গ্রামীণ টেলিকম: চাকরিচ্যুতদের ক্ষতিপূরণের নথি তলব

গ্রামীণ টেলিকমের চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া সংক্রান্ত নথি তলব করেছেন আদালত। এ সংক্রান্ত আদেশে শ্রমিকদের কে কত টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন, তার তালিকা দাখিলের নির্দেশও দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক কোম্পানি বেঞ্চ বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) এ আদেশ দেন।
আদালতে শ্রমিকদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইউসুফ আলী। আর গ্রামীণ টেলিকমের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান।
ইউসুফ আলী আদালতকে জানান, শ্রমিকরা এ পর্যন্ত গ্রামীণ টেলিকম থেকে ৩৮০ কোটি টাকা পেয়েছেন। বাকি টাকা এখনও পরিশোধ করা হয়নি।
উল্লেখ্য, মামলা প্রত্যাহারের শর্তে গ্রামীণ টেলিকমের চাকরিচ্যুত ১৭৬ জন শ্রমিকের পাওনা বাবদ ৪৩৭ কোটি টাকায় সমঝোতা করেন প্রতিষ্ঠানটির মালিক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ টেলিকমের অবসায়ন চেয়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। টেলিকমের শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষে এ আবেদন দায়ের করা হয়।
ইউসুফ আলী বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের কাছে শ্রমিকদের পাওনা আড়াইশ কোটি টাকার বেশি। এই পাওনা টাকার দাবিতে কোম্পানিটির অবসায়ন চাওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গ্রামীণ টেলিকমে শ্রমিক ছাঁটাইকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিক অসন্তোষ চলে আসছে। শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (বি-২১৯৪) সিবিএর সঙ্গে আলোচনা না করেই এক নোটিশে ৯৯ কর্মীকে ছাঁটাই করে গ্রামীণ টেলিকম কর্তৃপক্ষ।
গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আশরাফুল হাসান স্বাক্ষরিত এক নোটিশের মাধ্যমে এ ছাঁটাই করা হয়। পরে ওই নোটিশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন ২৮ কর্মী। এই ছাঁটাইকে কেন্দ্র করে ড. ইউনূসকে তলব করেছিল হাইকোর্ট।
গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলা করে ঢাকার কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর। ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে এ মামলা করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর। বিবাদীদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেছেন আদালত।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন— গ্রামীণ টেলিকমের এমডি আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও শাহজাহান।
মামলাসূত্রে জানা যায়, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ড. ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকম পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে তারা শ্রম আইনের কিছু লঙ্ঘন দেখতে পান। এর মধ্যে ১০১ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে স্থায়ী করার কথা থাকলেও তাদের স্থায়ী করা হয়নি। শ্রমিকদের অংশগ্রহণের তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি। এছাড়া কোম্পানির লভ্যাংশের ৫ শতাংশ শ্রমিকদের দেওয়ার কথা থাকলেও তা তাদের দেওয়া হয়নি।
এমএ/আরএ/
