বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫ | ৯ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

দ্বিতীয় চীন-জাপান যুদ্ধের ৮৪ বছর

সাংহাইয়ের ধ্বংসাবশেষে জাপানি সৈন্যরা

মানব সভ্যতার ইতিহাস যুদ্ধ-বিগ্রহের ইতিহাস। ইতিহাসের কালপরিক্রমায় আধুনিক বিশ্বের অন্যতম দুই পরাশক্তি চীন ও জাপান দুই দুইবার রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। যা চীন-জাপান যুদ্ধ নামে পরিচিত। ঢাকাপ্রকাশের পাঠকদের জন্য দ্বিতীয় চীন-জাপান যুদ্ধের আদ্যপান্ত তুলে ধরা হলো।

দ্বিতীয় চীন-জাপান যুদ্ধের সূত্র লুকিয়ে আছে ১৮৯৪-৯৫ সনের প্রথম চীন-জাপান যুদ্ধে। সে যুদ্ধে চীনের কুইং রাজবংশ জাপানের কাছে হেরে গিয়ে তাইওয়ান ছেড়ে দিতে এবং কোরিয়ার স্বাধীনতা স্বীকার করতে বাধ্য হয়। কুইং রাজবংশের পতনের পর চীনে অনেক সামন্ত রাজার উত্থান ঘটে এবং বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। অন্যদিকে জাপান সাম্রাজ্য আধুনিক ও শক্তিশালী হতে থাকে। ধীরে ধীরে চীনের বিভিন্ন এলাকায় জাপান তার প্রভাব বলয় সৃষ্টি করতে থাকে।

১৯২০-৩০ এর দশকে চিয়াং কাই-শেক এর কুয়ো মিনটাং সরকার চীনকে একীভূত করতে শুরু করে। সেসময় সরাসরি জাপানের সাথে যুদ্ধ করার সামর্থ্য ছিল না চীনের। তবে চিয়াং কাই-শেক একে একে সামন্ত রাজাদের পরাজিত করতে থাকেন। অন্যদিকে তিনি চীনা কমিউনিস্টদের সাথেও গৃহযুদ্ধ শুরু করেন। হাতছাড়া হয়ে যাবার ভয়ে ১৯৩২ সালে জাপান উত্তর চীনের মাঞ্চুরিয়া প্রদেশ দখল করে ফেলে ও সেখানে পুতুল রাষ্ট্র মাঞ্চুকিয়ো স্থাপন করে।

নিজেদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য চীনারা একটি সিরিজ রেলপথ নির্মাণ শুরু করে যা আংশিকভাবে জাপানি লাইনকে ঘিরে ফেলে এবং হুলুদাওতে গিয়ে শেষ হয়। হুলুদাওতে একটি বন্দর চীনারা নির্মান করছিল। এদিকে মাঞ্চুরিয়ার শাসক ঝাং জুওলিন ১৯২৮ সালে জাপানি অফিসারদের দ্বারা নিহত হলে তার ছেলে ঝাং জুয়েলিয়াং চীনকে বিদেশী নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করার জন্য কুওমিনতাং-এ (ন্যাশনালিস্ট পার্টি) যোগ দেন। মাঞ্চুরিয়াতে জাপানি বাহিনী আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসনের সকল পথ বন্ধ করে দেন।

এই অবস্থায় চীনারা শহরের কাছে দক্ষিণ মাঞ্চুরিয়া রেলপথের ট্র্যাকের কিছু অংশ উড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করে জাপান ১৯৩১ সালের ১৮-১৯ সেপ্টেম্বর মুকডেন (বর্তমান শেনিয়াং) দখল করে নেয়। চীনের জাতীয়তাবাদী শক্তির সামান্য প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়ে, জাপানিরা ১৯৩২ সালে মাঞ্চুরিয়াতে একটি পুতুল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। এর পর জাপান সমগ্র চীনের ওপর তাদের আধীপত্য বিস্তারে মনোযোগি হয়। ১৯৩৪ সালের টোকিও থেকে একটি ঘোষণাপত্রে বলা হয় চীনের কোনও শক্তি জাপানের সম্মতি ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে পারে না। এতে সমস্ত চীনকে কার্যকরভাবে জাপানের অধীনস্ত হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

