রুশ হামলায় ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুন
রুশ বাহিনীর আক্রমণে জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুন ধরে গেছে। পাশের শহর এনারগোদারের মেয়র দিমিত্রো অরলভ জানিয়েছেন, শুক্রবার (৪ মার্চ) ভোরের দিকে রুশ বাহিনীর হামলায় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে আগুন লাগে। এটি ইউরোপের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
এর আগে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, রাশিয়ান সেনার বিদ্যুৎকেন্দ্রটি দখলে জোর চেষ্টা চালিয়েছে। এজন্য রুশ বাহিনী ট্যাঙ্ক নিয়ে শহরে প্রবেশ করে।
একটি টিভি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অরলভ বলেছেন, ‘ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভবন এবং ইউনিটগুলোতে ক্রমাগত শত্রুর গোলার কারণে আগুন লেগে যায়।’ এ ঘটনায় বৈশ্বিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের জোর তৎপরতা চালাচ্ছে বলে প্রকাশিত খবর বলা হয়।
প্রসঙ্গত, প্রায় দুই মাস ধরে ইউক্রেন সীমান্তে ২ লাখ সেনা জড়ো করে রাশিয়া। রাশিয়ার সেনা মোতায়েন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বারবার সতর্কতা দিয়েছিল; কিন্তু বরাবরই রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছে।
এরপর গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন।
আট দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ যুদ্ধের নবম দিন। রাজধানী কিয়েভ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে রুশ সেনারা। শহরটি ঘিরে রেখে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। এ হামলা শুরু পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/