঙ্গে থাকা ওই নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) রকিব উদ্দিন আহমেদ রবিবার (১৭ জুলাই) এসব কথা বলেন।
এদিন নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদলতে সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সাক্ষীরা হলেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহাগ রনি ও রতন মিয়া।
পিপি বলেন, আদালতকে সাক্ষীরা জানিয়েছেন, ঘটনার দিন সোনারগাঁও রয়েল রিসোর্টের ৫০১ নম্বর কক্ষে মামুনুল হক এক নারী নিয়ে আটক হওয়ার ঘটনা ফেসবুক লাইভে দেখতে পেয়ে তারা সেখানে উপস্থিত হন। তখন মামুনুল হককে তারা জিজ্ঞাসা করেছে এই নারী কে? এই প্রশ্নে এলোমেলো উত্তর দিয়েছেন। মামুনুল হকের সঙ্গে থাকা ওই নারীকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, আপনি কে এবং এখানে কেন এসেছেন। তখন ওই নারী জানান, আসামি মামুনুল হক তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেছেন। আদালত এই সাক্ষ্য গ্রহণ করেছে।
মামলার মোট ৪৩ সাক্ষীর মধ্যে এই নিয়ে মোট ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছে আদালত।
গণমাধ্যমকে আসামিপক্ষের আইনজীবী এ কে এম ওমর ফারুক নয়ন বলেন, চার্জশিটে ১১, ১২, ১৩, ১৪ নং সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা ছিল। চার জনের মধ্যে তিন জন সাক্ষী হাজিরা দিয়েছেন। এর মধ্যে ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহাগ রনি ও রতন মিয়া সাক্ষ্য দিয়েছেন। অপর সাক্ষী পারভেজ মিয়া হাজিরা দিলেও তার সাক্ষ্য হয়নি।
আইনজীবী বলেন, সোহাগ রনি আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে বলেছেন, ঘটনার দিন মামুনুল হক এক নারীকে নিয়ে রিসোর্টে এসেছেন সেই ঘটনা তিনি ফেসবুক লাইভে দেখে সেখানে যান। তবে কোন আইডি থেকে লাইভ দেখে সেখানে গিয়েছেন তা তিনি বলতে পারেননি। আমরা মনে করি, এটা সাজানো মামলা। এই মামলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কোনও মিল খুঁজে পাচ্ছি না।
জানা গেছে, রবিবার (১৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে মামুনুল হককে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য গতবছর ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করায় সেখানে মামুনুল হককে ঘেরাও করা হয়। পরে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে তাকে নিয়ে যায়।
পরে ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের আশ্বাসে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন তার সঙ্গে থাকা ওই নারী। তবে মামুনুল দাবি করেন যে, ওই নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী।
এমএ/