জাপানি সাম্রাজ্যের আঞ্চলিক সম্প্রসারণ

জাপানি সাম্রাজ্যের আঞ্চলিক সম্প্রসারণ

১৯৩৫ সালে জাপানিরা হেবেই এবং চাহার (বর্তমানে মঙ্গোলিয়ার একটি অংশ) থেকে চীনের সশস্ত্র বাহিনীর জাপান বিরোধী সদস্যদের প্রত্যাহার করতে বাধ্য করে। এর ফলে এই অঞ্চলগুলি আংশিকভাবে জাপানের নিয়ন্ত্রণে চলে যায় এবং সুইয়ুয়ান, শানসি (শানঝি), এবং শান্তুং (শানডং) প্রভূতি অঞ্চল হুমকির সম্মুখীন হয়। চীনের জাতীয়তাবাদী নেতা চিয়াং কাই-শেক প্রকাশ্য এর বিরোধিতা করেননি। ১৯৩৬ সালের ডিসেম্বরে চিয়াং কাই-শেক তার নিজের জেনারেলদের ক্ষমতাচূত্য হন এবং জাপানের বিরুদ্ধে যুক্তফ্রন্ট কমিউনিস্টদের সাথে মিত্র হতে বাধ্য হয়েছিলেন।

এই অবস্থায় চীন-জাপানের মধ্যে শীঘ্রই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শুরু হয়। ১৯৩৭ সালের ৭ জুলাই পেইপিং (বেইজিং) থেকে সামাস্য দূরে অবস্থিত মার্কো পোলো ব্রিজে চীনা ও জাপানি সৈন্যদের মধ্যে একটি ছোটখাটো সংঘর্ষের মধ্যদিয়ে দ্বিতীয় চিন-জাপান যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটে। জাপানিরা অনুভব করেছিল যে, যেহেতু চিয়াং এবং জাতীয়তাবাদী সরকার জাপানের কাছে নতি স্বীকার করবে না তাই তাদের অবশ্যই নির্মূল করতে হবে। তাছাড়া জাপানের বিরুদ্ধে চীনের ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদী জোয়ার জাপানকে বিক্ষুদ্ধ করে তুলেছিল।

১৯৩৭ সালের জুলাই নাগাদ কার্যত সমস্ত চীনা আঞ্চলিক সামরিক ও রাজনৈতিক দল জাতীয়তাবাদী সরকার ও চিয়াং কাই-শেককে সমর্থন করার জন্য সমাবেশ করেছিল। কমিউনিস্টরা, যারা ১৯৩৫ সাল থেকে জাপানের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল, তারা তাদের সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এবং তাদের সেনাবাহিনীকে নামমাত্র সরকারের অধীনে রেখেছিল।

ছবি: জেনারেলিসিমো চিয়াং কাই-শেক, 1942 থেকে 1945 পর্যন্ত চীন থিয়েটারে মিত্রবাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ

তবে জাপানের সামরিক শক্তি চীনের তুলনায় এতটাই শক্তিশালী ছিল যে তার সেনাবাহিনী প্রাথমিকভাবে দ্রুত সাফল্য অর্জন করেছিল। দুই বছরের মধ্যে জাপান চীনের বেশিরভাগ বন্দর, প্রধান শহর যেমন সুদূর পশ্চিমে হ্যানকো (হানকো) এবং রেলপথের বড় অংশ দখল করে নেয়। পেপিং এবং তিয়েনসিন (তিয়ানজিন) অঞ্চল ১৯৩৭ সালের জুলাই মাসে দখল করা হয়। প্রচণ্ড যুদ্ধের পর ১৯৩৭ সালের নভেম্বরের মাঝামাঝি চীনা সেনাবাহিনীকে সাংহাই এলাকা থেকে বিতাড়িত করে জাপান। চীনের জাতীয়তাবাদীদের রাজধানী নানকিং-এর (নানজিং) ১৯৩৭ সালের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পতন ঘটে। সেই শহরে জাপানিরা যে হত্যাযজ্ঞ চালায় তা নানজিং গণহত্যা হিসাবে পরিচিত হয়। নানজিং শহরে প্রায় ৩০০,০০০ চীনা বেসামরিক নাগরিক এবং আত্মসমর্পণকারী সেনা নিহত হয়েছিল। তাছাড়া জাপানি কমান্ডার মাতসুই ইওয়ানের নির্দেশে হাজার হাজার নারীকে ধর্ষণ করা হয়।

