চীনের পূর্বাঞ্চলীয় জিয়াংসু প্রদেশের ইক্সিং শহরে এক সাবেক শিক্ষার্থীর ছুরিকাঘাতে ৮ জন নিহত এবং ১৭ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উক্সিং ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট অব আর্টস অ্যান্ড টেকনোলজিতে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, ২১ বছর বয়সী সন্দেহভাজন হামলাকারী একই প্রতিষ্ঠানের সাবেক শিক্ষার্থী। চলতি বছর তার স্নাতক সম্পন্ন করার কথা থাকলেও পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার হতাশা থেকেই তিনি এই নৃশংস কাণ্ড ঘটান। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।
উক্সিং ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট অব আর্টস অ্যান্ড টেকনোলজিতে প্রায় ১২,০০০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন। প্রতিষ্ঠানটি সাংহাই থেকে ১৫০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। এখানে শিল্প, নকশা, সিরামিক, ও ফ্যাশনসহ নানা বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া হয়।
ইক্সিং শহরের পুলিশ জানিয়েছে, আহতদের চিকিৎসায় জরুরি সেবা চালু রয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ যত্ন নেওয়া হচ্ছে। ঘটনার পরপরই পুরো এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
চীনে কঠোর বন্দুক আইন এবং ব্যাপক নজরদারির কারণে সাধারণত সহিংস অপরাধের হার কম। তবে, সম্প্রতি ছুরিকাঘাত ও অন্যান্য সহিংসতার ঘটনা জনমনে উদ্বেগ সৃষ্টি করছে।
এর আগে, ঝুহাই শহরে এক ব্যক্তি তার গাড়ি চালিয়ে ভিড়ের ওপর আছড়ে পড়লে ৩৫ জন নিহত এবং ৪০ জনেরও বেশি আহত হন। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুটি বড় সহিংস ঘটনায় চীনের নাগরিকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ঘটনা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। কেউ কেউ ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা জোরদার এবং মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। অন্যরা সমাজে বাড়তে থাকা ধনী-গরিব বৈষম্য এবং কঠোর প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশের কারণে হতাশার মাত্রা বাড়ছে বলে মত দিয়েছেন।
এই ঘটনাগুলো চীনের জনগণের মধ্যে নিরাপত্তা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন মর্মান্তিক ঘটনা এড়াতে প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধি জরুরি।