অমিক্রনের লাগাম টানতে বন্দরে স্ক্রিনিংসহ ১৫ নির্দেশনা
শনাক্ত হয়েছে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন অমিক্রন। এর বিস্তার ঠেকাতে ১৫টি নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
কয়েকটি দেশ থেকে আসা যাত্রীদের স্ক্রিনিং করা; জনসমাগম, পর্যটন কেন্দ্র, বিনোদন কেন্দ্র, রেস্তোরাঁয় ভিড় এড়ানোসহ বিভিন্ন নতুন নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ও মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজুমল ইসলামের স্বাক্ষরে জারি করা ওই নির্দেশনায় বলা হয়, দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন (বি.১.১৫২৯) ছড়িয়ে পড়তে থাকায় অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে সতর্ক করেছে। যুক্তরাজ্যসহ অনেক দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা, নামিবিয়া, জিম্বাবুয়ে, বতসোয়ানা এবং লেসোথোর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করেছে। করোনাভাইরাসের এ ভ্যারিয়েন্টটি ডেলটার চেয়েও বেশি সংক্রামক বলে বিশেষজ্ঞরা মতামত প্রকাশ করেছেন।
রবিবার (২৮ নভেম্বর) কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি অমিক্রনের বিস্তার ঠেকাতে ভ্রমণ সতর্কতা জারির পাশাপাশি সব ধরনের সমাবেশে জনসমাগম সীমিত করার সুপারিশ করে।
পাশাপাশি মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানা নিশ্চিত করা এবং আবারও বিনামূল্যে কোভিড পরীক্ষার সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হয় কমিটির সুপারিশে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের ১৫ নির্দেশনায় যা রয়েছে-
১. দক্ষিণ আফ্রিকা, নামিবিয়া, জিম্বাবুয়ে, বতসোয়ানা, এসওয়াতিনি, লেসোথোসহ যেসব দেশে অমিক্রনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, সেসব দেশ থেকে আসা যাত্রীদের বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও স্ক্রিনিং জোরদার করতে হবে।
২. সব ধরনের (সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও অন্যান্য) জনসমাগম নিরুৎসাহিত করতে হবে।
৩. বাড়ির বাইরে সবার সঠিকভাবে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরাসহ সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. রেস্তোরাঁয় ধারণক্ষমতার অর্ধেক বা তার কম আসনে বসে খাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে
৫. সকল প্রকার জনসমাবেশ, পর্যটন স্থান, বিনোদন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার, সিনেমা হল বা থিয়েটার হল ও সামাজিক অনুষ্ঠানে (বিয়ে, বৌভাত, জন্মদিন, পিকনিক পার্টি ইত্যাদি) ধারণক্ষমতার অর্ধেক বা তার কম সংখ্যক লোক অংশগ্রহণ করতে পারবে।
৬. মসজিদসহ সকল উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।
৭. গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে।
৮. যেসব দেশে এই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে, সেসব দেশ থেকে আসা যাত্রীদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে হবে।
৯. সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা, প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়) ও কোচিং সেন্টারে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে।
১০. সকল স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে সেবাগ্রহিতা, সেবা প্রদানকারী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঠিকভাবে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরাসহ সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।
১১. স্বাস্থ্যবিধি মেনে টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
১২. কোভিড উপসর্গ বা লক্ষণযুক্ত সন্দেহজনক ও নিশ্চিত করোনা রোগীর আইসোলেশন ও কোভিড পজিটিভ রোগীর সংস্পর্শে আসা অন্যান্যদের কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে হবে।
১৩. কোভিড-১৯ এর লক্ষণযুক্ত ব্যক্তিকে আইসোলেশনে রাখা এবং তার নমুনা পরীক্ষার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে সহায়তা করা যেতে পারে।
১৪. অফিসে প্রবেশ এবং অবস্থানকালীন বাধ্যতামূলক নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাটা দাপ্তরিকভাবে নিশ্চিত করতে হবে।
১৫। মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার সচেতনতা তৈরির জন্য কমিউনিটি পর্যায়ে মাইকিং ও প্রচার চালানো যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডার মাইক ব্যবহার করা যেতে পারে এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যসহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করা যেতে পারে।
/টিটি/এমএমএ/