তিতুমীর কলেজকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে টানা চতুর্থদিনের মতো অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে দেখা গেছে, কলেজের প্রধান ফটকের সামনে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়ে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন।
আন্দোলনকারীরা দাবি জানিয়েছেন, আজ বিকাল ৪টার মধ্যে সরকার যদি বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণার বিষয়ে সিদ্ধান্ত না জানায়, তাহলে তারা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সড়ক অবরোধ করবেন।
আন্দোলনকারীদের নেতা নায়েক নূর মোহাম্মদ বলেন, “আজ বিকাল ৪টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের ঘোষণা না এলে আমরা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সড়ক অবরোধ করব।”
শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বেলা ১১টায় জানান, “আমরা বিকাল ৪টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছি। এর মধ্যে যদি ঘোষণা না আসে, তাহলে শিক্ষার্থীরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।”
আন্দোলনের অন্যতম প্ল্যাটফর্ম ‘তিতুমীর ঐক্য’ জানিয়েছে, বিশ্ব ইজতেমার কারণে রোববার বেলা ১১টা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি শিথিল থাকবে। তবে অনশন চলবে নিরবচ্ছিন্নভাবে।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো:
আন্দোলনকারীদের সাত দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—
রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিসহ অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করা
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে ভর্তি কার্যক্রম চালু করা
শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করা অথবা আবাসন ব্যয় বহন করা
আইন ও সাংবাদিকতা বিভাগের সংযোজন
পিএইচডিধারী যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া
আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করা এবং পর্যাপ্ত জমি ও অর্থ বরাদ্দ দেওয়া
গত সোমবার রাতে ‘তিতুমীর ঐক্য’র পক্ষ থেকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়, যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি ও প্রশাসনিক কাঠামো গঠনের দাবি জানানো হয়। কিন্তু দাবির প্রতিক্রিয়া না পাওয়ায় মঙ্গলবার থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ‘শাটডাউন তিতুমীর’ কর্মসূচি শুরু হয়।
এর আগে, গত ৭ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা কলেজের প্রধান ফটকে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে একটি ব্যানার টানিয়ে দেন।
গত ১৮ নভেম্বর মহাখালীতে আমতলী, কাঁচাবাজার ও রেলক্রসিং এলাকায় সড়ক অবরোধ করে শত শত শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করেন। পরে ৩ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে। তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এই কমিটি সঠিকভাবে কাজ করছে না।