শিক্ষক উৎপলকে হত্যা করেছে জিতুই: অভিযুক্তের বাবা

রাজধানীর অদূরে সাভারের আশুলিয়ায় হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে তার ছাত্র জিতুই হত্যা করেছে বলে আদালতে স্বীকার করেছে জিতুর বাবা। ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী আশরাফুজ্জামানের আদালতে মঙ্গলবার (৫ জুলাই) এই স্বীকারোক্তি দেন তিনি।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থী জিতুর বাবা উজ্জ্বল আদালতে বলেন, হত্যার পর স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদের বলেছিলাম, এ নিয়ে থানা পুলিশ না করতে। এরপর আমি জিতুকে পাবনা পাঠিয়ে দিই।
আদালতকে উজ্জ্বল বলেন, জিতুর বিষয়ে শিক্ষক উৎপল আমার কাছে নালিশ করেছিলেন। আমি শিক্ষক উৎপলকে বলেছিলাম বিষয়টি দেখবো। ঘটনার দিন আমি স্কুলে গিয়ে বলেছিলাম থানা পুলিশ না করতে। পরে আমি জিতুকে আমার চান্দুরার বাড়িতে রাখি। পুলিশ অভিযান চালালে আমি তাকে পাবনা পাঠিয়ে দেই। আমি কুষ্টিয়ায় মুজাহিদের বাড়িতে চলে যাই। পুলিশ আমাকে কুষ্টিয়া থেকে গ্রেপ্তার করে। জিতুই শিক্ষক উৎপলকে হত্যা করে।
পাঁচদিনের রিমান্ড শেষে জিতুর বাবা উজ্জ্বলকে এদিন ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। তিনি ঘটনার দায় স্বীকার করে এসময় স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তার জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী আশরাফুজ্জামান জবানবন্দি রেকর্ড করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ২৮ জুন মধ্যরাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে উজ্জ্বলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন ২৯ জুন ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মুজাহিদুল ইসলাম তার পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সেদিন সন্ধ্যায় গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকা থেকে আশরাফুল আহসান জিতুকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
পরে ৩০ জুন তাকে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালতে পাঠানো হয়।
মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য জিতুকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক এমদাদুল হক। শুনানি শেষে ঢাকা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব হাসান পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে গত ২৫ জুন স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে ওই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র আশরাফুল আহসান জিতু (১৬)। একদিন পর ২৭ জুন ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিক্ষক মারা যান। নিহত শিক্ষকের বড় ভাই অসীম কুমার সরকার বাদি হয়ে ওই ঘটনায় আশুলিয়া থানায় ওই ছাত্রের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।
এমএ/
