শ্রীলঙ্কায় আজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন
অর্থনৈতিক সংকটে টালমাটাল শ্রীলঙ্কার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কে হবেন তা নির্ধারণ করতে দেশটিতে আজ বুধবার (২০ জুলাই) ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
পার্লামেন্টে জনপ্রতিনিধিদের ভোটে নির্বাচিত হবেন এবারের প্রেসিডেন্ট। যদিও শ্রীলঙ্কায় সাধারণত জনগণের ভোটেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে থাকেন। তবে এবার সংকটকালে দ্রুততার সঙ্গে নেতা নির্বাচনের প্রয়োজন হওয়ায় বড় পরিসরে ভোটের আয়োজন বাদ দেওয়া হয়েছে।
নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে, সাবেক সাংবাদিক ৬৩ বছর বয়সী দুল্লাস আলাহাপেরুমা ও ৫৩ বছর বয়সী অনুরা দিসানায়েক।
নির্বাচনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহেকেই এগিয়ে রাখছেন বিশ্লেষকেরা। যদিও বিক্ষোভকারীরা তাকে রাজাপাকসে পরিবারের মিত্র হিসেবেই দেখছেন।
প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালানো গোতাবায়া রাজাপাকসের দল এসএলপিপি লঙ্কান পার্লামেন্টে এখনো সংখ্যাগরিষ্ঠ। নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তারা রনিল বিক্রমাসিংহেকে সমর্থন দিচ্ছে। তবে তিনি প্রেসিডেন্ট হলে শ্রীলঙ্কা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েই দেশব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন রনিল। পর্যবেক্ষকদের মতে, রনিল বিক্রমাসিংহে প্রেসিডেন্ট হলে বিক্ষোভকারী ও বিরোধী মতাদর্শীদের দমনে চড়াও হতে পারেন।
নির্বাচনে রনিলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এসএলপিপির সমালোচক ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দুল্লাস আলাহাপেরুমা। সাবেক এই সাংবাদিকের প্রতি সমর্থন রয়েছে বিরোধীদের। ‘শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রকৃত ঐক্যের সরকার’ গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আলাহাপেরুমা। নির্বাচনে তিনি জয়ী হলে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেতে পারেন বিরোধী দলীয় নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তৃতীয় প্রার্থী হলেন ৫৩ বছর বয়সী অনুরা দিসানায়েক। বামপন্থি এ নেতার দলগত জোটের মাত্র তিনটি আসন রয়েছে লঙ্কান পার্লামেন্টে।
এর আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে শ্রীলঙ্কার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। সোমবার (১৮ জুলাই) থেকে কার্যকর হয় এ আদেশ।
নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকট ও ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন গোতাবায়া রাজাপাকসে।
শুক্রবার (১৫ জুলাই) শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হিসেবে গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন দেশটির পার্লামেন্ট স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধনে। এর পর শনিবার (১৬ জুলাই) প্রেসিডেন্ট পদটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে শূন্য পদ ঘোষণা করেন দাসানায়েকে।
গত মার্চ মাস থেকে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে শ্রীলঙ্কায় শুরু হয় আন্দোলন-বিক্ষোভ। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও প্রেসিডেন্টের বাসভবনেও ঢুকে পড়েন তারা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা।
আরএ/