রুশ হামলার চতুর্থ রাতে মুহুর্মুহু গোলাবর্ষণ
মুহুর্মুহু গোলাবর্ষণে কেটেছে ইউক্রেনে রুশ হামলার চতুর্থ রাত। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক এই রাতে যা যা হলো–
রুশ সৈন্যরা রাজধানী থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। কিয়েভ ইউক্রেনের হাতেই রয়েছে। শহরে দুই দিনের কারফিউ তুলে নেওয়া হয়েছে।
উত্তর-পূর্বের চেরনিহিভ শহরে রাতভর রাশিয়ার সেনারা ভারী গোলাবর্ষণ করেছে; কিন্তু এটি এখনো ইউক্রেনের হাতে রয়েছে
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় স্বীকার করেছে যে, ইউক্রেনে আক্রমণের সময় তাদের বাহিনী ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। যদিও কয়েকদিন ধরে তারা দাবি করেছে যে তাদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
কিয়েভ এবং মস্কোর প্রতিনিধিরা শান্তি আলোচনার জন্য বেলারুশে যাচ্ছেন, যদিও প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সতর্ক করেছেন, তিনি আশা করেন না যে আলোচনা থেকে কোন ফলাফল আসবে।
এদিকে, রাতে বেশকিছু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, বেলোরুশের স্বৈরশাসক আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো তার কিছু সৈন্যকে রুশ আক্রমণে যোগ দেওয়ার জন্য মোতায়েন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
অন্যদিকে রাশিয়ার অর্থনীতিতে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব নিয়ন্ত্রণে মস্কোর কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বৃদ্ধি করেছে এবং বিদেশীদের কাছে থাকা সিকিউরিটি বিক্রি করা থেকে দালালদের নিষেধ করেছে।
যুক্তরাজ্যের চ্যান্সেলর ঋষি সুনাক ব্রিটিশ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং দেশের অন্য সার্বভৌম সম্পদ তহবিলের সঙ্গে লেনদেন করতে নিষেধ করেছে।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন।
এদিকে আজ ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় রাজধানী কিয়েভের ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে ভাসিলকিভে একটি তেলের ডিপোতে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এতে কিয়েভবাসীকে বিশেষ সতর্ক থাকার বথা বলেছে ইউক্রেন সরকার।
রাজধানী কর্তৃপক্ষ রাজধানীবাসীকে বিষাক্ত ধোঁয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলেছে। কিয়েভের বাসিন্দাদের ঘরের জানালা ভালো করে বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। রুশ হামলার তৃতীয় রাতে কিয়েভে বিমান হামলার সাইরেন বেজে উঠে। মধ্যরাতের আগে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সতর্কতা দেওয়া হয়েছিল।
চার দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ যুদ্ধের পঞ্চম দিন। রাজধানী কিয়েভ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে রুশ সেনারা। এ হামলা শুরু পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/