রাজধানী পশ্চিমে হ্যানকোতে স্থানান্তরিত হয়। ১৯৩৮ সালের অক্টোবরে জাপানীরা সেই শহরটিকে দখল করে নেয়। একই মাসে চীনারা ক্যান্টন (গুয়াংজু) হারায়। জাপানিরা পেপিং থেকে উত্তর ও পশ্চিম দিকে রেললাইন ধরে শানসি এবং অভ্যন্তরীণ মঙ্গোলিয়ায় নজর দেয়। তারা শান্টুং-এ আধিপত্য বিস্তার করে এবং ইয়াংজি উপত্যকার নীচের অংশে পেইপিং-হ্যাঙ্কো, তিয়েনসিন-পিউ-কাউ এবং লুং-হাই রেলপথ দখল করে। সমুদ্রে তাদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছিল। আকাশ যুদ্ধে জাপানিরা সবসময় এগিয়ে ছিল। আগে থেকেই তারা চীনা বিমান বাহিনীকে প্রায় ধ্বংস করে ফেলেছিল এবং চীনা শহরগুলিতে ইচ্ছামতো বোমাবর্ষণ করেছিল। এই অবস্থায় চীনে ব্যপক প্রাণহানি ঘটেছিল।

এসবের পরেও চীনারা শেষ পর্যন্ত হারেনি। যুদ্ধ জাপানের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি দীর্ঘায়িত হয়েছিল। চিয়াং কাই-শেক তার রাজধানী সেচওয়ানে (সিচুয়ান) থেকে ইয়াংজি গর্জেসের পশ্চিম প্রান্তে চুংকিং-য়ে (চংকিং) স্থানান্তরিত করেন। চীনের বেশিরভাগ নেতৃত্ব সেচওয়ান এবং ইউনানে (ইউনান) থেকে সুদূর পশ্চিমে চলে যান। দখলহীন চীন দীর্ঘ প্রতিরোধ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়। অধিকৃত চীনে জাপান যে সরকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিল সেই সরকারে অনেক চীনাকে অন্তর্ভূক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছিল। এমনকি চীনের অধিকৃত অঞ্চলে জাপানের নিয়ন্ত্রণ শুধুমাত্র শহর এবং রেললাইনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।

এর বাইরে সাধারন মানুষ চীনের জাতীয়তাবাদী সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে। তাছাড়া এসব অঞ্চলে জাপান চীনের গেরিলা যোদ্ধাদের দ্বারা ব্যপকভাবে প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েছিল। কমিউনিস্টরা জাপানকে প্রতিরোধ করার জন্য গেরিলা পদ্ধতি ব্যবহার করে বিশেষভাবে সফল হয়েছিল। এই গেরিলা আক্রমন দ্রুত জাপান নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলোর রাজনৈতিক-সামরিক অবস্থানকে ভেঙে দেয়। কমিউনিস্ট সৈন্য এবং সংগঠকরা জাপানি নিয়ন্ত্রণের পেছনে বিস্তীর্ণ গ্রামীণ এলাকায় চলে যায়। তারা গ্রামীণ আত্মরক্ষা ইউনিট সংগঠিত করে। স্থানীয় সরকার গঠন করে এবং তাদের নিজস্ব সেনাবাহিনী, অষ্টম রুট আর্মি এবং নিম্ন ইয়াংজি উপত্যকায় নিউ ফোর্থ আর্মি প্রসারিত করে।

