নিউইয়র্কে সাকিব আল হাসান ও শাকিব খান, সম্মাননা স্মারক তুলে দিলেন আবুবকর হানিপকে
যুক্তরাষ্ট্র সফরে এসেছেন বাংলাদেশের দুই সুপার স্টার। একজন ক্রিকেটে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। অন্যজন বাংলা চলচ্চিত্রের সুপারস্টার শাকিব খান। এই দুই তারকা ব্যক্তিত্বকে সম্মানিত করতে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি কমিউনিটির সফল ব্যক্তিত্বরা সমবেত হয়েছিলেন শো টাইম মিউজিক'র আয়োজনে। যাদের অন্যতম ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে সফল বাংলাদেশি আমেরিকান, ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির চ্যান্সেলর আবুবকর হানিপ।
অনুষ্ঠানে আবুবকর হানিপকে প্রবাসীদের সামগ্রিক উন্নয়নে অশেষ অবদানের জন্যে বিশেষ সম্মাননা স্মারক তুলে দেন দুই সুপার স্টার। আর আবুবকর হানিপও ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির পক্ষ থেকে দুই সুপারস্টারকে দেন বিশেষ সম্মাননা স্মারক।
নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ডফেয়ার মেরিনার আলো ঝলমল মিলনায়তনে ‘মিট এ্যান্ড গ্রিট এক্সক্লুসিভ’ শীর্ষক মনোজ্ঞ এই অনুষ্ঠানের মূল আয়োজক ছিলেন শো টাইম মিউজিক’র কর্ণধার আলমগীর খান আলম।
কোন ভূমিকা ছাড়াই দুই রাজাধিরাজকে মঞ্চে আলিশান চেয়ারে বসার আহবান জানালেন আলমগীর খান। এরপর দুই শাকিবের পাশে দু’জন করে বসেন এবং তারা সরাসরি উভয়ের মতামত ও মন্তব্য জানতে চান নানা ইস্যুতে। তারই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্রে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এ্যান্ড টেকনোলাজি’র চ্যান্সেলর আবুবকর হানিপের সঙ্গেও আলাপচারিতায় অংশ নেন সাকিব আল হাসান ও শাকিব খান। আবুবকর হানিপ শাকিব ও সাকিবকে প্রবাসীদের পক্ষ থেকে উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়ে জানতে চান, নিজ নিজ ক্ষেত্রে আপনারা উভয়ে শীর্ষে আরোহন করেছেন। কঠোর অধ্যাবসায়ের পাশাপাশি আর কোন বিষয়টি আপনাদের সুপার স্টারে পরিণত করেছে বলে মনে করেন।
ক্রিকেটে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান বললেন, "পরিশ্রম তো করতে হয়েছে এবং এখনো করছি। এরকম পরিশ্রম অনেকেই করেন। কিন্তু সবাই তো হতে পারেন না। এজন্যে কপাল লাগে। মাশআল্লাহ আমার কপাল বড়, সেটি বড় একটি ব্যাপার।"
সুপার স্টার শাকিব খান বলেন, "ভাগ্য লাগে। সেটি নির্দ্ধারণ করেন আল্লাহ তা’লা। এটাই বড় সত্য। আমি চেষ্টা করে আসছি। এই চেষ্টা জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠতে সহায়তা করে অনেককেই। আমার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত হিসেবে ভাগ্য প্রসন্ন হয়েছে এবং সেটি পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার দান।"
চ্যান্সেলর আবুবকর হানিপের অপর এক কৌতুহলের জবাবে সাকিব আল হাসান বলেন, আমি বাস্তববাদি মানুষ। বর্তমান নিয়েই ব্যস্ত থাকি। তাই মারা যাবার পর কে কী ভাবলেন সেটি তো আমি জানতে পারবো না। তবে আমি জানি যারা একান্তই কাছের মানুষ তারা স্মরণ করবেন, দোয়া করবেন। আর যদি সমগ্র জাতির কল্যাণে কিছু করছি বলে বিবেকসম্পন্নরা অনুধাবনে সক্ষম হন, তাহলে তারাও স্মরণ রাখবেন বহুদিন।
ইউএস সুপ্রিম কোর্টে প্রথম বাংলাদেশি আমেরিকান এটর্নি এবং কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট ডেমক্র্যাটিক পার্টির লিডার মঈন চৌধুরীর কৌতুহলের জবাবে সাকিব ও শাকিব বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের চিন্তা যখন করবেন, তখোন নিশ্চয়ই ইমিগ্রেশনের এটর্নি হিসেবে তার (মঈন চৌধুরী) শরণাপন্ন হবেন।
বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেটের প্রসারে কোন পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে ক্রিকেটার সাকিব বলেন, অবশ্যই করার ইচ্ছা আছে। নতুন প্রজন্মে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে ক্রিকেটের প্রতি। সেই আবেগ কাজে লাগাতে সচেষ্ট রয়েছেন সকলেই।
মার্কিন মূলধারার চলচ্চিত্রে প্রতিভাসম্পন্ন অন্যদেরকে নিয়ে সম্পৃক্ততার কোন চিন্তা-ভাবনা আছে কিনা জানতে চাইলে ঢালিউডের কিং শাকিব বলেন, বাংলাদেশিসহ এশিয়ানদের মেধা এবং প্রতিভা অত্যন্ত প্রখর-এটি মার্কিন মুল্লুকের বিদগ্ধজনেরা ইতিমধ্যেই উপলব্ধিতে সক্ষম হয়েছেন। এ আর রহমান, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া এর অন্যতম উদাহরণ। নিশ্চয়ই আমরাও একই অবস্থানে উঠতে সক্ষম হবো। এজন্যে নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
উত্তর আমেরিকায় বাংলা সংস্কৃতির বিকাশে নিরন্তরভাবে কর্মরত শো-টাইম মিউজিকের উদ্যোগে কয়েকস মাস আগে এই নিউইয়র্কে প্রথমবারের মতো দুই কিংবদন্তি কন্ঠশিল্পী রুনা লায়লা এবং সাবিনা ইয়াসমীন একই মঞ্চে গেয়েছেন। এরপর এই দুই সুপার স্টারকেও একই মঞ্চে প্রাণবন্ত মতবিনিময়ে হাজির করার মধ্যদিয়ে কম্যুনিটিতে অনন্য এক উদাহরণ সৃষ্টি করলেন আলমগীর খান আলম।
এই আলাপ-চারিতায় বিশিষ্টজনদের মধ্যে আরো ছিলেন বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম পৃষ্ঠপোষক নুরুল আজিম, রাহাত মুক্তাদির, রায়হান জামান, ডা. চৌধুরী সারওয়ার হাসান, ফাহাদ সোলায়মান, মোহাম্মদ এ কে আজাদ, শাহনেওয়াজ, রানু নাওয়াজ প্রমুখ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনপ্রিয় নাম ‘প্রিসিলা নিউইয়র্ক’ তথা প্রিসিলা ফাতেমাও এই কর্মসূচিতে অংশ নেন। অনুষ্ঠানের সকলেই আলমগীর খান আলমকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এমন একটি আয়োজনের জন্যে।