ফ্রান্সে পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা ম্যাক্রোঁর
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ছবি: সংগৃহীত
আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে বুথফেরত জরিপে ম্যাক্রোঁ সমর্থিত দল বড় ব্যবধানে পিছিয়ে থাকায় দেশটির পার্লামেন্ট বিলুপ্ত ঘোষণা করেন তিনি।
ম্যাক্রোঁর ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ৩০ জুন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের ভোট অনুষ্ঠিত হবে এবং দ্বিতীয় ধাপের ভোট অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৭ জুলাই। এর কয়েকদিন পরেই প্যারিস অলিম্পিকের আয়োজন করবে ফ্রান্স।
বুথ ফেরত জরিপ বলছে, নির্বাচনে ডানপন্থী মেরিন লে পেন প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল র্যালি ৩২ শতাংশ ভোট পেতে যাচ্ছে। এই সংখ্যা বর্তমান প্রেসিডেন্টের রেনেসাঁ পার্টির চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি।
বুথ ফেরত জরিপ ঘোষণার এক ঘণ্টা পর এলিসিয়ে প্রাসাদ থেকে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে নাটকীয় এবং অনেকটা বিস্ময়কর ঘোষণা দেন ম্যাক্রোঁ। রোববার ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ২১টি সদস্য দেশে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। তবে গত বৃহস্পতিবার থেকেই ভোট শুরু হয়েছে। কারণ ৬ থেকে ৯ জুনের মধ্যে যেকোনো দিন ভোট গ্রহণের সুযোগ ছিল। সে কারণে অনেক দেশে দুদিনও ভোট নেওয়া হয়েছে।
বুথফেরত জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, রোববারের নির্বাচনে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে মধ্যপন্থি, উদারপন্থি ও সমাজতান্ত্রিক দলগুলো সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখার পথে থাকলেও নিজ দেশে ফ্রান্স ও জার্মানির নেতাদের জন্য ছিল হতাশার।
জরিপের তথ্য বলছে, নতুন পার্লামেন্টে মধ্য-ডানপন্থি ইউরোপিয়ান পিপলস পার্টি (ইপিপি) সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক পরিবার হতে যাচ্ছে বলে। ইউরোপিয়ান কমিশনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়ন ইপিপির সদস্য। দ্বিতীয় মেয়াদে ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্টের লড়াইয়ে থাকা লিয়নের জন্য এটা খুব ভালো খবর বলাই যায়।
জাতীয়তাবাদী দলগুলোর আরেকটি পরিবার হলো ইউরোপিয়ান কনজারভেটিভ অ্যান্ড রিফরমিস্টস (ইসিআর) । ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির ব্রাদার্স অব ইতালি এই পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। নির্বাচনে ম্যাক্রোঁর রেনেসাঁ পার্টি পেতে যাচ্ছে ১৫ শতাংশ ভোট যা ন্যাশনাল র্যালির চেয়ে অর্ধেকেরও কম। অন্যদিকে সোশ্যালিস্ট পার্টি পেতে যাচ্ছে ১৪ শতাংশ ভোট।
জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলজের জন্যও নির্বাচনের ফলাফল ভালো কিছু আনতে পারেনি। তার সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটসরা ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট নির্বাচনে এ পর্যন্ত সবচেয়ে খারাপ ফল করেছে। জার্মানির মূল ধারার রক্ষণশীল ও চরম ডানপন্থি দল অলটারনেটিভ ফর জার্মানির (এএফডি) কাছে ধরাশায়ী হয়েছে তারা।
অপরদিকে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির অবস্থান আরও দৃঢ় হয়েছে। ভোট পরবর্তী জরিপে দেখা গেছে, তার রক্ষণশীল দল ব্রাদার্স অব ইতালি অধিকাংশ ভোটে এগিয়ে আছে।