১ কোটি ৪৪ লাখ মানুষের মৃত্যু ঠেকিয়েছে করোনার টিকা
মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে এখন পর্যন্ত ৬৪ লাখ ৮৬ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে আবিষ্কৃত হয়েছে টিকা। আর এই টিকা বিশ্বের প্রায় ১ কোটি ৪৪ লাখ মানুষের মৃত্যু ঠেকিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের ইমপিরিয়াল কলেজের ৬ গবেষক গাণিতিক পদ্ধতি ব্যবহার করে অনুমিত এই সংখ্যা বের করেছেন। যা আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য সাময়িকী ল্যানসেট প্রকাশ করেছে।
গবেষকরা বলছেন, ২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত করোনার টিকা কর্মসূচির প্রথম বছরে টিকা না দিলে ১ কোটি ৮১ লাখ মানুষের প্রাণ যেতে পারত। তখন করোনায় বিশ্বব্যাপী ৩৪ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। করোনার টিকা ১ কোটি ৪৪ লাখ মানুষের মৃত্যু ঠেকিয়েছে।
গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়েছে, টিকা দেওয়ার কারণে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে করোনা রোগীর বাড়তি চাপ ছিল না। ধারণ ক্ষমতার বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়নি। তবে ২০২১ সালে স্থান ও সময় ভেদে একের জায়গায় একেক ধরনের প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। ভারতে যখন ডেল্টা ধরন প্রভাব বিস্তার করছিল তখন টিকার প্রভাব ছিল এক রকম, আবার ইউরোপে বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার পর টিকার প্রভাব ছিল অন্য রকম।
গবেষকরা বলছেন, টিকার কারণে ইউরোপে করোনায় মৃত্যু তুলনামূলকভাবে ঠেকানো গেছে। ডেল্টা ধরন আসার আগেই এই অঞ্চলের মানুষদের করোনার টিকা দেওয়ায় হয়তো মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব হয়েছে। টিকার মাধ্যমে করোনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন উচ্চ ও উচ্চমধ্যম আয়ের মানুষ। আবার যেখানে টিকা বেশি ব্যবহৃত হয়েছে সেখানে সুরক্ষাও তুলনামূলক বেশি হয়েছে। আর যেখানে বিভিন্ন ধরনের টিকা ব্যবহৃত হয়েছে সেখানে এর প্রভাব কম লক্ষ্য করা গেছে।
গাণিতিক মডেলের ভিত্তিতে বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক অনুমানের উপর গবেষকদের নির্ভর করতে হয়েছে। কেননা মহামারি এই ভাইরাসের জিন বিশ্লেষণের তথ্য অনেক দেশ থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছিল না। আবার অনেক দেশের টিকাদানের তথ্যও তারা পাচ্ছিল না।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরামর্শক মুশতাক হোসেন বলেন, এই প্রবন্ধের মাধ্যমে টিকার সুফলের একটি অনুমিত হিসাব আমরা পেয়েছি। এ ছাড়া টিকাদানে বৈষম্যের বিষয়টিও প্রবন্ধে প্রকাশ পেয়েছে। যদি টিকাদানে বৈষম্য না থাকত তাহলে আরও বেশি সুফল পাওয়া যেত।
এসজি