যুদ্ধাপরাধ মামলা
কনডেম সেলে রজব আলী, মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে

মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কে এম আমিনুল হক ওরফে রজব আলীকে কনডেম সেলে পাঠিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তাকে ট্রাইব্যুনালে আনার পর রবিবার (৩ জুলাই) কনডেম সেলে পাঠানোর আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। কারাগারে তার মৃত্যুর পরোয়ানাও পাঠানো হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের অন্যতম প্রসিকিউটর তাপস কান্তি বল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেয়। ট্রাইব্যুনালের অপর বিচারকরা হলেন, বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলম। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে দই প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন ও তাপস কান্তি বল শুনানি করেন। উল্লেখ্য শনিবার (১ জুলাই) রাতে রাজধানীর কলাবাগান এলাকা থেকে আসামিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
প্রসঙ্গত ২০১৮ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড দেয়। এর আগে থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন। রজব আলীর বাড়ি কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামের আলীনগরে। তার বিরুদ্ধে একাত্তরে অষ্টগ্রাম থানা এলাকায় গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও লুটপাটের অভিযোগ প্রমাণিত হয় ট্রাইব্যুনালে।
মামলাসূত্রে জানা যায়, কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম থানার আলীনগর গ্রামের রজব আলী ১৯৭০ সালে ভৈরব হাজী হাসমত আলী কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় ইসলামী ছাত্রসংঘের কলেজ শাখার সভাপতি হন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ভৈরবে পাকিস্তানি সেনা ক্যাম্পে তিনি অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেন এবং পরে এলাকায় ফিরে আল বদর বাহিনী গঠন করেন।
আরও জানা যায়, দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে আটক হয়েছিলেন রজব। ১৯৭২ সালে তার বিরুদ্ধে দালাল আইনে তিনটি মামলা হয়েছিল, যাতে তার যাবজ্জীবন সাজা হয়। কিন্তু দালাল আইন বাতিলের সুযোগে ১৯৮১ সালে রজব ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্ত হন। পরে 'আমি আল বদর বলছি' নামে একটি বই তিনি প্রকাশ করেন। ওই বইয়ে রজবের মানবতাবিরোধী অপরাধসংক্রান্ত অভিযোগের আত্মস্বীকৃতি রয়েছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়।
এমএ/এএজেড