কিছু সময়ের জন্য জাপান ব্রিটিশদের বার্মা (মিয়ানমার) থেকে ইউনানের কুন-মিং পর্যন্ত রাস্তাটি বন্ধ করে রাখে। পরে বার্মা রোডটি আবার চালু হয় এবং যুদ্ধের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রসদ সরবরাহকারী লাইন হয়ে উঠে। এই অবস্থার কিছুকাল পরে ৭ই ডিসেম্বর ১৯৪১ সালে জাপান আমেরিকার পাল হারবার আক্রমণ করলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্বতীয় বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। চীনও আনুষ্ঠানিকভাবে জাপানের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করে। সমন্বিত চীনা বাহিনী বার্মা এলাকায় যুদ্ধে অংশ নেয়। জাপানিরা তাদের সামরিক শক্তি ও অনুকূল ভৌগলিক অবস্থানের সুযোগ নিয়ে দ্রুত পূর্ব এশিয়ার উপকূলে নিজেদের প্রভাবশালী করে তোলে।

অন্যদিকে জাতীয়তাবাদী চীন শক্তিশালী জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে গুরুতর অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমস্যার সন্মূখীন হয়। তাদের স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষা উপকরণের ঘাটতি, অপুষ্টি, এবং সরকার কর্তৃক রেজিমেন্টেশনের প্রচেষ্টা সবই একটি খারাপ প্রভাব ফেলেছিল।

এই যুদ্ধাবস্থা চীন সরকারকেও গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল। প্রতিরোধের প্রথম বছরগুলিতে চীন যে শক্তিশালী জনসমর্থন লাভ করেছিল তা হ্রাস পেয়ে তলানীতে ঠেকে। সরকারকে মূল্যস্ফীতি, দুর্নীতি এবং অতিরিক্ত কর আরোপের জন্য দায়ী করা হয়। কমিউনিস্টরা জনবিরোধী হিসাবে পুনরায় আবির্ভূত হতে শুরু করলে তারা জনগনের ওপর দমন নীতি প্রয়োগ করে। এই অবস্থার মধ্যেও চীন চিয়াং কাই-শেকের নেতৃত্বে জাপানের সাথে আত্মসমর্পণ বা আলোচনায় বসতে অস্বীকার করে।

সাত বছরের যুদ্ধ এবং মুদ্রাস্ফীতির কারণে চীনের জাতীয়তাবাদী সরকার গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তবে এই অবস্থায় মাও সেতুং-এর নেতৃত্বে কমিউনিস্টদের শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছিল। ১৯৪৫ সাল থেকে চীন আমেরিকার সাহায্যে অবরুদ্ধ এলাকা মুক্ত করতে শুরু করে। এরসাথে সোভিয়েত ইউনিয়নও যোগ দেয়। ১৫ই অগাস্ট ১৯৪৫, আণবিক বোমা বিস্ফোরণের সাথে সাথে জাপানের যুদ্ধ শেষ হয়ে যায়। ৯ই সেপ্টেম্বর জাপান আত্মসমর্পণ করে।

 

 অনুবাদক: শাহাদাত হোসেন

Source: The Editors of Encyclopaedia Britannica

/এএস

Header Ad
Header Ad

কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর বন্দুক হামলা, নিহত ২৬

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা পেহেলগামে সেনাবাহিনীর ছদ্মবেশে চালানো সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৬ জন পর্যটক। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন দুই বিদেশিও। হামলায় আহত হয়েছেন আরও ১২ জন।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটার দিকে বাইসারান উপত্যকার উপরের চারণভূমিতে এই নৃশংস হামলার ঘটনা ঘটে। প্রত্যন্ত এই এলাকায় ঘোড়া কিংবা পায়ে হেঁটে যেতে হয়। পুলিশ ধারণা করছে, এটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে সংবাদমাধ্যম পিটিআই জানায়, খুব কাছ থেকে গুলি চালানো হয় পর্যটকদের ওপর। মুহূর্তেই সৃষ্টি হয় আতঙ্ক। হতাহতদের চিৎকারে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। হৃদয়বিদারক দৃশ্যগুলোতে দেখা যায়—স্থানীয়রা ছুটে এসে আহতদের সেবা করছেন, অনেক নারী যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।

নিহতদের মধ্যে একজন ছিলেন কর্নাটকের শিভামোগ্গার এক রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী। ভয়াবহ সেই হামলার সময় স্ত্রী ও সন্তানের সামনেই তাঁকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।

