কিয়েভ দখলের পথে রাশিয়ার ৪০ মাইল দীর্ঘ কনভয়
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রাশিয়ার বাহিনী। তবে ইউক্রেন সামরিক বাহিনী ও গেরিলা প্রতিরোধে তা এখনো পূর্ণ রুশ নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আর এ লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে প্রায় ৪০ মাইল দীর্ঘ রাশিয়ার একটি সামরিক গাড়ি বহর। কিয়েভের উত্তরাঞ্চলে সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) স্যাটেলাইটে এই দীর্ঘ সেনা বহরের চিত্র ধরা পড়েছে। মার্কিন বেসরকারি কোম্পানি মাক্সার এই ছবি ধারণ করেছে।
এর আগে মাক্সার জানিয়েছিল, কিয়েভের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ১৭ মাইল (২৭ কিলোমিটার) দীর্ঘ রুশ সামরিক বহর। পরে কোম্পানিটি জানায় এটি ১৭ নয় ৪০ মাইল দীর্ঘ।
ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফ ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, কিয়েভের চারপাশে উত্তেজনা বিরাজ করছে। শত্রুরা সামরিক ও বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার উচ্চ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সেনাদের সঙ্গে বেলারুশ যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
তবে গতকাল মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা বেলারুশীয় সেনাদের চলাচলের কোনো নমুনা দেখেনি।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, হোয়াইট হাউস রুশ সেনা কনভয়কে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমটিকে বলেছেন, তারা কনভয়ের আকার দেখে খুবই উদ্বিগ্ন।
উল্লেখ্য, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন।
এদিকে আজ ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় রাজধানী কিয়েভের ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে ভাসিলকিভে একটি তেলের ডিপোতে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এতে কিয়েভবাসীকে বিশেষ সতর্ক থাকার বথা বলেছে ইউক্রেন সরকার।
রাজধানী কর্তৃপক্ষ রাজধানীবাসীকে বিষাক্ত ধোঁয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলেছে। কিয়েভের বাসিন্দাদের ঘরের জানালা ভালো করে বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। রুশ হামলার তৃতীয় রাতে কিয়েভে বিমান হামলার সাইরেন বেজে উঠে। মধ্যরাতের আগে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সতর্কতা দেওয়া হয়েছিল।
পাঁচ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ যুদ্ধের ষষ্ঠ দিন। রাজধানী কিয়েভ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে রুশ সেনারা। এ হামলা শুরু পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/