সোহেল চৌধুরী হত্যা: জামিন মেলেনি আশিষ চৌধুরীর
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরীর জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শান্তা আকতারের আদালত রবিবার (১০ এপ্রিল) জামিন নামঞ্জুর করে এই আদেশ দেন।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গত বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) আশিষ রায় চৌধুরীকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। সেদিন তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক শামীম হোসেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মোস্তফা রেজা নুর কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ওই দিন তার আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। এরপর আদালত শুনানির জন্য রবিবার (১০ এপ্রিল) দিন ধার্য রাখে। এর ধারাবাহিকতায় রবিবার শুনানি নিয়ে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আদালত।
গত মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর গুলশান থেকে আশিষ রায় চৌধুরীকে গ্রেফতার করে র্যাব। এসময় উদ্ধার করা হয় ২২ বোতল বিদেশি মদ, ১৪ বোতল সোডা ওয়াটার, একটি আইপ্যাড, ১৬টি বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড, দুটি আইফোন ও নগদ দুই লাখ টাকা। পরদিন বুধবার (৬ এপ্রিল) রাতে আশিষ রায়ের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন র্যাব-১০ এর ডিএডি জাহাঙ্গীর আলম।
প্রসঙ্গত ১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীতে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় মামলা করেন। সোহেল চৌধুরী নিহত হওয়ার পরপরই এই হত্যাকাণ্ডে চলচ্চিত্র প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠে।
মামলাসূত্রে জানা যায়, হত্যাকাণ্ডের কয়েক মাস আগে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর কথা-কাটাকাটি হয়। এর প্রতিশোধ নিতে হত্যা করা হয় সোহেল চৌধুরীকে।
ওই রাতে সোহেল চৌধুরী তার বন্ধুদের নিয়ে ট্রাম্পস ক্লাবে ঢোকার চেষ্টা করেন। এসময় ভেতরে ঢুকতে তাকে বাধা দেওয়া হয়। রাত আড়াইটার দিকে আবারও তিনি ঢোকার চেষ্টা করেন। তখন সোহেলকে লক্ষ্য করে ইমন, মামুন, লিটন, ফারুক ও আদনান গুলি চালান। আসামিদের মধ্যে আদনান খুনের পরপরই ধরা পড়েছিলেন।
তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশ নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এর দুই বছর পর মামলাটির বিচার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার দুই নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
একই বছর আসামিদের মধ্যে একজন হাইকোর্টে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৩ সাল থেকে দীর্ঘ ১৯ বছর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটি স্থগিত ছিল।
এরপর গত ২৭ ফেব্রুয়ারি স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হলে ফের মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এ মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা হলেন–আদনান সিদ্দিকী, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ, তারেক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন, ফারুক আব্বাসী, শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ও আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী।
এমএ/এসএ/