এই হামলা এমন এক সময় ঘটল যখন কাশ্মীরজুড়ে পর্যটন মৌসুম তুঙ্গে। পাশাপাশি ‘আমারনাথ যাত্রা’ উপলক্ষে চলছে পূর্ণ প্রস্তুতি। উল্লেখ্য, এই তীর্থযাত্রার একটি রুটই পেহেলগাম হয়ে ৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ।

হামলার পরপরই এক্স-এ (সাবেক টুইটার) ক্ষোভ প্রকাশ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াই আরও কঠোর ও নির্ভীক হবে।”

তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ঘটনাস্থলে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং দ্রুত নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য একটি জরুরি বৈঠকের আহ্বান জানান।

অন্যদিকে দিল্লিতে নিজের বাসভবনে অমিত শাহ উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন। এতে উপস্থিত ছিলেন গোয়েন্দা ব্যুরোর প্রধান তপন ডেকা এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব গোবিন্দ মোহান।

Header Ad
Header Ad

পালিয়ে গিয়েও থেমে নেই আড্ডা, কলকাতায় দেখা মিলল সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের

পালিয়ে গিয়েও থেমে নেই আড্ডা, কলকাতায় দেখা মিলল সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের। ছবি: সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ঢেউয়ে ভেঙে পড়ে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকার। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর তিনি ভারতের আশ্রয় নেন। তার দেখাদেখি অনেক আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীও আত্মগোপনে চলে যান, কেউ কেউ আশ্রয় নেন পাশের দেশ ভারতে।

এই পালিয়ে যাওয়া নেতাদের অনেকেই বর্তমানে কলকাতায় অবস্থান করছেন। শুধু অবস্থানই নয়—রাজনৈতিক শূন্যতার ভেতরেও তারা উপভোগ করছেন বিলাসী জীবনযাপন। সম্প্রতি কলকাতার এক ঘরোয়া আড্ডায় দেখা গেছে গাজীপুরের বহুল আলোচিত সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে।

সূত্র জানায়, কলকাতার রাজারহাট নিউটাউন, সল্টলেক কিংবা গড়িয়াহাটের মতো অভিজাত এলাকায় ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকছেন পলাতক আওয়ামী নেতারা। তাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যিনি নিউটাউনের বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে আছেন বলে জানা গেছে।

একই এলাকায় থাকছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও। শুধু কেন্দ্রীয় নেতারাই নন, ছাত্রলীগের সাবেক শীর্ষ নেতারাও কলকাতায় বসবাস করছেন। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান নিউটাউনের অভিজাত এলাকায় ভাড়া করা ফ্ল্যাটে অবস্থান করছেন বলে খবর রয়েছে।

বাংলাদেশে তাদের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ ও মামলার তদন্ত চলমান। কিন্তু কলকাতায় যেন সেই সব অভিযোগের ছোঁয়া নেই—চায়ের কাপে রাজনীতি নয়, বরং আড্ডা, বিলাসিতা আর আত্মগোপনের ‘নতুন জীবন’ নিয়েই ব্যস্ত তারা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক শুদ্ধি অভিযান শুরু হওয়ার পর অনেক সাবেক ক্ষমতাধর নেতাই আইনের হাত থেকে বাঁচতে বিদেশে পাড়ি জমান, এবং ভারতের কলকাতা হয়ে উঠেছে তাদের অঘোষিত ‘নিরাপদ আবাসস্থল’।

Header Ad
Header Ad

বাবা হতে যাচ্ছেন নির্মাতা কাজল আরেফিন অমি

ছবি: সংগৃহীত

জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’-এর নির্মাতা কাজল আরেফিন অমি প্রথমবারের মতো বাবা হতে যাচ্ছেন। তবে এ সুখবরটি সামনে এসেছে তার বিবাহবার্ষিকীতে বিশেষ একটি পোস্টের মাধ্যমে। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) অমি তার স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে একটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে স্পষ্ট দেখা যায় তার স্ত্রীর বেবিবাম্প।

