প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের সঙ্গে জবরদস্তি নয়: হাইকোর্ট
কোনো বিষয়ে প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের সঙ্গে জোর জবরদস্তি করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। রবিবার (১০ এপ্রিল) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই মন্তব্য করে।
বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে ১৯ বছর বয়সী কানাডিয়ান এক তরুণীকে গৃহবন্দি রাখার অভিযোগ করা রিটের শুনানএত এই মন্তব্য করে আদালত।
শুনানিতে আদালত ঐ বাবা-মায়ের উদ্দেশ্যে বলেন, তাকে ফ্রিডম দিতে হবে। সে কানাডায় যেতে চায়, সেখানে পড়তে চায়। বাবা-মাকে সেই সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে। দুয়ার বন্ধ রাখা চলবে না।
আদালত পরে বাবা-মাকে তরুণীর ল্যাপটপে ইন্টারনেট সংযোগ এবং তাকে মোবাইল ফোন ব্যবহার করার সুযোগ দিতে নির্দেশ দেয়।
পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত তরুণী বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকবেন বলেও নির্দেশ দেয় আদালত। তা ছাড়া এই রিট মামলায় কানাডিয়ান হাইকমিশনকে পক্ষভুক্ত করতে বলা হয়।
রিট মামলাটি আগামী মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) কার্যতালিকায় থাকবে।
বেঞ্চের দুই বিচারপতি খাস কামরায় ১৯ বছর বয়সী ওই তরুণীর কথা শোনেন । আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও সারা হোসেন। তরুণীর বাবা-মায়ের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. ওজিউল্লাহ। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও আবুল কালাম আজাদ। আদালতে কানাডিয়ান হাইকমিশনের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত রাজধানীর উত্তর মুগদায় ১০ মাস ধরে বাবা-মায়ের বাসায় গৃহবন্দি আছেন ১৯ বছরের কানাডিয়ান ওই তরুণী। তাকে হাজির করতে গত ৫ এপ্রিল নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
তরুণীকে আদালতে হাজির করতে মুগদা থানার পুলিশ ও তার বাবা-মাকে নির্দেশ দেয় আদালত। তা ছাড়া তরুণীর অসম্মতিতে তাকে ১০ মাস ধরে আটক রাখা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
রিটসূত্রে জানা যায়, ১৯ বছরের ওই তরুণীর জন্ম কানাডায়। তিনি জন্মসূত্রে কানাডার নাগরিক। কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তার বাবা-মাও কানাডায় থাকতেন। ১০ মাস আগে তার বাবা-মা বেড়ানোর কথা বলে তাকে নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। এরপর ওই তরুণী কানাডায় ফিরে যেতে চাইলেও তাকে যেতে দেওয়া হয়নি।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, তরুণীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে তাকে তার নানি ও মা সবসময় বাসায় বন্দি করে রাখেন। এক পর্যায়ে ওই তরুণী ল্যান্ড ফোনে কানাডা সরকার ও ঢাকায় কানাডিয়ান হাইকমিশনকে তাকে জোরপূর্বক ঘরবন্দি করে রাখার কথা জানান। ওই তরুণী কানাডায় ফিরে যাওয়ার ইচ্ছার কথা জানান।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মুগদা থানায় কানাডিয়ান হাইকমিশন থেকে সাধারণ ডায়েরি করা হয়। তারপর হাইকমিশনের পক্ষে মানবাধিকার সংগঠন ব্লাস্ট, আইন ও সালিশ কেন্দ্র হাইকোর্টে রিট করে।
এমএ/এমএমএ/