নারী পাচার: জামিন মেলেনি ইতির
নারী পাচারকারী চক্রের প্রধান সমন্বয়ক নদী আক্তার ওরফে ইতি। ফাইল ফটো
বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে নারী পাচারকারী চক্রের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে অভিযুক্ত নদী আক্তার ওরফে ইতির জামিন মঞ্জুর করেননি হাইকোর্ট।
বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার (১১ এপ্রিল) এ আদেশ দেন। তার আবেদন উত্থাপিত হয়নি (নটপ্রেস রিজেক্ট) মর্মে খারিজ করেন আদালত।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন হাসান তরিকুল চৌধুরী। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।
মামলাসূত্রে জানা গেছে, মালয়েশিয়ায় পাচার হয়ে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন নুরজাহান ওরফে নদী আক্তার ওরফে জয়া আক্তার ওরফে জান্নাত ওরফে ইতি (২৮)। দেশে ফিরে নিজেই নারী পাচারকারী চক্রে জড়িয়ে পড়েন। হয়ে উঠেন ভারতসহ আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী চক্রের সমন্বয়ক।
অভিযোগ আছে, কারও কাছে তিনি নদী। কেউ চেনেন জয়া নামে। অনেকে আবার তাকে জান্নাত আরা ইতি নামেই জানেন। এভাবে ১০টির বেশি ছদ্মনাম ব্যবহার করে নারী পাচার করে আসছিলেন তিনি।
ভারতের বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশি তরুণী নির্যাতনের ঘটনায় আলোচনায় আসা ‘টিকটক হৃদয় বাবু’র নারী পাচারকারী চক্রের সমন্বয়ক নূরজাহানসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে হাতিরঝিল থানার পুলিশ।
যশোরের শার্শা থানার পাঁচভূলট, বেনাপোল থানার পুটখালী ও নড়াইল শহরের ডহর রামসিদ্দি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে পাসপোর্ট, ভারতের আধার কার্ড (পরিচয়পত্র), মুঠোফোন, ভারতের সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া নারী পাচারকারী চক্রের অভিযুক্ত অন্য সদস্যরা হলেন- আল আমিন হোসেন (২৮), সাইফুল ইসলাম (২৮), আমিরুল ইসলাম (৩০), পলক মণ্ডল (২৬), তারিকুল ইসলাম (২৬) ও বিনাশ শিকদার (৩৩)।
গত ২১ জুন নদী আক্তার ইতির বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানার মামলা হয়। এতে বলা হয়, আসামিরা পাচারের উদ্দেশে আনা মেয়েদের যশোর সীমান্তে একটি বাড়িতে রেখে সুযোগমতো ভারতে পাচার করত। পাচার করা প্রত্যেক মেয়ের জন্য স্থানীয় এক ইউপি সদস্য এক হাজার টাকা করে নিতেন। পাচারকালে কোনো মেয়ে বিজিবির কাছে আটক হলে সেই ইউপি সদস্য তাকে আত্মীয় পরিচয় দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে আসতেন।
২০০৫ সালে সন্ত্রাসী রাজীব হোসেনের সঙ্গে নদীর বিয়ে হয়। ২০১৫ সালে রাজীব বন্দুকযুদ্ধে মারা যান। এরপর থেকেই নদী পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। পাচারকৃত ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে নদীর দশটির মতো নাম পাওয়া যায়।
এমএ/আরএ/