ছবির ক্যাপশনে অমি লেখেন, “৯ বছর একসাথে”—এই ছোট্ট বাক্যেই যেন লুকিয়ে আছে তাদের দীর্ঘ পথচলার গল্প এবং নতুন জীবনের সূচনা। ছবিটি ইতোমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেছে। ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষ এতে রিঅ্যাক্ট করেছেন এবং মন্তব্যে জানাচ্ছেন শুভ কামনা, অভিনন্দন ও দোয়া।

অমি বলেন, "আলহামদুলিল্লাহ, আমরা একসঙ্গে ৯ বছর কাটিয়ে ফেলেছি। আমাদের প্রথম সন্তান আসছে। এখনো জানি না ছেলে হবে না মেয়ে—ইচ্ছেও করিনি জানতে। শুধু চাই, আমার সন্তান সুস্থভাবে জন্মাক, আর আমার ওয়াইফ সুস্থ থাকুক। দোয়া করবেন সবাই।”

প্রথমবার বাবা হতে যাওয়ার অনুভূতি নিয়ে তিনি বলেন, "এই ফিলিংসটা একেবারেই নতুন। এখনো পুরোপুরি বুঝতে পারছি না। ওয়াইফকে এমন অবস্থায় আগে কখনো দেখিনি। তার প্রতি আমার মায়া যেন আরও বেড়ে গেছে।”

এদিকে পেশাগত দিক থেকেও ভক্তদের জন্য সুখবর দিয়েছেন অমি। জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ ফিরছে নতুন সিজন নিয়ে। দুই বছর বিরতির পর নাটকটির পঞ্চম সিজনের কাজ শুরু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন নির্মাতা নিজেই।

সম্প্রতি অমি পরিচালিত ওয়েব ফিল্ম ‘হাউ সুইট’ ঈদুল ফিতরে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বঙ্গতে মুক্তি পেয়েছে। এতে জিয়াউল হক অপূর্ব, তাসনিয়া ফারিণ ও সাইদুর রহমান পাভেলসহ আরও অনেকেই অভিনয় করেছেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর বন্দুক হামলা, নিহত ২৬
পালিয়ে গিয়েও থেমে নেই আড্ডা, কলকাতায় দেখা মিলল সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের
বাবা হতে যাচ্ছেন নির্মাতা কাজল আরেফিন অমি
পারভেজ হত্যা মামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা গ্রেফতার
সংস্কারের নামে নাটক না করে দ্রুত নির্বাচন দিন: রুমিন ফারহানা
সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করলেন উত্তর সিটির প্রশাসকের উপদেষ্টা ড. আমিনুল
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিতে পারবে কিনা জানালেন আইন উপদেষ্টা
গোবিন্দগঞ্জে ১১ বছর পর আ.লীগের সাবেক এমপিসহ ২২১ জনের বিরুদ্ধে জামায়াতের মামলা
শেখ হাসিনাকে দেয়া ডিগ্রি বাতিলের কথা ভাবছে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়
বিএনপি সবসময় মানবতার পক্ষে কাজ করে: আমিনুল হক
জামিনে মুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের পর্যবেক্ষণে রাখার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
ঢাকায় এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ করবে সেনাবাহিনী
শেখ হাসিনা ও টিউলিপকে দেশে ফেরাতে দুদকের কার্যক্রম শুরু
সাবেক আইজিপি বেনজীরের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের 'রেড নোটিশ' জারি
সংঘর্ষের জেরে সিটি কলেজ দুইদিন বন্ধ ঘোষণা
রাষ্ট্রের বিষয়ে তাড়াহুড়ো নয়, ধীরে সুস্থে আলোচনা করতে চায় বিএনপি
বাংলাদেশ থেকে ৭২৫ সেনা নেবে কাতার
উড্ডয়নের আগে বিমানে আগুন, রক্ষা পেলেন ৩০০ যাত্রী
সায়েন্সল্যাব মোড়ে আগুন জ্বালিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, বন্ধ যান চলাচল
রাজধানী থেকে ওবায়দুল কাদেরের ‘ভাগনে’ গ্রেপ্তার