টাইম স্কেল: ৪৮ হাজার শিক্ষকের আপিল শুনানি ২২ মে
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জাতীয়করণ হওয়া ৪৮ হাজার ৭২০ শিক্ষকের টাইম স্কেল সংক্রান্ত আপিল আবেদনটি শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে আপিল আবেদনটির উপর শুনানির জন্য আগামী ২২মে পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।
সোমবার (১১ এপ্রিল) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
টাইম স্কেল ফেরত দিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র নিয়ে জারি করা রুল খারিজের বিরুদ্ধে এই আপিল আবেদন করা হয়। আদালতে আপিলের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোকছেদুল ইসলাম। আদেশের বিষয়টি তিনিই নিশ্চিত করেছেন।
গত বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে জাতীয়করণ হওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৮ হাজার ৭২০ শিক্ষকের টাইম স্কেল ফেরত দিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র নিয়ে জারি করা রুল খারিজ করেন হাইকোর্ট। ওই রায়ের বিরুদ্ধে গত ১৪ জুন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ৪৮ হাজার শিক্ষকের পক্ষে মোকছেদুল ইসলাম এ আবেদন করেন।
২০১৩-২০১৪ সালে বেসরকারি থেকে সরকারি হওয়া (জাতীয়করণ) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৮ হাজার ৭২০ জন শিক্ষকের ‘টাইম স্কেল’ সুবিধা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে পরিপত্র জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রের বৈধতা নিয়ে রিট আবেদন করেন শিক্ষকরা।
শিক্ষকদের ওই রিট খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের রিট খারিজের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করেন শিক্ষকদের আইনজীবী।
আদালতের আদেশের পর আইনজীবী মো. মোকছেদুল ইসলাম বলেন, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সারাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৮ হাজার ৭২০ জন শিক্ষকের টাইম স্কেল সুবিধা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা পরিপত্র নিয়ে রিট খারিজ করে রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ফলে বেসরকারি থেকে সরকারি (২০১৩-২০১৪ সালে) হওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের ‘টাইম স্কেল’ সুবিধা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রের বৈধতা পেয়েছিল।
মামলাসূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩-২০১৪ সালে জাতীয়করণ হওয়া প্রাথমিক শিক্ষকদের টাইম স্কেলের সুবিধা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা পরিপত্র নিয়ে দায়ের করা রিটের শুনানিতে জারি করা রুল শুনানি শেষ হয়। পরে এ বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য ২৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট।
গত ১৩ জানুয়ারি শিক্ষকদের টাইম স্কেল সংক্রান্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠির বিষয়ে করা রিট আবেদন তিন সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করার জন্য হাইকোর্টকে নির্দেশ দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
পরিপত্র ও গেজেটের ভিত্তিতে জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ২০১৩ সাল থেকে ওই টাইম স্কেলের আর্থিক সুবিধাদি ভোগ করে আসছিলেন।
আইনজীবী মোকছেদুল ইসলাম বলেন, গত বছরের ১২ আগস্ট বেসরকারি থেকে সরকারি হওয়া প্রাথমিক শিক্ষকদের টাইম স্কেল সুবিধা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় একটি পরিপত্র জারি করে। পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সংক্ষুব্ধ শিক্ষকরা রিট করেন। তখন হাইকোর্ট বিভাগ পরিপত্র স্থগিত করে রুল জারি করেন।
এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করেন। ১৩ সেপ্টেম্বর চেম্বার জজ আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন। পরে স্থগিতাদেশ তুলে দিতে শিক্ষকরা আপিল বিভাগে আবেদন করেন। এরপর গত ১৩ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তিন সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগে রিট মামলাটি নিষ্পত্তি করতে বলেন।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ওই বেঞ্চে এ রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট শিক্ষকদের করা রুল খারিজ করে এ বিষয়ে রায় ঘোষণা করেন।
এমএ/আরএ/